নগাঁও কলেজ
নগাঁও মহাবিদ্যালয় | |
বাংলায় নীতিবাক্য | আমাকে অজ্ঞতার অন্ধ অন্ধকার থেকে নিয়ে যাও...আলোর জগতে...জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জগতে। |
|---|---|
| ধরন | সর্বজনীন |
| স্থাপিত | ১৯৪৪ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় |
| সভাপতি | ডঃ শরৎ কুমার দত্ত |
| অধ্যক্ষ | ডঃ শরৎ বরকটকী |
| শিক্ষার্থী | ৩,৫২৬ |
| ঠিকানা | নগাঁও, আসাম, ভারত ২৬°২০′৫৫″ উত্তর ৯২°৪১′০৪″ পূর্ব / ২৬.৩৪৮৬° উত্তর ৯২.৬৮৪৪° পূর্ব |
| শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
| ভাষা | ইংরেজি এবং অসমীয়া |
| পোশাকের রঙ | নীল এবং সাদা |
| ওয়েবসাইট | www |
 | |
নগাঁও কলেজ (অসমীয়া: নগাঁও মহাবিদ্যালয়) হল গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।[১] ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত, এটি আসাম রাজ্যের প্রাচীনতম সহ-শিক্ষা কলেজগুলির মধ্যে একটি।[২] নগাঁও শহরে অবস্থিত, এই প্রতিষ্ঠানটির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।[৩] এটি শুরুতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু পরে, ১৯৪৮ সালে, কলেজটিকে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।[৪] ২২শে ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে, কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ১০ বছরের জন্য স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে।[৫] বছরের পর বছর ধরে, এটি আসামের শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাঠ্যধারার বিভিন্ন পরিসরের প্রস্তাব করার জন্য বিকশিত হয়েছে।[৬]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত, নগাঁও কলেজ ছিল মধ্য আসামের প্রথম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আসাম এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বের প্রাচীনতম একটি। এটি কলেজের গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জননেতা মতিরাম বরার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যিনি সেই সময়ে নগাঁও স্থানীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে ১৯৪৬ সালে নগাঁও (দক্ষিণ পূর্ব) এলএসি থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর, বোরা লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈয়ের মন্ত্রিসভায় ভূমি ও রাজস্ব মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং জমি সংগ্রহ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। কলেজের জন্য তহবিল; তিনি সরকারি ডাক বাংলো অধিগ্রহণে এবং নওগং কলেজের বর্তমান এক্সক্লুসিভ ক্যাম্পাসে প্রথম বিল্ডিং বর্দোলোই ভবন নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন। নওগং কলেজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রয়েছেন সমাজকর্মী বৃন্দাবন গোস্বামী, পূর্ণ চন্দ্র শর্মা, প্রতাপ চন্দ্র শর্মা, মহি চন্দ্র বরা, হলধর ভূঁইয়া, বিমলা কান্ত বরা, ডক্টর ললিত বড়ুয়া, যোগ সিং ছেত্রী, প্রিয়া রঞ্জন সেনগুপ্ত এবং প্রিয়নাথ সেন; তারাই কলেজের প্রথম অর্থদাতা এবং নীতিনির্ধারক। সাহিত্যাচার্য যজ্ঞেশ্বর শর্মা, প্রাথমিকভাবে যোরহাটের জগন্নাথ বড়ুয়া কলেজের অধ্যাপক, নগাঁও কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন; তিনি ইংরেজি, অসমীয়া এবং সংস্কৃত সাহিত্যের একজন পণ্ডিত ছিলেন, যিনি পরে অসম সাহিত্য সভার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৭]
