অরুণ কুমার বসাক
ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | অধ্যাপনা |
দাম্পত্য সঙ্গী | দেবীকা বসাক |
পুরস্কার | বিজ্ঞান একাডেমি পুরস্কার (২০০৬) |
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি | |
শিক্ষা | পদার্থ বিদ্যা |
মাতৃ-শিক্ষায়তন | |
উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্ম | |
প্রতিষ্ঠান | |
প্রধান আগ্রহ |
অরুণ কুমার বসাক (জন্ম: ১৭ অক্টোবর ১৯৪১)[১] একজন বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত[২] বাংলাদেশের পদার্থ বিজ্ঞানের একমাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপক।[৩][৪] তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন।[৫]
ব্যক্তিজীবন
[সম্পাদনা]অরুণ কুমার বসাক ১৯৪১ সালের ১৭ অক্টোবর পাবনার শহরের রাধানগর মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার ছেলেবেলা এই শহরেই কাটে। পিতা হরিপদ বসাক ছিলেন একজন বেসরকারী চাকুরীজীবী ও মাতা ঊষা রানী বসাক ছিলেন একজন গৃহিণী। চার ভাই-বোনের মধ্য তিনি ছিলেন জ্যেষ্ঠ।[৬] ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
শিক্ষা জীবন
[সম্পাদনা]অরুণ কুমার বসাক ১৯৫৭ সালে পাবনার রাধানগর মজুমদার একাডেমী (স্কুল এন্ড কলেজ) পাবনা হতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ঢাকা এর অধীনে প্রথম বিভাগে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। স্কুল জীবন শেষ করে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৫৯ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন এবং তৎকালীন রাজশাহী বিভাগ (বর্তমান রংপুর ও রাজশাহী) ও খুলনা বিভাগ (বর্তমান খুলনা ও বরিশাল) এর সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেন। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে তিনি রাজশাহীতে এসে রাজশাহী সরকারি কলেজে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন (উল্লেখ্য তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে বি. এস. সি কোর্স চালু ছিল না) এবং ১৯৬১ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক পাশ করেন।[৭] অনার্স শেষ করে অরুণ কুমার বসাক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন এবং ১৯৬৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করে সেই বছরই ২ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বর (৭৫%) পাওয়ার সম্মাননা হিসাবে ১৯৬৫ সালে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন এবং সেই কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু প্রগতিশীল চিন্তাধারার পক্ষে অবস্থান গ্রহণের জন্য বিমান বন্দরে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তার পাসপোর্ট জব্দ করে।[৮] ফলে তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে লন্ডন যেতে ব্যর্থ হন। এরপর পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে তার পাসপোর্ট নতুন করে ইস্যু করা হয়। ঐ বছরই তিনি কমনওয়েলথ পোস্ট গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ লাভ করেন এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড গমন করেন সেখানে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে পি এইচ ডি সম্পন্ন করেন।[৯]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]শিক্ষকতা ও গবেষণা
[সম্পাদনা]১৯৬৩ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান প্রভাষক বিভাগে যোগদানের পর থেকে প্রফেসর এমিরিটাস অরুণ কুমার বসাক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ এবং বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। অরুন কুমার বসাক ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসাবে ১৯৯০-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষক ছিলেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ফিজিকাল সায়েন্স অনুষদের ডীন হিসাবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে ফিরে আসেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে বাকি সময় শিক্ষকতা করে ২০০৮ সালে তিনি বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর শিক্ষক ও গবেষক হিসাবে তার অসামান্য অবদানের জন্য ২০০৯ সালে বাংলাদেশের পদার্থ বিজ্ঞানে এক মাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপক (আজীবন) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ ইমেরিটাস অধ্যাপক। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট ইউনিভার্সিটিতে ১৯৯৭ সালে ভিজিটিং প্রফেসরের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের এর সাউদর্ন ইলিনইস ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৭]
