আনিসুজ্জামান (অধ্যাপক): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করেছে
ফটো প্রতিস্থাপন
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{Infobox Writer
{{Infobox Writer
| name = আনিসুজ্জামান
| name = আনিসুজ্জামান
| image =Prof Anisuzzaman2011 by FLC.jpg|thumb|right|200px|চিত্রগ্রাহক-ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ২০১১
| image =[[File:Anisuzzaman 2016.jpg|thumb|Photo of literateur Professor Anisuzzamanof Bangladesh 2016]]Prof Anisuzzaman2011 by FLC.jpg|thumb|right|200px|চিত্রগ্রাহক-ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ২০১১
| imagesize =
| imagesize =
| caption =অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
| caption =অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

১৫:২০, ৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আনিসুজ্জামান
Photo of literateur Professor Anisuzzamanof Bangladesh 2016
Prof Anisuzzaman2011 by FLC.jpg
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
পেশালেখক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারবাংলা একাডেমি, একুশে পদক, আনন্দ পুরস্কার

আনিসুজ্জামান (জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭) বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও লেখক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক। তিনি প্রত্যক্ষভাবে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিযে তাঁর গবেষণা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি একজন প্রফেসর অ্যামিরিটাস।[১]

জন্ম

আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম এ টি এম মোয়াজ্জেম। তিনি ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন, গৃহিনী হলেও লেখালেখির অভ্যাস ছিল। পিতামহ শেখ আবদুর রহিম ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক। আনিসুজ্জামানরা ছিলেন পাঁচ ভাই-বোন। তিন বোনের ছোট আনিসুজ্জামান, তারপর আরেকটি ভাই। বড় বোনও নিয়মিত কবিতা লিখতেন। বলা যায়, শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমৃদ্ধ ছিল তাঁদের পরিবার।

শিক্ষাজীবন

কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে শিক্ষাজীবনের শুরু করেন আনিসুজ্জামান। ওখানে পড়েছেন তৃতীয় শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। পরে এদেশে চলে আসার পর অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন খুলনা জেলা স্কুলে। কিন্তু বেশিদিন এখানে পড়া হয় নি। একবছর পরই পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় ভর্তি হন প্রিয়নাথ হাইস্কুলে। আনিসুজ্জামান ছিলেন প্রিয়নাথ স্কুলের শেষ ব্যাচ। কারণ তাঁদের ব্যাচের পরেই ওই স্কুলটি সরকারি হয়ে যায় এবং এর নাম-পরিবর্তন করে রাখা হয় নবাবপুর গভর্নমেন্ট হাইস্কুল। সেখান থেকে ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে। জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে আইএ পাস করে বাংলায় অনার্স নিয়ে বিএ ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অনার্স পাস করলেন এবং ১৯৫৭ -এ এমএ পাস করার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৮ -এ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির প্রথম গবেষণা বৃত্তি পেলেন।[২] কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শূন্যতায় বাংলা একাডেমির বৃত্তি ছেড়ে দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে। সে সময়ে বিভাগীয় প্রধান ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন শহীদ মুনীর চৌধুরীকে১৯৫৬১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক সম্মান এবং এমএতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ "নীলকান্ত সরকার" বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ড. আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য যোগদান করেন। বিষয় ছিল 'ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারায ১৭৫৭-১৯১৮'। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। গবেষণার বিষয় ছিল 'উনিশ শতকের বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস : ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল'। [৩]

কর্মজীবন

আনিসুজ্জামান ছিলেন ঢাকাচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। বাংলা একাডেমির বৃত্তি ছেড়ে দিয়ে আনিসুজ্জামান যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ২২ বছর। প্রথমে অ্যাডহক ভিত্তিতে চাকরি হলো তিন মাসের। কথা ছিল গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হলেই চাকরি শেষ হয়ে যাবে। চাকরি চলে যাওয়ার পর কয়েক মাস বেকার থাকলেন। তারপর পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের গবেষণা বৃত্তি পেলেন। এর কয়েক মাস পর অক্টোবর মাসে আবার যোগ দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায়। ১৯৬২ সালে তাঁর পিএইচডি হয়ে গেল। তাঁর পিএইচডির অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল 'ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৭৫৭-১৯১৮)'। ১৯৬৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন ডক্টরাল ফেলো হিসেবে বৃত্তি পেয়ে। ১৯৬৯ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অবস্থান করেছিলেন। পরে ভারতে গিয়ে প্রথমে শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন 'বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন। জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-প্রকল্পে অংশ নেন ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে। পরে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে আবার যুক্ত হন। তিনি মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ (কলকাতা), প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। এছাড়াও তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটবাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি শিল্পকলাবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা যামিনী এবং বাংলা মাসিকপত্র কালি ও কলম-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে তাঁর পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। মুজিবনগরে তিনি তাজউদ্দীনের বিচক্ষণ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে কাছ থেকে দেখেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মহান ভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্র উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলন, রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী আন্দোলন এবং ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।