১৯৪৪ সালের ৭ই আগস্ট, সন্ধ্যা ৬ টায়, নগাঁও কলেজ, ৭ জন শিক্ষকের অনুষদ সহ, আনুষ্ঠানিকভাবে ডসন উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণীকক্ষে ৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম শ্রেণি শুরু করে। কলেজ প্রশাসন পরে আসাম সরকারের কাছ থেকে নগাঁও গভর্নমেন্ট হাই স্কুলের ছাত্রাবাসগুলো ইজারা নিয়ে নেয়।[৮]
মতিরাম বরার পর, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক ডক্টর সূর্য কুমার ভূঁইয়া কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন; তিনি এবং অধ্যক্ষ শর্মা, একসাথে, কলেজের একাডেমিক ভিত্তি স্থাপন করেন। কৃষ্ণকান্ত সন্দিকৈর উপাচার্যের সময় নগাঁও কলেজকে ১৯৪৮ সালে নব-প্রতিষ্ঠিত গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল।[৯]
কলেজের অধ্যক্ষগণ[সম্পাদনা]
১৯৪৪ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কলেজটিতে মোট চৌদ্দজন অধ্যক্ষ কার্যসম্পাদন করেছেন।[১০]
| ক্রমিক নং | অধ্যক্ষ | কার্যকাল |
|---|---|---|
| ১ | যজ্ঞেশ্বর শর্মা | ১/৮/১৯৪৪-৪/৯/১৯৬৮ |
| ২ | ফণীলাল দত্ত (ভারপ্রাপ্ত) | ৫/৯/১৯৬৮-২২/১১/১৯৭১ |
| ৩ | মুহিরাম শইকীয়া | ২৩/১১/১৯৭১-১/১২/১৯৮৫ |
| ৪ | বুদ্ধেশ্বর গোহাঁই (ভারপ্রাপ্ত) | ২/১২/১৯৮৫-৩০/১০/১৯৮৬ |
| ৫ | প্রদীপ শইকীয়া | ৩১/১০/১৯৮৬-৩০/১১/১৯৯৬ |
| ৬ | আব্দুল হেকিম (ভারপ্রাপ্ত) | ১/১২/১৯৯৬-৩১/১২/১৯৯৬ |
| ৭ | গণেশ চন্দ্র বরুয়া (ভারপ্রাপ্ত) | ১/১/১৯৯৭-১৭/১/১৯৯৭ |
| ৮ | মহেন্দ্র আহোম | ১৮/১/১৯৯৭-১৬/১২/২০০২ |
| ৯ | বাবুলাল পাল (ভারপ্রাপ্ত) | ১৭/১২/২০০২-৩১/১০/২০০৩ |
| ১০ | মানবেন্দ্ৰ নাগ (ভারপ্রাপ্ত) | ১/১১/২০০৩-২৯/২/২০০৪ |
| ১১ | অসীমা দেব (ভারপ্রাপ্ত) | ১/৩/২০০৪-১০/১১/২০০৪ |
| ১২ | রূপদা কান্ত ভূঁইয়া (ভারপ্রাপ্ত) | ১১/১১/২০০৪-১৯/১১/২০০৪ |
| ১৩ | ডঃ খর্গেশ্বর ভূঁইয়া | ২০/১১/২০০৪-৩১/১২/২০১১ |
| ১৪ | ডঃ শরৎ বরকটকী | ১/১/২০১২-বর্তমান পর্যন্ত |
গ্রন্থাগার[সম্পাদনা]
কলেজের লাইব্রেরিটি চালু হয় ১৯৪৮ সালে। গ্রন্থাগারটির নাম রাখা হয় মহেন্দ্রনাথ মৈহেংদাং ডেকাফুকন গ্রন্থাগার। মহেন্দ্রনাথ ছিলেন আসামের একজন কবি, লেখক, শিল্পী, অভিনেতা, বুদ্ধিজীবী এবং সমাজ সংস্কারক।[১১] উল্লেখযোগ্য যে, নগাঁও কলেজের লাইব্রেরিটিতে সম্প্রতি ডিজিটাল প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে।
কলেজের ওয়েবসাইট অনুসারে, লাইব্রেরিটিতে প্রায় ৫২,০০০ বই এবং ২০টি পত্রিকা রয়েছে। এছাড়াও লাইব্রেরিটিতে বেশ কিছু সংবাদপত্র এবং মাসিক/সাপ্তাহিক পত্রিকাও রয়েছে।[১২]
প্রস্তাবিত পাঠ্যধারাগুলি[সম্পাদনা]
স্নাতক কোর্স[সম্পাদনা]
- আরবি, অসমীয়া, বাংলা, অর্থনীতি, শিক্ষা, ইংরেজি, ভূগোল, হিন্দি, ইতিহাস, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, এবং সংস্কৃতে অনার্স সহ স্নাতক (বি.এ.)।
- ব্যাচেলর অফ কমার্স (বি.কম.)।
- উদ্ভিদবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত, পদার্থবিদ্যা, পরিসংখ্যান এবং প্রাণিবিদ্যায় অনার্স সহ স্নাতক বিজ্ঞান (বি.এসসি.)।
- ভ্রমণ ও পর্যটন ব্যবস্থাপনা এবং মেডিকেল ল্যাব প্রযুক্তিতে ব্যাচেলর অফ ভোকেশনাল এডুকেশন (বি.ভক.)।[১৩]
স্নাতকোত্তর কোর্স[সম্পাদনা]
- অসমীয়া, শিক্ষা, ইংরেজি, ইতিহাস এবং দর্শনে স্নাতকোত্তর (এম.এ)।
- উদ্ভিদবিজ্ঞান, রসায়ন এবং প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর (এম.এসসি.)।[১৪]
বিভাগসমূহ[সম্পাদনা]
কলেজটিতে নিম্নলিখিত ২৪টি বিভাগ রয়েছে।[১৫]
