তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রভু

তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী

শ্রীল গুরুদেব
উপাধিগুরু-আচার্য্য
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
থমাস জি.হারজিগ

জুন ১৮,১৯৪৬
মৃত্যুমার্চ ১৫,২০০২ (বয়স ৫৫)
ধর্মহিন্দুধর্ম,গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম
জাতীয়তাআমেরিকান
বংশব্রহ্ম-মাধব-গৌড়ীয় সম্প্রদায়
সম্প্রদায়গৌড়ীয় বৈষ্ণব
সন্ন্যাস নামতমাল কৃষ্ণ গোস্বামী
দর্শনঅচিন্ত্য ভেদ অভেদ
ঊর্ধ্বতন পদ
শিক্ষকঅভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ
কাজের মেয়াদ
পূর্বসূরীভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ
দীক্ষাগৌড়ীয় বৈষ্ণব (দীক্ষা)
১৯৬৮
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ কর্তৃক
পৌরোহিত্য অভিষেকগৌড়ীয় সন্ন্যাসী , ভক্তিবেদান্ত স্বামী কর্তৃক
পদ
ওয়েবসাইটWebsite

তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী (জন্ম ১৯৪৬- মৃত্যু ২০০২), জন্ম থমাস জি. হারজিগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্যের নিউ ইয়র্ক শহরে, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকে গভর্নিং বডি কমিশনের হয়ে কাজ করেছিলেন। তিনি সাউদার্ন মেথোডিস্ট ইউনিভার্সিটিতে ধর্মবিষয়ক অধ্যয়নে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন [১]

জীবনী[সম্পাদনা]

১৯৬৮ সালে নিউইয়র্কের হারলেমে আসার পর তিনি হরে কৃষ্ণ আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েন এবং শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের থেকে বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষা নেন। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী মহারাজ "রাধা-দামোদর সংঘ"র প্রধান ছিলেন। সেই সংঘে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর একশত জনেরও অধিক শিষ্য ছিলেন যারা শ্রীল প্রভুপাদের ধর্মপুস্তক বিতরণ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাসে করে ঘুরেছিলেন।[২]

গভর্নিং বডি কমিশন হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের একটি ব্যবস্থাপক কর্তৃপক্ষ। ১৯৭২ সালে,ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা, ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ, জিবিসি গঠন করেন। তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী, প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকে সংঘটির সদস্য ছিলেন।[৩]

২০০২ সালের ১৫ মার্চ, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার ফুলিয়ায়,একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তমাল কৃষ্ণ গোস্বামীর মৃত্যু হয়।[৪] শ্রী মায়াপুর ধামে শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের সমাধির পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। [৫]

তমাল কৃষ্ণ গোস্বামীর পুস্প সমাধি,মায়াপুর

সম্মানসূচক ধর্মীয় উপাধি[সম্পাদনা]

  • ভগবানের পবিত্রতাধন্য
  • শ্রীল গুরুদেব
  • পরমহংস
  • মহারাজা
  • পবিত্র পুণ্যার্থী
  • ভগবানের স্বর্গীয় কৃপাধন্য

সাহিত্যে অবদান[সম্পাদনা]

মোহিনী-মূর্তির রহস্যময় কাহিনী[সম্পাদনা]

মোহিনী-মূর্তির রহস্যময় কাহিনী হল হিন্দু দেবী মোহিনীকে নিয়ে রচিত বিংশ শতাব্দীর একটি গ্রন্থ যা রচনা করেন তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী। এটি ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে রচিত হয়। মোহিনী-লীলা বৈষ্ণবধর্মের পরিধি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গ্রন্থের অষ্টম সর্গের নবম ও দ্বাদশ অধ্যায়ে ভগবতপুরাণের দুটি জনপ্রিয় লীলা বর্ণিত হয়েছে। জনপ্রিয় হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী 'সমুদ্রমন্থনে' মোহিনী চরিত্রের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। দুই হিন্দু মহাকাব্য,পুরাণ ও আরো অনেক সাহিত্যে মোহিনী দেবীর কাহিনী বর্ণিত রয়েছে। মোহিনী-মূর্তির রহস্যময় কাহিনী গ্রন্থটি দুটি খণ্ডে বিভক্ত। একটি অংশ হল ভগবতপুরাণের অষ্টম সর্গের নবম অধ্যায়ে যে অংশটিতে ভগবান বিষ্ণুর মোহিনী-মূর্তি ধারণের প্রেক্ষাপট বর্ণিত আছে,এই অংশটিকে ভক্তিবেদান্ত স্বামী অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করেছিলেন।[৬] এবং আর একটি অংশ হল দ্বাদশ অধ্যায়ে বর্ণিত মোহিনী মূর্তি দেখে ভগবান শিবের মোহিত হয়ে যাওয়ার দৃশ্য।[৭]