অন্যান্য
[সম্পাদনা]ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা।[১০] তার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে রাবির কম্পিউটার সেন্টারে প্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয়। সেখানে ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিটার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রশাসক হিসাবে চার বছর সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
- ১৯৮১-৮২ পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ইন নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, দি ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র।
- ১৯৭৯-৮১ এবং ১৯৭৫-৭৬ রিসার্স ফেলো ইন লো এনার্জি নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্য।
- ১৯৮৮ এবং ১৯৯৫ এসোসিয়েট মেম্বার, আইসিটিপি, ইতালি।
- ১৯৯৭ ভিজিটিং স্কলার, সাউদার্ন ইলিনইস ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র।
পেশাদারি সদস্যপদ
[সম্পাদনা]অরুণ কুমার বসাক তার কর্মজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন-
- ১৯৮৭-আজীবন: ফেলো, বাংলাদেশ ফিজিকাল সোসাইটি।
- ২০০০-০২: সিনেট সদস্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।
- ১৯৯০-১৯৯২ সিন্ডিকেট সদস্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
- ২০০০-০৩ এবং ২০১৩-আজীবন: সদস্য, আমেরিকান ফিজিকাল সোসাইটি।
- ২০০০-০৫: সিনিয়র এসোসিয়েট, আবদুস সালাম ICTP, ইতালি।
- ১৯৯৮-আজীবন: ফেলো, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স।[১১]
- ২০০১-আজীবন: ফেলো, ইন্সটিটিউট অব ফিজিক্স, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
এছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালমোনাই এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।[১২]
প্রকাশনা
[সম্পাদনা]এ পর্যন্ত অরুণ কুমার বসাক ৫৫ টি এম. এস. সি, ২ টি এম.ফিল এবং ৬ জন পি এইচডি গবেষণাপত্রের তত্ত্বাবধান করেছেন। দেশে বিদেশে বিভিন্ন জার্নালে তার ১৩৯ টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ স্বীকৃত আন্তর্জাতিক জার্নালে ২৫ টি দেশীয় জার্নালে এবং বাকি গুলো বিভিন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক কনফারেন্সে প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তার আরো কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি নিউক্লীয় তত্ত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছেন[১৩]। অরুণ কুমার বসাক বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞান ও শিক্ষা বিষয়ক গবেষণাধর্মী কলাম লিখেছেন। তার লেখা স্নাতক কোর্সের জন্য ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞান নামে একটি বই ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়।[১৪]
প্রকাশনাপঞ্জি
[সম্পাদনা]- ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞান। ঢাকা: বাংলা একাডেমি, ১৯৮১।[১৪]
- মো. মাসুম বিল্লাহ আজাদ (সং.)। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা। রাজশাহী: চিহ্ন, ২০২১। বাংলা ও ইংরেজি প্রবন্ধের সংকলন।[১৫]
গবেষণা
[সম্পাদনা]একক বা যৌথভাবে
- Polarization effects in the elastic scattering of and () reaction on ( এর ওপর এবং () বিক্রিয়ায় যে স্থিতিস্থাপক বিচ্ছুরণ ঘটে, তার ওপর মেরুকরণ প্রভাব)। নিউক্লিয়ার ফিজিক্স এ, ১৯৭৭।[১৬]
- Potential description of anomalous large angle scattering of α particles (বড়ো কোণে আলফা কণার অনিয়ত বা ব্যত্যয়ী বিচ্ছুরণের সম্ভাব্য বিবরণ)। ফিজিক্যাল রিভিয়ু লেটার্স, ১৯৯৯।[১৭]
- Dependence of the nuclear potential on nuclear incompressibility (নিউক্লিয়াস অসংকোচনশীলতার ওপর নিউক্লীয় বা কেন্দ্রীণ বিভবের নির্ভরশীলতা)। ফিজিক্যাল রিভিয়ু লেটার্স, ২০১৫।[১৮]
প্রাপ্তবৃত্তি এবং পুরস্কার
[সম্পাদনা]- ফিজিকাল সায়েন্সে অবদান রাখার জন্য তিনি ২০০৬ সালে বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স গোল্ড মেডেল লাভ করেন।
- ১৯৭২-১৯৭৫ কমনওয়েলথ পোষ্ট গ্রাজুয়েট স্কলারশীপ।
- ১৯৬৩ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গোল্ড মেডেল।
