ডুমুরজলা খেলনগরী

স্থানাঙ্ক: ২২°৩৪′৫৪″ উত্তর ৮৮°১৮′২৪″ পূর্ব / ২২.৫৮১৬৭° উত্তর ৮৮.৩০৬৬৭° পূর্ব / 22.58167; 88.30667
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডুমুরজলা খেলনগরী
ডুমুরজলা খেলনগরী কলকাতা-এ অবস্থিত
ডুমুরজলা খেলনগরী
ডুমুরজলা খেলনগরী
ডুমুরজলা খেলনগরী পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
ডুমুরজলা খেলনগরী
ডুমুরজলা খেলনগরী
ঠিকানাড. ভোলানাথ চক্রবর্তী সরণি
হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ
ভারত
স্থানাঙ্ক২২°৩৪′৫৪″ উত্তর ৮৮°১৮′২৪″ পূর্ব / ২২.৫৮১৬৭° উত্তর ৮৮.৩০৬৬৭° পূর্ব / 22.58167; 88.30667
মূল ভেন্যুসবুজ সাথী ক্রীড়াঙ্গন
ধারণক্ষমতা: ৬০০০
পরিচালকহাওড়া পৌরনিগম
নির্মাণ
নির্মাণ২০১৮–২০২২
চালু হয়েছে২০২২[২]
নির্মাণ ব্যয় ১,০০০ কোটি (US$ ১২২.২৩ মিলিয়ন)[১]
নির্মাণকারীহিডকো, হাওড়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, হাওড়া পৌরসংস্থা
মোট জায়গা৫৬ একর (২,৩০,০০০ মি)

ডুমুরজলা খেলনগরী (উচ্চারণ: [kʰelnɔɡori] উঅবা: খেল্‌নগোরি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়া শহরে অবস্থিত ৫৬ একর (২,৩০,০০০ মি) আয়তনের একটি ক্রীড়াঙ্গন। এটি সবুজ সাথী ক্রীড়াঙ্গন (পূর্বনাম হাওড়া ইনডোর স্টেডিয়াম); ফুটবল, ক্রিকেটহকি খেলার জন্য মাঠ; সুইমিং পুল; আউটডোর জিম ও পাবলিক পার্ক নিয়ে গঠিত।[২] এছাড়া এখানে দুটি হেলিপ্যাড বর্তমান।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পূর্ববর্তী প্রস্তাব[সম্পাদনা]

১৯৮০-এর দশকে হাওড়া ইনডোর স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি ইনডোর গেমের জন্য ব্যবহার করা হতো। ২০১১ সালের আগে পর্যন্ত স্টেডিয়ামটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রস্তাব আনা হয়েছিল কিন্তু কোনো প্রস্তাবই বাস্তবায়িত হতে পারেনি। ২০১১ সালের পর হাওড়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এইচআইটি) এর সম্ভাব্য প্রসারণ ও টাউনশিপের জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল। কিন্তু এই পরিকল্পনাকে পরে বাতিল করা হয়েছিল এবং ডুমুরজলার উপকণ্ঠ বসতির জন্য জবরদখল করা হয়েছিল।[১]

নির্মাণ[সম্পাদনা]

২০১৫ সালে সম্ভাব্য প্রসারণ এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের "থিম সিটি" প্রকল্পে ডুমুরজলা এলাকার উন্নয়ন সাধনের জন্য এর মালিকানা সরকারি সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থার (হিডকো) হাতে সঁপে দেওয়া হয়েছিল।[১] ২০১৭ সালে ফাঁকা জায়গায় দুটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছিল এবং স্থানীয়রা একে খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করতে লাগলেন।[৩] ২০১৮ সালে পুনরায় পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল এবং নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।[৪][৫]

২০১৮ সালে হিডকো ডুমুরজলাকে খেলনগরী হিসাবে ঘোষণা করেছিল। এব্যাপারে হাওড়াতে পৌরমন্ত্ৰী ফিরহাদ হাকিম, হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী, হিডকোর সভাপতি দেবাশীষ সেন এবং হাওড়া পৌরনিগমকলকাতা মেট্রোপলিটান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভারপ্রাপ্ত কর্মচারীদের মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল।[৬][৪] সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামকে নতুন করে তৈরি করতে হবে যাতে করে এটি রাজ্য মানে উন্নীত হয়। এর জন্য বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রিত করা হয়েছিল।[৭][২] ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলকে ১৪ একর (৫৭,০০০ মি) জমি দেওয়া হয়েছিল।[৮]

