বর্ত্তমান ভারত
লেখক | স্বামী বিবেকানন্দ |
---|---|
দেশ | ভারত |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | দর্শন |
প্রকাশক | উদ্বোধন কার্যালয় |
প্রকাশনার তারিখ | ১৮৯৯ (প্রবন্ধ) ১৯০৫ (বই) |
বর্ত্তমান ভারত মডার্ন ইডিয়া[১] বা প্রেজেন্ট ডে ইন্ডিয়া[২] হল স্বামী বিবেকানন্দের লেখা একটি প্রবন্ধ। এটি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের একমাত্র বাংলা মুখপত্র উদ্বোধন পত্রিকার মার্চ ১৮৯৯ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। ১৯০৫ সালে প্রবন্ধটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। পরে স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা সংকলনের ষষ্ঠ খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়।[১] এই প্রবন্ধে বিবেকানন্দ ভারতের সম্পূর্ণ ইতিহাস আলোচনা ও ব্যাখ্যা করেছেন এবং শূদ্র অংশের অভ্যুত্থানের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।[১][৩] ভারতের দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের জন্য তিনি এই প্রবন্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এই প্রবন্ধেই তিনি ভারতবাসীকে নর্ণনির্বিশেষে সবাইকে ভাই মনে করার আহ্বান জানান।[৪]
প্রেক্ষাপট
[সম্পাদনা]১৮৯৭ সালে পাশ্চাত্য থেকে ফিরে আসার পর বিবেকানন্দ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করেন। ১৮৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে, তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বাংলা মুখপত্র উদ্বোধন পত্রিকা চালু করেন।[৬] এই পত্রিকার জন্য তিনি ভাববার কথা, বর্ত্তমান ভারত, পরিব্রাজক ও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য প্রবন্ধগুলি রচনা করেন। ১৮৯৯ সালের মার্চ মাসের উদ্বোধন পত্রিকায় বাংলা নিবন্ধ বর্ত্তমান ভারত প্রকাশিত হয়।[৪]
সংক্ষিপ্তসার
[সম্পাদনা]এই প্রবন্ধে বিবেকানন্দ সংক্ষেপে বৈদিক পুরোহিত-সমাজপতিদের যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসন পর্যন্ত ভারতের সমগ্র ইতিহাসের স্মৃতিচারণা ও ব্যাখ্যা করেছেন। তবে তার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সমসাময়িক ভারতের কথা বলা।[৭]
প্রথম দিকে বৈদিক ব্রাহ্মণ পুরোহিতেরা কীভাবে সমাজকে শাসন করতেন, তারপর কীভাবে ক্ষমতাশালী যোদ্ধারা সমাজের নেতৃস্থানে এলেন এবং শেষে কীভাবে বৈশ্যদের ক্ষমতা বাড়ল, এই সব আলোচনার পর লেখক বলেছেন যে, চক্রাকার পথে বৈশ্যের পর ভারতীয় সমাজ শূদ্রের অধীনে আসতে বাধ্য।[৭][১][৩]
তিনি ভারতবাসীদের বলেন সকল ভারতবাসীর সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করতে এবং আর্থিক অসংগতির জন্য কাউকে হেয় না করতে।[৪] তার মতে সীতা, সাবিত্রী ও দময়ন্তী হলেন ভারতীয় নারীর আদর্শ। তিনি ভারতবাসীকে ভারতের মাটিকে স্বর্গ মনে করতে এবং ভারতের কল্যাণকে নিজের কল্যাণ ভাবতে বলেন।[৭] পাশ্চাত্যের অনুকরণ না করারও কথা বলেন।[৭]
এই প্রবন্ধের শেষাংশটি এখন স্কুল কলেজের পাঠ্য।[৮]
প্রকাশনা
[সম্পাদনা]প্রবন্ধটি প্রথম উদ্বোধন পত্রিকার মার্চ ১৮৯৯ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। ১৯০৫ সালে উদ্বোধন কার্যালয় থেকে এটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। স্বামী সারদানন্দ এই বইয়ের ভূমিকা লিখে দেন।[৯]
গুরুত্ব
[সম্পাদনা]স্বামী জিতাত্মানন্দের মতে এই প্রবন্ধে বিবেকানন্দ ভারত সংস্কারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।[১০] টিচার ইন এমার্জিং ইন্ডিয়ান সোসাইটি বইয়ের লেখক শ্রীবাস্তব বলেছেন, এই প্রবন্ধে বিবেকানন্দ বলেছেন যে আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থার একটি উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানবতার সেবা করা।[১১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ Chattopadhyaya 1999, পৃ. 118।
- ↑ Mittra 2001, পৃ. 88।
- ↑ ক খ Parmar 2008, পৃ. 93।
- ↑ ক খ গ Dalal 2011, পৃ. 465।
- ↑ "Bartaman Bharat 1905 edition title page" (পিডিএফ)। ১৬ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ Jackson 1994, পৃ. 31।
- ↑ ক খ গ ঘ "Modern India"। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ Economic and Political Weekly। Sameeksha Trust। জুলাই ১৯৯২। পৃষ্ঠা 1561। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bartaman Bharat 1905 preface" (পিডিএফ)। ১৬ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ Jitatmananda 1986, পৃ. 25
- ↑ Srivastava 2006, পৃ. 207
- গ্রন্থপঞ্জি
- Chattopadhyaya, Rajagopal (১ জানুয়ারি ১৯৯৯)। Swami Vivekananda in India: A Corrective Biography। Motilal Banarsidass Publ.। আইএসবিএন 978-81-208-1586-5।
- Dalal, Roshen (অক্টোবর ২০১১)। Hinduism: An Alphabetical Guide। Penguin Books India। আইএসবিএন 978-0-14-341421-6।
- Jackson, Carl T. (২২ মে ১৯৯৪)। Vedanta for the West: The Ramakrishna Movement in the United States। Indiana University Press। আইএসবিএন 978-0-253-11388-7।
- Jitatmananda, Swami (১৯৮৬)। The Vedanta Kesari। Sri Ramakrishna Math.। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- Mittra, Sitansu Sekhar (২০০১)। Bengal's Renaissance। Academic Publishers। আইএসবিএন 978-81-87504-18-4।
- Parmar, Himanshu (২০০৮)। Across the Gaping Chasm: Portrayal of Social Oppression in Select Indian Novels। Anamika Publishers & Distributors। আইএসবিএন 978-81-7975-225-8।
- Srivastava (২০০৬)। Teacher in Emerging Indian Society। APH Publishing। আইএসবিএন 978-81-313-0008-4।