এঁটুলিবাহিত রোগ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এঁটুলিবাহিত রোগ
বিশেষত্বসংক্রামক রোগ
লাইম রোগ সৃষ্টিকারী এঁটুলি পোকার একটি প্রজাতি
এঁটুলিপোকার দংশনের ফলে সৃষ্ট লাইম রোগের প্রাথমিক উপসর্গ।

এঁটুলিবাহিত রোগ মানুষ ও অন্যান্য পশু-প্রাণীকে আক্রান্তকারী এমন কিছু রোগের দলকে বোঝায়, যেগুলি এঁটুলি নামক এক ধরনের রোগজীবাণুবাহী ক্ষুদ্র পরজীবী কীটের দংশনের কারণে সংক্রমিত হয়।[১] এঁটুলির কামড় থেকে বহু বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু সংক্রমিত হতে পারে, যাদের মধ্যে রিকেটসিয়াসহ আরও অন্যান্য ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসপ্রোটোজোয়া উল্লেখ্য।[২] মানব সমাজের উপর এঁটুলিবাহিত রোগের অর্থনৈতিক প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ।[৩] ধারণা করা হয় বিশ্বব্যাপী গবাদি পশুদের শতকরা ৮০ ভাগই কোনও এঁটুলিবাহিত রোগে আক্রান্ত।[৪]

মানুষের মধ্যেও এঁটুলি ও এঁটুলিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।[৫] এঁটুলি কীটেরা নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন অংশত দায়ী।[৬][৭] উল্টোদিকে পোষক প্রাণীর সম্প্রদায় (যেমন হরিণ, গবাদি পশু, ইঁদুর, গিরগিটি) ও সেগুলির ভক্ষকপ্রাণী সম্প্রদায়ে (যেমন শিয়াল) পরিবর্তনের কারণে এঁটুলি কীটদের সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব পড়ছে। বন উজাড় ও আবাসস্থল খণ্ডীভবনের কারণে এঁটুলিকীটের পোষক ও খাদক প্রাণীদের বৈচিত্র্য ও লভ্যতায় পরিবর্তন আসতে পারে।[৬]

যেহেতু একটি একক এঁটুলি কীট একাধিক রোগসৃষ্টিকারক জীবাণু পুষে রাখতে পারে, তাই রোগীরা একই সাথে একাধিক রোগের দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে, এবং এর ফলে রোগনির্ণয়চিকিৎসা আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়তে পারে।[২] এঁটুলিবাহিত রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধি ও রোগের ভৌগোলিক বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই একই রকম বহিঃস্থ উপস্থাপনবিশিষ্ট বিভিন্ন রোগগুলিকে একে অপর থেকে পৃথক করে চিনতে আরও বেশি পারঙ্গম হতে হবে।[৮]

২০২০ সালে হিসাব অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সিডিসি ১৮টি এঁটুলিবাহিত রোগসৃষ্টিকারক জীবাণু শনাক্ত করেছে।[৮] আর বিশ্বব্যাপী এগুলির সংখ্যা কমপক্ষে ২৭।[৬][৯][১০] ২১শ শতকে এসে আরও নতুন নতুন এঁটুলিবাহিত রোগ আবিষ্কৃত হয়েছে। আণবিক রোগনির্ণয়পরবর্তী-প্রজন্মের অনুক্রম নির্ণয় পদ্ধতি এইসব আবিষ্কারের জন্য অংশত ধন্যবাদার্হ।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wenner M (১১ জুন ২০২১)। "Let's Do a Tick Check - These pervasive bloodsuckers can give you more than just Lyme disease. Here's how to protect yourself. (Interactive)"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১ 
  2. Kumar, Manish; Sharma, Aniket; Grover, Prashant (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Triple Tick Attack"Cureus11 (2): e4064। ডিওআই:10.7759/cureus.4064পিএমআইডি 31016091পিএমসি 6464285অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  3. Mac, Stephen; da Silva, Sara R.; Sander, Beate (৪ জানুয়ারি ২০১৯)। "The economic burden of Lyme disease and the cost-effectiveness of Lyme disease interventions: A scoping review"PLOS ONE14 (1): e0210280। আইএসএসএন 1932-6203ডিওআই:10.1371/journal.pone.0210280অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 30608986পিএমসি 6319811অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. Rochlin, Ilia; Toledo, Alvaro (১ জুন ২০২০)। "Emerging tick-borne pathogens of public health importance: a mini-review"Journal of Medical Microbiology (ইংরেজি ভাষায়)। 69 (6): 781–791। আইএসএসএন 0022-2615ডিওআই:10.1099/jmm.0.001206পিএমআইডি 32478654 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)পিএমসি 7451033অবাধে প্রবেশযোগ্য |pmc= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) 
  5. "Lyme and Other Tickborne Diseases Increasing"Centers for Disease Control (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  6. Chrobak, Ula (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "Lyme and other tick-borne diseases are on the rise. But why?"Knowable Magazineডিওআই:10.1146/knowable-020222-1অবাধে প্রবেশযোগ্য। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  7. Gilbert, Lucy (৭ জানুয়ারি ২০২১)। "The Impacts of Climate Change on Ticks and Tick-Borne Disease Risk"Annual Review of Entomology66 (1): 373–388। আইএসএসএন 0066-4170এসটুসিআইডি 231300522 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1146/annurev-ento-052720-094533পিএমআইডি 33417823 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  8. Tick-Borne Disease Working Group. 2020 Report to Congress (পিডিএফ)। Washington, D.C.: U.S. Department of Health and Human Services। ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  9. Paddock, Christopher D.; Lane, Robert S.; Staples, J. Erin; Labruna, Marcelo B. (২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। Changing paradigms for tick-borne diseases in the Americas (ইংরেজি ভাষায়)। National Academies Press (US)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  10. Zhao, Guo-Ping; Wang, Yi-Xing; Fan, Zheng-Wei; Ji, Yang; Liu, Ming-jin; Zhang, Wen-Hui; Li, Xin-Lou; Zhou, Shi-Xia; Li, Hao; Liang, Song; Liu, Wei; Yang, Yang; Fang, Li-Qun (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "Mapping ticks and tick-borne pathogens in China"Nature Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 12 (1): 1075। আইএসএসএন 2041-1723ডিওআই:10.1038/s41467-021-21375-1পিএমআইডি 33597544 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)পিএমসি 7889899অবাধে প্রবেশযোগ্য |pmc= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২ 
  11. Tokarz, Rafal; Lipkin, W. Ian (১ জুলাই ২০২১)। "Discovery and Surveillance of Tick-Borne Pathogens"Journal of Medical Entomology58 (4): 1525–1535। আইএসএসএন 0022-2585ডিওআই:10.1093/jme/tjaa269পিএমআইডি 33313662 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)পিএমসি 8285023অবাধে প্রবেশযোগ্য |pmc= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২