ছাত্র সংঘ[সম্পাদনা]
নগাঁও কলেজ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এনসিএসইউ) ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[১৬] অনিল শর্মা ইউনিয়নের প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১৭]
বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ[১৮][সম্পাদনা]
সভাপতি: অঙ্গরাগ সান্দিল্য
সাধারণ সম্পাদক: নিরঞ্জন বরা
সহ-সাধারণ সম্পাদক: তুষা রঞ্জন বরা
বিতর্ক ও আলোচনাচক্র বিভাগের সম্পাদক: অনিন্দিতা রায়
সাহিত্য বিভাগের সম্পাদক: আটলান্টা গোস্বামী
ক্রীড়া বিভাগের সম্পাদক: রজ্জিত দাস
ক্রীড়া বিভাগের সহ-সাধারণ সম্পাদক: ভার্গব ভূষণ বরা
সাংস্কৃতিক বিভাগের সম্পাদক: শ্রুতি ভরদ্বাজ
সঙ্গীত বিভাগের সম্পাদক: অংশুমান গোস্বামী
চারুকলা বিভাগের সম্পাদক: পার্থ প্রতীম ভরালী
সমাজসেবা বিভাগের সম্পাদক: ভনজ্যোতি গায়ন
ছাত্র কল্যাণ বিভাগের সম্পাদক: ভার্গবী বরা
ছেলেদের বৈঠকখানা বিভাগের সম্পাদক: দেবাশীষ রায়
মেয়েদের বৈঠকখানা বিভাগের সম্পাদক: সাবানা সিদ্দিকা খানম
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Official Nowgong College Website"। Nowgong College। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on CollegeDunia"। CollegeDunia। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on Shiksha"। Shiksha। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on Zollege"। Zollege। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on CollegeBatch"। CollegeBatch। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on Careers360"। Careers360। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on Samarth"। Samarth। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on University Youth4work"। University Youth4work। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on CollegeDekho"। CollegeDekho। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ পয়সত্তৰ বছৰৰ বৰ্ণিল দস্তাবেজ (পিডিএফ) (অসমীয়া ভাষায়)। নগাঁও: নগাঁও মহাবিদ্যালয়। ২০১৮–১৯। পৃষ্ঠা ৩০৭। আইএসবিএন ৯৭৮-৯৬-৮৫৩১০-৭০-৬
|আইএসবিএন=এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - ↑ পয়সত্তৰ বছৰৰ বৰ্ণিল দস্তাবেজ (পিডিএফ) (অসমীয়া ভাষায়)। নগাঁও: নগাঁও মহাবিদ্যালয়। ২০১৮–১৯। আইএসবিএন ৯৭৮-৯৬-৮৫৩১০-৭০-৬
|আইএসবিএন=এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - ↑ "FACILITY"। Nowgong College। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০২১।
- ↑ "Nowgong College on UniversityDunia"। UniversityDunia। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College on CareerIndia"। CareerIndia। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Nowgong College News on Asomiya Pratidin"। Asomiya Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Assam Assembly Passes Bill to Upgrade Nagaon College to University"। DainandinBartaGroup। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "Assam Assembly Session Passes Bill to Upgrade Nagaon College to University"। Assam Times Post। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৩।
- ↑ "STUDENT UNION – NOWGONG COLLEGE"। www.nowgongcollege.edu.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৭।