সুপারি গাছ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সুপারি
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণী: লিলিওসিডা
বর্গ: আরিকালেস
পরিবার: এরিকাসি
গণ: এরিকা
প্রজাতি: এ. কাটেক্যু
দ্বিপদী নাম
আরিকা কাটেক্যু
L.

গুয়া বা সুপারি, সুপারি এর ইংলিশ হচ্ছে Areca nut । সুপারি এর বৈজ্ঞানিক নাম Areca catechu । এদের গোলাকৃতি শক্ত বীজ পানের মসলার কুচি করে দেওয়া হয় । সুপারি একটি ক্ষতিকর বস্তু। বিভিন্ন ডাক্তারদের মতে নিয়মিত সুপারি খাওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। সুপারির মধ্যে এক প্রকার ক্যান্সার আক্রান্তকারী রাসায়নিক উপাদান উপস্থিত থাকে। তাছাড়াও সুপারি দাঁতের জন্য ক্ষতিকর বলা হয়।

বিস্তৃতি[সম্পাদনা]

সুপারি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। সুপারি গাছের উৎপত্তি ফিলিপাইনে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।[১] ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, পাকিস্তান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, চীন, প্রভৃতি দেশে সুপারি চাষ করা হয়। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ করে বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ইত্যাদি জেলায় প্রচুর সুপারি জন্মে। উত্তরবঙ্গের রংপুরেও সুপারির চাষ হয়। বাগান আকারে, বাড়ির আশেপাশে বা পুকুর ধারে সাধারণত সুপারি গাছ লাগানো হয়।

সুপারি গাছ[সম্পাদনা]

সুপারি গাছের গুঁড়ি

সুপারি একবীজপত্রী সরল কান্ডের অশাখ বড় বৃক্ষ। গাছ প্রায় ২০-২৫ মিটার লম্বা হয়; গোলাকার কাণ্ডের ব্যাস ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি। সুপারির পাতা লম্বা; মধ্যশিরাটি বেশ শক্ত ; মধ্যশিরার দু’পাশ থেকে চিরুনির দাঁতের মত সবুজ পত্রফলক সাজানো থাকে; তবে তা নারিকেল ও খেজুরের চেয়ে প্রশস্ত ও কোমল। পাতায় কোন কাঁটা নেই। দীর্ঘ পত্রখোল বা খোলা কান্ডের সাথে লেগে থাকে।

বিবরণ[সম্পাদনা]

সুপারি গাছের ফল ডিম্বাকার থেকে গোলাকার, ছোট। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ, পাকলে হলুদ বা কমলা হয়ে যায়। কাঁদিতে থোকা ধরে অনেক ফল থাকে। কাঁচা ও পাকা ফল খাওয়া হয়। খোসা ছাড়িয়ে ভিতরে সুগোল যে বিচি থাকে সেটাই খাওয়া হয়। এই বিচি শুকিয়েও খাওয়া হয়। কুচিকুচি করে যাঁতি দিয়ে কেটে পানের সাথে সুপারি খাওয়া হয়।

সুপারির গুনাগুণ[সম্পাদনা]

কাঁচা সুপারি খেলে অনেক সময় মাথা ঘোরে। কাঁচা সুপারিতে ০.১-০.৫/ অ্যালকালয়েড থাকে, যার কারণে মাথা ঘোরে। প্রতি ১০০ গ্রাম সুপারিতে আছে ২৮৯ ক্যালরি শক্তি যোগানোর ক্ষমতা। 'আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা এজেন্সী'র মতে, সুপারি এক ধরনের কার্সিনোজেন (বিষ), যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুপারিসহ পান খেলে মুখের ক্যন্সার হতে পারে। ক্রিমি, রক্ত আমাশয়, অজীর্ণ ইত্যাদি রোগ নিরাময়েও সুপারি উপকারী। এর রসে এরিকোলিন ইত্যাদি উপবিষ ভারত উপমহাদেশে মুখের ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ। কাঁচা সুপারি চিবালে শরীরে গরম অনুভূত হয়, এমনকি শরীর ঘেমে যেতে পারে। সুপারি খেলে তাৎক্ষণিক যেসব সমস্যা দেখা যায় সেগুলো হল-হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে ও হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।[২]

চাষাবাদ[সম্পাদনা]

বর্ষাকালে বীজ পুঁতে সুপারির চারা তৈরি করা হয়। লোনা নয় এরকম মাটিতে এক বছর বয়সী চারা ৩ মিটার দূরে দূরে গর্ত করে লাগালেই সুপারি বাগান দাঁড়িয়ে যায়। অন্য গাছপালার মধ্যে বা ছায়া জায়গায় লাগালে সুপারি গাছ ভাল হয়। প্রখর রোদ সুপারি গাছ সইতে পারে না। চারা লাগানোর পর ৬-৭ বছরের মধ্যেই ফল ধরা শুরু করে। তবে বেশি ফল ধরে ১০-১২ বছরের পর থেকে। স্থানভেদে বছরের নভেম্বর-মার্চ পর্যন্ত সুপারি সংগ্রহ চলে।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Areca catechu". Germplasm Resources Information Network (GRIN). Agricultural Research Service (ARS), United States Department of Agriculture (USDA). Retrieved 2008-03-02
  2. "ক্যান্সার থেকে বাঁচতে পান-সুপারিকে না বলুন,"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] "DhakaTribunবাংলা" Accessed online 9 December 2019.