বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NafeeSAbbiR (আলোচনা | অবদান) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা |
||
১৮৭ নং লাইন: | ১৮৭ নং লাইন: | ||
{{নোঙ্গর|বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের ঘটনা}} |
{{নোঙ্গর|বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের ঘটনা}} |
||
{{২০১৯–২০২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী উপাত্ত/বাংলাদেশে বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের ঘটনা}} |
{{২০১৯–২০২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী উপাত্ত/বাংলাদেশে বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের ঘটনা}} |
||
===নমুনা পরীক্ষা===<!--তথ্যগুলো, corona.gov.bd/press-release থেকে নিয়ে 'সংখ্যাগুলো' এখানে বসিয়ে দিন। iedcr.gov.bd তে শুধুমাত্র সেদিনের (তখন পর্যন্ত) সম্পাদিত পরীক্ষার সংখ্যা পাবেন।--> |
===নমুনা পরীক্ষা===<!--তথ্যগুলো, corona.gov.bd/press-release থেকে নিয়ে 'সংখ্যাগুলো' এখানে বসিয়ে দিন। iedcr.gov.bd তে শুধুমাত্র সেদিনের (তখন পর্যন্ত) সম্পাদিত পরীক্ষার সংখ্যা পাবেন।--> |
||
{| class="wikitable" |
{| class="wikitable" |
০৮:৪৭, ১২ মে ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
এই নিবন্ধটিতে সাম্প্রতিক রোগের বৈশ্বিক মহামারী সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনার অগ্রগতির সাথে সাথে এই ঘটনাটি সম্পর্কিত তথ্যগুলি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। যদিও এই নিবন্ধটি বেশ দ্রুত হালনাগাদ করা হবে, কিন্তু এটি এই বিষয়টি নিশ্চিত করে না যে এখানে রোগের বৈশ্বিক মহামারী সম্পর্কিত সর্বশেষ সকল তথ্য পাওয়া যাবে। |
২০২০ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী | |
---|---|
রোগ | কোভিড-১৯ |
ভাইরাসের প্রজাতি | সার্স-কোভ-২ |
প্রথম সংক্রমণের ঘটনা | ঢাকা |
আগমনের তারিখ | ৮ মার্চ ২০২০ (৪ বছর, ১ মাস, ২ সপ্তাহ ও ৪ দিন) |
উৎপত্তি | উহান, হুপেই, চীন |
নিশ্চিত আক্রান্ত | ১৫,৬৯১ (সরকারি) |
সক্রিয় আক্রান্ত | ১২,৫৫০ (সরকারি) |
সুস্থ | ২,৯০২ (সরকারি) |
মৃত্যু | ২৩৯ (সরকারি) |
অঞ্চল | আক্রান্ত জেলার তালিকা |
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট | |
corona |
বাংলাদেশে ২০১৯-২০ করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীটির প্রথম সংক্রমণ ঘটে ৮ই মার্চ ২০২০ সালে (৪ বছর, ১ মাস, ২ সপ্তাহ ও ৪ দিন পূর্বে)। ১১ মে ২০২০ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে সর্বমোট ১২৯,৮৬৫ জনের; যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায়, ৭,২০৮ জনের এবং তাদের মধ্যে আক্রান্ত পাওয়া গেছে ১,০৩৪ জন। এখন পর্যন্ত সর্বমোট আক্রান্ত পাওয়া গেছে ১৫,৬৯১ জন। দেশে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ী চলে গেছেন ২,৯০২ জন; যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৫২ জন। দেশে মোট মৃত্যু ২৩৯ জনের যাদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ১১ জন।[১]
আইইডিসিআরের ৯ মে ২০২০ সকাল ৮ ঘটিকা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেশের ৮ টি বিভাগের ৬৪ টি জেলায় আক্রান্তের ঘটনা নিশ্চিত করা গেছে। মহানগর ব্যতীত, ঢাকা বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ২,৫৬৪ জন এবং শতকরা হারে ২৩.২১% (ঢাকা মহানগরে ৬,৪২৩ জন এবং আক্রান্তের হার ৫৮.১৪%)। চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ৬৬৯ জন এবং শতকরা হারে ৬.০৬%। সিলেট বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ১৬৫ জন এবং শতকরা হারে ১.৪৯%। রংপুর বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ৩০৩ জন এবং শতকরা হারে ২.৭৪%। খুলনা বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ২১৭ জন এবং শতকরা হারে ১.৯৬%। ময়মনসিংহ বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ৪১৪ জন এবং শতকরা হারে ৩.৭৫%। বরিশাল বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ১৩৭ জন এবং শতকরা হারে ১.২৪%। রাজশাহী বিভাগে সর্বোমোট আক্রান্ত ১৫৫ জন এবং শতকরা হারে ১.৪০%। [২]
অনেক বিশেষজ্ঞ, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কম পরীক্ষা করাকেই, দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম পাওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন (২২ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বোমোট পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২,৬৩০ টি যা ভারতে ৫০০,৫৪২ টি এবং পাকিস্তানে __ টি)। [৩]
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৪ কোটি জনসংখ্যার দেশ হিসেবে যথেষ্ট পরিমান পরীক্ষা বাংলাদেশে করা হয়নি।[৩][৪] সংবাদপত্র ও সামাজিক মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর লক্ষণসহ অনেকসংখ্যক রোগীর মৃত্যুসংবাদ এসেছে যার মধ্যে কিছুসংখ্যক ভূয়া এবং ষড়যন্ত্রতত্ব বলে প্রামানিত হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় জেলা হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল তবে কয়েকজনকে চিকিৎসা দিতেও অস্বীকৃতি জানানো হয় যদিও যাচাই নিশ্চিত করতে কোনই পরীক্ষা করা হয়নি।[৫] দীর্ঘ সময় যাবত পরীক্ষা প্রক্রিয়াকে শুধুমাত্র রাজধানীর 'আইইডিসিআর' এ বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছিল যদিও কোভিড-১৯ এর লক্ষনসহ রোগীর খোঁজ সারাদেশেই পাওয়া গিয়েছিল।[৬]
'আইইডিসিআর' কর্তৃক একগুচ্ছ হটলাইন নাম্বার, ই মেইল অ্যাড্রেস এবং তাদের ফেসবুক পাতা জনগণের জন্য সরবরাহ ও নিশ্চিত করা হয়েছিল যাতে তারা দরকারী তথ্য বা কোভিড-১৯ সন্দেহে যোগাযোগ করতে পারেন।[৭]
২২ মার্চ, বাংলাদেশ সরকার ১০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল যা ২৬ মার্চ - ৪ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছিল।[৮] পরবর্তীতে তা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধীত করা হয়। অতঃপর পুনরায় তা ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধীত করা হয়। নতুন করে আবারও সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৫ মে পর্যন্ত। [৯] ৪ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানিয়েছে দেশে আগামি ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। এ নিয়ে ষষ্ঠ বারের মত বাড়ানো হয়েছে সাধারণ ছুটির মেয়াদ।[১০]
১৮ এপ্রিলের তথ্যানুসারে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশী। বাংলাদেশের হার ৪% যা ভারতে ৩.৩; পাকিস্তানে ১.৮; শ্রীলঙ্কায় ২.৯; এবং আফগানিস্তানে ৩.৬% । দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল,ভুটান ও মালদ্বীপের অবস্থান তুলনামূলক ভাল। শুরুতেই 'লকডাউন' বাস্তবায়ন করতে পারাকে এর কারণ হিসেবে দাবী করছেন বিশেষজ্ঞরা।[১১]
এই ব্যাধিটির সাধারণ উপসর্গ হিসেবে জ্বর, সর্দি এবং শ্বাসকষ্ট দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে মাংসপেশীর ব্যথা, বারবার থুতু সৃষ্টি এবং গলায় ব্যথা দেখা যেতে পারে।[১২] বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো নমনীয় আকারে দেখা যায়,[১৩] কিন্তু কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে ফুসুফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) এবং বিভিন্ন অঙ্গের বিকলতাও দেখা যায়।[১৪] সংক্রমিত হবার পরে এই ব্যাধিতে মৃত্যুর হার গড়ে ৩.৪%, যেখানে ২০ বছরের নিচের রোগীদের মৃত্যুর হার ০.২% এবং ৮০ বছরের উর্ধ্বে রোগীদের প্রায় ১৫%।[১৫][১৬]
পটভূমি
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা প্রতিবেদনে, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করেছিল যে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের মানুষের জন্য নভেল করোনাভাইরাস শ্বাসকষ্টের একটি কারণ ছিল। মানুষের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছিল।[১৯][২০] কোভিড-১৯ এর কারণে আক্রান্তের মৃত্যুহার ২০০৩-এর সার্স এর চেয়ে অনেক কম ছিল।[২১][২২] তবে সংক্রমণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে এটা উল্লেখযোগ্য।[২৩][২১]
২৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বিভাগপ্রতি রোগ-অন্তরণ (আইসোলেশন) করা শয্যা প্রস্তুত রয়েছে: ঢাকা বিভাগ: ১,১২২ টি; চট্টগ্রাম বিভাগ: ১,২০৮ টি; বরিশাল বিভাগ: ৬২৬ টি; খুলনা বিভাগ: ৯৩২ টি; ময়মনসিংহ বিভাগ: ৪০৮ টি; সিলেট বিভাগ: ৯০৪ টি; রাজশাহী বিভাগ: ৮২১ টি; রংপুর বিভাগ: ৫৫৫ টি (সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে)।[২৪]
যদিও ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) জানিয়েছিল যে, ছুটি ঘোষণার পর যেই ১ কোটি ১০ লাখ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন তার মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিও ছিলেন।[২৫]
৯ই মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারেঃ-[২৪]
- এখন পর্যন্ত বিদেশাগত স্ক্রিনিংকৃত যাত্রীসংখ্যা হল ৬,৮১,৩৩২ জন।
- এখন পর্যন্ত সর্বোমোট পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ১১৬,৯১৯টি যার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট পরীক্ষা সম্পন্ন (পূর্বের নমুনা সহ) হয়েছে ৫,৪৬৫টি। যার মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ১১টি প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করেছে ৩,৪৫৪টি এবং ঢাকার বাইরের ১৫টি প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করেছে ১,৫৪৮টি। এছাড়াও গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সর্বমোট ৪,৭০৬টি যার মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ১৮টি প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে ৩,২৬৮টি এবং ঢাকার বাইরের ১৭টি প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে ১,৭৯৩টি।
- এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংগ্রহ করেছে সর্বোমোট ২০,৯৩,২৯০টি; বিতরণ করেছে সর্বোমোট ১৬,৭৯,২১৪টি; বর্তমান মজুদ আছে ৪,১৪,০৭৬টি।
৯ মে ২০২০ পর্যন্ত দেশের ৪৯ টি জেলাকে সম্পূর্ণ লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে । এছাড়াও কিছু জেলার কয়েকটি উপজেলা বা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকাকে লকডাউন করা হয়েছে। জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসন এই অধিকার রাখেন এবং এজন্য কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনুমতি নেয়ার কোনই প্রয়োজন নেই। লকডাউন ঘোষিত জেলাগুলোতে অন্য জেলা থেকে লোকজনের আসা যাওয়া এবং জেলার আভ্যন্তরীণ চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থানে আছেন। ৯ই মে পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রায় সকল এলাকায় সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে নিশ্চিতকৃত মোট রোগীর প্রায় ৫৫ শতাংশই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। [২৬][২৭]
ঘটনাক্রম
৮ মার্চ, আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বাংলাদেশে প্রথম করোনভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিন জন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির কথা ঘোষণা করেন তিনি। তিনি জানান, তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে।[২৯] তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়। রোগীদের মধ্যে দুজন পুরুষ প্রবাসী বাংলাদেশী ছিলেন যারা সবে ইতালি থেকে ফিরে এসেছিলেন এবং একজন মহিলা আত্মীয় ছিলেন, যিনি তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে সংক্রামিত হন। এর আগে আইইডিসিআর এই বলে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, দেশের জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে, করোনভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ, এবং একই সাথে প্রতিষ্ঠানটি ভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা ঘোষণা করে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে, বাংলাদেশ সরকার এর আগে বাংলাদেশে প্রবেশের সমস্ত বন্দরগুলিতে তাপীয় পর্দা (থার্মাল স্ক্রিনার) স্থাপন করে এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলিতে স্থল ও বিমান ভ্রমণ স্থগিত করে। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে অন্যান্য দেশ থেকে আসা প্রায় একশত প্রবাসীকে নিজগৃহে সঙ্গনিরোধ (হোম কোয়ারান্টিন) অবস্থায় রাখা হয়েছে।
১০ মার্চ, আইইডিসিআর-এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্ত তিনজন ছাড়া বাংলাদেশে নতুন কোন আক্রান্ত ব্যক্তি নেই।[৩০]
১১ মার্চ, আইইডিসিআর-এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, ১০ মার্চের পরীক্ষায় আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুই জন সুস্থ হয়েছেন এবং তাদের ছাড়পত্র প্রদান করা হবে।[৩১]
১২ মার্চ, দুইজন করোনভাইরাস রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে, পরীক্ষা করে তাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ পাওয়া যায়নি। ডাব্লুএইচও প্রোটোকল ব্যবহার করে তাদের পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং পরপর দুটি পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় যে তারা আর সংক্রামিত নন। ফলস্বরূপ, আইইডিসিআর ছাড়পত্র দিয়ে তাদের বাড়িতে যেতে অনুমতি দেয়া।
১৪ মার্চ, আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, পুনরায় আরো ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।[৩২]
১৬ মার্চ, ৩১ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ১৮ মার্চ হতে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর স্থগিত করা হয়।[৩৩][৩৪][৩৫] আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, পুনরায় আরো ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।[৩৬]
১৭ মার্চ, আইইডিসিআর এর পরিচালক সেব্রিনা ফ্লোরা জানান নতুন করে আরও ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।[৩৭]
১৮ মার্চ, ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় আরও ৪ জন, এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ তে পৌছায়।[৩৮][৩৯] আইইডিসিআর কর্তৃক বলা হয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর প্রথম মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির বয়স ছিল ৭০ বছর। মারা যাওয়া ব্যক্তি বিদেশ থেকে আসা ও সংক্রমিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।[৪০]
১৯ মার্চ, বাংলাদেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় আরও ৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা মোট ১৭ জনে পৌঁছায়। নতুন করে যে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন, তারা ইতালিফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।[৪১] ঐদিন বিকালে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা লক ডাউন তথা ওষুধ, কাঁচামাল, মুদি দোকান বাদে সব দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।[৪২][৪৩] ঢাকা থেকে রাজশাহী এবং রাজশাহী থেকে ঢাকার সকল বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।[৪৪] সচিবালয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রস্তুতি বিষয় জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান করোনাভাইরাসের কারণে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন) ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাকাজে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে তুরাগতীরের মাঠ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।[৪৫] বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে সকল প্রকার ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।[৪৬]
২০ মার্চ, বাংলাদেশে নতুন করে তিনজন আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে জানান এদের সবাই কোনো না কোনোভাবে প্রবাসীর সংস্পর্শে ছিলেন।[৪৭]
২১ মার্চ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২য় রোগীর মৃত্যু হয়েছে এবং আরো ৪ জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪।[৪৮] এদিন মধ্যরাত থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত ১০ রুটের সব ধরণের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়ে।[৪৯]
২২ মার্চ, নতুন করে আরো ৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়। আগের তিনজনসহ মোট পাঁচজন সুস্থতা লাভ করে।[৫০] পহেলা এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।[৫১][৫২] বিকালে এক ঘোষণায় দোকান মালিক সমিতি ২৫শে মার্চ থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব বিপণিবিতান বন্ধ ঘোষণা করে।[৫৩]
২৩ মার্চ, নতুন করে আরও ৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত এবং ১ জনের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৩ এ।[৫৪] মন্ত্রিপরিষদের ঘোষণায় ২৯শে মার্চ থেকে ২রা এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষিত হয়। সাপ্তাহিক ছুটি সহ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত কাঁচাবাজার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও হাসপাতালসহ জরুরি সেবা বিভাগ বাদে সকল সরকারি অফিস বন্ধ হয়। একই সাথে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়।[৫৫]
২৪ মার্চ, নতুন ৬ জন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তার মধ্যে একজন ছিলেন বিদেশী প্রত্যাবাসী। ৭০ বছর বয়সী একজন কোভিড-১৯-এ মারা যান।[৫৬]
২৫ মার্চ, নতুন কোনো আক্রান্তের ঘটনা ঘটেনি, নতুন একজন মৃত্যুবরণ করেন।[৫৭]
২৬ মার্চ, নতুন ৫ জন আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৪৪-এ পৌঁছায়। এর মধ্যে ১১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।[৫৮]
২৭ মার্চ, নতুন আরো ৪ জন আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮-এ পৌঁছালো। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসক।[৫৯]
২৮ মার্চ, নতুন করে ০ জন আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা এখনো ৪৮ জন। এর মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।[৬০]
২৯ মার্চ, নতুন কোনো আক্রান্তের ঘটনা ঘটেনি, এমনকি কোনো রোগী সুস্থ বা মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়নি।[৬১]