- ১৯৬১-১৯৬৩ মেরিট স্কলারশিপ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং SEATO স্কলারশীপ।
- ১৯৬৫ সালে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে উচ্চতর শিক্ষার জন্য স্কলারশীপ।
প্রফেসর বসাক পুরস্কার ও বৃত্তি
[সম্পাদনা]পেনিনসুলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ২০০৭ সাল থেকে চালু করে প্রফেসর বসাক পুরস্কার ও বৃত্তি। প্রফেসর বসাকের নামে প্রতিবছর চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও দুই কৃতি শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।[৭]
অরুণ কুমার বসাকের প্রতি হয়রানী
[সম্পাদনা]অরুণ কুমার বসাকের বসতবাড়ির জমির পাশের একটি ওয়াকফ এস্টেটের মোতোয়ালি (ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক) ইয়াহিয়া ফেরদৌস ১৮ বছর ধরে শিক্ষকের জমি দখল করে রেখেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা (আরডিএর) অবহেলায় এটি ঘটছে বলে তিনি জানান। ন্যায় বিচারের দাবিতে অধ্যাপক অরুণের আবেদনগুলোতে আরডিএ তেমন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইয়াহিয়া ফেরদৌস ১৮ বছর ধরে এই শিক্ষাবিদকে হয়রানি করতে থাকেন। গবেষণায় ব্যস্ত থাকায় জমির দেখাশোনা তিনি সেভাবে করতে পারেন নি বিধায় ইমাম ফেরদৌস এ সুযোগ নেন। দ্য ডেইলি স্টারকে অধ্যাপক অরুণ বসাক বলেন, নিজের বাড়িতেই তিনি অনিরাপদ বোধ করছেন।[১৯]
অধ্যাপক অরুণের বসতবাড়ির জমিটি ছিল তার স্ত্রী দেবিকা বসাকের। ২০২০ সালের নভেম্বরে দেবিকা বসাকের মৃত্যুর পর নিঃসন্তান অধ্যাপক অরুণ জমিটির মালিকানা পান।
২০০৩ সালে নিজের জমিতে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণের সময় দেবিকার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ২ ফুট ভেতরে গিয়ে ভবনের অংশ নির্মাণ করেন ফেরদৌস।[১৯]
এরপর নির্মাণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগে আরডিএর কাছে অভিযোগ করেন দেবিকা। ফেরদৌসের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে আরডিএ সময় নেয় ৭ মাস। ততদিনে জমির একটি অংশ দখল করে ফেরদৌস ভবন নির্মাণ শেষ করে ফেলেছেন। অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য ফেরদৌসকে চূড়ান্ত নোটিশ দিতে আরডিএ ৫ বছর সময় নেয় এবং ২০০৮ সালের মে মাসে সেই নোটিশ দেয়।
ফেরদৌস সেই সিদ্ধান্তকে রাজশাহীর আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন। একই সঙ্গে দেবিকার বিরুদ্ধে ওয়াকফ্ এস্টেটের জমি দখলের অভিযোগ আনেন। আদালত এই অভিযোগ খারিজ করে দেন। ২০১৪ সালে ফেরদৌস আপিল করলে জেলা আদালত বাদিকেই ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ২০১৭ সালে ফেরদৌস মামলাটি হাইকোর্টে নিয়ে যান। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন এবং আরডিএর সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেন। একই রায়ে হাইকোর্ট ফেরদৌসকে দেবিকার কাছে ক্ষমা চাইতে এবং অধ্যাপক অরুণ ও তার পরিবারকে হয়রানি না করার প্রতিশ্রুতি দিতে বলেন। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের অক্টোবরে ফেরদৌস তার অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে নিলেও এখনও জমির ওই অংশ দখল করে আছেন। তিনি জায়গাটির চারপাশে ধাতব গ্রিল ও গাছ লাগিয়ে রেখেছেন। এটা নিয়ে অধ্যাপক অরুণ আরডিএর কাছে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি।
অধ্যাপক অরুণ বলেন, 'সমাধান খুঁজতে দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছি, কিন্তু লাভ হয়নি। কেউই আমাকে সাহায্য করেননি।'
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ফেরদৌস এই প্রতিবেদককে গ্রিলের প্রবেশপথের তালা খুলে বিতর্কিত ওই জমিতে নিয়ে যান। অধ্যাপক অরুণকে 'খুশি' করার জন্য তিনি সেখানে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, 'আদালত আমাকে বলেছেন অধ্যাপক অরুণকে সন্তুষ্ট রাখতে।' তবে তিনি জানান, আরডিএ কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতোই তিনি মামলাটি করেছিলেন। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আরডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল তারিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এখন ব্যস্ত আছি।' এ বিষয়ে কথা বলতে আগামী মাসে কল করতে বলেন তিনি।[১৯]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Prof. Arun Kumar Basak"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০২-০৫। ২০২২-০৮-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৪।
