ধূমকেতু (পত্রিকা)
সম্পাদক | কাজী নজরুল ইসলাম |
---|---|
প্রকাশনা সময়-দূরত্ব | অর্ধ-সাপ্তাহিক |
প্রথম প্রকাশ | ১১ আগস্ট ১৯২২ |
সর্বশেষ প্রকাশ | মার্চ ১৯২৩ |
দেশ | বঙ্গ |
ভাষা | বাংলা |
ধূমকেতু কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত একটি অর্ধ-সাপ্তাহিক পত্রিকা, যা ১৩২৯ বঙ্গাব্দের ২৬ শ্রাবণ (১৯২২ সালের ১১ আগস্ট) প্রথম প্রকাশিত হয়।[১] পত্রিকাটি শুরুতে ফুলস্কেপ কাগজের চার পৃষ্ঠায় মুদ্রিত হতো এবং পরে আট পৃষ্ঠায় মুদ্রিত হতো। পত্রিকাটির সর্বশেষ সংস্করণ ১৯২৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। এর প্রথম সংখ্যায় নজরুলের কবিতা ‘ধূমকেতু’ প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন,
“ | কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু। আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।[২] |
” |
পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো।[৩]
সম্পাদনা পরিষদ
[সম্পাদনা]নজরুলের প্রচেষ্টায় পত্রিকার কয়েকটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। সেগুলির মধ্যে ২০ পৃষ্ঠার ‘মোহররম সংখ্যা’ (৭ম সংখ্যা, ১৬ ভাদ্র ১৩২৯/ আগস্ট ১৯২২), ১২ পৃষ্ঠার ‘আগমনী সংখ্যা’ (১২শ সংখ্যা, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২), ১২ পৃষ্ঠার ‘দেওয়ালী সংখ্যা’ (১৫শ সংখ্যা, ২০ অক্টোবর ১৯২২) এবং ‘কংগ্রেস সংখ্যা’ (৩০তম সংখ্যা, ২৭ ডিসেম্বর ১৯২২) ছিল উল্লেখযোগ্য। নজরুল জেলে থাকার সময় বীরেন সেনগুপ্ত ও অমরেশ কাঞ্জিলাল এটি কিছুদিন সম্পাদনা করেছিলেন।[৩]
ব্রিটিশ বিরোধী প্রকাশনা
[সম্পাদনা]পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২২ সংখ্যায় নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হয়। এই রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই দিনে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দি প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে এই জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তার এই জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।[৪] ১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। নজরুলকে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।[৫]
পরিনতি
[সম্পাদনা]নজরুলের কারাদণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি সংখ্যাটি ‘নজরুল সংখ্যা’ হিসেবে প্রকাশিত হয়। এর পরে কিছুদিনের জন্য পত্রিকাটি বন্ধ থাকে। পরে পত্রিকাটি বীরেন সেনগুপ্ত ও অমরেশ কাঞ্জিলালের সম্পাদনায় পুনরায় প্রকাশিত হয়, কিন্তু তা অনিয়মিতভাবে চলে ও সেই বছরের (১৯২৩) মার্চ মাসে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Kazi Nazrul Islam: A Chronology of Life [Islamic Foundation]"। www.nazrul.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৬-০১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "আয় চলে আয় ধূমকেতু, আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২০১২-০৫-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৪।
- ↑ ক খ গ নাওয়াজ, আলি (২০১৫-০১-২০)। "ধূমকেতু"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৪।
- ↑ তারিক মনজুর (২২ মে ২০১৫)। "বিদ্রোহের বহুমাত্রা"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "যে কবিতার জন্য নজরুল জেল খেটেছিলেন"। পদধ্বনি। ২০২১-০৭-২০। ২০২২-০৫-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৪।