সাম্যবাদী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অবয়ব
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অ বিষয়শ্রেণী:বাংলা কাব্যগ্রন্থ সরিয়ে মূল বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী:বাংলা কাব্য স্থাপন |
|||
১৩০ নং লাইন: | ১৩০ নং লাইন: | ||
{{নজরুল সাহিত্যকর্ম}} |
{{নজরুল সাহিত্যকর্ম}} |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা কাব্য]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:কাজী নজরুল ইসলামের রচনা]] |
[[বিষয়শ্রেণী:কাজী নজরুল ইসলামের রচনা]] |
১২:৪২, ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
লেখক | কাজী নজরুল ইসলাম |
---|---|
দেশ | ব্রিটিশ ভারত ,ভারত ,বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | সাম্যবাদ |
ধরন | কবিতা |
প্রকাশনার তারিখ | পৌষ ১৩৩২, |
বাংলায় প্রকাশিত | ডিসেম্বর ১৯২৫ |
আইএসবিএন | ৯৭৮-৯৮৪০৪-১২৮৬০ |
পাঠ্য | সাম্যবাদী উইকিসংকলন |
সাম্যবাদী কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ১৯২৫ সালের ডিসেম্বরে (পৌষ,১৩৩২) প্রকাশিত একটি কাব্যগ্রন্থ।[১] এই বইটির কবিতাগুলোতে নজরুল ইসলাম সাম্যের কথা বলেছেন । বিভিন্ন পিছিয়ে পরা জাতি নিয়েও কবিতা এই বইতে রয়েছে। ধর্ম,জাত,লিঙ্গ সবকিছু পিছনে ফেলে মানুষের পরিচয়ই যে মহান তা তিনি এ কবিতগুলোর মাধ্যমে বুঝিয়েছেন ।
কবিতাসমূহ
বইটিতে মোট ১১ টি কবিতা রয়েছে । সবগুলোতেই মানুষের সমতা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে । কবিতাসমূহ নিচে দেওয়া হল-
- সাম্যবাদী
- ইশ্বর
- মানুষ
- পাপ
- চোর-ডাকাত
- বারাঙ্গনা
- মিথ্যাবাদী
- নারী
- রাজা-প্রজা
- সাম্য
- কুলিমজুর
পাপ কাজী নজরুল ইসলাম
সাম্যের গান গাই!-
যত পাপী তাপী সব মোর বোন, সব হয় মোর ভাই। এ পাপ-মুলুকে পাপ করেনি করেনিক’ কে আছে পুরুষ-নারী? আমরা ত ছার; পাপে পঙ্কিল পাপীদের কাণ্ডারী! তেত্রিশ কোটি দেবতার পাপে স্বর্গ সে টলমল, দেবতার পাপ-পথ দিয়া পশে স্বর্গে অসুর দল! আদম হইতে শুরু ক’রে এই নজরুল তক্ সবে কম-বেশি ক’রে পাপের ছুরিতে পুণ্য করেছে জবেহ্ ! বিশ্ব পাপস্থান অর্ধেক এর ভগবান, আর অর্ধেক শয়তান্! থর্মান্ধরা শোনো, অন্যের পাপ গনিবার আগে নিজেদের পাপ গোনো! পাপের পঙ্কে পুণ্য-পদ্ম, ফুলে ফুলে হেথা পাপ! সুন্দর এই ধরা-ভরা শুধু বঞ্চনা অভিশাপ। এদের এড়াতে না পারিয়া যত অবতার আদি কেহ পুণ্যে দিলেন আত্মা ও প্রাণ, পাপেরে দিলেন দেহ। বন্ধু, কহিনি মিছে, ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব হ’তে ধ’রে ক্রমে নেমে এস নীচে- মানুষের কথা ছেড়ে দাও, যত ধ্যানী মুনি ঋষি যোগী আত্মা তাঁদের ত্যাগী তপস্বী, দেহ তাঁহাদের ভোগী! এ-দুনিয়া পাপশালা, ধর্ম-গাধার পৃষ্ঠে এখানে শূণ্য-ছালা!