৩০ মার্চ, নতুন ১ জন আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ জন, যার মধ্যে ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এবং এর মধ্যে ৩ জন ষাটোর্ধ ব্যাক্তিও আছেন।[৬২]
৩১ মার্চ, নতুন করে আরও ২ জনের দেহে নভেল করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫১ জনে। সুস্থ হয়েছেন আরও ৬ জন, মোট সুস্থের সংখ্যা এখন ২৫ জন।[৬৩]
১ এপ্রিল, নতুন করে আরও ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত এবং ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৪-এ। এছাড়াও আইসোলেশনে রয়েছেন ৭৩ জন।[৬৪]
২ এপ্রিল, আরোও ২ জনের দেহে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৬ জন। নতুন করে কারও মৃত্যুর তথ্য না আসায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ মৃতের মোট সংখ্যা আগের মতোই ৬ জনে রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।[৬৫]
৩ এপ্রিল, আরোও ৫ জনের দেহে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬১ জন। নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৯ জন, যার মধ্যে ৭ জন নিজ বাসায় এবং ২২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।[৬৬]
৪ এপ্রিল, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭০। মোট মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩০ জন।[৬৭]
৫ এপ্রিল, একদিনেই নতুন ১৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে, দেশে কোভিড-১৯ এ মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ জন। দেশে গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মত নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এটাই ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা।[৬৮]
৬ এপ্রিল, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ১২ জন। আর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জন। ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর এটাই প্রথম সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত করা হলো। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১২৩ জন। [৬৯] আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার ৬৪,নারায়নগঞ্জ এর ২০, মাদারীপুরের ১১ এবং গাইবান্ধা জেলার ৫ জন ব্যক্তি ছিলেন। IEDCR কর্তৃক ৫টি জেলাকে ক্লাস্টার বা গুচ্ছ সংক্রমণের কেন্দ্র বলা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত মূল সংক্রমণ এই পাঁচ জেলাতেই হয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে। এছাড়াও, কয়েকটি জেলায় গুচ্ছ সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে যেগুলোতে এরই মধ্যে একাধিক আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ২, জামালপুরে ৩, কুমিল্লায় ২,চুয়াডাঙ্গায় ১ ও সিলেটে ১ জন সহ সারা বাংলাদেশের ১৫ জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে বলা গেছে।[৩]
৭ এপ্রিল, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আরো ৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭ জনে। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরো ৪১ জন, যা এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৬৪ জন।[৭০]
৮ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২০। এ ছাড়া, নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।[৭১]
৯ এপ্রিল, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ জন মারা গেছেন। এ সময়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ১১২ জন। আজ ১ জনের মৃত্যু দিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ জন। দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৩৩০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।[৭২]
১০ এপ্রিল, দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৭ জনে পৌঁছালো। এছাড়াও নতুন করে আরো ৯৪ জনের দেহে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। এ নিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২৪।[৭৩]
১১ এপ্রিল, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩০ জন। এ সময়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫৮ জন। সব মিলে দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৪৮২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৩ জন।[৭৪]
১২ এপ্রিল, দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪ জনে পৌঁছালো। এছাড়াও নতুন করে আরো ১৩৯ জনের দেহে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। এ নিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২১। নতুন করে ৩ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৯।[৭৫]
১৩ এপ্রিল, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। এসময়ের মধ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৮২। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০৩। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯৭০টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০,৬২৩টি।[৭৬]
১৪ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৬। এ ছাড়া, নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ২০৯ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১,০১২ জনে দাঁড়িয়েছে।[৭৭]
১৫ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মঈন উদ্দিন, যিনি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা একমাত্র ডাক্তার।[৭৮] এছাড়া এই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২১৯ জন। এ নিয়ে করোনায় মোট মারা গেলেন ৫০ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১,২৩১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৪৯ জন।[৭৯]
১৬ এপ্রিল, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০ জন মারা গেছেন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৩৪১ জন। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০ জন। দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১,৫৭২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।[৮০]
১৭ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৭৫। এ ছাড়া, নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১,৮৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে।[৮১]
১৮ এপ্রিল, বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৬ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত হলেন ২,১৪৪ জন এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সর্বমোট ৮৪ জনের। এছাড়াও নতুন করে ৮ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬।[৮২]
১৯ এপ্রিল, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জন মারা গেছেন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৩১২ জন। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯১ জন। দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ২,৪৫৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন করে ৯ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৫ জন।[৮৩]
২০ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১০ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১০১। নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২,৯৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে মোট ৮৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হলেন।[৮৪]
২১ এপ্রিল, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের। এসময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৩৪ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩,৩৮২ জন। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ জন। এ নিয়ে মোট ৮৭ জন করোনা রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২,৯৭৪টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯,৫৭৮টি।[৮৫]
২২ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১০ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১২০। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩৯০ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩,৭৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫ জন। এ নিয়ে মোট ৯২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩,০৯৬টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২,৬৭৪টি ।[৮৬]
২৩ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১২৭। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৪১৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪,১৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৬ জন। এ নিয়ে মোট ১০৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।[৮৭]
২৪ এপ্রিল,করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৪ জন মারা গেছেন। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে ১৩১ । গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১২ জন।[৮৮]
২৫ এপ্রিল, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪০ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৩০৯ জন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৪,৯৯৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মোট সুস্থের সংখ্যা ১১২ জন।[৮৯]
২৬ এপ্রিল, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪৫ জনের। এসময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪১৮ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫,৪১৬ জন। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৯ জন। এ নিয়ে মোট ১২২ জন করোনা রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩,৪৭৬টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬,৫৮৯টি।[৯০][৯১]
২৭ এপ্রিল, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের। এসময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৯৭ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫,৯১৩ জন। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৯ জন। এ নিয়ে মোট ১৩১ জন করোনা রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩,৮১২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০,৪০১টি।[৯২]
২৮ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৫৫। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৪৯ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬,৪৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৮ জন। এ নিয়ে মোট ১৩৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪,৩৩২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৪,৭৩৩টি।[৯৩]
২৯ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৮ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬৩। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬৪১ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭,১০৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১১ জন। এ নিয়ে মোট ১৫০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪,৯৬৮টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৯,৭০১টি।[৯৪]
৩০ এপ্রিল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬৮। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৬৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭,৬৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে মোট ১৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪,৯৬৫টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৪,৬৬৬টি।[৯৫]
১ মে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭০ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৫৭১ জন। আজ দেশে প্রথম কোনো সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যার নাম মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং তিনি নওগাঁ–২ আসনের সংসদ সদস্য। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪ জন। এ নিয়ে মোট ১৭৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।[৯৬][৯৭]
২ মে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৭৫। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৫২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮,৭৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩ জন। এ নিয়ে মোট ১৭৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫,৮২৭টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৬,০৬৬টি।[৯৮]
৩ মে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭৭ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯,৪৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ৮৮৬ জন। এ নিয়ে মোট ১,০৬৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন। যদিও বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে একদিনে এত সংখ্যক রোগী সুস্থ হবার বিষয়ে কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, যেখানে গত দিনেগুলতে খুব অল্পসংখ্যক রোগী সুস্থ হয়েছেন।উল্লেখ্য, গতকাল পর্যন্ত মোট সুস্থ হবার ঘটনা ছিল মাত্র ১৭৭টি।[৯৯]
৪ মে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৮২। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬৮৮ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০,১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪৭ জন। এ নিয়ে মোট ১,২০৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬,২০৭টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৭,৬৪১টি।[১০০]
৫ মে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৩ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৭৮৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০,৯২৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯৩ জন। এ নিয়ে মোট ১৪০৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।[১০১]
৬ মে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৬ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৭৯০ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১১,৭১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে হয়েছেন আরও ৩৭৭ জন। ফলে মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭৮০ জন।[১০২]
৭ মে-৯ মে, গত ৭ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মারা গেছে যথাক্রমে ১৩ জন, ৭ জন এবং ৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৪ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন যথাক্রমে ৭০৬ জন, ৭০৯ জন এবং ৬৩৬ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৩,৭৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে হয়েছেন যথাক্রমে ১৩০ জন, ১৯১ জন এবং ৩১৩ জন। ফলে মোট সুস্থের সংখ্যা দাঁড়ালো ২,৪১৪ জন। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১৬,৯১৯টি।[১০৩]
পরিসংখ্যান
বিভাগভিত্তিক আক্রান্ত
বিভাগ | জেলা/শহর | মোট আক্রান্ত | |
---|---|---|---|
জেলা | বিভাগ | ||
ঢাকা | ঢাকা শহর | ১৫০৬২৯ | ২,০৫,১১৪ (৫৬.৮%) |
ঢাকা (জেলা) | ৬১৭৯ | ||
গাজীপুর | ৬৬৯৪ | ||
কিশোরগঞ্জ | ৩৩৪১ | ||
মাদারীপুর | ১৫৯৯ | ||
মানিকগঞ্জ | ১৭১৩ | ||
নারায়ণগঞ্জ | ৮২৯০ | ||
মুন্সীগঞ্জ | ৪২৫১ | ||
নরসিংদী | ২৭০১ | ||
রাজবাড়ী | ৩৩৫২ | ||
ফরিদপুর | ৭৯৮১ | ||
টাঙ্গাইল | ৩৬০১ | ||
শরীয়তপুর | ১৮৫৪ | ||
গোপালগঞ্জ | ২৯২৯ | ||
চট্টগ্রাম | চট্টগ্রাম | ২৮১১২ | ৬০,৪৯৭ (১৬.৭%) |
কক্সবাজার | ৫৬০৮ | ||
কুমিল্লা | ৮৮০৩ | ||
ব্রাহ্মণবাড়িয়া | ২৭১৪ | ||
লক্ষ্মীপুর | ২২৮৩ | ||
চাঁদপুর | ২৬০০ | ||
নোয়াখালী | ৫৪৫৫ | ||
বান্দরবান | ৮৭১ | ||
রাঙামাটি | ১০৯৮ | ||
ফেনী | ২১৮০ | ||
খাগড়াছড়ি | ৭৭৩ | ||
সিলেট | মৌলভীবাজার | ১৮৫৪ | ১৫,১২০ (৪.২%) |
সুনামগঞ্জ | ২৪৯৫ | ||
হবিগঞ্জ | ১৯৩৪ | ||
সিলেট | ৮৮৩৭ | ||
রংপুর | রংপুর | ৩৮০৩ | ১৪,৯০৫ (৪.১%) |
গাইবান্ধা | ১৪০৩ | ||
নীলফামারী | ১২৮০ | ||
লালমনিরহাট | ৯৪২ | ||
কুড়িগ্রাম | ৯৮৭ | ||
দিনাজপুর | ৪২৯৫ | ||
ঠাকুরগাঁও | ১৪৪২ | ||
পঞ্চগড় | ৭৫৩ | ||
খুলনা | খুলনা | ৭০২৭ | ২৪,৬০১ (৬.৮%) |
নড়াইল | ১৫১১ | ||
চুয়াডাঙ্গা | ১৬১৯ | ||
যশোর | ৪৫৪২ | ||
বাগেরহাট | ১০৩২ | ||
মাগুরা | ১০৩২ | ||
মেহেরপুর | ৭৩৯ | ||
ঝিনাইদহ | ২২৪৫ | ||
কুষ্টিয়া | ৩৭০৭ | ||
সাতক্ষীরা | ১১৪৭ | ||
ময়মনসিংহ | ময়মনসিংহ | ৪২৭৮ | ৭৩৯০ (২.০%) |
জামালপুর | ১৭৫৩ | ||
নেত্রকোণা | ৮১৭ | ||
শেরপুর | ৫৪২ | ||
বরিশাল | বরগুনা | ১০০৮ | ১০,১১৩ (২.৮%) |
বরিশাল | ৪৫৭১ | ||
পটুয়াখালী | ১৬৬০ | ||
পিরোজপুর | ১১৪৪ | ||
ঝালকাঠি | ৮০৪ | ||
ভোলা | ৯২৬ | ||
রাজশাহী | রাজশাহী | ৫৬৮৭ | ২৩,৬৮২ (৬.৬%) |
জয়পুরহাট | ১২৫০ | ||
পাবনা | ১৫৪৪ | ||
চাঁপাইনবাবগঞ্জ | ৮১১ | ||
বগুড়া | ৯২৪০ | ||
নওগাঁ | ১৪৯৯ | ||
সিরাজগঞ্জ | ২৪৮৯ | ||
নাটোর | ১১৬২ | ||
মোট (৮টি বিভাগ) | ৩,৬১,৪২২ | ||
১৫ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত (আইইডিসিআর-এর সর্বশেষ হালনাগাদ অনুসারে)।[১০৪] |
নমুনা পরীক্ষা
সর্বোমোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে | ১,২৯,৮৬৫ |
---|---|
প্রতি দশ লাখে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে | ৭৮৯ |
গত ২৪ ঘন্টায় পরীক্ষা | ৭,২০৮ |
সর্বোমোট আক্রান্ত | ১৫,৬৯১ |
১১ মে ২০২০ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে[১] |
আক্রান্ত ও মৃত্যু
সর্বমোট | গত ২৪ ঘন্টায় | টীকা | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
তারিখ | মোট পরীক্ষিত | সর্বোমোট আক্রান্ত | সর্বোমোট মৃত্যু | সর্বোমোট সুস্থ হয়েছেন | নতুন পরীক্ষা করা হয়েছে | নতুন আক্রান্ত | নতুন মৃত্যু | নতুন সুস্থ হয়েছেন | |
২০২০-০৩-০৭ | ১১১[১০৬] | ০ | ০ | ০ | ০ | ||||
২০২০-০৩-০৮ | ১১১[১০৭] | ৩ | ০ | ০ | ০ | ||||
২০২০-০৩-০৯ | ১১১[১০৮] | ৩ | ০ | ০ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১০ | ১১১[১০৯] | ৩ | ০ | ০ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১১ | ১৪২[১১০] | ৩ | ০ | ২ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১২ | ১৬৩[১১১] | ৩ | ০ | ২ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১৩ | ১৮৭[১১২] | ৩ | ০ | ২ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১৪ | ২১১[১১৩] | ৫ | ০ | ৩ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১৫ | ২৩১[১১৪] | ৫ | ০ | ৩ | ০ | ||||
