মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা | |
---|---|
![]() | |
অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১৩ আগস্ট ২০২০ | |
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক | |
কাজের মেয়াদ ২০১৬ – আগস্ট ২০২০ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা মেডিকেল কলেজ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় |
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা একজন বাংলাদেশি রোগতত্ত্ববিদ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।[১] তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ টিকাবিষয়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর পূর্বে তিনি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ছিলেন।[২] তিনি ফাউন্ডেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ফেলো। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিযুক্ত হন।[৩] ২০২৩ সালের জানুয়ারিত তাকে বদলি করে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৪]
শিক্ষা জীবন
[সম্পাদনা]মীরজাদী ১৯৮৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।[৫] ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার পর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। পরে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) থেকে রোগতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করে তিন বছর গবেষণা করেন। তিনি নিপসমে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।[৫] পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[৫]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]মীরজাদী ২০১৬ সালে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান।[৫] পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাস ও রোগ বিস্তার প্রতিরোধে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গবেষণা করেন। তার তত্ত্বাবাধানে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে জিকা ভাইরাস, মধ্য প্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম সম্পর্কিত করোনভাইরাস এবং ২০১৯-২০ সালে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।[৫] তার দল ২০১৭ সালে বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কাজ করেন।[৫]
তিনি ইন্টারন্যাশনাল এসাসিয়েশন অব দ্য ন্যাশনাল পাবলিক হেল্থ ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।[৬]
অবদান
[সম্পাদনা]IEDCR-এ নেতৃত্ব
[সম্পাদনা]- তিনি রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (IEDCR)-এ দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন এবং ২০১৬ সালে পরিচালক পদে উন্নীত হন।
- তার নেতৃত্বে IEDCR বাংলাদেশের রোগ পর্যবেক্ষণ, মহামারী প্রতিক্রিয়া এবং স্বাস্থ্য গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করে।
- ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং সোয়াইন ফ্লু পরিস্থিতিতেও তাঁর দক্ষ ব্যবস্থাপনা প্রশংসিত হয়।
COVID-19 মহামারিতে ভূমিকা
[সম্পাদনা]- ২০২০ সালে COVID-19 মহামারি শুরু হলে, মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য স্বাস্থ্য তথ্য ও নির্দেশিকা সরবরাহের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র হয়ে ওঠেন।
- তিনি প্রতিদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তথ্যভিত্তিক হালনাগাদ প্রদান করেন।
- মহামারির প্রথমদিকে আতঙ্কিত জনগণকে শান্ত রাখার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
- বৈজ্ঞানিক তথ্যকে সহজ ভাষায় জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা প্রশংসিত হয়।
বর্তমান দায়িত্ব
[সম্পাদনা]- বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে রয়েছেন।
- তার তত্ত্বাবধানে দেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়নের নতুন প্রকল্প প্রণয়ন, হাসপাতাল সম্প্রসারণ এবং রোগ প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে।
গবেষণা ও প্রকাশনা
[সম্পাদনা]- তিনি সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, জনস্বাস্থ্য নীতি ও মহামারি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একাধিক গবেষণাপত্র লিখেছেন।
- তার গবেষণা কাজগুলি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
- তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেছেন।
সম্মাননা ও স্বীকৃতি
[সম্পাদনা]- COVID-19 মহামারিতে দক্ষ নেতৃত্বের জন্য তিনি বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হন।
- বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও মহামারি সচেতনতায় বিশেষ ভূমিকার জন্য তাঁকে একটি প্রভাবশালী নারী নেত্রী হিসেবেও দেখা হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাধারণত গণমাধ্যমের সামনে পেশাদারী দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থিত হন এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কমই প্রকাশ করে থাকেন। তিনি জনস্বাস্থ্য গবেষণা, নীতি-পরিকল্পনা এবং নতুন প্রজন্মের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তৈরিতে উৎসাহিত ভূমিকা রাখেন।
তথ্যসূত্র
- ↑ "Officers & Staff"। www.iedcr.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৩।
- ↑ "অফিসার - রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)"। iedcr.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২০।
- ↑ "স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হলেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা"। এনটিভি। ২০২০-০৮-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৪।
- ↑ প্রতিবেদক, বিশেষ। "মীরজাদি সেব্রিনাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বদলি"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "বিজ্ঞানে নারী"। আইস টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Executive Board, IANPHI"। ianphi.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২০।