হেথা সবে সম পাপী, আপন পাপের বাট্খারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি! জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও, টুপি প’রে টিকি রেখে সদা বল যেন তুমি পাপী নও। পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং, ট্রেডমার্কার ধুম? পুলিশী পোশাক পরিয়া হ’য়েছ পাপের আসামী গুম।
বন্ধু, একটা মজার গল্প শোনো, একদা অপাপ ফেরেশতা সব স্বর্গ-সভায় কোনো এই আলোচনা করিতে আছিল বিধির নিয়মে দুষি,’ দিন রাত নাই এত পূজা করি, এত ক’রে তাঁরে তুষি, তবু তিনি যেন খুশি নন্-তাঁর যত স্নেহ দয়া ঝরে পাপ-আসক্ত কাদা ও মাটির মানুষ জাতির’ পরে! শুনিলেন সব অন্তর্যামী, হাসিয়া সবারে ক’ন,- মলিন ধুলার সন-ান ওরা বড় দুর্বল মন, ফুলে ফুলে সেথা ভুলের বেদনা-নয়নে , অধরে শাপ, চন্দনে সেথা কামনার জ্বালা, চাঁদে চুম্বন-তাপ! সেথা কামিনীর নয়নে কাজল, শ্রেনীতে চন্দ্রহার, চরণে লাক্ষা, ঠোটে তাম্বুল, দেখে ম’রে আছে মার! প্রহরী সেখানে চোখা চোখ নিয়ে সুন্দর শয়তান, বুকে বুকে সেথা বাঁকা ফুল-ধনু, চোখে চোখে ফুল-বাণ।
দেবদুত সব বলে, ‘প্রভু, মোরা দেখিব কেমন ধরা, কেমনে সেখানে ফুল ফোটে যার শিয়রে মৃত্যু-জরা!’ কহিলেন বিভু-‘তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ যে দুইজন যাক্ পৃথিবীতে, দেখুক কি ঘোর ধরণীর প্রলোভন!’ ‘হারুত’ ‘মারুত’ ফেরেশতাদের গৌরব রবি-শশী ধরার ধুলার অংশী হইল মানবের গৃহে পশি’। কায়ায় কায়ায় মায়া বুলে হেথা ছায়ায় ছায়ায় ফাঁদ, কমল-দীঘিতে সাতশ’ হয়েছে এই আকাশের চাঁদ! শব্দ গন্ধ বর্ণ হেথায় পেতেছে অরূপ-ফাঁসী, ঘাটে ঘাটে হেথা ঘট-ভরা হাসি, মাঠে মাঠে কাঁদে বাঁশী! দুদিনে আতশী ফেরেশতা প্রাণ- ভিজিল মাটির রসে, শফরী-চোখের চটুল চাতুরী বুকে দাগ কেটে বসে। ঘাঘরী ঝলকি’ গাগরী ছলকি’ নাগরী ‘জোহরা’ যায়- স্বর্গের দূত মজিল সে-রূপে, বিকাইল রাঙা পা’য়! অধর-আনার-রসে ডুবে গেল দোজখের নার-ভীতি, মাটির সোরাহী মস-ানা হ’ল আঙ্গুরী খুনে তিতি’! কোথা ভেসে গেল-সংযম-বাঁধ, বারণের বেড়া টুটে, প্রাণ ভ’রে পিয়ে মাটির মদিরা ওষ্ঠ-পুষ্প-পুটে। বেহেশ্তে সব ফেরেশ্তাদের বিধাতা কহেন হাসি’- ‘ হার”ত মার”তে কি ক’রেছে দেখ ধরনী সর্বনাশী!’ নয়না এখানে যাদু জানে সখা এক আঁখি-ইশারায় লক্ষ যুগের মহা-তপস্যা কোথায় উবিয়া যায়। সুন্দরী বসুমতী চিরযৌবনা, দেবতা ইহার শিব নয়-কাম রতি!