মার্ভ ওয়ালেস
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ওয়াল্টার মার্ভিন ওয়ালেস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | গ্রে লিন, অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড | ১৯ ডিসেম্বর ১৯১৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২১ মার্চ ২০০৮ অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড | (বয়স ৯১)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ-ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | জর্জ ওয়ালেস (ভ্রাতা) গ্রিগরি ওয়ালেস (পুত্র) গ্র্যান্ট ফক্স (জামাতা) রায়ান ফক্স (নাতি) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩২) | ২৬ জুন ১৯৩৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৩ মার্চ ১৯৫৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ |
ওয়াল্টার মার্ভিন মার্ভ ওয়ালেস (ইংরেজি: Merv Wallace; জন্ম: ১৯ ডিসেম্বর, ১৯১৬ - মৃত্যু: ২১ মার্চ, ২০০৮) অকল্যান্ডের গ্রে লিন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৫৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১৩টি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কেরও দায়িত্বে ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি ডানহাতি অফ-ব্রেক বোলিংও করতেন 'ফ্লিপ' ডাকনামে পরিচিত মার্ভ ওয়ালেস।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]অকল্যান্ডের গ্রে লিনে জন্মগ্রহণকারী মার্ভ ওয়ালেস ১৩ বছর বয়সে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এরপর টেড বোলি ও জিম পার্কসের তত্ত্বাবধানে ইডেন পার্কে প্রশিক্ষণ নেন। সহোদর জর্জ ওয়ালেসের[১] সাথে পয়েন্ট শেভ্যালিয়ার ক্রিকেট ক্লাবে একত্রে ক্রিকেট খেলতেন। এরপর অকল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২০ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
নিউজিল্যান্ড এক্সপেডিশনারি ফোর্সে যোগ দেন। কিন্তু, পাকস্থলীতে পেশীর সমস্যার কারণে অ্যাপেনডিক্সের অস্ত্রোপাচার করার কারণে তাকে বাদ দেয়া হয়।
ডিসেম্বর, ১৯৩৩ সালে প্লাঙ্কেট শীল্ডে অকল্যান্ডের সদস্যরূপে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মার্ভ ওয়ালেসের। [২] জানুয়ারি, ১৯৪০ সালে ক্যান্টারবারির বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২১১ রান সংগ্রহ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
[সম্পাদনা]২৬ জুন, ১৯৩৭ তারিখে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে মার্ভ ওয়ালেসের। ১৯৩৭ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। নীতি-নির্ধারণের প্রেক্ষিতে নির্বাচিত পেশাদার ক্রিকেটারদেরকে বাইরে রেখে তুলনামূলকভাবে দূর্বলতম দল হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রাখে তার দল। লর্ডসের অভিষেক টেস্টে তিনি ৫২ ও ৫৬ রানের দুইটি অর্ধ-শতক করেন। ৪১.০২ গড়ে ১,৬৪১ রান তুলে ব্যাটিং গড়ে সফরকারী দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ছিলেন। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের তুঙ্গে থাকাকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এরপর মার্চ, ১৯৪৬ সালে পুনরায় টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন মার্ভ ওয়ালেস।
মার্চ, ১৯৪৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে খেলেন। তবে, ঐ খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল দুই দিনেই ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। ১৯৪৭ সালে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ হয় তার। ১৯৪৯ সালে ওয়াল্টার হ্যাডলির নেতৃত্বাধীন নিউজিল্যান্ড দলের সহঃ অধিনায়কের মর্যাদা লাভ করেন। ঐ সিরিজে চার টেস্টে অংশ নেয় তার দল। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৯.২০ গড়ে ১,৭২২ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ইয়র্কশায়ার, ওরচেস্টার, লিচেস্টার, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে মনোরম সেঞ্চুরি করেন তিনি।
মে মাসের পূর্বে তিনি ৯১০ রান তুলেন। এরফলে, দুইবার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান ও একবার গ্লেন টার্নারের পর সফরকারী দলের ব্যাটসম্যান হিসেবে অল্পের জন্য সহস্র রানের কোটা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন। তবে, টেস্টগুলোয় তিনি খুব কমই সফল হয়েছিলেন।
১৯৫১ সালে ক্রাইস্টচার্চে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৬ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন। এরপর ১৯৫৩ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে নিজস্ব শেষ দুই টেস্টে দলকে পরিচালনা করার দায়িত্ব পান।
অবসর
[সম্পাদনা]ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর নিউজিল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্ব বর্তায় তার কাঁধে। ১৯৫৬ সালে ইডেন পার্কে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক জয় পায়।[৩] অবশ্য এরপর নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে তার কোচিং দক্ষতা বিশেষ নজর কাড়েনি।