- ↑ "Role of Science and Technology towards developments of Bangladesh - Bdchronicle.com"। BD Chronilce। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫।
- ↑ "অথচ দেখেন ৮৩ বছর বয়সী এই মানুষটাকে রাষ্ট্র চিনতেই পারেনি"। thedailycampus.com। ২০২৪-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৪।
- ↑ ক খ Alamgir। "প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রফেসর এমিরিটাসের ৭২তম জন্মদিন আজ"। khulnanews.com।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "আমরা শেখার আনন্দ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ: অরুণ কুমার বসাক"। prothomalo.com। ২০২০-০১-১৯। ২০২০-০১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৯।
- ↑ বই: ভারতীয় উপমহাদেশের বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান চর্চা। লেখক: প্রফেসর ড. নিশীথ কুমার পাল। পৃষ্ঠা: ৪২৭-৪২৮
- ↑ ক খ গ জাকির হোসেন, তমাল; হুসাইন, মিঠু (২০১৬-০৮-২৪)। "ল্যাবেই কাটে দিন"। Daily Kalerkantho (Bengoli ভাষায়)। ২০১৬-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৪।
- ↑ "প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রফেসর ইমেরিটাস"। প্রতিভা বার্তা। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫।
- ↑ বই: ভারতীয় উপমহাদেশের বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান চর্চা। লেখক: প্রফেসর ড. নিশীথ কুমার পাল। পৃষ্ঠা: ৪২৮
- ↑ "Computer Center, Rajshahi University"। ru.ac.bd। ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫।
- ↑ "Professor Arun Kumar Basak"। bas.org.bd। ২৬ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫।
- ↑ "Rajshahi University Alumni Association"। oocities.org। ২৫ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৫।
- ↑ "নিউক্লিয়ার ফিজিক্স গবেষণায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক"। agrilife24.com।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "Prof. Arun Kumar Basak"। The Daily Star। ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬। ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬।
- ↑ বসাক, অরুণ কুমার (২০২১)। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা। রাজশাহী: চিহ্ন। আইএসবিএন 978-984-94341-3-9।
- ↑ Roman, S.; Basak, A. K.; England, J. B. A.; Karban, O.; Morrison, G. C.; Nelson, J. M. (১৯৭৭-০৭-১১)। "Polarization effects in the elastic scattering of 3He and (3He, d) reaction on 58Ni"। Nuclear Physics A (ইংরেজি ভাষায়)। 284 (3): 365–378। আইএসএসএন 0375-9474। ডিওআই:10.1016/0375-9474(77)90390-6। ২০২৪-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৮।
- ↑ "INSPIRE"। inspirehep.net। ২০২১-০৯-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৮।
- ↑ Hossain, S.; Tariq, A. S. B.; Nilima, Athoy; Islam, M. Sujan; Majumder, R.; Sayed, M. A.; Billah, M. M.; Azad, M. M. B.; Uddin, M. A. (২০১৫-০৬-১৮)। "Dependence of the $^{16}\mathrm{O}+^{16}\mathrm{O}$ nuclear potential on nuclear incompressibility"। Physical Review C। 91 (6): 064613। ডিওআই:10.1103/PhysRevC.91.064613।
- ↑ ক খ গ আলী, আনোয়ার (২৭ জুন ২০২২)। "জমি দখলের শিকার ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ বসাক"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৮ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২২।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- জীবিত ব্যক্তি
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- বাংলাদেশী পদার্থবিজ্ঞানী
- ইমেরিটাস অধ্যাপক
- বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ
- বাংলাদেশী গবেষক
- সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- ১৯৪১-এ জন্ম
- বাঙালি হিন্দু
- বাংলাদেশী হিন্দু
- বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো
- বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাঙালি পদার্থবিদ
- নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানী
- তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী
- পাবনা জেলার ব্যক্তি
- রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশ ফিজিক্যাল সোসাইটির সভ্য