২০২০-০৩-১৬ | ২৪১[১১৫] | ৮ | ০ | ৩ | ০ | ০ | |||
২০২০-০৩-১৭ | ২৭৭[১১৬] | ১০ | ০ | ২ | ০ | ০ | |||
২০২০-০৩-১৮[১১৭] | ৩৫১ | ১৪ | ১ | ৩ | ১০ | ৪ | ১ | ১ | |
২০২০-০৩-১৯[১১৮] | ৩৯৭ | ১৭ | ১ | ৩ | ৪৬ | ৩ | ০ | ০ | পুরুষ ২ জন ইতালি ফেরত এবং সেই মহিলা একজনের পরিবারের সদস্য |
২০২০-০৩-২০[১১৯] | ৪৩৩ | ২০ | ১ | ৩ | ৩৬ | ৩ | ০ | ০ | |
২০২০-০৩-২১[১২০] | ৪৩৩*
(টীকা দেখুন) |
২৪ | ২ | ৩ | ৩৬*
(টীকা দেখুন) |
৪ | ১ | ২ | সম্প্রদায় বাহিত হয়ে প্রথম সংক্রমন * ২০ ও ২১ তারিখের সরকারী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একই হিসাবের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে যা সাম্ভব্য টাইপিং ত্রুটি। |
২০২০-০৩-২২ | ৫৬৪[১২১] | ২৭ | ২ | ৫ | ২৭ | ৩ | ০ | ০ | নতুন একজন চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছেন যিনি ২০ মার্চ মারা যাওয়া রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন |
২০২০-০৩-২৩[১২২] | ৬২০ | ৩৩ | ৩ | ৫ | ৫৬ | ৬ | ১ | ০ | ৩ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ; ২৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ২ জন ভারত ও বাহরাইন ফেরত। নতুন মৃত্যুটি সম্প্রদায় বাহিত। |
২০২০-০৩-২৪[১২৩] | ৭১২ | ৩৯ | ৪ | ৫ | ৯২ | ৫ | ১ | ০ | |
২০২০-০৩-২৫ | ৭৯৪[১২৪] | ৩৯ | ৫ | ৫ | ৮২ | ০ | ১ | ৬ | |
২০২০-০৩-২৬ | ৯২০[১২৫] | ৪৪ | ৫ | ১১ | ১২৬ | ৫ | ০ | ০ | |
২০২০-০৩-২৭ | ১,০২৬[১২৬] | ৪৮ | ৫ | ১১ | ১০৬ | ৩ | ০ | ০ | |
২০২০-০৩-২৮ | ১,০৭৬[১২৭] | ৪৮ | ৫ | ১৫ | ৪৭ | ০ | ০ | ৪ | |
২০২০-০৩-২৯ [১২৮] | ১,১৮৫[১২৯] | ৪৮ | ৫ | ১৫ | ১০৯ | ০ | ০ | ০ | |
২০২০-০৩-৩০[১৩০] | ১,৩৩৮[১৩১] | ৪৯ | ৫ | ১৯ | ১৫৩ | ১ | ০ | ৪ | |
২০২০-০৩-৩১[১৩২] | ১,৬০২[১৩৩] | ৫১ | ৫ | ২৫ | ১৪০ | ২ | ০ | ৬ | |
২০২০-০৪-০১[১৩৪] | ১,৭৫৯[১৩৫] | ৫৪ | ৬ | ২৬ | ১৫৭ | ১ | ১ | ১ | |
২০২০-০৪-০২[১৩৬] | ১,৯০৬[১৩৭] | ৫৬ | ৬ | ২৬ | ১৪১ | ২ | ০ | ০ | |
২০২০-০৪-০৩[১৩৮] | ২,১১৩[১৩৯] | ৬১ | ৬ | ২৬ | ২০৩ | ৫ | ০ | ০ | |
২০২০-০৪-০৪[১৪০] | ২,৫৪৭[১৪১] | ৭০ | ৮ | ৩০ | ৪৩৪ | ৯ | ২ | ৪ | |
২০২০-০৪-০৫[১৪২] | ২,৯১৪[১৪৩] | ৮৮ | ৯ | ৩৩ | ৩৬৭ | ১৮ | ১ | ৩ | |
২০২০-০৪-০৬[১৪৪] | ৩,৬১০[১৪৫] | ১৬৪ | ১৭ | ৩৩ | ৪৬৮ | ৪১ | ৫ | ০ | |
২০২০-০৪-০৭[১৪৬] | ৪,২৮৯[১৪৭] | ১৬৪ | ১৭ | ৩৩ | ৭৯২ | ৪১ | ৫ | ০ | |
২০২০-০৪-০৮[১৪৮] | ৫,১৬৪[১৪৯] | ২১৮ | ২০ | ৩৩ | ৯৮১ | ৫৪ | ৩ | ০ | |
২০২০-০৪-০৯[১৫০] | ৬,১৭৫[১৫১] | ৩৩০ | ২১ | ৩৩ | ৯০৫ | ১১২ | ১ | ০ | |
২০২০-০৪-১০[১৫২] | ৭,৩৫৯[১৫৩] | ৪২৪ | ২৭ | ৩৩ | ১,১৮৪ | ৯৪ | ৬ | ০ | |
২০২০-০৪-১১[১৫৪] | ৮,৩১৩ | ৪৮২ | ৩০ | ৩৬ | ৯৫৪ | ৫৮ | ৩ | ৩ | |
২০২০-০৪-১২[১৫৫] | ৯,৬৫৩ [১৫৬] | ৬২১ | ৩৪ | ৩৯ | ১,৩৪০ | ১৩৯ | ৪ | ৩ | |
২০২০-০৪-১৩[১৫৭] | ১১,২২৩ [১৫৮] | ৮০৩ | ৩৯ | ৪২ | ১,৫৭০ | ১৮২ | ৫ | ৩ | |
২০২০-০৪-১৪[১৫৯] | ১৩,১২৮ | ১,০১২ | ৪৬ | ৪২ | ১,৯০৫ | ২০৯ | ৭ | ০ | |
২০২০-০৪-১৫[১৬০] | ১৪,৮৬৮ | ১,২৩১ | ৫০ | ৪৯ | ১,৭৪০ | ২১৯ | ৪ | ৭ | |
২০২০-০৪-১৬[১৬১] | ১৬,৯৮৭ | ১,৫৭২ | ৬০ | ৪৯ | ২,০১৯ | ৩৪১ | ১০ | ||
২০২০-০৪-১৭[১৬২] | ১৯,০৭৭ | ১,৮৩৮ | ৭৫ | ৫৮ | ২,১৯০ | ২৬৬ | ১৫ | ৯ | |
২০২০-০৪-১৮[১৬৩] | ২১,১৯১ | ২,১৪৪ | ৮৪ | ৬৬ | ২,১১৪ | ৩০৬ | ৯ | ৮ | |
২০২০-০৪-১৯[১৬৪] | ২৩,৮২৫ | ২,৪৫৬ | ৯১ | ৭৫ | ২,৬৩৪ | ৩১২ | ৭ | ৯ | |
২০২০-০৪-২০[১৬৫] | ২৬,৬০৪ | ২,৯৪৮ | ১০১ | ৮৫ | ২,৭৭৯ | ৪৯২ | ১০ | ১০ | করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ১০০ অতিক্রম |
২০২০-০৪-২১[১৬৬] | ২৯,৫৭৮ | ৩,৩৮২ | ১১০ | ৮৭ | ২,৯৭৪ | ৪৩৪ | ৯ | ২ | |
২০২০-০৪-২২[১৬৭] | ৩২,৬৭৪ | ৩,৭৭২ | ১২০ | ৯২ | ৩,০৯৬ | ৩৯০ | ১০ | ৫ | |
২০২০-০৪-২৩[৮৭] | ৩৬,০৯০ | ৪,১৮৬ | ১২৭ | ১০৮ | ৩,৪১৬ | ৪১৪ | ৭ | ১৬ | |
২০২০-০৪-২৪[৮৮] | ৩৯,৭৭৬ | ৪,৬৮৯ | ১৩১ | ১১২ | ৩,৬৮৬ | ৫০৩ | ৪ | ৪ | |
২০২০-০৪-২৫[৮৯] | ৪৩,১১৩ | ৪,৯৯৮ | ১৪০ | ১১৩ | ৩,৩৩৭ | ৩০৯ | ৯ | ১ | |
২০২০-০৪-২৬[৯১] | ৪৬,৫৮৯ | ৫,৪১৬ | ১৪৫ | ১২২ | ৩,৪৭৬ | ৪১৮ | ৫ | ৯ | করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫,০০০ অতিক্রম |
২০২০-০৪-২৭[৯২] | ৫০,৪০১ | ৫,৯১৩ | ১৫২ | ১৩১ | ৩,৮১২ | ৪৯৭ | ৭ | ৯ | |
২০২০-০৪-২৮[৯৩] | ৫৪,৭৩৩ | ৬,৪৬২ | ১৫৫ | ১৩৯ | ৪,৩৩২ | ৫৪৯ | ৩ | ৮ | |
২০২০-০৪-২৯[৯৪] | ৫৯,৭০১ | ৭,১০৩ | ১৬৩ | ১৫০ | ৫,৯৬৮ | ৬৪১ | ৮ | ১১ | |
২০২০-০৪-৩০[৯৫] | ৬৪,৬৬৬ | ৭,৬৬৭ | ১৬৮ | ১৬০ | ৫,৯৬৫ | ৫৬৪ | ৫ | ১০ | |
২০২০-০৫-০১[১৬৮] | ৭০,২৩৯ | ৮,২৩৮ | ১৭০ | ১৭৪ | ৫,৫৭৩ | ৫৭১ | ২ | ১৪ | |
২০২০-০৫-০২[৯৮] | ৭৬,০৬৬ | ৮,৭৯০ | ১৭৫ | ১৭৭ | ৫,৮২৭ | ৫৫২ | ৫ | ৩ | |
২০২০-০৫-০৩[১৬৯] | ৮১,৪৩৪ | ৯,৪৫৫ | ১৭৭ | ১,০৬৩ | ৫,৩৬৮ | ৬৬৫ | ২ | ৮৮৬ | ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী সুস্থ হয়েছেন।[৯৯] |
২০২০-০৫-০৪[১০০] | ৮৭,৬৯৪ | ১০,১৪৩ | ১৮২ | ১,২০৯ | ৬,২৬০ | ৬৮৮ | ৫ | ১৪৬ | দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০,০০০ অতিক্রম। |
২০২০-০৫-০৫[১৭০] | ৯৩,৪০৫ | ১০,৯২৯ | ১৮৩ | ১,৪০২ | ৫,৭১১ | ৭৮৬ | ১ | ১৯৩ | |
২০২০-০৫-০৬[১০২] | ৯৯,৬৪৬ | ১১,৭১৯ | ১৮৬ | ১,৪০৩ | ৬,২৪১ | ৭৯০ | ৩ | ৩৭৭ | |
২০২০-০৫-০৭ | ১,০৫,৫১৩ | ১২,৪২৫ | ১৯৯ | ১,৯১০ | ৫,৮৬৭ | ৭০৬ | ১৩ | ১৩০ | |
২০২০-০৫-০৮ | ১,১১,৪৫৪ | ১৩,১৪৫ | ২০৬ | ২,১০১ | ৫,৯৪১ | ৭০৯ | ৭ | ১৯১ | করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ২০০ অতিক্রম |
২০২০-০৫-০৯[১০৩] | ১,১৬,৯১৯ | ১৩,৭৭০ | ২১৪ | ২,৪১৪ | ৫,৫১৮ | ৬৩৬ | ৮ | ৩১৩ | |
২০২০-০৫-১০ | ১,২২,৬৫৭ | ১৪,৬৫৭ | ২২৮ | ২,৬৫০ | ৫,৭৩৮ | ৮৮৭ | ১৪ | ২৩৬ | |
২০২০-০৫-১১[১৭১] | ১,২৯,৮৬৫ | ১৫,৬৯১ | ২৩৯ | ২,৯০২ | ৭,২০৮ | ১,০৩৪ | ১১ | ২৫২ | প্রথম বারের মত ২৪ ঘণ্টায় ১০০০ এর বেশি রোগী সনাক্ত। |
গ্রাফ
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
কারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
অবরুদ্ধকরণ বা লকডাউন
২০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোট সংক্রমণ সংখ্যা ২,৯৪৮ জন।[১৭২] কিছু অঞ্চলে সম্প্রদায় সংক্রমণ হয়েছে বলে জানানো হয়। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের মোট ৫২টি জেলাকে সম্পূর্ণ বা আংশিক অবরুদ্ধকরণ করা হয়।[১৭৩] ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমণ ঘটেছে। এরপরেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর। ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়া হয়।[১৭৪] সংক্রমণ ঠেকাতে ১১ এপ্রিল গাজীপুর জেলা পুরোপুরি অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।[১৭৫] এছাড়া ঢাকায় সংক্রমণ অনুযায়ী আক্রান্ত রোগীর বসবাসরত ভবন বা গলি অবরুদ্ধ করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার টোলারবাগ এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুজন মারা যাওয়ার পর অবরুদ্ধ করা হয়। এটিই ঢাকার অন্যতম প্রথম এলাকা যা অবরুদ্ধ করা হয়।[১৭৬]
সাধারণ ছুটি
২২ মার্চ এক ঘোষণায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরবর্তীতে দফায় দফায়[১৭৭] বাড়িয়ে অতঃপর ৫মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়।[১৭৮] বিভিন্ন দেশের মত[১৭৯][১৮০] দেশজুড়ে অবরুদ্ধকরণ না হলেও সারা দেশেই অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মুক্তভাবে চলাচলের উপর বাধা আরোপ করা হয়ে। সারা দেশে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাইরে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একইসাথে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল বন্ধের জন্যও প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করে।[১৭৭]
সম্পূর্ণ ও আংশিক লকডাউন
সম্পূর্ণ লকডাউন:
৩০ই এপ্রিল থেকে নাটোর (পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত)[১৮১]
২৭ই এপ্রিল থেকে নড়াইল (অনির্দিষ্টকালের জন্য)[১৮২]
২৬ই এপ্রিল থেকে যশোর (অনির্দিষ্টকালের জন্য)[১৮৩]
২১ই এপ্রিল থেকে বগুড়া (পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত)[১৮৪]
১৯ই এপ্রিল থেকে মানিকগঞ্জ (পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত)[১৮৫]
১৫ই এপ্রিল থেকে শরীয়তপুর, দিনাজপুর ও নওগাঁ [১৮৬]
১৪ই এপ্রিল থেকে গোপালগঞ্জ (পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত), নীলফামারী ও ময়মনসিংহ [১৮৬]
১১ই এপ্রিল থেকে গাজীপুর, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী (আগামী ১০ দিনের জন্য), নোয়াখালী
১০ এপ্রিল থেকে: কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, গাইবান্ধা,
৯ এপ্রিল থেকে: জামালপুর, নরসিংদী, চাঁদপুর,
৮ এপ্রিল থেকে: নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার,
৭ এপ্রিল থেকে: টাঙ্গাইল
আংশিক লকডাউন:
বান্দরবান জেলার লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও রুমা উপজেলা (২৪ মার্চ থেকে)
মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর পৌরসভা, সিংগাইর উপজেলার জার্মিতা ইউনিয়ন। শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের আটটি গ্রাম। হরিরামপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন এর কয়েকটি বাড়ি।
সিরাজগঞ্জ জেলার তিন উপজেলায় আংশিক লকডাউন। সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ১৭টি ওয়ার্ড লকডাউন। এছাড়া খোকশাবাড়ী, ছোনগাছা, রতনকান্দি, সয়দাবাদ, মেছড়া ও কাওয়াকোলা ইউনিয়ন।
খুলনা জেলায় সব ধরনের যানবাহন প্রবেশ ও বের হওয়া বন্ধ করলেও জেলা প্রশাসন এটিকে লকডাউন বলেনি।
সাতক্ষীরা জেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সব জেলার সীমান্ত এবং আন্তঃউপজেলা সীমান্তে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সব জেলার ব্যক্তি ও পরিবহন প্রবেশে কুষ্টিয়া জেলায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন (৯ এপ্রিল থেকে)
পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা (৭ এপ্রিল থেকে)
বরিশালে প্রবেশ ও ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা (৭ এপ্রিল থেকে)
দিনাজপুর জেলায় ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ যানচলাচলের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া হলেও জেলা প্রশাসন এটিকে লকডাউন বলেনি।[১৮৭]
কোভিড-১৯ পরীক্ষাকেন্দ্র ও নমুনাসংগ্রহ
৯ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, তখন পর্যন্ত সর্বোমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৬,২৬১ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১,০৯৭ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৬১৮ টি এবং ঢাকার বাইরে ৪৭৯ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৯০৫ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৫৫৫ টি এবং ঢাকার বাইরে ৩৫০ টি।
৮ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, তখন পর্যন্ত সর্বোমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৫,১৬৪ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৯৮৮ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৫৬৩ টি এবং ঢাকার বাইরে ৪২৫ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৯৮১ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৬২২ টি এবং ঢাকার বাইরে ৩৫৯ টি।
৭ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, তখন পর্যন্ত সর্বমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৪,২৮৯ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোমোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৭৯২ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৬৪৭ টি এবং ঢাকার বাইরে ১৪৫ টি। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৬৭৯ টি যার মধ্যে ঢাকাতে ৫৮২ টি এবং ঢাকার বাইরে ৯৭ টি।
৬ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, সেদিনের ২৪ ঘন্টায় ঢাকার ভেতরে সর্বমোট নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৪২৪ টি এবং ঢাকার বাইরে ১২৬ টি। ঢাকার ভেতরে পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ৩৬২ টি এবং ঢাকার বাইরে ১০৬ টি। তখন পর্যন্ত সর্বমোট সম্পাদিত পরীক্ষা: ৩৬১০ টি।
৩ এপ্রিল এর তথ্যানুসারে, সেদিন নমুনা সংগৃহীত হয়েছিল ৫২৩ টি, যার মধ্যে 'আইডিসিআর' কতৃক ১২৬ টি। বাঁকি ৩৯৭ টি নমুনা সংগ্রহ করেছে জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো। পরীক্ষাকৃত নমুনার মধ্যে বিএসএমএমইউ (BSMMU) কেন্দ্রে ২ টি, আইইডিসিআর (IEDCR) কেন্দ্রে ২ টি এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে ১টি নমুনা নিশ্চিত আক্রান্ত পাওয়া গেছে।
২ এপ্রিল, ৫ ঘন্টা পর্যন্ত সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগীর ২৫৫ টি নমুনা দেশের ৩৯ টি জেলা থেকে মেডিকেল টেকনোলজিস্টগণ পিসিআর টেস্টের জন্য সংগ্রহ করেছেন। সন্ধ্যা ৭ ঘটিকা পর্যন্ত ঢাকা মহাননগরীর ৯ টি এবং ঢাকার বাইরে ৫টি আরটি-পিসিআর পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। [২ এপ্রিলের জরুরী সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে]
৮ এপ্রিলের, তথ্যানুযায়ী দেশে ১৬ টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯ টি ঢাকার মধ্যে এবং ৭ টি ঢাকার বাইরে। ঢাকার প্রতিষ্ঠানগুলো (গত ২৪ ঘন্টায়):
১. আর্মড ফোর্সেস ইন্সটিটিউট অব প্যাথলজি: নমুনা সংগ্রহ: ১২ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ১২ জন; সর্বমোট পরীক্ষা:৪৩ জন
২. বিএসএমএমইউ (BSMMU): নমুনা সংগ্রহ: ৪৭ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৪৭ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ১৩৮ জন
৩. ঢাকা শিশু হাসপাতাল (চাইল্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন এর সহায়তায়): নমুনা সংগ্রহ: ৩২ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৩৩ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৯৬ জন
৪. ঢাকা মেডিকেল কলেজ: নমুনা সংগ্রহ: ১৪ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ১৫ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৫৩ জন
৫. আইসিডিডিআরবি (ICDDRB): নমুনা সংগ্রহ: ৫১ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৫১ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৫২৬ জন
৬. ইন্সটিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ (ideSHi)(আইদেশী, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, গত ২৪ ঘন্টা):নমুনা সংগ্রহ: ৩৩ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৩৩ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ১৪৬ জন
৭. আইপিএইচ (IPH): নমুনা সংগ্রহ: ১৩১ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ১৮৮ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৭৫৫ জন
৮. আইইডিসিআর (IEDCR): নমুনা সংগ্রহ: ২০৫ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ২০৫ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ২,৪৭৬ জন
৯. ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন: নমুনা সংগ্রহ: ৩৮ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৩৮ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ১৮০ জন
ঢাকার বাইরে যেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করা হচ্ছে (২৪ ঘন্টায়):
১০. বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল এন্ড ইনফেকসিয়াস ডিজিসেস (BITID), চট্টগ্রাম: নমুনা সংগ্রহ: ৯০ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৪৭ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ২০৯ জন
১১. কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ,কক্সবাজার: নমুনা সংগ্রহ: ১৯ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ২৬ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৪৯ জন
১২. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: নমুনা সংগ্রহ: ৯৩ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ):: ৯৩ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ২৩৯ জন
১৩. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: নমুনা সংগ্রহ: ৩৫ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ):: ৩৫ জন; সর্বমোট পরীক্ষা:১৩২ জন
১৪. রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: নমুনা সংগ্রহ: ৫৩ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ):: ৫৩ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ১২২ জন
১৫. সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: নমুনা সংগ্রহ: ১১৬ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ৯৪ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ৯৪ জন
১৬. খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: নমুনা সংগ্রহ: ১৯ জন; পরীক্ষা (পূর্বের নমুনা সহ): ১২ জন; সর্বমোট পরীক্ষা: ১২ জন [৮ এপ্রিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে](৭ এপ্রিল দুপুর ১২- ৮ এপ্রিল দুপুর ১২)
ঢাকার বাইরের এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে রোগীদের বিনামূল্যে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে। অধ্যক্ষগণ জনগণকে নমুনা পাঠানোর অনুরোধও জানিয়েছেন। আইইডিসিআর এর পরিচালক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সন্দেহভাজন রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিকটস্থ ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
২৯ মার্চের, তথ্যানুযায়ী দেশে ৭ টি স্থানে করোনা টেস্ট করানো হচ্ছে এবং শীঘ্রই ১১ টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ স্ক্রিনিং শুরু করা হবে। ২৯ মার্চ 'আইইডিসিআর' এর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন যে: আইইডিসিআর (IEDCR), আইপিএইচ (IPH), ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন, আইসিডিডিআরবি (ICDDRB), শিশু হাসপাতাল, চিলড্রেন হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও ideSHi নামের একটি বিজ্ঞানভিত্তিক অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই PCR (পলিমারেজ চেইন রিএকশন) টেস্ট করার জন্য প্রস্তুত আছে এবং এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
