বাঙালির নোবেল বিজয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাঙালি নোবেলজয়ী

নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মাননা। এটি একটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত মোট চারজন বাঙালি ও একটি বাঙালি প্রতিষ্ঠান নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। তারা হলেন:

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাঙালিদের তালিকা[সম্পাদনা]

১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার প্রচলনের পর থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৪ জন বাঙালি ব্যক্তিত্ত্ব এই পুরস্কার জয় করেছেন। সর্বপ্রথম বাঙালি হিসাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ১৯১৩ সালে, সাহিত্যে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে এবং ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে এই পুরস্কার জয় করেন। ২০১৯ সালে পুনরায় অর্থনীতিতে নোবেল পান অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্ষ ছবি নাম দেশ পুরস্কারপ্রাপ্তির কারণ
১৯১৩ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ ভারত তার কাব্যের অতি উচ্চমানের সংবেদনশীল, পরিশুদ্ধ ও সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পংক্তির জন্য, যার মাধ্যমে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তার কাব্যিক চিন্তা-চেতনা নিজস্ব ইংরেজি শব্দে প্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন, যা পশ্চিমা সাহিত্যেরই একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
১৯৯৮ অমর্ত্য সেন ভারত কল্যাণ অর্থনীতিতে মৌলিক অবদানের জন্য।
২০০৬ মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে ।
২০১৯ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূর করার জন্য পরীক্ষামূলক পথ সন্ধানের স্বীকৃতি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান।

বাঙালি নোবেলজয়ীদের অবদান[সম্পাদনা]

বাঙালি নোবেলজয়ীরা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তার কাব্য, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক, গান এবং প্রবন্ধ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার লাভ বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির জন্য একটি বিরাট অর্জন।

ড. ইউনূস ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করেছেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধন করেছেন। ড. ইউনুস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে একটি অনুপ্রেরণা।

অমর্ত্য সেন দারিদ্র্য, অসমতা এবং ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি দারিদ্র্য, অসমতা এবং ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত তার গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি দারিদ্র্য, অসমতা এবং ক্ষমতায়ন সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছেন।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি এবং তার সহকর্মীরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছেন।

বাঙালিরা বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে, যার মধ্যে নোবেল পুরস্কারও অন্যতম। বাংলা ভাষাভাষী ব্যক্তিরা নোবেল পুরস্কার জিতেছেন সাহিত্য, অর্থনীতি, শান্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। বাঙালি নোবেলজয়ীদের অবদান নিম্নরূপ:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলেন প্রথম বাঙালি এবং এশীয় নোবেল বিজয়ী। তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান এবং প্রবন্ধ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তিনি বিশ্বসাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত। রবীন্দ্রনাথের অবদানের মধ্যে রয়েছে:

  • তিনি বাংলা সাহিত্যের এক নতুন যুগের সূচনা করেন।
  • তিনি বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি লাভ করান।
  • তিনি বিশ্বসাহিত্যে এক অনন্য স্থান অর্জন করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস হলেন বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান। গ্রামীণ ব্যাংক একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান যা দরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে। ড. ইউনূসের অবদানের মধ্যে রয়েছে:

  • তিনি ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
  • তিনি দরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
  • তিনি বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখেন।

অমর্ত্য সেন

অমর্ত্য সেন হলেন একজন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। অমর্ত্য সেন কল্যাণ অর্থনীতির একজন প্রবক্তা। তিনি দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করেন। অমর্ত্য সেনের অবদানের মধ্যে রয়েছে:

  • তিনি কল্যাণ অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
  • তিনি দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূরীকরণের জন্য কাজ করেন।
  • তিনি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করেন।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন একজন ভারতীয়-আমেরিকান অর্থনীতিবিদ। তিনি ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূরীকরণের জন্য কাজ করেন। তিনি ক্ষুদ্রঋণ, সামাজিক নিরাপত্তা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করেন। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানের মধ্যে রয়েছে:

  • তিনি দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূরীকরণের জন্য কাজ করেন।
  • তিনি ক্ষুদ্রঋণ, সামাজিক নিরাপত্তা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করেন।
  • তিনি বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখেন।

গ্রামীণ ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান যা ১৯৭৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে। গ্রামীণ ব্যাংকের অবদানের মধ্যে রয়েছে:

