ফ্রাঙ্ক পেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফ্রাঙ্ক পেন
১৮৭৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ফ্রাঙ্ক পেন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামফ্রাঙ্ক পেন
জন্ম(১৮৫১-০৩-০৭)৭ মার্চ ১৮৫১
লি, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৬ ডিসেম্বর ১৯১৬(1916-12-26) (বয়স ৬৫)
বাইফ্রন্স, প্যাট্রিক্সবোর্ন, কেন্ট, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি স্লো (রাউন্ড-আর্ম)
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কজন পেন (পিতা)
জন পেন (ভ্রাতা)
উইলিয়াম পেন (ভ্রাতা)
ডিক পেন (ভ্রাতা)
ফ্রাঙ্ক পেন (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ২৭)
৬ সেপ্টেম্বর ১৮৮০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৭৫ - ১৮৮১কেন্ট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৯৮
রানের সংখ্যা ৫০ ৪,২৯১
ব্যাটিং গড় ৫০.০০ ২৭.১৫
১০০/৫০ ০/০ ৬/১৭
সর্বোচ্চ রান ২৭* ১৬০
বল করেছে ১২ ৮৯৭
উইকেট ১০
বোলিং গড় ৩৭.১০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ৪৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

ফ্রাঙ্ক পেন (ইংরেজি: Frank Penn; জন্ম: ৭ মার্চ, ১৮৫১ - মৃত্যু: ২৬ ডিসেম্বর, ১৯১৬) লন্ডনের লি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮০ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে স্লো বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮৫১ সালে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের লুইশ্যাম এলাকার লিতে জন্মগ্রহণকারী ফ্রাঙ্ক পেন প্রকৌশলী জন পেনের সন্তান ছিলেন। পিতা ডেপ্টফোর্ড ও গ্রীনিচ জন পেন এন্ড সন্স নামীয় নৌ ইঞ্জিন উৎপাদন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।[১] ১৮৭৫ সালে কেন্টের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপূর্বে ক্লাব ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।[২][৩] ১৮৭৫ সাল থেকে ১৮৮১ সাল পর্যন্ত ফ্রাঙ্ক পেনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তিনি তার সময়কালে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন ও কেন্টের জনপ্রিয় ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। স্বল্পকালীন খেলোয়াড়ী জীবন হলেও বেশ বর্ণাঢ্যময় ছিল তার সময়কালটুকু। তাসত্ত্বেও বেশ কয়েকবছর র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন তিনি। সাধারণ মানের ক্লাব দলে খেলার পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন।

১৮৭৫ সাল থেকে কেন্টের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। পরের বছর লর্ডসে প্রথমবারের মতো খেলেন। এমসিসি’র সদস্যরূপে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ৪৪ ও ৩৫ রানে তুলেন। তার খেলার ধরন সম্পর্কে কারো প্রশ্ন ছিল না। ১৮৭৬ সালে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে ওভাল ও লর্ডসের খেলায় অংশ নেন। এরপর থেকেই সম্মুখসারিতে অবস্থান করতে থাকেন।

১৮৭৭ সালে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। চব্বিশ ইনিংসে ৪০ গড়ে তিনবার অপরাজিত থেকে ৮৫৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। বেশ কয়েকবার কেন্টের পক্ষে বড় ধরনের রান তুলেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৮৭৮ সালে মেডস্টোনে সারের বিপক্ষে ১৬০, ১৮৭৭ সালে ওভালে একই দলের বিপক্ষে ১৪৮, একই বছরে ক্যান্টারবারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৫ রান অন্যতম। তবে জীবনের সেরা ইনিংস ছিল ১৮৭৯ সালে লর্ডসে সংগৃহীত ১৩৪ রান। এ পর্যায়ে এমসিসি’র সদস্যরূপে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে এ. জি. স্টিলের বোলিং আক্রমণ মোকাবেলান্তে করেছিলেন।