ঢাকার বাইরে প্রতিটি বিভাগে পিসিআর পরীক্ষা সম্প্রসারণের পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং চট্টগ্রাম বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ট্রপিকাল মেডিসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিস হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরু হয়। রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর মেশিন বসানোর কাজ প্রায় শেষ এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে অন্য বিভাগগুলোতেও করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা শুরু হবে।
এ পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে তিন লাখ পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। ২৯ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ ভেন্টিলেটর হাতে ছিলো। এ ছাড়া আরো সাড়ে ৪০০ আসবে, ২৯ মার্চ পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিট ছিলো ৪৫ হাজার।
আমাদের হাতে আড়াইশ ভেন্টিলেটর চলে আছে। বিভিন্ন হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এবং ইমপোর্টেও প্রায় সাড়ে ৩০০ ভেন্টিলেটর আছে। অনেক বড় বড় দেশেও এতগুলো ভেন্টিলেটর থাকে না। আমরা এর আগে প্রস্তুতি নিয়েছি বিধায় বাংলাদেশ ভালো আছে।’
এরপর তিনি বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানান।[১৮৮]
ঢাকা শিশু হাসপাতাল এর পরীক্ষা কার্যক্রম Child Health Research Foundation এর সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।
চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ (BITID) এ ২৮ মার্চ পর্যন্ত মোট ৮ জন ব্যক্তির পরীক্ষা করা হয় এবং নতুন কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। [১৮৯]
২৮ মার্চ, জানানো হয়েছিলো যে রাজশাহী, রংপুরসহ দেশের আরও ৬ মেডিক্যাল কলেজে পিসিআর মেশিন পাঠানো হয়েছে।[১৯০]
২৭ মার্চে রংপুর মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে (PCR) মেশিন স্থাপন করা হয় এবং এর অধ্যক্ষ আশা করছেন ২৮ তারিখ থেকেই কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাবে। [১৯১] এছাড়াও এর আট উপজেলাতে হটলাইন সেবা চালু করেছে জেলা প্রশাসন।[১৯২]
২১ তারিখে বলা হয়েছিল ১৬ টি (PCR) মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ৭ টি মেশিন CMSD তে রয়েছে। [১৯৩]
৩১ মার্চের তথ্যানুসারে, দেশে কোভিড–১৯ রোগের পরীক্ষার পরিসর ধীরে ধীরে বাড়ছে। তবে, বারবার অনুরোধের পরও 'আইইডিসিআর' পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারছে না; অন্যদিকে আবার প্রভাবশালীরা পরীক্ষার জন্য 'আইইডিসিআর' কে চাপ দিচ্ছে এমন তথ্যও গণমাধ্যমে এসেছে।
'আইইডিসিআর' ২৮ জানুয়ারি থেকে নিয়মিত কোভিড–১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষার খবর প্রকাশ করে এবং সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কতটি নমুনার পরীক্ষা করেছে তা জনায়। প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলনে মোট সংখ্যাটি তারা প্রকাশ করে এবং এই হিসাবটি তারা প্রতি সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমেও পাঠায় (করোনা ইনফো ওয়েবসাইটে পাবেন)। তবে ৩১ মার্চের তাদের দেওয়া হিসাবে কিছু গরমিল দেখা যায় (৬৩টি নমুনা বেশি পরীক্ষা দেখানো হয়েছিলো)।
আইইডিসিআরের একটি সূত্র থেকে নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি জানা গেছে। 'আইইডিসিআর' নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিলে তখন নিয়ে প্রশিক্ষিত মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে আনেন। মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ২৪ জনের একটি দল ঢাকায় কাজ করেন যারা দুই পালায় ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়ি বা হাসপাতালে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে আনেন। যে কেউ চাইলেই আইইডিসিআরে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেন না।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিশেষায়িত হাসপাতাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ এ (বিআইটিআইডি) চার দিন আগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
কক্সবাজারেও একটি ল্যাবরেটরি আছে 'আইইডিসিআর' এর, তবে গতকাল পর্যন্ত সেখানে কোনো পরীক্ষা শুরু হয়নি। একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন যে তাকে নমুনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে তবে কোন ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দেওয়া হয়নি। জানা যায়, দেশে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিটেরও সংকট আছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবী করেন যে, লোকজন তেমন একটা এগিয়ে আসছে না বলে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পরীক্ষা খুব কম হচ্ছে। তিনি এখানকার জনগণকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার বা ফোন করার আহ্বান জানান।
এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা এগিয়ে আছে। এর বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, এছাড়াও পরীক্ষার জন্য যারা যোগাযোগ করছে, তাদেরও নমুনাও সংগ্রহ করা হচ্ছে।[১৯৪]
তারা দাবী করছেন যে মাত্র ৪ ঘন্টায় তারা কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল দিতে সক্ষম। এখানে প্রথমে চিকিৎসকেরা রোগীর সঙ্গে কথা বলবেন এবং লক্ষণ বিচার করবেন। যদি সন্দেহ হয় ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত তাহলেই কেবলমাত্র তারা পরীক্ষা করবেন। রোগীর নমুনা সংগ্রহের পর চার ঘণ্টার মধ্যে ফল জানানো হবে অর্থাৎ দিনে দিনেই ব্যক্তি জানতে পারবেন যে তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না।
এখানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিনামূল্যেই রোগীদের পরীক্ষা করা হবে। এখানে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে আসা ব্যক্তির মুখের লালা বা নাকের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়।
এর উপাচার্য বলেন, ‘যারা সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত তাদের চিকিৎসার জন্য আমরা ফিভার ক্লিনিক নামে আলাদা বিভাগ চালু করেছি। যে কেউ আমাদের হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে পারবেন। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হবে, তাদের পরীক্ষা করা হবে।’
পরীক্ষাপদ্ধতিঃ করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য দুটি মেশিন (যন্ত্র) ব্যবহার করা হয় যার একটির নাম এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন এবং অপরটি রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন।
প্রথমে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখের লালা কিংবা নাকের সোয়াব নমুনা হিসিবে সংগ্রহ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ল্যাব টেকনোলোজিস্ট। এরপর ওই নমুনা নিয়ে আসা হয় ল্যাবরেটরির করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের 'এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু' মেশিনে। নমুনাগুলো প্রথমে ইনঅ্যাক্টিভেশন করা হয়। এই মেশিনে নমুনা আসার পর বিভিন্ন রিএজেন্টের মাধ্যমে তা প্রসেসিং করা হয়। এরপর বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে প্রস্তুত করা নমুনা নিয়ে আসা হয় রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিনে। নমুনাগুলো প্রসেসিং করার পর করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের কিটসের মাধ্যমে রাইবো নিউক্লিক এসিড (RNA) বের করে আনা হয়। এরপর RNA কোষের নমুনা ল্যাবরেটরিতে রাখা আরেকটি এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে রাখা হয়। সংযুক্ত করা হয় বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদি। এরপর বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে প্রস্তুত করা নমুনা নিয়ে আসা হয় রিয়েল টাইম পিসিআর (PCR) মেশিনে। এই মেশিনের সঙ্গে কম্পিউটার সংযুক্ত রয়েছে। কম্পিউটারে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের সফটওয়্যার চালু করার পর যদি নমুনা কোষে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি থাকে, তখন তা কম্পিউটারের পর্দায় ভেসে ওঠে। তখন করোনা ভাইরাস পজিটিভ দেখায়। আর যদি নমুনা কোষে করোনা ভাইরাস না পাওয়া যায়, তখন করোনা ভাইরাস নেগেটিভ লেখা ভেসে ওঠে কম্পিউটার পর্দায়।
এখানকার ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বলেন, ‘একজন ব্যক্তির কোষের আরএনএ তে করোনা ভাইরাস থাকলেই তিনি করোনা ভাইরাস পজিটিভ বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। ল্যাবরেটরির পিসিআর মেশিনের যুক্ত কম্পিউটার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ওই ব্যক্তির করোনা ভাইরাস পজিটিভ। আমাদের হাসপাতালে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার ল্যাবরেটরিতে যে কিট ব্যবহার করা হয় তা চায়নার একটি কোম্পানির। কোম্পানির নাম সানশিউর বায়োটেক লিমিটেড। এই কোম্পানির কিট ব্যবহার করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে।’
‘করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের ল্যাবরেটরিতে বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। যখন ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাস রিস্ক লেবেল যখন দুই এর ওপরে হয় তখন বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনটি ব্যবহার করা হয়। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের চার ধরনের রিস্ক লেবেল রয়েছে। রিস্ক এক, রিস্ক দুই, রিস্ক তিন, রিস্ক চার। করোনা ভাইরাস রিস্ক দুই এর ওপরে। যে কারণে বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মেশিন ছাড়া কোনোভাবে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে থাকা ব্যক্তির নমুনা আইসোলেশন কিংবা প্রসেসিং করা সম্ভব নয়।’
‘যে পদ্ধতিতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে, সেটি হলো পিসিআর পদ্ধতিতে মলিকুলার টেস্ট। এটা রক্তের পরীক্ষা নয়। যে কোনো ব্যক্তি আমাদের হাসপাতালে এসে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষা করতে পারবেন।’[১৯৫]
কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্রসমূহ
৩ এপ্রিল এর নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সমস্ত সরকারী হাসপাতালে 'করোনাভাইরাস' আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য আলাদা আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হয়েছে এবং কয়েকটি হাসপাতাল শুধুমাত্র করোনা রোগী চিকিৎসার জন্যই প্রস্তুত রাখা হয়েছে আর একইসাথে জেলা পর্যায়ে করোনা ভাইরাস রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স এর'ও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২ এপ্রিলের, তথ্যানুযায়ী দেশে ১১ টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং এর সবগুলোই ঢাকাতে অবস্থিত। কোভিড-১৯ এর জন্য সুনির্ধারিত (ডেডিকেটেড) করা সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালগুলো হল:
- কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল
- বাংলাদেশ রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল
- মহানগর জেনারেল হাসপাতাল
- আমিনবাজার ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল
- জিনজিরা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
- সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল
- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
- শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল
- জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল
- মিরপুর মেটারনিটি হাসপাতাল
- কামরাঙ্গিরচর ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল
- সংক্রামক ব্যধি হাসপাতাল
- কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
- লালকুঠি হাসপাতাল
বেসরকারী হাসপাতাল: (সাজিদা ফাউন্ডেশন, রিজেন্ট হাসপাতাল (উত্তরা,মিরপুর), ইউনাইটেড হাসপাতাল (মুন্সিগঞ্জ), আকিজ গ্রুপ)
২৭ মার্চ থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষায় পরিবর্তন এনেছে আইইডিসিআর। এখন বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে আসাদেরও নমুনা পরীক্ষা করছে তারা। এক্ষেত্রে যাদের ৬০-এর বেশি বয়স এবং দীর্ঘমেয়াদি অসুখে ভুগছেন তাদের মধ্যে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা গেলে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও যেসব নিউমোনিয়া রোগীর ডায়াগনোসিস করা হয়নি এবং যাদেরকে বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে যেতে হয় এমন মানুষদেরর মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে, তাদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রতি জেলায় হটলাইন নাম্বার চালু করা হয়েছে যাতে জেলায় যারা গিয়েছেন তাদের মধ্যেও লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে যাতে নমুনা সংগ্রহ করে অতি দ্রুত বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো যায়। 'আইইডিসিআর' পরীক্ষার ভিত্তিতে দেখতে চায় দেশের কোথাও কোনও সংক্রমণ রয়েছে কিনা।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বেশ কিছু কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রথমে আইইডিসিআর এ খোলার পর পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরেও একটি সমন্বিত কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে যেখানে বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে বলে আইইডিসিআর পরিচালক দাবী করেন।
তিনি আরও বলেছেন ‘হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীর নমুনা হাসপাতালগুলোতেই সংগ্রহ করা হবে এবং তারাই আমাদের কাছে পাঠাবে, যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আইইডিসিআর কর্মীদের নমুনা সংগ্রহ করতে বিলম্ব না হয়।’
‘নম্বর বাড়ানোর পাশাপাশি দুটি হান্টিং নম্বর করা হয়েছে। তা হলো—১৯৪৪৩৩৩২২ এবং ১০৬৫৫। এই দুই নম্বরে যোগাযোগ করলে আমাদের লোক সেখানে চলে যাবে।’[১৯৬]
উল্লেখ্য পূর্বের হটলাইন নাম্বারগুলো (১২ টি) দেশের মোবাইল ফোন অপরাটররা (বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, টেলিটক ও রবি) টোল ফ্রি করে দিয়েছিলো । যাতে প্রতিটি নম্বরে চেষ্টা না করতে হয় তাই এই 'হান্টিং নম্বর'। যখনি যে কোনো লাইন খোলা থাকবে তখন কল সেখানে চলে যাবে।[১৯৭]
২৮ মার্চের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, এখন থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএইউ) সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা হবে এবং ৭ -১০ দিনের মধ্যেই দেশের সব কটি বিভাগে পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে। এছাড়াও আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য কুয়েত মৈত্রীতে ১৬টি ভেন্টিলেটর, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে ৮টি ভেন্টিলেটর ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা বাড়ানো হয়েছে।[১৯৮]
দেশের ৬৪টি জেলা এবং ১০০ উপজেলায় সকল ধরনের ল্যাবরেটরি, ট্রেনিং টেকনিশিয়ান, ইপিআই টেকনিশিয়ান, এমটি ল্যাব, রেডিওগ্রাফারদের কিভাবে পিসিআর মেশিন ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে খুব শীঘ্রই।
সব বিভাগে পিসিআর মেশিন বসানোর পদক্ষেপ গ্রহণ নেয়া হয়েছে এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই এগুলোতে কোভিক-১৯ টেস্ট শুরু করা সম্ভব হবে বলে তারা দাবী করেছে।
কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে অতিরিক্ত ১৬টি ভেন্টিলেটর মেশিন বসানো হয়েছে এবং শেখ রাসেল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডাইজেস্টিভ ডিজিজেস রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালে আটটি ভেন্টিলেটর বসানোর কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই এটি ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে কোভিড-১৯-এর জন্য সম্পূর্ণরুপে নির্ধারিত করা হয়েছে। সেখানে আইসিইউ শয্যা বসানোর কাজ চলছে।[১৯৯]
২৯ মার্চ, জানানো হয়, কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও হাসপাতাল সংক্রমণরোধ এবং নিয়ন্ত্রনের জন্য ইতিমধ্যেই ৭১০ জন চিকিৎসক ও ৪৩ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা থেকে ২ জন চিকিৎসক অর্থাৎ আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসারগণ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধী ইইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, মিরপুর পরিবার পরিকল্পনা হাসপাতাল (লালকুঠি) এবং রিজেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সগণ এই প্রশিক্ষন গ্রহণ করেছেন। তা ছাড়া দেশের সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এখন থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেডিকেল টেকনোলজিস্টগণ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান এবং ইপিআই সার্ভিলেন্স টিমের মাধ্যমে - সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগীর বাড়ী থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন এবং নমুনাগুলো পিসিআর টেস্ট সেবা প্রদানকারী নিকটস্থ বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল / আইপিএইচ এ প্রেরণ করবেন। জনগণকে সন্দেহজনক কোভিড-১৯ সংক্রমনের বিষয়ে স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩), ৩৩৩, আইডিসিআর এর হটলাইনসমূহ (০১৯৪৪৩৩৩২২২২, ০১৬৫৫) এবং স্থানীয় হাসপাতালসমূহে কল করে অবহিত করতে অনুরোধ জানানো হয়। কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে না আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কেননা এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ১১২৭ জন চিকিৎসক এই সেবা (মোবাইল চিকিৎসা সেবা "উবার ডাক্তার") প্রদানে যুক্ত হয়েছেন এবং ৭২২৭ জন চিকিৎসক এ সেবা প্রদানের জন্য নিবন্ধনকৃত হয়ে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছেন।
ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) মজুদ ও সরবরাহ
মোট সংগ্রহ: ৫,৫৬,৯৫২ টি
মোট বিতরণ: ৪,৫৬,১৭৪ টি
মোট মজুদ: ১,০০,৭৭৮ টি
দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ৪,৫৬,১৭৪ টি (চার লাখ ছাপান্ন হাজার একশত আটাত্তর টি) ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) সরবরাহ করা হয়েছে। (সূত্র: সিএমএসডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) [৬ এপ্রিল সকাল ৮ ঘটিকা পর্যন্ত সর্বশেষ আহরন ও বিতরন অনুযায়ী] [২০০]