  • এটি দরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার প্রসার ঘটায়।
  • এটি দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখে।

বাঙালি নোবেলজয়ীদের অবদান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাদের অবদান বাংলা ভাষাভাষী মানুষের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য মানুষের জন্যও অনুপ্রেরণা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জন[সম্পাদনা]

বিশ্বকবি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাদাকালো আবক্ষ আলোকচিত্র
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ
জন্ম(১৮৬১-০৫-০৭)৭ মে ১৮৬১
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, কলকাতা, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
মৃত্যু৭ আগস্ট ১৯৪১(1941-08-07) (বয়স ৮০)
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, কলকাতা, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
সমাধিস্থলকলকাতা
ছদ্মনামভানুসিংহ ঠাকুর (ভণিতা)
পেশা
ভাষাবাংলা, ইংরেজি
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারতীয়
সময়কালবঙ্গীয় নবজাগরণ
সাহিত্য আন্দোলনপ্রাসঙ্গিক আধুনিকতা
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিগীতাঞ্জলি (১৯১০), রবীন্দ্র রচনাবলী, গোরা (১৯১০), আমার সোনার বাংলা, জনগণমন, ঘরে-বাইরে
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারনোবেল পুরস্কার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
(১৯১৩)
দাম্পত্যসঙ্গীমৃণালিনী দেবী (বি. ১৮৮৩–১৯০২)
আত্মীয়ঠাকুর পরিবার

স্বাক্ষর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন বাঙালি কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাংলা ভাষার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকদের অন্যতম। তার সাহিত্যকর্ম বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদিত হয়েছে এবং তিনি বিশ্বসাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় এবং এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি যিনি এই সম্মাননা লাভ করেন। নোবেল কমিটির মতে, "তার গভীর সংবেদনশীল, তাজা এবং সুন্দর শ্লোকের কারণে, যার দ্বারা, তিনি তার কাব্যিক চিন্তাভাবনা করেছেন, তার নিজস্ব ইংরেজিতে প্রকাশ করেছেন শব্দ, পশ্চিমের সাহিত্যের একটি অংশ।"

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জন ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের জন্য একটি বড় অর্জন। এই পুরস্কারটি ভারতীয়দের মধ্যে গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এবং এটি বিশ্ববাসীর কাছে ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পটভূমি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাল্যকাল থেকেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ "সোনারতরী" ১৮৭৫ সালে প্রকাশিত হয়। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে "গীতাঞ্জলি", "চিত্রা", "কপালকুণ্ডলা", "শেষের কবিতা" ইত্যাদি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তার কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান এবং প্রবন্ধ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদিত হয়েছে। তিনি বিশ্বসাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালের ২৪ অক্টোবর নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই পুরস্কারটি তাকে ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস প্রস্তাব করেন। ইয়েটস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা অনুবাদ করেছিলেন এবং তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা সম্পর্কে খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলেন।

নোবেল পুরস্কার লাভের পর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভের পর ভারতে এবং বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। এই পুরস্কারটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের জন্য একটি বড় অর্জন ছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভের পর তার সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রাখেন। তিনি আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম রচনা করেন। তিনি বিশ্বশান্তি ও মানবতার জন্যও কাজ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের অমর কবি ও দার্শনিক হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য অনেক। এই পুরস্কারটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের জন্য একটি বড় অর্জন ছিল। এটি ভারতীয়দের মধ্যে গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এবং এটি বিশ্ববাসীর কাছে ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

এই পুরস্কারটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্মের বিশ্বজনীনতাকেও প্রতিষ্ঠিত করে। তার সাহিত্যকর্ম শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদিত হয় এবং বিশ্বসাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয় ঐক্য ও গৌরববোধ বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে পড়েছে। তার সাহিত্যকর্ম মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব নিম্নরূপ:

  • ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উন্নয়ন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জন ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পুরস্কারটি ভারতীয়দের মধ্যে সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করে এবং এটি ভারতীয় সাহিত্যের বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসারে সহায়তা করে।
  • সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম সমাজের বিভিন্ন সমস্যা ও অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
  • মানবতাবাদের প্রচার: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন মহান মানবতাবাদী। তার সাহিত্যকর্মে তিনি মানবতার মহিমা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার অর্জন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই পুরস্কারটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং একজন মহান সাহিত্যিক, দার্শনিক ও মানবতাবাদী হিসেবে চিরস্মরণীয় করে তুলেছে।