প্রকাশিত গ্রন্থাবলী

গবেষণা গ্রন্থ

বাঙালি নারী

বিদেশি সাহিত্য অনুবাদ

  • অস্কার ওয়াইল্ড|অস্কার ওয়াইল্ডের]] An Ideal Husband এর বাংলা নাট্যরূপ 'আদর্শ স্বামী' (১৯৮২)
  • আলেক্সেই আরবুঝুভের An Old World Comedy -র বাংলা নাট্যরূপ 'পুরনো পালা' (১৯৮৮)

গ্রন্থ একক ও যৌথ সম্পাদনা

  • রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৮)
  • বিদ্যাসাগর-রচনা সংগ্রহ (যৌথ, ১৯৬৮)
  • Culture and Thought (যৌথ, ১৯৮৩)
  • মুনীর চৌধুরী রচনাবলী ১-৪ খণ্ড (১৯৮২-১৯৮৬)
  • বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খণ্ড (যৌথ, ১৯৮৭)
  • অজিত গুহ স্মারকগ্রন্থ (১৯৯০)
  • স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন (১৯৯২)
  • শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ (১৯৯৩)
  • নজরুল রচনাবলী ১-৪ খণ্ড (যৌথ, ১৯৯৩)
  • SAARC : A People's Perspective (১৯৯৩)
  • শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথা (১৯৯৫)
  • মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচনাবলী (১ ও ৩ খণ্ড, ১৯৯৪-১৯৯৫)
  • নারীর কথা (যৌথ, ১৯৯৪)
  • ফতোয়া (যৌথ, ১৯৯৭)
  • মধুদা (যৌথ, ১৯৯৭)
  • আবু হেনা মোস্তফা কামাল রচনাবলী (১ম খণ্ড, যৌথ ২০০১)
  • ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফরাসি শব্দসংগ্রহ (যৌথ ২০০৩)
  • আইন-শব্দকোষ (যৌথ, ২০০৬)

অন্যান্য গ্রন্থাবলী

  • মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য (১৯৬৪)
  • মুনীর চৌধুরী (১৯৭৫)
  • স্বরূপের সন্ধানে (১৯৭৬)
  • পুরোনো বাংলা গদ্য (১৯৮৪)
  • আমার একাত্তর (১৯৯৭)
  • মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপর (১৯৯৮)
  • আমার চোখে (১৯৯৯)
  • কাল নিরবধি (২০০৩)
  • Factory correspondence and other Bengali Documents in the India o ffice Library and Records (1981)
  • Creativity , Identity and Reality (1991)
  • Cultural Pluralism (1993)
  • Identity, Religion and Recent history (1995)

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৬)
  • দাউদ পুরস্কার (১৯৬৫)
  • বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭০)
  • একুশে পদক (১৯৮৫)
  • আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৩)
  • রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি.লিট (২০০৫)[৪]
  • এশিয়াটিক সোসাইটিতে (কলকাতা) ইন্দিরাগান্ধী স্মারক বক্তৃতা
  • কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরত্‍চন্দ্র স্মারক বক্তৃতা
  • নেতাজী ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সে নেতাজী স্মারক বক্তৃতা
  • অণুষ্টুপের উদ্যোগে সমর সেন স্মারক বক্তৃতা প্রদান।
  • পদ্মভূষণ পদক (২০১৪)[৫]

তথ্যসূত্র

  1. http://www.rtnn.net/bangla/newsprint/page/106759
  2. আনিসুজ্জামান গুণীজন
  3. ড. আনিসুজ্জামান : একজন সফল শিক্ষাবিদের প্রতিকৃতি দৈনিক কালের কন্ঠ
  4. রবীন্দ্রভারতী সম্মানসূচক ডি.লিট.
  5. Padma awardees 2014

বহিঃসংযোগ