খেলোয়াড়ী জীবন চলাকালেই টেনিস খেলোয়াড় বিল ওয়েবের সাথে যৌথভাবে একটি ক্রীড়াসামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ প্রতিষ্ঠানটিতে ১৯৪৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল।
মূল্যায়ন
[সম্পাদনা]সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেট অধিনায়ক জন রিচার্ড রিড তাকে সর্বাপেক্ষা অবমূল্যায়িত ক্রিকেটার হিসেবে রূপালী ফার্নের পোশাক পরিধান করেছেন বলে মন্তব্য করেন।[৪] তার কণ্ঠ থেকে কাউকে ধমক শুনতে না পারার কারণে দলীয় সঙ্গীরা ফ্লিপ ডাকনামে আখ্যায়িত করেন।
স্বল্প দূরত্বে বল ফেলে দ্রুতগতিতে রান তোলার ক্ষমতা ছিল তার। উইকেটের চারপাশেই তিনি বল ঠেলে দিতে পারতেন। তবে কভার অঞ্চলেই তিনি দক্ষতা দেখাতে পেরেছিলেন। মাত্র ২০.৯০ গড়ে টেস্টে রান তুলতে পেরেছেন। এরফলে, তার ব্যাটিং সামর্থ্যতার যথার্থ প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি মার্ভ ওয়ালেস।
২০০৪ সালে রাণীর জন্মদিনের সম্মাননায় ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নিউজিল্যান্ড অর্ডার অব মেরিট পদবীতে ভূষিত হন।[৫]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]২১ মার্চ, ২০০৮ তারিখে ৯২ বছর বয়সে অকল্যান্ডে তার দেহাবসান ঘটে। জীবনের শেষদিকে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ছিলেন মার্ভ ওয়ালেস। এ সময়ে তিনি অন্ধ হয়ে যান ও কয়েকটি পায়ের আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়। ২০০৮ সালে অকল্যান্ডে অবস্থানকালে গুড ফ্রাইডেতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে যাবার পর নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের তৃতীয় টেস্ট চলাকালে ২২ মার্চ তারিখে নিউজিল্যান্ড দলের খেলোয়াড়েরা বাহুতে কালো কাপড় পরিধান করে তাকে সম্মান জানায়।
তার ভাই জর্জ ওয়ালেস ও পুত্র গ্রিগরি ওয়ালেস[৬] - উভয়েই অকল্যান্ডের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। কন্যা অ্যাডেল রাগবি ইউনিয়নের খেলোয়াড় গ্র্যান্ট ফক্সের সাথে পরিণয়সূত্র আবদ্ধ হন।[৭] মার্ভ ওয়ালেসের এক নাতি রায়ান ফক্স গল্ফার।[৮] ২০০০ সালে যোসেফ রোমানোস কর্তৃক মার্ভ ওয়ালেস: এ ক্রিকেট মাস্টার শিরোনামে জীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।[৯][১০][১১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ George Wallace at Cricket Archive
- ↑ Wellington v Auckland 1933-34
- ↑ "Former New Zealand cricket captain Merv Wallace dead at 91"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Associated Press, 21 March 2008 Accessed 27 March 2008
- ↑ "Merv Wallace's legacy will live on", Cricinfo, 15 September 2000
- ↑ "Queen's Birthday honours list 2004"। Department of the Prime Minister and Cabinet। ৭ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৬।
- ↑ Gregory Wallace at Cricket Archive
- ↑ Agnew, Ivan (২৪ মার্চ ২০০৬)। "Cricket legend honoured"। Times Live। ১৩ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৬।
- ↑ Jackson, Glenn (৭ ডিসেম্বর ২০১২)। "Fox happy to follow in son's footsteps"। Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Merv Wallace's legacy will live on", Cricinfo, 15 September 2000
- ↑ Romanos, Joseph (২০০০)। Merv Wallace: A Cricket Master (Paperback সংস্করণ)। Joel Pub। পৃষ্ঠা 203। আইএসবিএন 0473070987।
- ↑ Cameron, Don (ডিসে ৯, ২০০০)। "Joseph Romanos: Merv Wallace - A Cricket Master"। The New Zealand Herald। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৪।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- বার্ট সাটক্লিফ
- জিওফ রাবোন
- ওয়াল্টার হ্যাডলি
- নিউজিল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কদের তালিকা
- টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী ইংরেজ ক্রিকেটারদের তালিকা
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে মার্ভ ওয়ালেস (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে মার্ভ ওয়ালেস (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- "Former New Zealand captain Wallace dies", Cricinfo, 22 March 2008
- "Former New Zealand cricket captain Merv Wallace dead at 91", International Herald Tribune, 22 March 2008
- The New Zealand Herald, 23 March 2008
- Obituary, The Daily Telegraph, 24 March 2008
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী বার্ট সাটক্লিফ |
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ১৯৫২/৫৩ |
উত্তরসূরী জিওফ রাবোন |