- এক্সামিনেশন অ্যান্ড সার্জিক্যাল গ্লোভস/দস্তানা (বড়, মধ্যম ও ছোট)- সর্বমোট অধিগ্রহণ করা হয়েছিল: ২০,২৪,০৪৩ টি
সর্বমোট ব্যবহার করা হয়েছে (সরবরাহ): ৩,৬৮,০৫৩ টি
বর্তমানে জমা আছে (মজুদ): ১৬,৫৫,৯৯০ টি
- আই প্রোটেক্টর সেফটি গগলস গ্লাস: সর্বমোট অধিগ্রহণ করা হয়েছিল: ১,১৫,২৭৬ টি
সর্বমোট ব্যবহার করা হয়েছে (সরবরাহ): ৩৫,৮৬০ টি বর্তমানে জমা আছে (মজুদ): ৭৯,৪১৬ টি
গাউন - সর্বমোট অধিগ্রহণ করা হয়েছিল: ১৬,০০০, সর্বমোট ব্যবহার করা হয়েছে (সরবরাহ): ১২,৬৬০, বর্তমানে জমা আছে (মজুদ): ৩,৩৪০
কম্বো সার্জিক্যাল প্রোটেকশন ড্রেস- সর্বমোট অধিগ্রহণ করা হয়েছিল: ৮৪০, সর্বমোট ব্যবহার করা হয়েছে (সরবরাহ): বর্তমানে জমা আছে (মজুদ):
প্রোটেকটিভ কভার অল অ্যান্ড সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক- সর্বোমোট অধিগ্রহণ করা হয়েছিল: ২৫,১০২, সর্বমোট ব্যবহার করা হয়েছে (সরবরাহ): ১৯,০০০, বর্তমানে জমা আছে (মজুদ): ৬,১০২ [২৩ মার্চ এর রাত্রি ১০ টা পর্যন্ত সর্বশেষ আহরণ ও বিতরন অনুযায়ী] (সূত্র: সিএমএসডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) [২০১]
পিসিআর (PCR) কিটস মজুদ ও সরবরাহ
মোট সংগ্রহ: ৯২,০০০ টি
মোট বিতরণ: ২১,০০০ টি
মোট মজুদ: ৭১,০০০ টি
দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ৩,৩৪,২৭০ টি (তিন লাখ চৌত্রিশ হাজার দুইশত সত্তুর টি) পিসিআর (PCR) কিটস সরবরাহ করা হয়েছে। [১-৫ এপ্রিল সকাল ৮ ঘটিকা পর্যন্ত সর্বশেষ আহরন ও বিতরন অনুযায়ী] (সূত্র: সিএমএসডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)
১ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, ৫০ হাজার মেডিকেল গ্রেড মানসম্পন্ন ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) দেবে গ্রামীণফোন। চিকিৎসক ও নার্সদেরকে এই সম্পূর্ণ প্রতিরোধমূলক পোশাক, এন৯৫ মাস্ক, গ্লাভস ও গগলস এবং ১০ হাজার পিসিআর টেস্টিং কিটও দেবে তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে নির্বাচিত হাসপাতালসমূহে তারা এগুলো পৌঁছে দেবে।[২০২]
বিভাগপ্রতি রোগ-অন্তরণ (আইসোলেশন) করা শয্যা
ঢাকা - ১০৭০ টি
চট্টগ্রাম - ১,১৪৯ টি
বরিশাল - ৫৭০ টি
খুলনা - ৬৭২ টি
ময়মনসিংহ - ৪০৮ টি
সিলেট - ৮৯৮ টি
রাজশাহী - ৬৭৯ টি
রংপুর - ৪৫৩ টি (সূত্র: ৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)[২০৩]
২৭ মার্চের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) সেবা দেয়ার জন্য সারাদেশে ৩২৩ টি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করা হয়েছে যার মাধ্যমে ১৮,৯২৩ জনকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
সেবা প্রদান করার জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১,১২৩ জন চিকিৎসক, ১,৫৭৫ জন নার্স ও অন্যান্য ১,২৮৪ জনসহ সর্বমোট ৩,৯৮২ জন সেবাদানকারী প্রস্তুত রয়েছেন।
রোগ-অন্তরণ (আইসোলেশন) করা সর্বমোট শয্যা: ৪৫৩৯ টি।
ঢাকা শহরের কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল, উত্তরা; রিজেন্ট হাসপাতাল,মিরপুর ও সাজেদা ফাউন্ডেশন যাত্রাবাড়ী - এই ৫ টি হাসপাতালে ২৯ টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ১৬ টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত করার কাজ চলছে। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৫ টি Dialysis শয্যা প্রস্তুত আছে। [২৭ মার্চ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এর তথ্যানুসারে] [২০৪]
হাসপাতালসমূহে প্রস্তুত স্বাস্থ্যকর্মী
- মেডিকেল টেকনোলজিস্ট: ১১৫
- নার্স: ৩৮১
- অন্যান্য: ১৩
- চিকিৎসক: ৫১০
- সহায়তা কর্মী: ২০৫ (সূত্র: ৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)[২০৫]
স্বেচ্ছাসেবী
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে নিবন্ধনকৃত চিকিৎসক সংখ্যা (৫ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী):
- মোট নিবন্ধনকৃত: ২১,৯০৪ জন।
- কোভিড-১৯ বিষয়ক অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করেছেন: ১২,০৪৮ জন
- হটলাইন সিস্টেমে চিকিৎসাসেবা ও তথ্য প্রদানে যুক্ত হয়েছেন: ২,০৬১ জন
ব্যবস্থাপনা, সংক্রমণ ও প্রশিক্ষণ
যারা কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা, হাসপাতাল সংক্রমণ ও নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন (১ এপ্রিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী):
- চিকিৎসক: ১,১২৩ জন
- সেবিকা: ১,৫৭৫ জন
- মেডিকেল টেকনোলজিস্ট: ১,২৮৪ (১ এপ্রিল সকাল ৮ ঘটিকা পর্যন্ত)
১ এপ্রিলের, নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভাইরোলজিষ্ট, ন্যাশনাল পোলিও অ্যান্ড মিজেলস ল্যাবরেটরী, আইপিএইচ, ডাঃ খন্দকার মাহবুবা জামিল জানান, কোন মৃত ব্যক্তির নাক-মুখ নিঃসৃত পদার্থে ২-৪ ঘন্টা পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর জীবাণু জীবিত থাকে। তবে ভাইরাস আক্রান্ত হলে মৃত ব্যক্তির নাক-মুখের ভিতর জীবিত বা মৃত ভাইরাস থাকলে তা পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ আসবে।
বিদেশাগত যাত্রী স্ক্রিনিং পরিসংখ্যান
৭ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বমোট বিদেশাগত স্ক্রিনকৃত যাত্রীসংখ্যা হল: ৬,৬৮,৩৮৬ (ছয় লাখ আটষট্টি হাজার তিনশত ছিয়াশি) জন। ৭ এপ্রিল এসেছে: ৩৪০ জন
৬ এপ্রিল এসেছে: ২৬৯ জন
৫ এপ্রিল এসেছে: ২১৯ জন
৪ এপ্রিল এসেছে: ৩২৪ জন
৩ এপ্রিল এসেছে: ৩০৩ জন
২ এপ্রিল এসেছে: ৪০১ জন
১ এপ্রিল এসেছে: ৩১৩ জন
৩১ মার্চ এসেছে: ৪৬৩ জন
৩০ মার্চ এসেছে: জন
২৯ মার্চ এসেছে: জন
২৮ মার্চ এসেছে: জন
২৭ মার্চ এসেছে: ৪৪৬ জন
২৬ মার্চ এসেছে: ৭৩৬ জন
২৫ মার্চ এসেছে: ১,১৩২ জন
২৪ মার্চ এসেছে: ৩,০০৮ জন
২৩ মার্চ এসেছে: ১,০০৯ জন
২২ মার্চ এসেছে: ৬,৫০২ জন
২১ মার্চ এসেছে: ৬,৯৬৮ জন
জেলাভিত্তিক যাত্রী স্ক্রিনিং পরিসংখ্যান
ঢাকা: ৯২,৩৩০ জন চট্টগ্রাম: ২৭,২২৯ জন সাতক্ষীরা: ১৫,১৬৫ জন লালমনিরহাট: ৮,৩৩৯ জন দিনাজপুর: ৬,৬৩৫ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ১,৫৪২ জন বাগেরহাট: ৩৯৩ জন মৌলভীবাজার: ২১১ জন কক্সবাজার: ৯১ জন হবিগঞ্জ: ৫৫ জন জামালপুর: ১৩ জন (সূত্র: ৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)[২০৬]
বিদেশি ও অন্যান্য সাহায্য
(৬ এপ্রিল পর্যন্ত হালনাগাদ)
২৬ মার্চ,চীন প্রদান করেছে ১০ হাজার টেস্ট কিট, প্রথম সারির ডাক্তারদের জন্য ১০ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী, ১ হাজার হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটার (ইনফ্রারেড) ও ১৫ হাজার এন ৯৫ মাস্ক।
উল্লেখ্য, পূর্বে বাংলাদেশ; চীন সরকারকে ৫ লাখ মাস্ক, ১০ লাখ গ্লোভস,১ লাখ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১ লাখ ৫০ হাজার ক্যাপ ও ৮ হাজার গাউন প্রদান করেছিল। [২০৭]
'জ্যাক মা ফাউন্ডেশন' (আলিবাবা) ২৭ মার্চ, ৩০ হাজার টেস্ট কিট এবং ২৯ মার্চ, ২,৭০,০০০ ফেস মাস্ক ও ৩০ হাজার এন ৯৫ মাস্ক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কে প্রদান করেছে।
২৫ মার্চ, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়কে ৫০০০ টি ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী প্রদান করেছে।
বাংলা ট্রাক গ্রুপ ৩ টি ভেন্টিলেটর মেশিন প্রদান করেছে।
4A YARN Dyeing প্রদান করেছে ২০০ টি পিপিই, ৪০০ টি মাস্ক (কটন), ২০০ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ১০০০ টি গ্লোভস।
আয়েশা মেমোরিয়াল প্রদান করেছে ৩৪৬০ টি পিপিই, ৮০০০ টি সু-কভার, ১৭০ টি চশমা।
ইস্পাহানী গ্রুপ প্রদান করেছে ১৫০০ টি N-95 মাস্ক, ওয়াটার এইড - ১০০ কেজি ব্লিচিং পাউডার ও ৯৭ টি স্প্রে মেশিন
এছাড়াও চীন সরকার এবং ওয়াল্টন গ্রুপ করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রনে পিপিই এবং টেষ্টকীট সহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করেছে। [৬ এপ্রিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে]
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে ১ লাখ পরিমান তৈরীর কার্যাদেশ পেয়ে চট্টগ্রাম ইপিজেড এর পোষাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্মার্ট জ্যাকেট লিমিটেড, ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী তৈরীর কাজ শুরু করেছে এবং ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১৩০০ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে ৫৮ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী বানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সরবরাহ করেছে।
এগুলো উন্নতমানের পানি ও বায়ুরোধী রপ্তানীযোগ্য মানের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী এবং বুয়েট, আইডিসিআর ছাড়াও বেশ কয়েকটি মন্ত্রনালয় কতৃক প্রাপ্ত গুণগত মানের সনদ তাদের আছে। আমেরিকার ক্রেতা প্রতিষ্ঠান 'উডব্রিজ' এর জন্য গত ৫ বছর ধরে তারা ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী তৈরি করে আসছে যারা নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে আসা পর্যটকদের জন্য এই ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী ব্যবহার করে থাকে। প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪ লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীর অর্ডার তারা সাধারণত পেয়ে থাকে।
এর নির্বাহী পরিচালক জানান যে, তাদের বর্তমান মজুদকৃত কাঁচামাল দিয়ে আরও দেড় লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব। [২০৮]
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২৫ মার্চ, অনুমোদন দেওয়ার পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে কয়েক লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী তৈরির কাজ চলছে ৫ টি কারখানায় এবং আরও কয়েকটি কারখানা সুরক্ষা পোশাক তৈরি শুরু করবে ১ সপ্তাহের মধ্যেই।
বিজিএমই, অরুণাচল ট্রাস্ট, বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এই প্রতিষ্ঠান ৫ টি যৌথভাবে এ পদক্ষেপটি নিয়েছে। পাঁচটি গার্মেন্টস উর্মি গ্রুপ, স্নো টেক্স, আমান গ্রুপ, ডেকো গ্রুপ এবং স্মার্টেক্স গ্রুপ বুধবার থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী উৎপাদন শুরু করেছে এবং কমপক্ষে পাঁচ লাখ সুরক্ষা পোশাক তৈরি করবে তারা আর অনেক হাসপাতাল ও ব্যাংক ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী ক্রয়াদেশ দিয়ে রেখেছে তাদেরকে।
এছাড়াও চট্টগ্রাম ইপিজেডে 'মোস্তফা গ্রুপ' উন্নত ধরনের মাস্ক তৈরি করছে এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে ১০ লাখ মাস্কের ক্রয়াদেশ পেয়েছে।
'ওয়ালটন' ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী ও জীবাণুরোধক (স্যানিটাইজার) তৈরি করে বিনামূল্যে বিতরণ করতে শুরু করতে যাচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান এবং অ্যাম্বুলেন্সের গাড়ি চালকদের জন্যই মূলত এই ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীগুলো তৈরি হবে।
সরকারথেকে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী তিন মাসের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীর সর্বোচ্চ চাহিদা থাকতে পারে ১০ লাখ, একইসাথে এ মাসেই বিভিন্ন দেশ থেকে আরও এক লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দেশে আসবে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, তারা করোনা'র সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই সরকারকে এক লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দিয়েছিল এবং ২৮ তারিখ নাগাদ আরও ৫০ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দিতে পারবে।[২০৯]
ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) সরবরাহ ও বন্টন অব্যবস্থাপনা
২৯ মার্চ পর্যন্ত বেশ কিছু গণমাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) সরবরাহ ও বন্টনে অব্যবস্থাপনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদেরকে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী ছাড়াই কর্তব্য পালন করতে হচ্ছে বলে একাধিক উৎসে দাবী করেছেন এবং চিকিৎসাসেবা দিতে অস্বীকৃতিও জানিয়েছেন বলে একাধিক উৎসে জানা গেছে।
এব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলছেন, ‘পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী) এসেছে, আসছে এবং আসতেই থাকবে। চিন্তিত হবার কিছু নেই’। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন আসলে এমূহূর্তে দেশ 'পিপিই আছে, পিপিই নেই!' এমন একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে।
৮ মার্চ, 'আইইডিসিআর' প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্তের কথা জানানোর পর থেকেই চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী বা পিপিই’র দাবি তুলেছেলিন এবং কিছু জায়গায় ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী না থাকায় চিকিৎসাসেবা প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। বিভাগীয় পরিচালক ও জেলা সিভিল সার্জন কতৃক নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী সংগ্রহ করতে বা বানিয়ে নেয়ার অনুরোধে নোটিশ জারিও করা হয়েছিলো বলে জানা গেছে। সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অন্যদেকে নিজ দায়িত্বে পিপিই কেনার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেন।
এ ব্যপারে তথ্যের প্রাপ্যতা বা গোটা ব্যাপারটা পরিষ্কার নয় কেন সে বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আবার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী নিয়ে মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর কাছাকাছি সময়ে বক্তব্যও পরস্পরবিরোধী। ২০ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য ১০ লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ করা হবে। তাতে করে কোনও সেবাকেন্দ্রে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীর কোনও অভাব হবে না। তবে এ ঘোষণার ৩ দিন পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীর এখন এত প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা গেছে, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরস ডিপো (CMSD) তে গত ২৩ মার্চ পর্যন্ত তিন লাখ ৫০ হাজারের মতো পিপিই সংগ্রহ করার পর ২ লাখ ৮৫ হাজারের মতো বিতরণ করা হয়েছে এবং মজুত আছে ৬৫ হাজারের মতো, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অপরদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক জানিয়েছেন যে এপ্রিল থেকে আমাগী তিন মাস পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখে পিপিই আর মাস্ক প্রয়োজন হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসক বা নার্সরা যে পিপিই পরবেন, সেটিকে হতে হবে যে'কোন তরল (বমি, রক্ত, রাসায়নিক পদার্থ) প্রতিরোধী তবে তাতে নিঃশ্বাস নেওয়ার উপায় থাকতে হবে। আর এসমস্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীকে একবার ব্যবহারযোগ্য হতে হয় অর্থাৎ একবার ব্যবহারের পরই সেটি আর পরা যাবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশেষজ্ঞ ভাইরাসবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. নজরুল বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, এসব (ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী) পিপিইর কাপড় হতে হবে নির্ধারিত। কিন্তু তা যদি না হয় তাহলে এর উদ্দেশ্য সফল হবে না, বরং তাতে আরও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে।’
চট্টগ্রাম বিভাগের এক চিকিৎসক জানান যে এ বিভাগের জন্য হিসাব করে এক মাসের জন্য ৭৮ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী চাওয়া হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত তাদের হাতে আছে মাত্র ২ হাজার ৯০০ টি। ২৮ মার্চ মোটে সাড়ে তিনশ’ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দেওয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন যে ১০০টি উপজেলায় ৩টি সরবরাহ করা হলেও এ সংখ্যা যথেষ্ট নয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি সূত্রে জানা গেছে বিভিন্ন সময়ে অনুদান থেকে যেসমস্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী এসেছে সেগুলোর গুণগত মান খুবই নিম্নমানের। কোনগুলোর চশমা বা গগল্সের প্লাস্টিক খুলে গেছে আবার কিছু পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের উপযুক্ত চিকিৎসক কতৃক সেবা দেয়ার উপযুক্ত নয়। মানসম্মত নয় বলে অনেকগুলো আবার তালাবদ্ধ করেও রাখা হয়েছে।[২১০]
বিভিন্ন খাতে প্রতিক্রিয়া
বিদেশে বাংলাদেশী নাগরিক
১ এপ্রিলের তথ্যানুসারে তখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রে ৬০ জন বাংলাদেশী নাগরিক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।[২১১]
২ এপ্রিলের তথ্যানুসারে তখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রে ৮৬ জন বাংলাদেশী নাগরিক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।[২১২]
সরকার
২৭ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ চলছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) র্যাপিড রেসপন্স টিমের সদস্যরা এবং আইইডিসিআরের কর্মীরা রোগ শনাক্ত করেন তবে তাদের জনবল কম বলে নমুনা সংগ্রহের জন্য সব জায়গায় কর্মী পাঠাতে পারছে না।
এর মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন,সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) কাজে লাগানো হবে যারা সন্দেহভাজন ব্যক্তির ব্যাপারে তথ্য দিতে উপজেলা হাসপাতালে যোগাযোগ করবে তখন উপজেলা থেকে কর্মী গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে। নমুনা দেওয়ার জন্য কেউ হাসপাতালে যাবে না। সন্দেহভাজন ব্যক্তির ব্যাপারে সিএইচসিপিরা উপজেলা হাসপাতালে যোগাযোগ করবে। উপজেলা থেকে কর্মী গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে।
জনবল সম্পর্কে তিনি বলেন, ৬৪ জেলা পর্যায়ের এবং ১০০টি উপজেলার কর্মীদের ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইপিআইয়ের মাঠকর্মীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে লাগানো হবে।
যদিও চিকিৎসার কাজে নির্দিষ্ট রাজধানীর আটটি হাসপাতালের ২ টি ব্যতিত সবগুলো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি তবে একাজে জেলা শহরের সদর হাসপাতালগুলোকে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে।
