সিক্স পয়েন্ট গ্রুপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সিক্স পয়েন্ট গ্রুপ ছিল একটি ব্রিটিশ নারীবাদী প্রচারাভিযান গোষ্ঠী, লেডি রোন্ডা ১৯২১ সালে এটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছয়টি ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আইন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চাপ দেওয়ার জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

লক্ষ্য[সম্পাদনা]

ছয়টি মূল নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল:

  1. শিশু নির্যাতনের বিষয়ে সন্তোষজনক আইন;
  2. বিধবা মায়ের জন্য সন্তোষজনক আইন;
  3. অবিবাহিত মা এবং তার সন্তানের জন্য সন্তোষজনক আইন;
  4. বিবাহিত পিতামাতার জন্য অভিভাবকত্বের সমান অধিকার;
  5. শিক্ষকদের জন্য সমান বেতন
  6. সিভিল সার্ভিসে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ।

পরবর্তীতে এগুলি নারীদের জন্য সমানতার ছয়টি সাধারণ দফায় পরিবর্তিত হয়েছিল, সেগুলি হল: রাজনৈতিক, পেশাগত, নৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আইনি।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯২১ সালে লেডি রোন্ডা ছয়টি ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আইন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চাপ দেওয়ার জন্য গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯২১ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত সচিব ছিলেন প্রাক্তন ভোটাধিকার আন্দোলনকারী উইনিফ্রেড মায়ো।[১] ১৯২০ এর দশকে, এটি সক্রিয় হয়েছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জএর মাধ্যমে একটি সমান অধিকার চুক্তি পাস করার চেষ্টায়।

দলটি নারী ও পুরুষের মধ্যে যথাযথসমতার নীতিতে প্রচারণা চালিয়েছিল। এই 'পুরাতন নারীবাদ' বা 'সমতা নারীবাদ' কখনো কখনো সেই সময়ের অন্যান্য নারী গোষ্ঠীর 'নতুন নারীবাদ' বা 'কল্যাণমূলক নারীবাদ'-এর বিপরীতে ছিল, যেমন ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ সোসাইটিজ ফর ইক্যুয়াল সিটিজেনশিপ, যারা শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষাবাদী আইন চেয়েছিল।[২]

সদস্যদের মধ্যে প্রাক্তন জঙ্গি ভোটাধিকারী - যেমন ডরোথি ইভান্স, ফ্লোরেন্স ম্যাকফারলেন, মনিকা হোয়াটলি, হেলেন আর্চডেল, শার্লট মার্শ এবং থেরেসা গার্নেট[৩] ছিলেন এবং সেই সঙ্গে উইনিফ্রেড হোল্টবি, ভেরা ব্রিটেন এবং ক্যারোলিন হ্যাসলেটের মতো অল্পবয়সী মহিলারাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।[৪] যদিও এর সদস্য সংখ্যা সাধারণত ৩০০ এর নিচেই থাকত, তবুও সিক্স পয়েন্ট গ্রুপ আন্তঃযুদ্ধের বছর এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছিল।[২] এটি ঐতিহ্যগত সাংবিধানিক পদ্ধতিতে প্রচারণা চালায়। এর বেশিরভাগ কাজগুলি এদের জার্নাল, টাইম অ্যাণ্ড টাইডের মাধ্যমে করা হয়েছিল। এটি যথাযথ সরকারের মন্ত্রীদের কাছে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, জনসভার আয়োজন করেছিল এবং প্রধান সংবাদপত্রগুলিতে চিঠি লিখেছিল।

১৯৩৩ সাল থেকে, ওপেন ডোর কাউন্সিলের সাথে, এটি বিবাহিত মহিলাদের কাজের অধিকারের জন্য আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়।

এটি আয়কর সংস্কার কাউন্সিল এবং ১৯৩৮ সালে বিবাহিত মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠা করে ছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সিক্স পয়েন্ট গ্রুপ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারণা চালায়। সিভিল ডিফেন্স সার্ভিসে মহিলা স্বেচ্ছাসেবীরা পুরুষদের তুলনায় মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ বেতন পান এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁরা আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন যে ১৯৩৯ সালের ব্যক্তিগত আঘাত (জরুরী বিধান) আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষতিপূরণ পুরুষ / মহিলা প্রাপকদের মধ্যে আলাদা ছিল। তাঁরা ১৯৪১ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান অভিযানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন এবং পরবর্তীকালে সিভিল সার্ভিসে সমান বেতন নিশ্চিত করার জন্য ১৯৪৪ সাল থেকে এর পাশাপাশি ওপেন ডোর কাউন্সিল এবং ফসেট সোসাইটিপরিচালত সমান বেতন প্রচারণার কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।

এই গোষ্ঠীটি যুদ্ধোত্তর সময়ে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রেখেছিল। বিবাহিত মহিলাদের আরও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বৈবাহিক কার্যবিধি এবং সম্পত্তি আইন পরিবর্তন করার প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল। হ্যাজেল হাঙ্কিন্স হ্যালিনান ১৯২২ সালে সংগঠনে যোগদানের পর ১৯৫০ এর দশকে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৬৭ সাল থেকে, গোষ্ঠীটি বিভিন্ন বিষয়ে অন্যান্য মহিলা দলের সমন্বয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ১৯৭০ এর দশকে এর সেক্রেটারি ছিলেন হ্যাজেল হাঙ্কিন্স হ্যালিনান[২] ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিক থেকে অল্পবয়সী মহিলাদের নিয়োগে ব্যর্থতার কারণে গোষ্ঠীর সদস্যতা কমতে থাকে। এটি ১৯৮০ সালে স্থগিত হয়ে যায় এবং অবশেষে ১৯৮৩ সালে বন্ধ হয়।

সংরক্ষণাগার[সম্পাদনা]

সিক্স পয়েন্ট গ্রুপের আর্কাইভগুলি লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির মহিলা লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত হয়, উল্লেখ্য ৫এসপিজি আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Winifred Mayo"Spartacus Educational (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২২ 
  2. Gordon, Peter; Doughan, David (২০০১)। "Six Point Group"। Dictionary of British Women's Organisations, 1825-1960। Woburn Press। পৃষ্ঠা 128। আইএসবিএন 0-7130-0223-9 
  3. Crawford, Elizabeth (২০০৩-০৯-০২)। The Women's Suffrage Movement: A Reference Guide 1866-1928 (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-1-135-43402-1 
  4. Clay, Catherine (২০১৮-০৮-৩১)। Time and Tide: The Feminist and Cultural Politics of a Modern Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। Edinburgh University Press। আইএসবিএন 978-1-4744-1820-1