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জন[সম্পাদনা]

মুহাম্মদ ইউনুস
সুইজারল্যান্ডের ডেভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে মুহাম্মদ ইউনুস, ২৫ জানুয়ারি ২০১২
জন্ম (1940-06-28) ২৮ জুন ১৯৪০ (বয়স ৮৩)
জাতীয়তাবাংলাদেশ বাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
দাম্পত্য সঙ্গীভেরা ফরোস্টেনকো (১৯৭০-১৯৭৯)
আফরোজী ইউনুস (বর্তমান)
কাজের ক্ষেত্রক্ষুদ্রঋণ, কল্যাণমূলক অর্থনীতি, নীতিবিদ্যা
শিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো
ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়
অবদানসমূহগ্রামীণ ব্যাংক
ক্ষুদ্রঋণ
পুরস্কারস্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৮৭)
বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (১৯৯৪)
প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯)
আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার (২০০০)
ভলভো পরিবেশ পুরস্কার (২০০৩)
নোবেল পুরস্কার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার
(২০০৬)

কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল (২০১০)
ওয়েবসাইটhttps://muhammadyunus.org/
স্বাক্ষর

ড. মুহাম্মদ ইউনূস হলেন একজন বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ এবং ব্যাংকার। তিনি ১৯৪০ সালের ২৮শে জুন বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করে।

ড. ইউনুস ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করার জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পটভূমি

ড. ইউনুস ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধন করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের নীতি হলো, "দরিদ্র মানুষকে ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণ প্রদান করা হবে, যা তারা তাদের ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্যোগে বিনিয়োগ করতে পারবে।"

গ্রামীণ ব্যাংকের এই নীতি দরিদ্র মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুদ্রঋণ পেয়েছে। এই ঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ তাদের ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্যোগ শুরু করতে পেরেছে এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পেরেছে।

নোবেল পুরস্কার লাভের পর

ড. ইউনুস নোবেল পুরস্কার লাভের পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। এই পুরস্কারটি গ্রামীণ ব্যাংকের কাজকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

ড. ইউনুস নোবেল পুরস্কার লাভের পর তার কাজ অব্যাহত রাখেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারণ করেন এবং তিনি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নের জন্য কাজ করেন।

ড. ইউনুস ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের একজন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য অনেক। এই পুরস্কারটি গ্রামীণ ব্যাংকের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করে। এই পুরস্কারটি ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার একটি কার্যকর পদ্ধতির স্বীকৃতি প্রদান করে।

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে পড়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুদ্রঋণ পেয়েছে। এই ঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পেরেছে এবং তারা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পেরেছে।

ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ একটি কার্যকর দারিদ্র্য বিমোচন নীতি হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ড. ইউনূস একজন মহান দারিদ্র্য বিমোচন কর্মী। তিনি তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন।

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জন[সম্পাদনা]


অমর্ত্য সেন
জন্ম (1933-11-03) ৩ নভেম্বর ১৯৩৩ (বয়স ৯০)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজ (পিএইচ.ডি.)(বি.এ.)
প্রেসিডেন্সি কলেজ (বি.এ.)
পরিচিতির কারণজনকল্যাণ অর্থনীতি
মানব উন্নয়ন তত্ত্ব
দাম্পত্য সঙ্গীনবনীতা দেবসেন (১৯৫৮–১৯৭৬)
পুরস্কারঅর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার (১৯৯৮)
ভারতরত্ন (১৯৯৯)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রঅর্থনীতি
প্রতিষ্ঠানসমূহহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স
দিল্লী স্কুল অফ ইকোনমিক্স
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলি

অমর্ত্য সেন হলেন একজন ভারতীয়-মার্কিন অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ। তিনি ১৯৩৩ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৫৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

অমর্ত্য সেন ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য এবং মানব উন্নয়ন বিষয়ে তার গবেষণার জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পটভূমি

অমর্ত্য সেন ১৯৫০-এর দশকে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি প্রথমে ভারতের অর্থনীতির উপর গবেষণা করেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি দারিদ্র্য এবং মানব উন্নয়ন বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দারিদ্র্যকে শুধুমাত্র আয়ের নিম্নতার একটি অবস্থা হিসাবে দেখেননি, বরং তিনি দারিদ্র্যকে একটি সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অবস্থা হিসাবেও দেখেছেন।

