বিষয়বস্তুতে চলুন

সুরেন্দ্রনাথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুরেন্দ্রনাথ
১৯৫৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে সুরেন্দ্রনাথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রমন সুরেন্দ্রনাথ
জন্ম৪ জানুয়ারি, ১৯৩৭
মিরাট, উত্তরপ্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৫ মে, ২০১২
নতুন দিল্লি, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮৮)
৩১ ডিসেম্বর ১৯৫৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট১৩ জানুয়ারি ১৯৬১ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ৮৮
রানের সংখ্যা ১৩৬ ১,৩৫১
ব্যাটিং গড় ১০.৪৬ ১৫.৭০
১০০/৫০ ০/০ ১/৪
সর্বোচ্চ রান ২৭ ১১৯
বল করেছে ২,৬০২ ১৭,০৫৮
উইকেট ২৬ ২৭৮
বোলিং গড় ৪০.৫০ ২৫.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৫
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৭৫ ৭/১৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪/– ৩২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ মে ২০২০

রমন সুরেন্দ্রনাথ (উচ্চারণ; মারাঠি: सुरेंद्रनाथ; জন্ম: ৪ জানুয়ারি, ১৯৩৭ - মৃত্যু: ৫ মে, ২০১২) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের উত্তরপ্রদেশের মিরাট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে সার্ভিসেস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-পেস সুইং বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন সুরেন্দ্রনাথ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত সুরেন্দ্রনাথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বলকে সুইং করাতে পারতেন। জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় ২০.৬৭ গড়ে ১৭৮ উইকেট পান। ১৯৫৫ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে ২৪.৯৫ গড়ে ২৮৪ উইকেট পেয়েছেন।

পেশাগত পর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত সার্ভিসেস দলের পক্ষে ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।[] ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে সার্ভিসেস দলের সদস্যরূপে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করে জাতীয় পর্যায়ে সাড়া জাগান।

ডিসেম্বর, ১৯৬০ সালে রঞ্জী ট্রফির খেলায় দিল্লির বিপক্ষে প্রথম সকালে ৬/৩৪ পান তিনি।[] ১৯৬১-৬২ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার একমাত্র সেঞ্চুরি করেন। সাউদার্ন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ১১৯ রান তুলেন। তবে, পুরো মৌসুমে ১৫.৫৮ গড়ে মাত্র ১৮৭ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।[] এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২৮.০৪ গড়ে ২২ উইকেট লাভ করেন।[] তাসত্ত্বেও তাকে আর টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনা হয়নি। এরপর থেকেই অনিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় মাত্র পাঁচটি খেলায় অংশ নেন। ১৩.৪৪ গড়ে ২৫ উইকেট নিয়ে[] দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যান। আঞ্চলিক চূড়ান্ত খেলায় কমপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জয়ী হবার লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হয় তার দলকে। রেলওয়েজের বিপক্ষে তিনি ৭/৫৯ নিয়ে ১১৪ রানে গুটিয়ে দেন। এর জবাবে সার্ভিসেস দল ২০৭ রান তুলতে সক্ষম হয়।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে এগারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন সুরেন্দ্রনাথ। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৮ তারিখে কলকাতায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৬১ তারিখে চেন্নাইয়ে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ভারত গমনে আসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের একমাত্র ইনিংসে তিন ২/১৬৮ পান। কেবলমাত্র আরেকজন বোলারই তার চেয়ে এক উইকেট বেশি পেয়েছিলেন। এরপর, পাতিয়ালার বিপক্ষে ৬/১০ পান। ফলশ্রুতিতে, সিরিজের তৃতীয় টেস্টের জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে, রেলওয়েজের বিপক্ষে ৭/১৪ ও ৬/৬২ লাভ করেন।[] চতুর্থ টেস্টেও তাকে রাখা হয়। এবার তিনি কোন উইকেট পাননি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল আরেকটি বড় ধরনের জয় পায়। ফলশ্রুতিতে, পঞ্চম টেস্টে তাকে দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়।

ইংল্যান্ড গমন

[সম্পাদনা]

১৯৫৯ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ সফরেই তিনি তার সেরা খেলা উপহার দিয়েছিলেন। ইংরেজ পরিবেশে তার বোলিং বেশ সফল হয়েছিল। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। রমাকান্ত দেশাইয়ের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নামতেন। ২৬.৬২ গড়ে ১৬ উইকেট নিয়ে গড়ের দিক থেকে ভারত দলে শীর্ষস্থানে ছিলেন। ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ৪৭.১ ওভার বোলিং করে ৫/১১৫ লাভ করেন।[]

ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ডের একমাত্র ইনিংসে ৫১.৩ ওভারে ৫/৭৫ পান। পাশাপাশি টেস্টে তিনি তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৭ রান তুলেন। প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ৭/৭৪ থাকা অবস্থায় অষ্টম উইকেট জুটিতে নরেন তামানে’র সাথে ৫৮ রান যুক্ত করতে সমর্থ হয়েছিলেন।[১০]

উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, শারীরিকভাবে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থেকে অনেকগুলো দীর্ঘ স্পেলে বোলিং করেন তিন। লেগ সাইডে ঘণ্টাখানেক বোলিং করে লেগ সাইডেই ফিল্ডিং সাজিয়েছেন। তবে, লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে থেকে সরে এসে অফ স্ট্যাম্পে আক্রমণধর্মী বোলিং করলে অধিকতর সফল হতে পারতেন।[১১] ১৯৫৯ সালের এ সফরে প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলো থেকে ৭৯ উইকেট পান। কেবলমাত্র, সুভাষ গুপ্তে ৯৫ উইকেট নিয়ে তার তুলনায় এগিয়েছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি

[সম্পাদনা]

১৯৫৯-৬০ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে শুরুতে সফল হয়েছিলেন। অস্ট্রেলীয় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কলিন ম্যাকডোনাল্ডলেস ফাভেলকে বোল্ড করেন। মাদ্রাজের পরের টেস্টে কম সফল হন। প্রথম দুই টেস্টে অংশ নেন। মাত্র দুই উইকেট পান তিনি। এরফলে, তাকে টেস্ট দলের বাইরে রাখা হয়।

১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে খেলার জন্যে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কলকাতায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে আবারও রমাকান্ত দেশাইয়ের সাথে বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন। প্রথম ইনিংসে ৪৬-২০-৯৩-৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[১২] কিন্তু, পরের তিন ইনিংসে মোটে দুই উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে, আবারও তাকে স্থানচ্যূত হতে হয়।

৫ মে, ২০১২ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে নতুন দিল্লি এলাকায় সুরেন্দ্রনাথের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]