চন্ডীচরণ সূত্রধর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা বঙ্গীয় ব্যক্তি (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২১:১৯, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (→‎বহিঃসংযোগ)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

চন্ডীচরণ সূত্রধর
জন্ম
বৃটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ মে ১৯৬১
মৃত্যুর কারণনিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলি
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণঅসমের বাংলা ভাষা শহীদ

চন্ডীচরণ সূত্রধর (মৃত্যু: ১৯ মে ১৯৬১) হলেন একজন ভারতীয় তরুণ, যিনি ভারতের অসম রাজ্যের রাজ্য ভাষা হিসাবে বাংলাকে অন্তর্ভূক্তির দাবীতে আন্দোলন চলাকালীন ১৯৬১ সালের ১৯ মে শিলচর রেলস্টেশন এলাকায় আধা-সামরিক বাহিনীর ছোড়া গুলিতে শহীদ হন।[১][২][৩]

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি

শিক্ষা জীবন

মৃত্যু

শিলচর রেলস্টেশন-কে "ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর" নামকরণ করে স্থাপিত ফলক।

বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৬১ সালের ১৯ মে অসমের শিলচর, করিমগঞ্জহাইলাকান্দিতে হরতাল আহ্বান করা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, শিলচর রেলস্টেশন থেকে বিকেল ৪টার সময়সূচির ট্রেনটির সময় পার হয়ে যাওয়ার পর হরতালের পরিসমাপ্তি ঘটবে।[১] সকালবেলায় হরতাল শান্তিপূর্ণ ভাবে অতিবাহিত হয় এবং সেদিন ভোর ৫:৪০-এর ট্রেনটির কোনো টিকিট বিক্রী হয়নি; কিন্তু, দুপুরে স্টেশনে বিএসএফ-এর সদস্যরা এসে উপস্থিত হয় সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা দানের উদ্দেশ্যে।[৪]

বরাক ভাষা আন্দোলনের সত্যাগ্রহীদের উপর সৈন্যদের লাঠিচার্জ।

বিকেল ২:৩০-এর দিকে পুলিশ কয়েক জন সত্যাগ্রহীকে গ্রেপ্তার করে একটি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় পিকেটাররা এর তীব্র প্রতিবাদ করে ও ট্রাকটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।[৪] এর প্রেক্ষিতে বেলা ২:৩৫ নাগাদ রেলস্টেশন সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা বিএসএফ সৈন্যরা আন্দোলনকারীদের বন্দুক ও লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে এবং পরবর্তী সাত মিনিটের মধ্যে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে তারা ১৭ রাউণ্ড গুলিও চালায়।[৫] এই গুলি সরাসরি ১২ জন আন্দোলনকারীর দেহে বিদ্ধ হলে চন্ডীচরণসহ ৯ জন তাতে আঘাত পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হন এবং পরদিন হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যুর পাশাপাশি অপর একজনের মৃতদেহ পাওয়া যায় পার্শ্ববর্তী পুকুরপাড়ে।[১][৪]

স্মারক

শিলচর রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থিত ভাষা শহীদ স্মারক।

নিহত হওয়ার পরদিন, ২০ মে, চন্ডীচরণসহ ভাষা শহীদদের মৃতদেহ নিয়ে শিলচরে বিশাল শোকমিছিল করার পর শেষকৃত্য করা হয় শিলচর শ্মশানে।[১] তাদের স্মৃতি-বিজড়িত শিলচর রেলস্টেশনটির বর্তমান নামকরণ করা হয়েছে "ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর"।[৩][৬] শিলচর শ্মশানে চন্ডীচরণসহ ১১ জন শহীদের স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে ১১টি স্মৃতিস্তম্ভ এবং শিলচর রেলস্টেশনের সামনেও তৈরি করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের জন্য ১টি করে স্তম্ভ।[১] এছাড়াও, শিলচর শহরের গান্ধিবাগে শহীদদের স্মরণে গড়ে তোলা হয়েছে শিলচর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার[১][৩]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. সাহা, অমর (২০ মে ২০১২)। "আরেক ফাল্গুনের কথা"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  2. মাহবুব, এম. আর. (৪ জুন ২০১৬)। "আসামে বাংলা ভাষা-আন্দোলন"দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "যথাযোগ্য মর্যাদায় বরাক উপত্যকায় পালিত হলো ভাষা শহিদ দিবস"আজকের অনলাইন কাগজ। ১৯ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. বাহার উদ্দিন (১৯ মে ২০১৫)। "ঊনিশের উন্নতশির"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. মুখোপাধ্যায়, বৈদ্যনাথ (১৯ মে ২০১৩)। "বাঙালির চেতনায় শুধু একুশে, স্থান নেই উনিশের শহীদদের"। এই সময়। কলকাতা। 
  6. "পশ্চিমবঙ্গে শিলচরের ভাষা শহীদদের স্মরণ"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৯ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

  • "REPORT of Non Official Enquiry Commission of CACHAR" [কাছাড়ের অফিসিয়াল তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন] (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। শিলচর-৫, আসাম: এ. কে. দাশ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  • বিশ্বাস, সুকুমার। আসামে ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি-প্রসঙ্গ ১৯৪৭-১৯৬১। আগরতলা, ত্রিপুরা: পারুল প্রকাশনী প্রাইভেট লিমিটেড। আইএসবিএন 93-8670-825-6