কেন্দুলি মেলা
জয়দেব-কেন্দুলি মেলা | |
---|---|
অন্য নাম | কেন্দুলি মেলা, জয়দেব মেলা |
পালনকারী | বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় |
উদযাপন | মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে |
স্থান | জয়দেব কেন্দুলি, বীরভুম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ |
প্রাচীনত্ব | আনুমানিক ৪০০ বছর |
তারিখ | মকর সংক্রান্তি |
উপলক্ষ | বীরভূমের কবি জয়দেবের উদ্দেশ্যে স্মৃতি তর্পণ |
সংঘটন | বার্ষিক |
আচার অনুষ্ঠান | |
|
জয়দেব মেলা বা জয়দেব-কেন্দুলি মেলা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার জয়দেব কেন্দুলি গ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন পুণ্যস্নানের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী মেলা শুরু হয়।[১] এই মেলাকে ঘিরে মানুষের মধ্যে এক উন্মাদনার সৃষ্টি হয়। এই মেলা মূলত বীরভূমের সংস্কৃত পণ্ডিত জয়দেবের স্মৃতি তর্পণ উদ্দেশ্যে উদযাপিত হয়।
অজয় নদের পাড়ে ছোট্ট গ্রাম জয়দেব কেন্দুলি। নদীর পাড়ে বাউল আখড়ায় বসেছে জমজমাট গানের আসর। প্রতিবছরই এই সময়টার অপেক্ষায় দিন গোনেন বাউলপ্রেমী মানুষজন। মকরস্নানের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় গান-বাজনা, মেলা, উত্সব। কেন্দুলি গ্রামে গীতগোবিন্দের রচয়িতা কবি জয়দেবের জন্মস্থান। লক্ষ্মণসেনের সভাকবি ছিলেন তিনি। লক্ষ্মণসেনই এখানে রাধামাধব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
জয়দেব মেলা মানেই বাউল গানের আসর। সেইসঙ্গে অবশ্যই কীর্তন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বীরভূম-বর্ধমান জেলার সীমান্ত বরাবর বয়ে চলা অজয় নদের ধারে কেন্দুলি গ্রাম। এখানেই ছিল রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেবের নিবাস। রাধাগোবিন্দের মন্দির সহ কেন্দুলিতে জয়দেবের স্মৃতিধন্য বহু দ্রষ্টব্য থাকলেও কেন্দুলির সব চেয়ে বড় পরিচয় পৌষ সংক্রান্তির মেলা, যাকে কেন্দ্র করে কেন্দুলির কথা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়েছে। প্রাচীনত্ব ও জনপ্রিয়তার নিরিখে এ মেলা আজ দেশের অন্যতম প্রধান মেলা হিসেবে পরিগণিত হয়। এই একবিংশ শতকেও সমাগম হয় লক্ষাধিক মানুষের। ঐতিহাসিকদের মতে গঙ্গাবোধে অজয়ে মকরস্নান উপলক্ষেই এই মেলার সূচনা হয়েছে সুদূর অতীতে। পরে তার সঙ্গে জয়দেবীয় ঐতিহ্যধারা যুক্ত হয়ে হয়েছে জয়দেবের মেলা।[২]
পুণ্যস্নান
[সম্পাদনা]অজয় নদে মকর সংক্রান্তির দিনে পুণ্যার্থীরা স্নান করেন। এই সময় নদীতে জল কম থাকে। সেই কারণে প্রতিবছর প্রশাসন থেকে বালি তুলে জল জমানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে ডুব দেওয়ার জন্য পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা ঘাট বানানো হয় প্রতিবছর।[৩]
বাউল গান
[সম্পাদনা]জয়দেব মেলা মানেই বাউল গানের আসর। সেই সঙ্গে অবশ্যই কীর্তন। প্রতিবছর এই মেলায় তৈরি করা হয় কীর্তনীয়াদের জন্য কীর্তনের আখড়া এবং বাউলদের জন্য বাউলের আখড়া। প্রায় ৩০০ টি আখড়া তৈরি করা হয় মেলাটিতে। মেলার স্থানের পাশের রামপুর ফুটবল মাঠেও চলে মেলা।[৪]
যোগাযোগ
[সম্পাদনা]ট্রেনে বোলপুর স্টেশন থেকে বাসে করে যাওয়া যায়। বোলপুর বাস স্ট্যান্ড থেকেও কেন্দুলি যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। অন্যান্য ছোট গাড়িও আছে।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "বীরভূমে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী জয়দেব মেলা"। ২৪ ঘণ্টা। ১৪ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "জয়দেবের স্মৃতি-তর্পণে শুরু কেঁদুলির মেলা"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৫ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "শিক্ষা পৌষমেলা, ঢেলে সাজছে জয়দেব"। আনন্দবাজার পত্রিকা। 14 Nover 2016। সংগ্রহের তারিখ 1 January 2018। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "উইক এন্ডে জয়দেব মেলায় যাবেন? যে ৬টি বিষয় জেনে রাখা দরকার"। এবেলা। ১২ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৮।