অমর্ত্য সেন তার গবেষণায় দেখান যে দারিদ্র্য শুধুমাত্র একটি অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, বরং এটি একটি মানবিক সমস্যাও। তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

নোবেল পুরস্কার লাভের পর

অমর্ত্য সেন নোবেল পুরস্কার লাভের পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। এই পুরস্কারটি তার কাজকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

অমর্ত্য সেন নোবেল পুরস্কার লাভের পর তার কাজ অব্যাহত রাখেন। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন, মানব উন্নয়ন এবং সামাজিক নৈতিকতা বিষয়ে কাজ করেন।

অমর্ত্য সেন ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একজন মহান অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন।

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য অনেক। এই পুরস্কারটি দারিদ্র্য এবং মানব উন্নয়ন বিষয়ে তার গবেষণার স্বীকৃতি প্রদান করে। এই পুরস্কারটি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন একটি আন্তর্জাতিক বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করতে সহায়তা করে।

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব

অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে পড়েছে। তার গবেষণা দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নতুন ধারণা এবং পদ্ধতির বিকাশে সহায়তা করেছে। তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার হয়েছে।

অমর্ত্য সেন একজন মহান দারিদ্র্য বিমোচন কর্মী। তিনি তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল পুরস্কার অর্জন[সম্পাদনা]

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
২০১১ সালে এফটি গোল্ডম্যান স্যাকস বিজনেস বুক অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অভিজিৎ
জন্ম (1961-02-21) ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬১ (বয়স ৬৩)
কলকাতা, ভারত
নাগরিকত্বভারত (১৯৬১-২০১৭)
যুক্তরাষ্ট্র (২০১৭-বর্তমান)
দাম্পত্য সঙ্গীঅরুন্ধতী তুলি ব্যানার্জি (বিবাহবিচ্ছেদ)
এস্তের দুফ্লো (২০১৫)
প্রতিষ্ঠানম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি
কাজের ক্ষেত্রঅর্থনৈতিক উন্নয়ন
ঘরানা/গোষ্ঠী/ঐতিহ্যসাউথ পয়েন্ট স্কুল, কলকাতা
শিক্ষায়তনপ্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (বি.এসসি)
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (এমএ)
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচডি)
ডক্টরেট
উপদেষ্টা
এরিক মাসকিন
ডক্টরেট
শিক্ষার্থীরা
এস্তের দুফ্লো (১৯৯৯)[৬]
ডীন কার্লেন[৭]
বেঞ্জামিন জোনস
পুরস্কারঅর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার (২০১৯)

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন-বাঙালি অর্থনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT)-এর ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থনীতি বিভাগের একজন আন্তর্জাতিক অধ্যাপক। তিনি "বৈশ্বিক দারিদ্র্যতা দূরীকরণে" তার কাজের জন্য ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি অমর্ত্য সেন এর পর অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া দ্বিতীয় বাঙালি এবং নোবেলজয়ী চতুর্থ বাঙালি। এছাড়াও অভিজিৎ-এস্থার দম্পতি হলো ৫ম নোবেল বিজয়ী দম্পতি।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পথ

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৬১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, মুম্বাই, ভারতে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালীন সময়ে, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তার স্ত্রী এস্থার দুফ্লোর সাথে পরিচিত হন। দুফ্লো একজন ফরাসি-আমেরিকান অর্থনীতিবিদ যিনি বর্তমানে MIT-এর অর্থনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক। দুফ্লোর সাথে মিলে, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দারিদ্র্য দূরীকরণে কার্যকর নীতিগুলির প্রমাণ-ভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেন। এই পদ্ধতিটি পরীক্ষামূলক গবেষণার উপর ভিত্তি করে, যা একটি নির্দিষ্ট নীতির প্রভাব পরিমাপ করতে একটি পরীক্ষামূলক দল এবং একটি তুলনামূলক দল গঠন করে।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার দুফ্লো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন নীতির উপর পরীক্ষামূলক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আর্থিক পরিষেবাগুলির মতো নীতিগুলি দারিদ্র্য হ্রাস করতে কার্যকর হতে পারে।

