মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল মাদ্রাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল মাদ্রাসা, ময়মনসিংহ
মাদ্রাসার লোগো
ধরনএমপিও ভুক্ত
স্থাপিত১৯৬৫; ৫৯ বছর আগে (1965)
প্রতিষ্ঠাতাস্থানীয় আলেম
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
অধ্যক্ষমাওলানা মতিউর রহমান
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তিবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
শিক্ষার্থীআনু. ১০০০
ঠিকানা
পরিষদের নিকটে
, , ,
শিক্ষাঙ্গনশহুরে
EIIN সংখ্যা১১১৯৭৬
ক্রীড়াক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন
এমপিও সংখ্যা৪০১০০১২৪০১
ওয়েবসাইটhttp://111976.ebmeb.gov.bd/

মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল স্নাতকোত্তর মাদ্রাসা ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার একটি উল্লেখযোগ্য আলিয়া মাদ্রাসা[১] এটি বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি কামিল মাদ্রাসা[২] ১৯৩৩ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষাপ্রিয় ব্যক্তি কর্তৃক মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] এটি মুক্তাগাছা উপজেলার উপজেলা পরিষদের সম্মুখের টাঙ্গাইল মহাসড়কের দিকে এক কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এটির দাখিল ও আলিম শ্রেণী বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক পরিচালনা করা হয়। মাদ্রাসাটির এমপিও নম্বর ৪০১০০১২৪০১ এবং ইআইআইএন নম্বর ১১১৯৭৬। মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মাওলানা মতিউর রহমান।[৪] মাদ্রাসাটি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে মুক্তাগাছা উপজেলার সেরা মাদ্রাসা স্বীকৃতি লাভ করে।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৩৩ সালের ২৪ জানুয়ারি মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করার পরে তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান আব্বাছ আলীর নামানুসারে মাদ্রাসাটি নামকরণ করা হয়।[৪] তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সাহায্য করেছিলেন। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার সময় একটি দাখিল মাদ্রাসা হিসাবে চালু হয়েছিলো, এরপর ১৯৪৬ সালে মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণী চালু করার অনুমতি লাভ করে। আলিম শ্রেণীর অনুমোদন লাভ করার পরপরই ফাজিল শ্রেণীর অনুমোদন লাভ করে। এরপরে স্থানীয় শিক্ষিত ব্যক্তিদের প্রচেষ্টার ফলে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক মাদ্রাসাটিতে ১৯৫৯ সালে আলিয়া মাদ্রাসার কামিল শ্রেণী অনুমোদন লাভ করে।

এরপর ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ফাজিল ও কামিল ডিগ্রির মানকে সাধারণ শিক্ষার মানের অনুরুপ করতে চাইলে এই মাদ্রাসাটি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে। এরপরে ২০১৬ সালে ঢাকায় এফেলিয়েটিং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে মাদ্রাসাটি ইবি থেকে এখানে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৭ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাদ্রাসাটিতে অনার্স কোর্স চালু করা হয়।

শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

মাদ্রাসাটির দাখিল ও আলিম পরীক্ষার ফলাফল জেলার মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে থাকে।[৫] মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম শ্রেণীতে মানবিক ও বিজ্ঞান উভয় শাখা বিদ্যমান রয়েছে। এবং ফাজিল ও কামিল শ্রেণীতে কিছু বিভাগে অনার্স কোর্স চালু আছে। এই মাদ্রাসার বহু শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে। মাদ্রাসার ফাজিল সেকশনে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং দাওয়াহ বিভাগ চালু রয়েছে। মাদ্রাসাটি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের কোড ১২০৯৪ এবং উপবৃত্তি কোড ৩৩৯৬৫০২। এছাড়াও এই মাদ্রাসার অধীনে হেফজ মাদ্রাসা পরিচালিত হয়।

সুযোগ-সুবিধা[সম্পাদনা]

মাদ্রাসাটি আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি মাদ্রাসা। শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এই মাদ্রাসায়। বিশাল আকারের খেলার মাঠ, পড়াশোনার জন্য লাইব্রেরী, গবেষণাগার রয়েছে। এছাড়া মেয়েদের জন্য কমন রুম ও অভ্যন্তরীণ সময় কাটানোর জন্য খেলাধুলার সুযোগ রয়েছে। মাদ্রাসার এরিয়ার চারিদিক দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে।

  • খেলার মাঠ: এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার ক্ষেত্রে সাক্ষরতার প্রমান রেখেছে। মাদ্রাসার বিশাল মাথে বেশিরভাগ সময় ছাত্ররা ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল খেলে থাকে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থেকে মাঠের উন্নয়ন ও খেলাধুলার সামগ্রী বহন করা থাকে।
  • মসজিদ: মাদ্রাসায় একটি আধুনিক মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদটি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকগণ নামাজ পরেন।
  • গ্রন্থাগার: মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত লাইব্রেরি রয়েছে। দাখিল থেকে শুরু করে কামিল পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বই ধার নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। মাদ্রাসার গ্রন্থাগারে আল কুরআন, আল হাদিস, তাফসীর, আল ফিকহ, ইসলামের ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ের উপর বহু মূল্যবান বই রয়েছে।
  • বিজ্ঞানাগার: মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের গবেষণা ও ল্যাব ক্লাস করার জন্য মাদ্রাসায় উন্নতমানের বিজ্ঞানানার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে ছাত্ররা পাঠদান সময়ে ও অবসর সময়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে।
  • ছাত্রাবাস: মাদ্রাসার দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। এই ছাত্রাবাসের ধারণ ক্ষমতা ১০০ জন ছাত্র, ছাত্রাবাসের প্রতিটি কক্ষে ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্রতিদিন, যমুনা (২০২২-০৯-১৪)। "আব্বাছিয়া কামিল মাদরাসার ৪ তলা ভবনের উদ্বোধন | যমুনা প্রতিদিন"Jamuna Protidin: Bangla News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. দেশান্তর .কম (২০২২-০৯-১৪)। "মুক্তাগাছায় আব্বাছিয়া কামিল মাদরাসার ৪ তলা ভবনের উদ্বোধন - দেশান্তর সারা-বাংলা"দেশান্তর (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসা | Page"www.abbasiakamilmadrasah.com। ২০২২-১১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৪ 
  4. "মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল মাদ্রাসার প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন"tangailtimes24.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৪ 
  5. "ফুলপুর মুক্তাগাছা সরাইল পলাশ শায়েস্তাগঞ্জ ভালুকায় সেরা যারা"www.jugantor.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৪