সরকার দাবি করছে, সরকারের সব মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস মোকাবিলার কাজে যুক্ত হয়েছে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি জাতীয় কমিটি গঠিত হয়েছে যার প্রথম সভা হয়েছিল ৩ মার্চে কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে ১৮ মার্চে। [২১৩]
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা ও নীতিমালা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) প্রণীত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে তার আলোকে দেশের প্রেক্ষাপটে রোগতত্ত্ববিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ অভিজ্ঞ সবার মতামতের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি গাইডলাইন (২০ টি) প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইট এবং 'করোনা ইনফো' তে।
হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর ব্যবস্থাপনা
হাসপাতালের প্রবেশমুখে স্বাস্থ্য কর্মী দ্বারা সম্ভাব্য কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ (জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট) সহ রোগী শনাক্ত | |||||||||||||||||||||||||||||
* সম্ভাব্য কোভিড-১৯ রোগীকে আলাদা বিশেষ কোভিড-১৯ বর্হিবিভাগ/ জরুরী বিভাগ কক্ষে স্থানান্তর
| |||||||||||||||||||||||||||||
* চিকিৎসক রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন এবং রোগীর ভ্রমন ইতিহাস বা অন্য দেশ থেকে আশা মানুষের সংস্পর্শে আসার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করবেন।
| |||||||||||||||||||||||||||||
সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ড বা কেবিনে পাঠানো হবে। | সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগী না হলে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান এবং ভ্রমণ ইতিহাস বা অন্য দেশ থেকে আসা মানুষের বা কোভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে আসার ইতিহাস থাকলে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন | ||||||||||||||||||||||||||||
রোগীর কাছ হতে কোভিড-১৯ এর RT-PCR পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। | *কোভিড-১৯ প্রমানিত না হলে এবং রোগীর অন্য জটিল সমস্যা না থাকলে হোম কোয়ারেন্টাইন করা ১৪ দিনের জন্য
| ||||||||||||||||||||||||||||
* কোভিড-১৯ প্রমানিত হলে চিকিৎসা প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
| * নিউমোনিয়া, সেপটিক শক বা অন্য জটিলতার চিকিৎসা প্রচলিত প্রটোকল অনুযায়ী করা হবে হবে। | ||||||||||||||||||||||||||||
* পরপর ২ দিন জ্বরের ঔষধ ছাড়াই জ্বর না থাকলে এবং পর পর দুই দিন কোভিড-১৯ এর RT-PCR পরীক্ষা নেগেটিভ হলে রোগকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়ার ছাড়পত্র দেয়া হবে। | |||||||||||||||||||||||||||||
প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করনীয়
প্রায় সব বিশেষজ্ঞ,স্বাস্থ্য সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে একমত যে কয়েক মাসের মধ্যে এর সংক্রমণের তীব্রতা কমে আসলেও সম্পুর্নভাবে থামতে লাগবে দীর্ঘ সময়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (BCG) পূর্বাভাস দিয়েছে যে, বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোয় এর সংক্রমণের তীব্রতা এ বছরের জুলাই পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রে সংক্রমণটি জুনের তৃতীয় সপ্তাহে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে তারা দাবী করেছে।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিষয়ক অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হিসেবে ৩ টি কৌশলের কথা বলেছেন। ১. টিকা দেয়া। অথবা, ২. স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা । বহু মানুষের মধ্যে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে তাদের মধ্যে এটির বিরুদ্ধে একটি স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। অথবা ৩. স্থায়ীভাবে মানুষের অভ্যাস ও সামাজিক আচার-আচরনে পরিবর্তন আনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সর্বোচ্চ দ্রুতগতীতে চেষ্টা করা হলেও সম্ভাব্য কার্যকরী টিকা প্রস্তুত করতে সময় লাগবে ১-১.৫ বছর। এরপর অনুমোদন এবং বিশ্বজুড়ে সফলভাবে প্রযোগ করতেও অনেকটা সময় দরকার।
লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেছেন যে তারা সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে রাখার প্রতি (ফ্ল্যাটেন দ্যা কার্ভ) জোর দিচ্ছেন যাতে করে দেশের একটি কম সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়। তিনি মনে করেন দুই বছরের বেশি সময় যাবত যদি তারা এটা করতে পারেন তাহলে দেশের একটি বড় অংশ আক্রান্ত হবে খুবই ধীরে ধীরে এবং যার ফলে স্বাভাবিক নিয়মে মানবদেহে এর বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যেহেতু দ্রুতই এ সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া সম্ভব নয় তাই অবশ্যই মানবজাতীকেই তাদের অভ্যাস ও আচার-আচরন বদলাতে হবে। তাদেরকে আরও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং শারীরিক/সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।
এ রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে যে পদক্ষেপগুলো নিতে হয় তার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি কড়াভাবে মেনে চলা, হাত ধোয়া, না ধুয়ে নাকে-মুখে-চোখে হাত না দেওয়া এবং সাথে টিশ্যু পেপার রাখা যাতে হাঁচি-কাশি এলে ব্যবহার করে সরাসরি ময়লা ফেলার ঝুড়িতে নিক্ষেপ যায়। যারা এরইমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন জনসমুক্ষে এলে তাদেরকে অবশ্যই সার্জিক্যাল মাস্ক পরে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সংক্রমন ঠেকাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
রোগী ও সন্সেহভাজনদেরকে সেবা দেয়ার সময় স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে যথাসম্ভব পুর্বসতর্কতা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত কর্তাব্যক্তিদের জন্য 'কন্টাক্ট ট্রেসিং' একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি যার মাধ্যমে সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করা যায় এবং ছড়িয়ে পড়াকে থামানো যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাংলাদেশেও ব্যাপক ও দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষণের ব্যবস্থা থাকাটা জরুরী। জনসচেতনতা, অন্তরণ, সঙ্গনিরোধ এমনকি অবরুদ্ধকরণের (আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন) পরেও উপসর্গহীন (Asymptomatic) ভাইরাসবাহক ব্যক্তিদের কারণে দেশের মধ্যে নিরবে এটি ছড়িয়ে পড়ার ভয়াবহ একটি ঝুঁকি রয়েছে। সেকারণে উপসর্গ বা লক্ষণের প্রকাশ না পেলেও সবাইকে ঘরে বসে অবরুদ্ধ অবস্থাতে থাকার সময় এবং চলাচল সীমিত রেখে সামাজিক আন্তঃক্রিয়া সম্পাদনের সময়েও শারিরীক/সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা, নাকে-মুখে-চোখে হাত না দেওয়া, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা, ইত্যাদি পদ্ধতিগুলি অত্যন্ত সাবধানতার সাথে মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
ব্যক্তি পর্যায়ে এ রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে তারা কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। জীবাণুটি মানুষ-থেকে-মানুষে প্রধানত ২ প্রক্রিয়াতে ছড়াতে পারে। প্রথম প্রক্রিয়াটি ঘটে আবার ২ ধাপে।
১ম ধাপ: সংক্রমিত ব্যক্তি ঘরের বাইরে অবস্থানের সময় মুখ না ঢেকে হাঁচি-কাশি দিলে করোনাভাইরাস তার আশেপাশের (১-২ মিটার পরিধির মধ্যে) বাতাসে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে।
২য় ধাপ: অতঃপর সেই করোনাভাইরাস কণাযুক্ত বাতাসে কেউ যদি শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে তাহলে তার (একাধিক ব্যক্তিও হতে পারেন) ফুসফুসেও শ্বাসনালী দিয়ে এই করোনাভাইরাসগুলি প্রবেশ করতে পারে।
'সংক্রমণের দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিও রয়েছে কয়েক ধাপ। ১ম ধাপ: সংক্রমিত ব্যক্তি যদি হাঁচি-কাশি-নাক ঝাড়ার শিষ্টাচার না মানেন, তাহলে তার হাতে বা ব্যবহৃত বস্তুতে করোনাভাইরাসগুলো লেগে থাকবে।
২য় ধাপ: এখন যদি সেই ব্যক্তি তার পরিবেশে, আশপাশের কোথাও যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতলে তার করোনাভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করে, তাহলে সেই পৃষ্ঠতলেই জীবাণুগুলো পরবর্তী একাধিক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
৩য় ধাপ: এখন যদি অন্য কোনও ব্যক্তি সেই করোনাভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠটি কোনভাবে হাত দিয়ে স্পর্শ করে ফেলে সেক্ষেত্রে ঐ নতুন ব্যক্তির হাতেও জীবাণুগুলো চলে আসবে।
৪র্থ ধাপ : তবে হাতে লাগলেই জীবাণুগুলো দেহের ভেতরে বা ফুসফুসকে সংক্রমিত করতে পারবে না যদি তিনি যেকোন পদ্ধতিতে হাত জীবানুমুক্ত করে ফেলেন। তবে তিনি যদি ভুলক্রমে ঐ জীবাণুযুক্ত হাতটি দিয়েই নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করে ফেলেন কেবল তখনই করোনাভাইরাসগুলো ঐসব এলাকার উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করবে ও প্রথমে গলায় ও পরে ফুসফুসে বংশবিস্তার করা শুরু করবে।
এজন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, প্রতিটি অন্তর্বতী ধাপেই যদি করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা যায়, তাহলে সফলভাবে এই ভাইরাস ও রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব
শারীরিক/ সামাজিক দূরত্বের উদ্দেশ্য হলো, সংক্রমণ বহনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে এবং সংক্রামিত না হওয়া অন্যদের মধ্যে যোগাযোগের সম্ভাবনা হ্রাস করা, যাতে রোগ সংক্রমণ, অসুস্থতা এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ জীবাণুর বিস্তাররোধে এবং নিজে নিরাপদ থাকতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়টি হল ঘরে থাকা, মানুষের কাছাকাছি না আসা।
এই জীবাণু কোনও লক্ষণ-উপসর্গ ছাড়াই দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যেকোনও ব্যক্তির দেহে তার অজান্তেই বিদ্যমান থাকতে পারে। এরকম করোনাভাইরাস বহনকারী ব্যক্তি যদি কোনও কারণে হাঁচি-কাশি বা নাক ঝাড়েন, তাহলে তার আশেপাশের বাতাসে ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্বের মধ্যে করোনাভাইরাসবাহী জলীয় কণা বাতাসে ভাসতে শুরু করে এবং ঐ পরিধির মধ্যে অবস্থিত অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এ জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। এ কারণে জনসমাগম বেশি আছে, এরকম এলাকা অতি-আবশ্যক প্রয়োজন না হলে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে যাতে বাতাসে ভাসমান সম্ভাব্য করোনাভাইরাস কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করতে পারে।
এর মানে হলো, আপনি অকারণে অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবেন না।
কোথাও একজোট হয়ে আড্ডা দেওয়া, সমাবেশ এবং সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহার করবেন। পারস্পরিক আলাপে পর্যাপ্ত দূরুত্ব বজায় রাখবেন, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন, সন্দেহ আসলে দিনে কয়েকবার করে হাত ধোবেন। ভিড়ে যাবেন না, গণপরিবহনে পারতপক্ষে উঠবেন না, ভ্রমণ করবেন না, সিনেমা–থিয়েটার–প্রার্থনাগৃহেও যাবেন না। বন্ধুবান্ধবের কাছে যাবেন না, তাঁরাও আসবেন না এবং সম্ভব হলে কাউকে স্পর্শ না করে প্রত্যেকের সঙ্গে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখবেন। খাবার, ঔষধ কেনা ও সৎকারের মত অতি জরুরী কাজগুলো সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে সতর্কতার সাথে করবেন।
আর যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি-এর সংজ্ঞানুসারে এটি হল, "রোগের সঞ্চালন ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য মানুষের মধ্যকার সংস্পর্শের ঘটনা কমানোর পদ্ধতি"। এর উদ্দেশ্য হল সংক্রামক রোগ বহনকারী ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা কমানো। একইসাথে আক্রান্ত ব্যক্তি যেন অপরের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে তথা রোগ সংবহন কমানো এবং সর্বোপরি মৃত্যুহার কমানো। সিডিসি প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের ১.৮ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছে এবং এই দূরত্ব যত বেশি হবে, নিরাপত্তাও ততই বেশি হবে বলে দাবী করেছে। অন্যদের সাথে দেখা করতে হলে কিংবা কেনাকাটায় গেলেও এটা মানতে হবে।
হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্তকরণ
এই রোগের সংক্রমন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হাত ধৌতকরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসিও জনগনকে দিনে কয়েকবার করে সাবান পানি দিয়ে নুন্যতম ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধৌতকরণের অভ্যাস তৈরী করতে বলেছে। পয়ঃনিষ্কাশন কর্মের পর, খাবার পূর্বে, কাশি-হাঁচি-নাক ঝাড়ার পর বা এমনকি হাত নোংরা দেখালেও ধুতে হবে। কারণটা হল, মানবদেহের বাইরে এই জীবানু বেশ দুর্বল। এমনকি ঘরের ব্যবহৃত সাধারন সাবানও এর সুরক্ষা বুদবুদ ফাটিয়ে একে মেরে ফেলে। সাবান পানি কাছে না থাকলে অ্যালকোহলভিত্তিক (নুন্যতম ৬০℅) 'হ্যান্ড স্যানিটাইজার' ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সিডিসি। না ধোয়া হাতে, নাকে-মুখে-চোখে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
পরিবেশে অবস্থিত বিভিন্ন বস্তুতে করোনাভাইরাস লেগে থাকতে পারে, তাই এগুলি কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করলে তার হাতেও এই জীবানু লেগে যেতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে করোনাভাইরাস কাঠ, প্লাস্টিক বা ধাতুর তৈরী বস্তুর পৃষ্ঠে গড়ে চার থেকে পাঁচ দিন লেগে থাকতে পারে। মানুষকে জীবনযাপনের প্রয়োজনে এগুলিকে প্রতিনিয়তই হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হয়। তাই এগুলি স্পর্শ করার পরে হাত ভাল করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। কিছু কিছু বস্তু হাত দিয়ে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেয়া জরুরী।
- অন্য কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত বস্তু যা হাত দিয়ে ঘনঘন স্পর্শ করা হয়ে থাকে যেমন মোবাইল ফোন (মুঠোফোন), ল্যাপটপ,টিভির রিমোট ইত্যাদি নিজ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- বহুসংখ্যক ব্যক্তি স্পর্শ করে এমন যন্ত্র, যেমন এটিএম যন্ত্র (নগদ টাকা প্রদানকারী যন্ত্র) ও অন্য কোনও যন্ত্রের (যেমন দোকানের বা অন্য কোনও স্থানের ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মনিটর) বোতাম, চাবি, কিবোর্ড ও হাতল হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- নিজ বাসগৃহের বাইরের যেকোনও আসবাবপত্র (চেয়ার, টেবিল, ইত্যাদি), হাত মোছার তোয়ালে, রুমাল, যানবাহনের দরজার হাতল বা অন্য কারও কামরা হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- কাগজের টাকা, ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড এবং এগুলি যেখানে রাখা হয়, যেমন ওয়ালেট বা পার্স ইত্যাদির অভ্যন্তরভাগ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- রেস্তোরাঁ বা অন্য যেকোনও খাবার বিক্রয়কারী দোকানের থালা-বাসন-বাটি-পাত্র বা বোতল-গেলাস হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- ঘরের বাইরে রাস্তায় বা অন্যত্র কারও সাথে করমর্দন করা (হাত মেলানো) বা কোলাকুলি করা বা ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা।
এইসব ক্ষেত্রগুলিতে হাত দিয়ে স্পর্শের পরে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং যত ঘনঘন সম্ভব হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সিডিসি'র হাত ধোয়ার সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে[২১৪]:
-
সাবধান হোন। করোনা জীবাণু কান দিয়েও প্রবেশ করে
-
সাবধান হোন। করোনা জীবাণু চোখ দিয়েও প্রবেশ করে
-
সাবধান হোন। করোনা জীবাণু নাক দিয়েও প্রবেশ করে
-
সাবধান হোন। করোনা জীবাণু মুখ দিয়েও প্রবেশ করে
-
নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরী'র মাধ্যমে আপনি কোভিড-১৯ জীবাণু'র সংক্রমন থেকে রক্ষা পেতে পারেন
-
হাত ধোয়ার পর সেই হাত দিয়েই আবার ট্যাপ বন্ধ করবেন না যেন
- প্রথমে হাত কল থেকে পড়ন্ত পরিষ্কার পানিতে ভাল করে ভিজিয়ে নিতে হবে।[২১৪] গরম বা ঠাণ্ডা পানিতে কোনও পার্থক্য হয় না।[২১৫] বালতি বা পাত্রে রাখা পানিতে হাত না ভেজানো ভাল, কারণ সেটি পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত না-ও হতে পারে।[২১৫]
- এর পর হাতে বিশেষ জীবাণুমুক্তকারক সাবান (সম্ভব না হলে সাধারণ সাবান) যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে ও ফেনা তুলে পুরো হাত ঘঁষতে হবে।[২১৪] সাবান জীবাণুকে হাত থেকে বের করে নিয়ে আসে।
- হাতের প্রতিটি আঙুলে যেন সাবান লাগে, তা নিশ্চিত করতে হবে, এজন্য এক হাতের আঙুলের ফাঁকে আরেক হাতের আঙুল ঢুকিয়ে ঘঁষে কচলাতে হবে।[২১৪]
- দুই হাতের বুড়ো আঙুল ও কবজিও সাবান দিয়ে ঘষা নিশ্চিত করতে হবে।[২১৬]
- এক হাতের তালুর সাথে আরেক হাতুর তালু ঘষতে হবে এবং এক হাতের তালু দিয়ে আরেক হাতের পিঠও সম্পূর্ণ ঘঁষতে হবে।[২১৪]
- প্রতিটি নখের নিচেও ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।[২১৪]
- ঘড়ি, আংটি বা অন্য যেকোন হাতে পরিধেয় বস্তু যদি থাকে তাহলে তা খুলে সেগুলির নিচে অবস্থিত পৃষ্ঠও পরিষ্কার করতে হবে।
- কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে, সম্ভব হলে ৩০ সেকেন্ড বা তারও বেশি সময় ধরে ফেনা তুলে ভাল করে হাত ঘঁষতে হবে।[২১৪] যত বেশীক্ষণ ধরে হাত ঘঁষবেন, হাত তত বেশী জীবাণুমুক্ত হবে।[২১৫]
- পাত্রে রাখা স্থির পানিতে নয়, বরং পড়ন্ত পরিষ্কার পানির ধারাতে হাত রেখে ভাল করে হাত ধুয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করতে হবে।[২১৪] বেসিনে, গামলা, বালতি বা পাত্রে রাখা পানিতে হাত সাবানমুক্ত করলে হাতে পুনরায় জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে।[২১৫]
- হাত ধোয়ার পরে তোয়ালে কিংবা রুমাল নয়, বরং একবার ব্যবহার্য কাগজের রুমাল দিয়ে সম্পূর্ণরূপে হাত শুকিয়ে নিতে হবে, কেননা গবেষণায় দেখা গেছে যে ভেজা হাতে জীবাণু ১০০ গুণ বেশী বংশবিস্তার করে।[২১৭] ভেজা হাতে খুব সহজেই জীবাণু পুনঃসংক্রমিত হতে পারে।[২১৫] একাধিক ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে দিয়ে হাত শুকানো যাবে না, এবং একই তোয়ালে দিয়ে বারবার হাত শুকানো যাবে না, তাই একবার-ব্যবহার্য কাগজের রুমাল ব্যতীত অন্য যেকোনও ধরনের তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা উচিত নয়।