নোবেল পুরস্কার অর্জন

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, এস্থার দুফ্লো এবং মাইকেল ক্রেমার ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল কমিটি তাদেরকে "বৈশ্বিক দারিদ্র্যতা দূরীকরণে পরীক্ষামূলক পদ্ধতির প্রভাবশালী ব্যবহারের জন্য" এই পুরস্কার প্রদান করে।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পর, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে তিনি এই পুরস্কারটি বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের জন্য উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন যে তিনি আশা করেন যে এই পুরস্কারটি দারিদ্র্য দূরীকরণে আরও গবেষণা এবং উদ্ভাবনের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল পুরস্কার অর্জনের গুরুত্ব

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল পুরস্কার অর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি দেখায় যে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য পরীক্ষামূলক গবেষণা একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল পুরস্কার অর্জন বাংলাদেশের জন্যও একটি গর্বের বিষয়। তিনি একজন বাঙালি হিসেবে বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জন[সম্পাদনা]

গ্রামীণ ব্যাংক
ধরনBody Corporate (Bank Law)[৮]
শিল্পআর্থিক প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠাকাল২রা অক্টোবর ১৯৮৩
প্রতিষ্ঠাতামুহাম্মদ ইউনূস
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
অবস্থানের সংখ্যা
২,৫৬৮ (জুলাই ২০১৭)[৯]
বাণিজ্য অঞ্চল
বাংলাদেশ
প্রধান ব্যক্তি
মোঃ মোসলেহ উদ্দিন
পণ্যসমূহক্ষুদ্রঋণ
আয়বৃদ্ধি 12,435,830,045 Taka (176.67 million USD) (2017)[১০]
বৃদ্ধি 8,513,832,110 Taka (120.95 million USD) (2010)[১১]
বৃদ্ধি 757,241,322 Taka (10.76 million USD) (2017)[১১]
মোট সম্পদ125,396,957,972 Taka (2010)[১২]
কর্মীসংখ্যা
২০১৩৮ (সেপ্টেম্বর ' ২০১৭)[৯]
ওয়েবসাইটgrameenbank.org.bd

গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করে।

গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করার জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেল পুরস্কার অর্জনের পটভূমি

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের পটভূমি নিম্নরূপ:

  • ১৯৭৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন।
  • গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করে।
  • গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের নীতি হলো, "দরিদ্র মানুষকে ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণ প্রদান করা হবে, যা তারা তাদের ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্যোগে বিনিয়োগ করতে পারবে।"
  • গ্রামীণ ব্যাংকের এই নীতি দরিদ্র মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
  • গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুদ্রঋণ পেয়েছে।
  • এই ঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ তাদের ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্যোগ শুরু করতে পেরেছে এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পেরেছে।

নোবেল পুরস্কার লাভের পর

গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার লাভের পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এই পুরস্কারটি গ্রামীণ ব্যাংকের কাজকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার লাভের পর তার কাজ অব্যাহত রাখে। গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারণ করা হয় এবং গ্রামীণ ব্যাংক বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে।

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের তাৎপর্য অনেক। এই পুরস্কারটি গ্রামীণ ব্যাংকের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করে। এই পুরস্কারটি ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করার একটি কার্যকর পদ্ধতির স্বীকৃতি প্রদান করে।

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে পড়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুদ্রঋণ পেয়েছে। এই ঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পেরেছে এবং তারা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পেরেছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ একটি কার্যকর দারিদ্র্য বিমোচন নীতি হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করে। এই পুরস্কারটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গ্রামীণ ব্যাংক একটি সফল দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি। এটি বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The Nobel Prize in Literature 1913"NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৭ 
  2. "The Nobel Peace Prize 2006"NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৭ 
  3. "The Sveriges Riksbank Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel 1998"NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৭ 
  4. "The Sveriges Riksbank Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel 2019"NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৭ 
  5. "The Nobel Peace Prize 2006"NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-১৭ 
  6. Essays in empirical development economics. Ph.D. dissertation, Massachusetts Institute of Technology.
  7. Karlan, Dean S. (2002), Social capital and microfinance. Ph.D. dissertation, Massachusetts Institute of Technology.
  8. "Grameen Bank Act 2013"The Daily Star। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  9. "Grameen Bank At a Glance"Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  10. "Profit and Loss Account"Grameen Bank। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; P&L2017 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  12. "Balance Sheet (1983-2017) in BDT"Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 

বিষয়শ্রেণী:বাঙালি