এই ব্যাখ্যাতে, মোহিনী-লীলা সম্পর্কে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর আলোচনা[৮] বিশেষত লিঙ্গের ভূমিকায় সম্পর্কায়িত ও[৯] বিশ্লেষিত হয়েছে। ভক্তিবেদান্ত স্বামীর উল্লেখযোগ্য সেই ব্যাখ্যাটির মধ্যে এগুলি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১৯৯৩ সালে এই ব্যাখ্যাটি ভিনিল-অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশিত হয়। ভিনিল অ্যালবামটির আচ্ছাদনে ভগবতপুরাণের বর্ণিত মোহিনী লীলার একটি দৃশ্য অঙ্কিত রয়েছে। অ্যালবামের আচ্ছাদনে ছবিটি দেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হল আলোচনার বাইরে পৌরাণিক কাহিনীটিকে ছবিটির মাধ্যমে আরো স্পষ্ট ও আকর্ষণীয় করে তুলে ধরা। পুস্তকটির অডিও ফাইল, অনলাইনে সহজলভ্য।[১০]

সুখ হল একধরনের বিজ্ঞান[সম্পাদনা]

সুখ হল একধরনের বিজ্ঞান,অদিতির ব্রত হল ১৯৯৩ সালের একটি হিন্দু পৌরাণিক ভাষ্য যার রচয়িতা তমাল কৃষ্ণ গোস্বামী,এই ভাষ্যটি মূলত হিন্দু দেবী অদিতির কাহিনীকে নিয়ে রচিত। ভাগবতপুরাণের অষ্টম সর্গে দেবী অদিতিকে নিয়ে বিস্তৃত কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এই ভাষ্যটি মূলত বর্ণনা করে অদিতির নিজস্বগৃহীত একটি ব্রতপালন সম্পর্কে(পয়ব্রত) যা তিনি তার বারোজন পুত্রদের(আদিত্য) কল্যাণার্থে পালন করতেন।

এই বর্ণনাতে অনুযায়ী,অসুরদের রাজা,মহাবলী মহারাজা,স্বর্গ জয় করে অদিতির পুত্র তথা আদিত্যদের সেখান থেকে বিতাড়িত করেন। তমাল কৃষ্ণ গোস্বামীর এই ভাষ্যটি মূলত দেবী অদিতির সেই ব্রতপালন(পয়ব্রত) ও ত্যাগকে তুলে ধরে। এই ভাষ্যটি আরো বর্ণনা করে যে কেন অদিতি সেই ব্রতপালনে তৎপর হয়ে ওঠেন তার সন্তানদের স্বর্গে ফিরিয়ে আনার জন্য।

১৯৯৩ সালে এই ভাষ্যটি একটি ভিনিল অ্যালবাম রূপে প্রকাশিত হয়েছিল। গ্রন্থটির অডিও ফাইল, অনলাইনে সহজলভ্য। [১১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Biography on ISKCON.COM ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত মে ১৬, ২০০৮ তারিখে
  2. "Biography on GOSWAMI.COM"। ৮ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২০ 
  3. Das Goswami, S. (১৯৮২), Srila Prabhupada-lilamrta, Vol 4: In Every Town and Village, Around the World, 1968--71, Los Angeles: Bhaktivedanta Book Trust 
  4. "Tamal Krishna Goswami"tamalkrishnagoswami.com। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  5. Schweig, G. M. (২০০৫), "Dying the Good Death: The Transfigurative Power of Bhakti", The Intimate Other: Love Divine in Indic Religions: 399, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-৩০ 
  6. "Mohini-lila, Eighth Canto of the Bhagavata Purana, Chapter 9"। অক্টোবর ১২, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৩, ২০১৮ 
  7. Mohini-lila, Eighth Canto of the Bhagavata Purana, Chapter 12 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ফেব্রুয়ারি ১১, ২০০৮ তারিখে
  8. "Prabhupada's Teachings to Tamal Krishna Goswami Concerning Mohini-lila"। ফেব্রুয়ারি ১১, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৭, ২০০৯ 
  9. "The Key Verse Discussed in the Mysterious Pastimes Lectures"। আগস্ট ২, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৭, ২০০৯ 
  10. Audio Lectures for the Mysterious Pastimes of Mohini-murti
  11. Audio Lectures for Happiness is a Science - Aditi's Vow

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

তমাল কৃষ্ণ গোস্বামীর লিখিত পুস্তক ও ধর্মকথা