- হাত শুকানোর কাগজের রুমালটি দিয়ে ধরেই পানির কল বন্ধ করতে হবে এবং শৌচাগারের দরজার হাতল খুলতে হবে। পানির কল ও শৌচাগারের দরজার হাতলে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে। এরপর কাগজের রুমালটি ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্রে ফেলে দিতে হবে।
- যেহেতু দিনে বহুবার হাত ধুতে হবে, তাই ত্বকের জন্য কোমল সাবান ব্যবহার করাই শ্রেয়। বেশি করে সাবান লাগানোর কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে এবং এর ফলে ত্বকে অপেক্ষাকৃত সহজে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে।[২১৬]
- সাবান-পানির ব্যবস্থা না থাকলে কমপক্ষে ৬০% অ্যালকোহলযুক্ত বিশেষ হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) দিয়ে হাত কচলে ধুতে হবে। এক্ষেত্রেও কমপক্ষে যথেষ্ট পরিমাণ দ্রবণ হাতে প্রয়োগ করে ৩০ সেকেন্ড ধরে হাতের তালু, পিঠ, আঙুল, আঙুলের ফাঁক, আঙুলের মাথা, নখের তলা, সবকিছু ভাল করে ভিজিয়ে ঘঁষতে হবে, যতক্ষণ না সবটুকু দ্রবণ না শুকায়।[২১৮] তবে সুযোগ পেলেই নোংরা হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া সবচেয়ে উত্তম।
- যদি হাত-জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ ও সাবান উভয়েই লভ্য না থাকে বা সরবরাহ কম থাকে, কিংবা এগুলি যদি ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না থাকে, তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ছাই, বালি বা কাদামাটি ও পানি দিয়ে একই পদ্ধতিতে ঘষে ঘষে হাত ধোয়া একটি ভালো বিকল্প।[২১৯] (ইংরেজি) গবেষণায় দেখা গেছে যে ছাই বা কাদামাটি দিয়ে হাত ধোয়া ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার জীবাণুমুক্তকরণ ক্ষমতার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।[২২০]
কখন হাত ধুতে হবে, তা জানার জন্য নিচের নির্দেশনাগুলি মনে রাখা জরুরি:
- নাক ঝাড়ার পরে, কাশি বা হাঁচি দেবার পরে হাত ধোবেন।
- যেকোনও জনসমাগমস্থল যার মধ্যে গণপরিবহন, বাজার কিংবা উপাসনাকেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত, সেগুলিতে পরিদর্শন করার পরেই হাত ধোবেন।
- বাসা থেকে কর্মস্থলে পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
- কর্মস্থল থেকে বাসায় পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
- ঘরের বাইরের যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতল হাত দিয়ে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন। (উপরে হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি দেখুন)
- যেকোনও রোগীর সেবা করার আগে, সেবা করার সময়ে বা তার পরে হাত ধোবেন।
- খাবার আগে ও পরে হাত ধোবেন।
- শৌচকার্য করার পরে হাত ধোবেন।
- বর্জ্যপদার্থ ধরার পরে হাত ধোবেন।
- পোষা প্রাণী বা অন্য যে কোনও প্রাণীকে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন।
- বাচ্চাদের ডায়পার (বিশেষ জাঙ্গিয়া) ধরার পরে বা বাচ্চাদের শৌচকার্যে সাহায্য করার পরে হাত ধোবেন।
- হাত যদি দেখতে নোংরা মনে হয়, তাহলে সাথে সাথে হাত ধোবেন।
- হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেন এক রোগী থেকে আরেক রোগী বা অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে যেন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে না পারে, সেজন্য সেখানে কর্মরত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে নিম্নের ৫টি মুহূর্তে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে : রোগীকে স্পর্শ করার আগে, পরিষ্কারকরণ বা জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি প্রয়োগের আগে, রোগীর দেহজ রস বা তরল গায়ে লাগার সম্ভাবনা থাকলে ঠিক তার পরপর, রোগীকে স্পর্শ করার পর এবং রোগীর আশেপাশের পরিবেশ স্পর্শ করার পর।
- হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করার সুব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ:
- রেস্তোরাঁ, চা ও কফিঘর, দোকানপাট, বাজার, বিপণিবিতান, শপিং মল, ইত্যাদি সমস্ত স্থানে হাঁচি-কাশিতে মুখ ঢাকার জন্য ও ভেজা হাত শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কাগজের রুমাল বা টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা করতে হবে। হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজারের) এবং/কিংবা সাবান-পানিতে হাত ধোবার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবহারের পর কাগজের রুমাল ফেলে দেবার জন্য (খোলা নয়, বরং) ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্র বা বিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- সম্ভব হলে ঘরের বাইরে যাতায়াত বা ভ্রমণের সময় সর্বদা হাত জীবাণুমুক্তকারকের বোতল ও কাগজের রুমাল (টিস্যু পেপার) সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে।
নাক, মুখ ও চোখ হাত দিয়ে স্পর্শ না করা
এ জীবাণু কেবলমাত্র নাক, মুখ, চোখের উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে। পরিবেশে উপস্থিত করোনাভাইরাস স্পর্শের মাধ্যমে হাতে লেগে থাকতে পারে। তাই আধোয়া জীবাণুযুক্ত হাতে কখনোই নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা যাবে না। যদি একান্তই নাকে মুখে চোখে হাত দিতে হয়, তাহলে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে তারপর করতে হবে, কিংবা কাগজের রুমাল ব্যবহার করে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করতে হবে। এজন্য সবসময় হাতের কাছে সাবান-পানি বা অ্যালোকোহলভিত্তিক হস্ত জীবাণুমুক্তকারক (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) কিংবা কাগজের রুমালের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়মটি মেনে চলা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। নাক, মুখ ও চোখে হাত দেওয়া খুবই সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং বহুদিনের অভ্যাসের বশে প্রায় সবাই কারণে-অকারণে এ কাজটি করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষ ঘণ্টায় ২০ বারেরও বেশি মুখের বিভিন্ন অংশে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। কিন্তু নিজদেহে এই জীবানুর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে এই অভ্যাসের ব্যাপারে অনেক বেশী সচেতন হতে হবে। অনেকে মানসিক চাপের কারণে, গভীর চিন্তা করার সময়, অন্য কোনও অজ্ঞাত মানসিক কারণে কিংবা চুলকানির জন্য নাকে, মুখে, চোখে হাত দিয়ে থাকেন। তাই প্রথমে প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজেকে বেশ কিছু সময় ধরে নিয়মিত আত্ম-পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে কোন্ কোন্ সময়ে বা কারণে সে নিজের নাক, চোখ বা মুখে হাত দিচ্ছে। কারণগুলি চিহ্নিত করার পর এবং এগুলি সম্বন্ধে সচেতন হবার পরে একে একে এগুলিকে দূর করার চেষ্টা করতে হবে এবং নাকে,মুখে, চোখে হাত দেয়ার মাত্রা যথাসর্বোচ্চ সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।
কিভাবে এড়াবেন: বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন যা অনুসরণ করলে এ অভ্যাস ত্যাগ করা সম্ভব হতে পারে।
- বসে বা শুয়ে থাকার সময় দুই হাতের আঙুল মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা। মুষ্টিবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই কথা বলা বা হাঁটা-চলার চেষ্টা করা। যদিও এ ধরনের অবস্থায় অনেক সময় হাতের মুষ্টি ছুটে যেতে পারে তাই কিছুক্ষণ পরপর দুই হাত নাড়ানো যেতে পারে। তখন দুই হাত ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর আবারও মুষ্টিবদ্ধ করে রাখতে হবে।
- চশমা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে অসাবধানতাবসত চোখে আঙুল চলে গেলেও বাধা আসবে। আর, সারা দিন চোখে চশমা পড়ার অভ্যাস তৈরী করতে পারলে চোখে হাত দেওয়ার অভ্যাসটি ধারাবাহিকভাবে কমে আসবে।
- মুখমন্ডলে হাত দেয়ার অভ্যাসটি ত্যাগ করা যদি বেশি কঠিন হয় তাহলে মাস্ক পরার একটি অভ্যাস তৈরী করা যেতে পারে। এতে হাত থেকে ভাইরাস মুখের মধ্যে প্রবেশ করবে না।
ফেস মাস্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি
হাঁচি-কাশি দিতে হলে কুনুই ভাঁজ করে বা টিশু দিয়ে নাক-মুখ ঢেঁকে তারপর দিতে হবে এবং সাথেসাথে উপযুক্তভাবে ফেলে দিতে হবে সেই টিশ্যু এমন পরামর্শই দিয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক সব সংস্থাগুলো ।
সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ তাদের জন্য যারা হয়তোবা আক্রান্ত, কারণ এটা হাঁচি-কাশি বা কথা বলার সময় যে শুক্ষ থুতুমণা ভেঁষে আসে তার পরিমান কমিয়ে দেয় এবং বেশিদূর পর্যন্ত ছড়াতে দেয়না। যদিও কিছু দেশ যেমন চীন সবাইকেই এটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় কারণ এটি নাক-মুখ হাত দিয়ে স্পর্শ করার পরিমান (অভ্যাস) কমিয়ে দেয়। কখন এবং কিভাবে ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তারও নির্দেশনা দিয়েছে
হাসপাতালের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষায় দেখা গেছে যে রেসপিরেটর হিসেবে তৈরি ফেস মাস্ক ইনফ্লুয়েঞ্জা ঠেকাতে পারে।
রেসপিরেটর হচ্ছে এমন একধরণের কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র যার মধ্যে থাকে একটি বিশেষায়িত ফিল্টার যা মূলত বায়ুবাহিত ক্ষতিকর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পদার্থের হাত থেকে শ্বাসনালীকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।
কখন ও কেন:
- নিজে সুস্থ থাকা অবস্থায় এ জীবাণুতে আক্রান্ত হয়েছে বা সন্দেহ করা হচ্ছে—এমন ব্যক্তির শুশ্রূষা করার সময়ই শুধুমাত্র আপনার মাস্ক পরার প্রয়োজন রয়েছে।
- হাঁচি- কাশি থাকলে মাস্ক ব্যবহার করুন। আপনার শরীরে এ জীবাণু যদি থেকেও থাকে থাকলে তা যেন অন্যদের মধ্যে না ছড়ায় তা নিশ্চিত করুন।
- আপনার মাস্ক ব্যবহার তখনই কার্যকর হবে, যখন আপনি অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড রাব (বাজারে থাকা সাধারণ হেক্সিসল বা অনুরূপ পণ্য) বা সাবান-পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করেন।
- মাস্ক ব্যবহার করতে হলে এর ব্যবহারবিধি জেনেই করা উচিত।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
- মাস্ক পরার আগে হাত (সাবান-পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড বা হ্যান্ড রাব দিয়ে) জীবানুমুক্ত করে নিন।
- মাস্ক পরার সময় এর সামনের অংশ ধরবেন না।
- নাক ও মুখ মাস্ক দিয়ে ঢেকে ফেলুন এবং মনে রাখবেন, মুখ ও মাস্কের মধ্যে যেন কোনোও ফাঁকা স্থান না থাকে।
- ব্যবহারের সময় মাস্ক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। আর যদি স্পর্শ করেন, তবে হাত (সাবান-পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড বা হ্যান্ড রাব দিয়ে) পরিস্কার করে নিন।
- ব্যবহৃত মাস্কটি আর্দ্র বা ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে মনে হওয়ামাত্রই তা বদলে ফেলুন। একবার ব্যবহারের জন্য (ডিসপোজিবল) তৈরি মাস্ক বারবার ব্যবহার করবেন না।
- মাস্ক অপসারণের সময়ও এর সামনের অংশ স্পর্শ করবেন না। মাস্ক খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে তা ঢাকনা দেওয়া ময়লার বাক্সে/ঝুড়িতে ফেলুন।
- মাস্ক অপসারণের পর হাত পরিষ্কার করে নিন।
মাস্ক থেকে উপকার পেতে হলে, এটিকে পরতে হবে সঠিকভাবে, নিয়ম মেনে। বদলাতে হবে নিয়মিত। এবং এগুলো যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না, এক্ষেত্রেও নিরাপত্তা নির্দেশিকা মানতে হবে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কয়েকটি কারণে আবার সাধারণ জনগণেকে ফেস মাস্ক ব্যবহারের সুপারিশ করছেন না।
- পরা বা খোলার সময় সেগুলো অন্য মানুষের কাশি এবং হাঁচির সংস্পর্শে আসার কারণে বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে।
- ঘনঘন হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বরং তুলনামূলক অনেক বেশি কার্যকরী।
- জনগনের মধ্যে এক ধরণের মিথ্যা নিরাপদ থাকার অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
পরিবেশ ও যেকোনো পৃষ্ঠতল পরিষ্কার রাখা
অনেকরকম জীবাণুনাশক বা অ্যালকোহল জাতীয় তরল দিয়ে গৃহ ও বিভিন্ন পৃষ্ঠতল পরিষ্কার করতে পারেন। অফিস বা ডে-কেয়ার এর মত কর্মক্ষেত্রে/প্রতিষ্ঠানে যদি কোভিড সন্দেহজনক বা নিশ্চিতকৃত কাউকে পাওয়া যায় তাহলে গোটা অফিস এলাকাটিকেই জীবানুমুক্ত করতে হবে। বাথরুম, সবাই ব্যবহার করে এমন স্থান, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেমন ট্যাবলেট, টাচ স্ক্রিন, কিবোর্ড, রিমোট কন্ট্রোল এসব আক্রান্ত ব্যক্তি কতৃক ব্যবহৃত হলে অবশ্যই জীবানুমুক্ত করতে হবে। [২২১]এছাড়াও,
বাড়িতে সবার নিয়মিত হাত ধুয়ে পরিষ্কার করার অভ্যাস রপ্ত করা দরকার। বাড়ির মেঝে এবং অন্যান্য সকল পৃষ্ঠতল পরিষ্কার রাখার দুটি ধাপ রয়েছে। যার একটি হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন (ক্লিনিং) করা, এবং অপরটি হলো জীবাণুনাশ (ডিজইনফেকটিং) করা।
প্রথমে পানি, ডিটারজেন্ট বা মেঝে পরিষ্কারক (ফ্লোর ক্লিনার) জাতীয় উপাদান দিয়ে মেঝে, তল ইত্যাদি পরিষ্কার করতে পারেন। এরপর জীবাণুনাশক উপাদান দিয়ে জীবাণুমুক্ত করবেন। জীবাণুনাশক হিসেবে ব্লিচিং বা ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলের মিশ্রণ কার্যকর। পরিষ্কার কার্যক্রম শুরুর আগে গ্লাভস পরা জরুরি এবং কাজ শেষে সেটিকে ফেলে দেয়ে বা জীবাণুমুক্ত করা দরকার। বাড়ীর কার্পেট, মাদুর, ম্যাট ইত্যাদি জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন।
বাড়ির প্রতিটি ঘরে টিস্যু পেপার বা কিচেন রোল রাখাটা খুবই দরকারী , যাতে হাঁচি-কাশির সময় হাত বাড়ালেই এটি পাওয়া যায়। টিস্যু বা ময়লা ফেলার পাত্রটি (বিন) ঢাকনাযুক্ত হওয়া দরকার।
গৃহ ও কার্যালয়ে যেসব বস্তু অনেক বহিরাগত মানুষ হাত দিয়ে স্পর্শ করে, যেমন দরজার হাতল, নব, সিটকিনি, লিফটের বোতাম, কম্পিউটারের কিবোর্ড ও মনিটরের পর্দা, ইলেক্ট্রিক সুইচস বা অন্য কোনও বহুল ব্যবহৃত আসবাব, ইত্যাদি নিয়মিতভাবে কিছু সময় পরপর জীবাণুনিরোধক স্প্রে বা দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও টাকা (নোট), টেলিফোন, মোবাইল ফোন,ল্যাপটপ কম্পিউটার, টিভি রিমোট কেও জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
ঘরে ফিরে যা করা উচিত: ঘরে প্রবেশের মুখেই বেসিন,সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। বাইরে থেকে ফিরে যেকোনো বস্তু স্পর্শ করার আগেই সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরী করুন। এর আগে বাসার কোন কিছু না ধরাই শ্রেয় কারণ এ হাত দিয়ে যা কিছু ধরা হবে, সেখানেই এ জীবাণু থেকে যেতে পারে। বাইরে পরে যাওয়া জামা-কাপড়গুলো দ্রুত বদলে ফেলা জরুরি। বাইরের যেকোনো পার্সেল, প্যাকেট বা অন্য কিছু হাতে নেওয়ার পর হাত ধুয়ে ফেলা উচিত। সাবান, স্যানিটাইজার অথবা ব্লিচিং মিশ্রণ সরাসরি স্প্রে করে অথবা পরিষ্কার কাপড়ে লাগিয়ে ব্যবহৃত জিনিসপত্র ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। বাইরে থেকে পরে আসা জুতো ঘরে ঢোকাবেন না, সম্ভব হলে জুতার তলাটিও জীবাণুনিরোধক স্প্রে বা দ্রবণ দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিন। ঘরে ব্যবহারের জন্য আলাদা একজোড়া জুতা প্রস্তুত রাখবেন।
চিকিৎসকরা বলছেন যে ঘড়ির ব্যান্ড, মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন ও এর কভার, চশমা ও এর খাপ, বেল্ট, জুতোর নিচের অংশ, হাতের আংটির মাধ্যমেও বাড়ীতে এই জীবানু প্রবেশ করতে পারে সেকারণে ঘরে ঢোকামাত্রই এগুলো জিবাণুমুক্ত করা অতি জরুরী। তারা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে এগুলো জীবাণুমুক্তকরনের পরামর্শ দিয়েছেন কারণ ভাল মানের হ্যান্ড স্যানিটাইজারগুলোতে থাকে ইথাইল অ্যালকোহল যা এসব কাজের জন্য উপযুক্ত। মোবাইল ফোন, চশমা, এবং অলংকারসমূহ জীবাণুমুক্তকরনের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। শুকনো কাপড়ে স্যানিটাইজার লাগিয়ে সেই কাপড় দিয়ে চশমার ডাঁটি, ফ্রেম, চশমার খাপ, মোবাইল ফোন ও তার কভার, মানিব্যাগ, বেল্ট খুব ভালোভাবে মুছে নেয়া উচিৎ ।
মোবাইল ফোন: মোবাইল ফোন আমাদের কান-নাক-মুখ আর চোখের সংস্পর্শে আসে। আর যেহেতু যেখানে-সেখানে মোবাইল ফোন কানে চেপে ধরতে একটুও দ্বিধা করি না আমরা সেকারণে এটি একটি অন্যতম ঝুঁকিপূর্ন উপাদান। কান থেকে চোখ, নাক, মুখের দূরত্ব খুবই যৎসামান্য তাই এটির মাধ্যমে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
ভাইরোলজিস্টদের মতে, মোবাইল ফোন হল 'হাই টাচ সারফেস'-এর একটি অন্যতম উদাহরণ। সেকারণে ঠিক ভাবে পরিষ্কার করা না এটির মাধ্যমেও 'কমিউনিটি ট্র্যান্সমিশন' শুরু হতে পারে। সেকারণে বাইরে থেকে আসার পর সন্দেহ থাকলে স্যানিটাইজার দিয়ে মোবাইল ফোন মুছে অল্প সময়ের জন্য রোদে রাখা যেতে পারে।
বিবিধ:
- রাস্তায় চলাফেরার সময় পথের ধারে উপস্থিত উন্মুক্ত বর্জ্য কিংবা হাসপাতাল ও অন্যত্র উপস্থিত চিকিৎসা বর্জ্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
- হাসপাতালে ও অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে অবশ্যই বিশেষ চিকিৎসা মুখোশ ও হাতমোজা (পিপিই) পরিধান করতে হবে, যাতে ভাইরাস এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে না ছড়ায়।
করোনাভাইরাস-বহনকারী সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে করণীয়:
- যে ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে, তার থেকে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে বাতাসে ভাসমান ভাইরাস কণা শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করে।
- রাস্তায় ও যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না, কেননা থুতু থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
- হাঁচি-কাশি দেওয়া ব্যক্তিকে অবশ্যই কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় অস্থায়ী কাগজের রুমাল বা টিস্যুপেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে এবং সেই কাগজের রুমাল সাথে সাথে বর্জ্যে ফেলে দিতে হবে। খালি হাত দিয়ে কাশি-হাঁচি ঢাকা যাবে না, কেন না এর ফলে হাতে জীবাণু লেগে যায় (হাত দিয়ে হাঁচি-কাশি ঢাকলে সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে)। কাগজের রুমাল না থাকলে কনুইয়ের ভাঁজে বা কাপড়ের হাতার উপরের অংশে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দিতে হবে।
