সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ

League of Nations
Société des Nations
১৯২০–১৯৪৬
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের জাতীয় পতাকা
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের অর্ধ-প্রাতিষ্ঠানিক প্রতীক (১৯৩৯)
অ্যানাক্রোনাস বিশ্ব মানচিত্রটি তার ২৬ বছরের ইতিহাসে লীগের সদস্য রাষ্ট্রগুলি দেখাচ্ছে।
অ্যানাক্রোনাস বিশ্ব মানচিত্রটি তার ২৬ বছরের ইতিহাসে লীগের সদস্য রাষ্ট্রগুলি দেখাচ্ছে।
অবস্থাআন্তঃসরকারী সংস্থা
সদর দপ্তরজেনেভা[ক]
প্রচলিত ভাষাফরাসিইংরেজি
মহাসচিব 
• ১৯২০–১৯৩৩
স্যার এরিক ড্রুমোন্ড
• ১৯৩৩–১৯৪০
জোসেফ আভেনল
• ১৯৪০–১৯৪৬
সিয়ান লেসটের
ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল 
• ১৯১৯–১৯২৩
জিন মনেট
• ১৯২৩–১৯৩৩
জোসেফ আভেনল
• ১৯৩৭–১৯৪০
সিয়ান লেসটের
ঐতিহাসিক যুগদুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়
১০ জানুয়ারি ১৯২০
• প্রথম সম্মেলন
১৬ জানুয়ারি ১৯২০
• বিগঠন
২০ এপ্রিল ১৯৪৬
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
ইউরোপীয় ঐক্যমত্য
জাতিসংঘ
  1. ^ সদরদপ্তর প্রথমত ১ নভেম্বর ১৯২০ থেকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভার প্যালাইস উইলসনে ছিল। পরবর্তীতে ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ থেকে সেটি জেনেভারই প্যালেস অব ন্যাশনস-এ স্থানান্তরিত হয়। যেটি লীগ অব ন্যাশনসের জন্যই তৈরি হয়েছিল।

জাতিসমূহের সংঘ বা লীগ অব নেশন্‌স (ইংরেজি: League of Nations; ফরাসি: Société des Nations) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯২০ সালের ১০ই জানুয়ারি প্যারিস শান্তি আলোচনার ফলস্বরূপ এ সংস্থাটির জন্ম। পৃথিবীতে বৈশ্বিক শান্তি রক্ষায় সর্বপ্রথম সংস্থাটি হল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ।[১] সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তিপত্র বা কভেন্যান্ট (covenant) অনুযায়ী এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল সম্মিলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থাঅসামরিকীকরণের মাধ্যমে যুদ্ধ এড়ানো এবং সমঝোতাসালিশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বের নিরসন করা।[২] অন্যান্য লক্ষ্যের মধ্যে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, আদিবাসীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, বৈশ্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, মাদক ও মানব পাচার রোধ, অস্ত্র কেনাবেচা রোধ এবং ইউরোপের সংখ্যালঘু ও যুদ্ধবন্দীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ অন্যতম।[৩] ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৫-এর মধ্যে সংস্থাটির সর্বোচ্চ সদস্যসংখ্যা ছিল ৫৮টি।

১৮৬৪ জেনেভা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক আইনের প্রাথমিক সূত্রগুলির মধ্যে একটি

বহু বছরের কূটনৈতিক শৃঙ্খল ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন ও মৌলিক কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি ধারনার ফসল ছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ। সংস্থাটির অধীনে কোন আলাদা সৈন্যবাহিনী ছিল না। বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সংশোধন ও সংস্কার, অন্য দেশের ওপর অর্থনৈতিক শাস্তি আরোপ বা প্রয়োজনবোধে শক্তি প্রয়োগের বেলায় সংস্থাটি পুরোপুরি বৃহৎ শক্তিবর্গের ওপর নির্ভরশীল থাকত। অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তিবর্গও বিভিন্ন প্রয়োজনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছিল। শাস্তিপ্রয়োগ বা অবরোধ আরোপ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আহত করতে পারে ভেবে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকে সংস্থাটি। ইতালো-আবিসিনিয়ান যুদ্ধের সময় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ অভিযোগ করে যে ইতালীয় সৈন্যরা রেড ক্রসের মেডিকেল তাঁবুগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। প্রত্যুত্তরে বেনিতো মুসোলিনি বলেছিলেন "চড়ুই যখন চিৎকার-চেঁচামেচি করে তখন জাতিপুঞ্জ সরব হয়, কিন্তু ঈগল আহত হলে চুপ করে বসে থাকে।"[৪]

অল্প কিছু সাফল্য এবং শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি ব্যর্থতার পর অবশেষে ত্রিশের দশকে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ অক্ষশক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে প্রচণ্ডভাবে ব্যর্থ হয়। জার্মানির সাথে সাথে জাপান, ইতালি, স্পেন ও অন্যান্য দেশ সংস্থাটি থেকে সরে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতেই এটা প্রমাণ হয়ে যায় যে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে জাতিপুঞ্জ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সংস্থাটি মাত্র ২৭ বছর টিকে ছিল। বর্তমান জাতিসংঘ বিশ্বযুদ্ধের পরে এর স্থলাভিষিক্ত হয় এবং সংস্থাটির একাধিক সহযোগী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Christian, Tomuschat (১৯৯৫)। The United Nations at Age Fifty: A Legal Perspective। Martinus Nijhoff Publishers। পৃষ্ঠা 77। আইএসবিএন 9789041101457 
  2. "Covenant of the League of Nations"। The Avalon Project। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১১ 
  3. দেখুন অনুচ্ছেদ ২৩, "Covenant of the League of Nations" , "Treaty of Versailles"  and Minority Rights Treaties.
  4. Jahanpour, Farhang। "The Elusiveness of Trust: the experience of Security Council and Iran" (পিডিএফ)। Transnational Foundation of Peace and Future Research। পৃষ্ঠা 2। ২৭ জুন ২০০৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০০৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]