আটবার জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ভালোমানের ব্যাটিং করলেও আশানুরূপ খেলেননি। ১৮৭৬ সালে ওভালে সেরা সংগ্রহ করেন ৫২ রান। সমসাময়িক খেলোয়াড়দের তুলনায় নিজেকে বেশ এগিয়ে রেখেছিলেন। উইলিয়াম অসক্রফটের ন্যায় স্কয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে বলকে সপাটে মারতেন।

১৮৭৭ সালে ২৪ ইনিংসে ৮৫৭ রান করেন। তন্মধ্যে দুইটি শতরানের ইনিংস ছিল তার। দূর্ভাগ্যজনকভাবে খ্যাতির তুঙ্গে অবস্থানকালে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। দৌড় দিতে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ফ্রাঙ্ক পেন। ৬ সেপ্টেম্বর, ১৮৮০ তারিখে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

১৮৭৮-৭৯ মৌসুমে লর্ড হ্যারিসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। তবে, ঐ সফরে তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি।[২] ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।[৪] টেস্ট ক্রিকেট নিয়মিতভাবে আয়োজনের পূর্বেই তার খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ হয় তার। সেপ্টেম্বর, ১৮৮০ সালে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে খেলেন। এটিই উভয় দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিন ধরে চলা সিরিজ ছিল। ২৩ ও অপরাজিত ২৭ রান তুলেন তিনি। খেলায় তিনি জর্জ পালমারের বলে কাটের সাহায্যে চার মেরে জয়সূচক রান করেন।[২] ঐ টেস্টে তার দল পাঁচ উইকেটে বিজয়ী হয়। মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত ১৮৮০ সালের ইংরেজ দলটির লর্ড হ্যারিসএ. পি. লুকাসকে নিয়ে জীবিত সদস্যের মর্যাদা প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

১৮৮১ সালে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে হৃৎপিণ্ডের সমস্যার কারণে তার ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।[২] এ পর্যায়ে অংশগ্রহণকৃত ৯৮টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ৬২টি খেলা কেন্টের পক্ষে ছিল।[৫] খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর ফ্রাঙ্ক পেন কেন্টের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। লর্ড হ্যারিসের সাথে ক্লাবের ভিত্তি এনে দিতে ভূমিকা রাখেন। ১৯০৫ সালে ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। গ্রেস নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯১৬ তারিখে ৬৫ বছর বয়সে ক্যান্টারবারির কাছাকাছি প্যাট্রিক্সবোর্ন এলাকায় ফ্রাঙ্ক পেনের দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন আনুমানিক £৯৮১ পাউন্ডের সম্পত্তি রেখে যান।[৬] তার ভ্রাতৃদ্বয় - উইলিয়াম পেন ও ডিক পেন কেন্টের পক্ষে ক্রিকেট খেলেছেন। আরেক ভ্রাতা জন পেন ১৮৯১ থেকে ১৯০৩ সময়কালে লুইশ্যাম নির্বাচনী এলাকার থেকে সংসদ সদস্যরূপে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

উইজডেনে তার স্মরণে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি কেন্টের জনপ্রিয় ব্যাটসম্যান ছিলেন। ছোটখাটো গড়নের অধিকারী হলেও অত্যন্ত প্রতিভাধর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। বেশ কয়েকবছর তিনি তার সময়কালে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আরোহণ করেছেন।[২] এতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, শক্ত প্রতিরক্ষাব্যূহ রচনা করা ও দক্ষভাবে বলে আঘাত করার যৌথ প্রয়াসে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও মুক্তভাব বজায় রেখে নেতৃত্ব দিতেন।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hartree R (2008) John Penn and Sons of Greenwich. Landmark Publishing Ltd. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪৩০৬-৪১১-৪
  2. Mr Frank Penn, Obituaries in 1916, Wisden Cricketers' Almanack, 1917. Retrieved 2018-11-11.
  3. Frank Penn, CricketArchive. Retrieved 2018-11-11.
  4. Godfrey CJM (1939) 'I was there', CricInfo. Retrieved 2018-11-11.
  5. Ambrose D (2003) A brief profile if Frank Penn, CricketArchive. Retrieved 2018-11-11.
  6. Hartree op. cit., p.95.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]