- পরিচিত কারও করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা গেলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা জরুরী ফোনে যোগাযোগ করতে হবে যাতে তাকে দ্রুত পরীক্ষা করা যায় এবং প্রয়োজনে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) করে রাখা যায়।
আর্থ-সামাজিক প্রভাব ও মন্দা
বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে ৩৯ তম এবং ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে (পিপিপি) ২৯ তম যা দক্ষিন এশিয়ায় ২য়। বাংলাদেশ গত এক দশক ধরে গড়ে ৬.৩ শতাংশ হার ধরে রেখে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বর্তমানে বিশ্বের ৭ম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি। ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুসারে (পিপিপি) বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু জিডিপি ৪,৬০০ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের তথ্যানুসারে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৭,০০,০৯,৩৫৩ জন।[২২৩][২২৪][২২৫]
২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৩১৭.৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২০ সালে (ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে অনুমিত) ৮৬০.৯১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[২২৬] [২২৭]
২০১৮, ২০১৯ সালে জিডিপির হার ছিল যথাক্রমে ৮ % এবং ৭.৯ %। ২০২০, ২০২১ সালে সম্ভাব্য হার হবে যথাক্রমে ২ % ও ৯.৫ %।[২২৮]
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসে প্রধানত ৫ টি খাত (উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, পরিবহন, নির্মাণ এবং কৃষি) থেকে এবং গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) জিডিপিতে ৬৭ শতাংশ (সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকা) অবদান রেখেছে এই খাতগুলি । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্যানুসারে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.১৫ %, স্থিরমূল্যে যা ১১,০৫,৭৯৩ কোটি টাকা।[১৮৬]
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমান্বয়ে কৃষির তুলনার 'সেবা' ও 'শিল্প' খাত থেকে বাংলাদেশ বেশী পরিমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে। ২০১৮ সালের তথ্যানুসারে 'সেবা', 'শিল্প' ও কৃষি খাতে বাংলাদেশের জিডিপি যথাক্রমে ৫২.১১; ৩৩.৬৬ এবং ১৪.২৩%।[২২৯] [২৩০]
বর্তমানে 'বিদেশি আয়' (রেমিট্যান্স) এবং 'তৈরী পোষাক শিল্প' (গার্মেন্টস) বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। যদিও তৈরি পোশাক শিল্প (রপ্তানি) থেকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে কিন্তু একইসাথে বিদেশ থেকে এর কাঁচামাল ক্রয়ে খরচ থাকার কারনে এককভাবে অভিবাসন খাতই (রেমিট্যান্স) বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস। আবার, বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে বেশী পরিমানে আমদানি করার কারনে,বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যে ঘাটতি ঘটে তা প্রধানত 'রেমিট্যান্স' এর মুদ্রা ব্যবহার করে মেটানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশ 'প্রবাসী আয়ের' (রেমিট্যান্স) মাধ্যমেই প্রধানত তাদের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ) বাড়িয়ে থাকে। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বেশি রেমিট্যান্স আসা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম।[২৩১]
২০১৯ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (১,৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার) যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশী। ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬ ও ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ১,৫৫৩, ১,৩৫৩, ১,৩৬১ ও ১,৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার।[২৩২]
বাংলাদেশে প্রতিবছর ইদের পূর্বে বেশী পরিমানে রেমিট্যান্স আসে এবং ২০২০ সাল থেকে সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এর উপর ২ শতাংশ হারে (১০০ টাকায় ২ টাকা) প্রণোদনা দিচ্ছে।[২৩৩]
বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৬ শতাংশ পূরণ করে 'তৈরী পোষাক শিল্প' (গার্মেন্টস) খাত যা বাংলাদেশের গত বছরের সর্বোমোট রপ্তানির ৮৩ % (৩,০০০ কোটি টাকা)।[২৩৪] [২৩৫]
বিশ্বে রপ্তানী আয় অর্জনের ক্ষেত্রে বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ছিল ৪২ তম। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের অংশ ছিল ৬ শতাংশ এবং পোশাক রপ্তানিতে একক দেশ হিসেবে বিশ্বে ২য়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপিতে পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাতের অবদান ছিল ১৪.৬ %।[২৩৬] যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল এর হিসাব মতে তৈরি পোষাক শিল্পে বিশ্বের প্রথম সারির ১০টি উন্নতমানের (পরিবেশবান্ধব) কারখানার ৭টি'ই রয়েছে বাংলাদেশে।[২৩৭]
২০১৯ সালের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্যমতে, কৃষিতে নিয়োজিত বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৪০.৬ %। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে বাংলাদেশের ৪৬.৬১ শতাংশ খানা (পরিবার) কৃষির উপর নির্ভরশীল।[২৩৮]
কৃষি ও বনায়ন খাত থেকে বাংলাদেশের জিডিপি'র ১০ শতাংশের বেশি অর্থ আসে যা টাকার অঙ্কে ১,০৭,০০০ কোটি। গত অর্থবছরে ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে ৭৫,০০০ কোটি, গবাদিপশু পালনের মাধ্যমে ১৫,০০০ কোটি এবং বনায়ন এর মাধ্যমে ১৭,০০০ কোটি টাকা। [১৮৬] [২৩৯]
অনেক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতবানী করেছে যে করোনাভাইরাসের অতিমারীর কারনে বিশ্বজুড়ে গত কয়েক শতকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সদূরপ্রসারী যে মন্দাটি ঘটবে বাংলাদেশেও তার বিরাট এক ক্ষতীকর প্রভাব পড়বে। এতে বাংলাদেশের সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। শিল্পোৎপাদন, পণ্য বিক্রি ও জনগণের আয় কমে যাবে এবং কর্মী ছাঁটাই, বেকারত্ব ও দারিদ্রতা বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে বিশ্বের পূর্ণ বা খণ্ডকালীন মোট কর্মশক্তির প্রতি ৫ জনের মধ্যে ৪ জনের পেশাই কোন না কোনভাবে করোনা অতিমারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত সাম্প্রতিক এক পূর্বাভাসে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ) বাংলাদেশ সমন্ধে বেশ ইতিবাচক ভবিষ্যতবানী করেছে। ২০২১ সাল নাগাদ রাষ্ট্রসমূহের জিডিপি বৃদ্ধির হারের যে তালিকা তারা তৈরী করেছে সেখানে সবচেয়ে ভাল অবস্থান দেখানো হয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৯ সালে ৭.৯ % জিডিপি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ যা ২০২০ সালে করোনা সম্পর্কিত সমস্ত সঙ্কটের মধ্যেও ২ % ধরে রাখতে পারবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসও প্রায় অনুরূপ। তারা ২-৩ শতাংশের কথা বলেছিল। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এটি হবে যথাক্রমে -৫.৯; ১.২; ১.৯ ও -১.৫। ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৯.৫ %। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এটি হবে যথাক্রমে ৪.৭; ৯.২; ৭.৪ এবং ২.০।[২৪০]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সমীক্ষার তথ্যানুসারে ২৬ মার্চ-২৬ এপ্রিল (৩০ দিন) পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি ১,০০,০০০ কোটি টাকারও বেশী। লকডাউনের কারনে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে গড়ে প্রতিদিন মোট ক্ষতী প্রায় ৩৩০০ কোটি টাকা যা লকডাউন অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিমানে বাড়তে পারে। সমীক্ষা অনুসারে, যদি পুরো মে মাস লকডাউন থাকে সেক্ষেত্রে ক্ষতীর পরিমান ২,০০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে দাবী করা হয়েছে যা পরিমানে গত অর্থবছরের জিডিপির প্রায় ৯ শতাংশ। [২৪১]
শিল্প (উৎপাদন ও নির্মাণ), সেবা ও কৃষি খাতে প্রতিদিন ক্ষতী হচ্ছে যথাক্রমে ১,১৩১; ২০০০ এবং ২০০ কোটি টাকা। [২৪১]
১৯ এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুসারে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও রফতানিমুখী দুই ধরনের অর্থনীতিতেই স্থবিরতা দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর প্রভাব শিঘ্রই চাকরীর বাজারেও পড়বে যার ফলে বিপুল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ কর্মচ্যুত হবেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলেছে, করোনাভাইরাস কারণে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিশ্বে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাবেন যার মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি মানুষই বসবাস করেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। আর, দাতা সংস্থা অক্সফামের গবেষণায় দাবী করা হয়েছে এ অঞ্চলের ১৩ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়বে। আইএলও এর তথ্য অনুযায়ী আবাসন ও খাদ্যের পাশাপাশি নির্মাণ, খুচরা বিক্রি, ব্যবসা এবং প্রশাসনিক খাতগুলোও বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছে।[২৪২]
বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হিসাব মতে, করোনা অতিমারীর কারনে বাংলাদেশে অন্তত দেড় কোটি মানুষ তাদের চাকরী হারাবেন এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বেন অন্তত ৫ কোটি মানুষ (প্রতি পরিবারে গড়ে ৪ জন করে সদস্য ধরা হয়েছে)।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বলেছে যে শতাধিক কারখানায় কর্মী ইতিমধ্যেই ছাটাই করা হয়েছে। আরেক উৎসে যানা যায় যে, কারখানা কর্তৃপক্ষ অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরও স্বেচ্ছায় অন্তত ছয়মাসের ছুটিতে যেতে বলা হয়েছে ।[২৪৩]
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে এর (বিআইজিডি) একটি যৌথ গবেষণায় জানা গেছে যে এই অতিমারীর কারনে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতীর সম্মুখীন হবেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা এবং বাংলাদেশে দারিদ্রতার প্রবণতা বাড়তে থাকবে। শহরের মধ্যে রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহপরিচারিকা, রেস্টুরেন্টকর্মী, ক্ষুদ্র ভাসমান ব্যবসায়ী, অটোচালক এবং গ্রামের মধ্যে কৃষক, জেলে, দোকানি, বিদেশফেরত মানুষেরাও এর মধ্যে পড়বেন।
বাংলাদেশে পোলট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল’ (বিপিআইসিসি) দাবী করেছে যে, এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ২০ লাখ ব্যক্তি সীঘ্রই বেকার হবে এবং ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই সেক্টরে ক্ষতি হবে প্রায় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ ব্যক্তি এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে, যার প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। এছাড়াও নির্ভরশীল আরো প্রায় ৩০ লাখ ব্যক্তি দারিদ্রতার মধ্যে পড়বে বলা হয়েছে।[২৪৪]
বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) জানিয়েছে এই অতিমারীর কারনে ব্যবসা বাণিজ্যের মতই , শ্রম বাজারের ওপরও সমান বিরূপ প্রভাব পড়বে। সাম্প্রতিক তথ্যানুসারে বাংলাদেশে সর্বোমোট ৬ কোটি ৪০ লাখ (প্রায়) শ্রমজীবি ছিলেন যার মধ্যে ২ কোটি ৪০ লাখ কৃষিতে এবং ৪ কোটি শ্রমজীবি শিল্প ও সেবা খাতে কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব মতে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ গরিব মানুষ আছেন যাদের মধ্যে পৌনে দুই কোটি মানুষ হতদরিদ্র স্তরের। বাংলাদেশ সরকার দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যান চালক, পত্রিকার হকার, নির্মান, মোটর ও হোটেল শ্রমিকসহ অন্যান্য পেশাজীবি যারা দীর্ঘ ছুটি বা আংশিক লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়েছে, তাদের সহায়তার জন্য ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।[২৪৫]
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) একটি প্রতিবেদনে বলেছে যে, নির্মাণ খাত ও খুচরা ব্যবসায়ের সাথে জড়িত শ্রমিকরা তুলনামূলক বেশী পরিমানে কাজ হারাবেন। হোটেল-রেস্তোরা, সেবা খাতের কর্মীরা বেশি কাজ হারাতে পারেন।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর মতেও হোটেল, রেস্তোঁরা ও নির্মাণ খাতের শ্রমিকরা বিশেষভাবে ঝুঁকিতে পড়বেন।[২৪৬]
অতিমারীতে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরও বেকারত্ব বাড়ছে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) দেখা যাচ্ছে। ৭ এপ্রিলের তথ্যানুসারে, গত ২ মাসে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় কমেছে তিন হাজার কোটি টাকা (৩৬ কোটি ডলার)। প্রবাসীদেরকে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সহায়তা দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদ ও এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের দেয়া তথ্যানুসারে বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টি দেশে এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন যারা বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা প্রবাসী আয় (১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স) বাংলাদেশে পাঠান। বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের অর্ধেকের বেশি এটি।[২৪৭]
বেসিস থেকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার ও গীগ অর্থনীতির সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাও কাজ হারাচ্ছেন।[২৪৮]
আবাসন উদ্যোক্তাদের সংগঠন রিহ্যাব জানিয়েছে যে, নির্মাণ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৩৫ লাখ লোক কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে আছে।[২৪৯]
তৈরি পোষাক শিল্প
প্রবাসী আয়
তথ্য প্রযুক্তি
কৃষি
বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, এখনও বাংলাদেশের ৮৭ % গ্রামীণ মানুষের আয়ের উৎস কৃষি। দুই-তৃতীয়াংশ গ্রামীণ পরিবার কৃষি ও অকৃষিজ উভয় ধরনের আয়ের ওপর নির্ভরশীল এমনকি শহরে বসবাসকারীদের মধ্যেও ১১ শতাংশ মানুষ সরাসরি কৃষিকাজের সাথে যুক্ত। ২০১৩ সালের বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপের হিসাবমতে, বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির ৪৫.৭ শতাংশই কৃষিতে নিয়োজিত।[২৫১]
কৃষি মন্ত্রনালয়ের জানুয়ারী ২০২০ পর্যন্ত তথ্যানুসারে বাংলাদেশ সবজী, ধান ও আলু উৎপাদনে বিশ্বে যথাক্রমে ৩য়, ৪র্থ ও ৭ম। এছাড়াও মাছে ৪র্থ, আমে ৭ম, পেয়ারায় ৮ম এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে ১০ম। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অবদান ১৬.৬ %। বাংলাদেশের 'কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০১৯' এ বিনা সুদে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ঋণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং 'জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০১৯' চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও কৃষির উন্নতিকল্পে 'ক্ষুদ্রসেচ নীতিমালা', 'জৈব কৃষিনীতি' এবং 'কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা ২০১৯' প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়াও 'জাতীয় কৃষিনীতি' ও 'ডেল্টাপ্লান: ২১০০' তৈরী করা হয়েছে। সরকার কৃষকদের জন্য সর্বোমোট ৪৯৯টি 'কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র' (এআইসিসি) স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করার উদ্দেশ্যে হাওর ও দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের জন্য ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ শতাংশ হারে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ভর্তুকি প্রদান করে সরকার। [২৫২]
ক্ষতি ও পরিকল্পনা
বাংলাদেশের অনেক অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ এই অতিমারী পরবর্তী সঙ্কট মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। [২৫৩] [২৫৪]
১৩ই এপ্রিল জাতীয় উদ্দেশ্যে ভাষনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন; ‘'এই দুঃসময়ে আমাদের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা শুধু সচল রাখা নয়, আরও জোরদার করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে যাতে কোনোপ্রকার খাদ্য সঙ্কট না হয়, সেজন্য আমাদের একখণ্ড জমিও ফেলে রাখা চলবে না।’' প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে সরকার এবছর কৃষকদের থেকে ২,০০,০০০ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান ক্রয় করবে এবং কৃষকরা যাতে সহযে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে পারে সেজন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি ভর্তুকি বাবদ ৯,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন; ‘'কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এ তহবিল থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের কৃষি, মৎস্য, ডেইরি এবং পোল্ট্রি খাতে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ প্রদান করা হবে।’' [২৫৫]
আরও দেখুন
- করোনাভাইরাস
- সার্স-কোভ-২
- করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯
- ২০১৯–২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী
- সামাজিক দূরত্ব স্থাপন
- কোয়ারেন্টিন
- আইসোলেশন
- করোনাভাইরাসের রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা
- কোভিড-১৯ টিকা
বহিঃসংযোগ
- করোনা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট (করোনা ইনফো), বাংলাদেশ সরকার
- পরিসংখ্যান ও লেখচিত্রের বিস্তারিত ড্যাশবোর্ড, বাংলাদেশ সরকার
- আইইডিসিআর এর ওয়েবসাইট, জেলাভিত্তিক আক্রান্ত ও অতিমারী সম্পর্কিত তথ্য
- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট
- ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের প্রতিদিনের হালনাগাদকৃত তথ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
- বাংলাদেশের কোভিড-১৯ ট্র্যাকার, বাংলাদেশ সরকার
- সরাসরি করোনা ঝুঁকি টেস্ট (ওয়েব অ্যাপ), বাংলাদেশ সরকার
- ওয়ার্ল্ডওমিটার এ বাংলাদেশের বিস্তারিত পরিসংখ্যান (ইংরেজি)
- করোনা সচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক ৭০ টি ভিডিও, বাংলাদেশ সরকার