খেলনগরী চত্বরে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার এবং আধুনিকতম কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা করা হয়েছে।[৯] এছাড়া দালালপুকুর যাওয়ার রাস্তা বরাবর টাউনশিপ প্রকল্প এবং আবাসন একক পরিকল্পনা করা হয়েছে।[১] ১৪-তলা শপিং মল এবং হোটেলও পরিকল্পনা করা হয়েছে।[৮][১০]

বিক্ষোভ-আন্দোলন[সম্পাদনা]

২০১৮ সালে ঘোষণা ও কাজকর্ম শুরু করার পর স্থানীয় মানুষ এর বিরুদ্ধে একাধিক আন্দোলন করেছিলেন। ডুমুরজলা "হাওড়ার ফুসফুস" হিসাবে পরিচিত, কারণ এটি হাওড়া শহরের সবচেয়ে বড় পাবলিক এলাকা, যেখানে একাধিক গাছপালা ও পশুপাখি বর্তমান। হাজার হাজার লোক এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এই প্রকল্পকে বাধা দেওয়ার জন্য "ডুমুরজলা মাঠ বাঁচাও কমিটি" তৈরি করা হয়েছিল।[৮] আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ ও সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় কলকাতা উচ্চ আদালতে ডুমুরজলায় নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।[১১]

বিবরণ[সম্পাদনা]

ডুমুরজলা খেলনগরী প্রায় ৬০ একর (০.২৪ কিমি) আয়তন জুড়ে বিস্তৃত এবং এটি ডুমুরজলা রিং রোড দ্বারা সংযুক্ত। হাওড়া ইনডোর স্টেডিয়াম কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং এর ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৬,০০০ জন। এর মেঝে সেগুন কাঠ ও সংশ্লেষিত কাঠ দিয়ে গঠিত। সেখানে ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, ভলিবল ও কুস্তি খেলার ব্যবস্থা উপলব্ধ।[২] এছাড়া সেখানে দুটি ড্রেসিং রুম, একটি পাওয়ার রুম, একটি কমেন্টারি বক্স এবং একটি অতিথিশালা বর্তমান।

স্টেডিয়ামটির বাইরে ৯০ মিটার × ৯০ মিটার ফুটবল মাঠ, ৯১.৪ মিটার × ৫৫ মিটার হকি মাঠ, সুইমিং পুল এবং একাধিক ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ বর্তমান। ডুমুরজলা রিং রোড বরাবর তিনটি অন্যান্য খেলার মাঠ জনগণের জন্য উন্মুক্ত। এছাড়া সেখানে শিশু উদ্যান, হ্রদ দ্বীপ, প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সবুজ প্রাঙ্গণ এবং আউটডোর জিম ফ্যাসিলিটি।[২] একটি আন্তর্জাতিক মানের আউটডোর স্টেডিয়াম নির্মাণাধীন যার ধারণক্ষমতা প্রায় ৫০,০০০।[১]

ডুমুরজলা খেলনগরীতে সরকারি ব্যবহারের জন্য দুটি হেলিপ্যাড বর্তমান। সেখানে দুই-চাকার যানের জন্য দুটি পার্কিং লট এবং চার-চাকার যানের জন্য একটি পৃথক এলাকা বর্তমান, যা অনেকসময় বাস স্ট্যান্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দাশ, দেবাশিস। "হাওড়ায় তৈরি হবে স্পোর্টস সিটি"www.anandabazar.com। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 
  2. "Hidco Eyes Pre-monsoon Opening Of Sports City In Dumurjola | Kolkata News - Times of India"The Times of India। ১১ মার্চ ২০২২। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 
  3. "Mamata inaugurates Dumurjala helipad in Howrah"The Statesman। এপ্রিল ৩, ২০১৭। জানুয়ারি ১০, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১০, ২০২৩ 
  4. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "ভোল পাল্টাতে চলেছে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের"www.anandabazar.com। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 
  5. "Dumurjala Sports City: ফুটবল-হকি গ্রাউন্ডের যুগলবন্দি, Howrah-এ দ্রুতগতিতে তৈরি হচ্ছে খেল নগরী"EI Samay। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 
  6. "HIDCO to plan Sports City in Howrah's Dumurjala"Millenniumpost.in। ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮। ১৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৯ 
  7. [১] [অকার্যকর সংযোগ]
  8. "খেল নগরী নয়, ডুমুরজলা থাক ডুমুরজলাতেই, দাবিতে আন্দোলন শুরু হাওড়ায়"www.unfoldbangla.com। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 
  9. MP, Team (ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮)। "HIDCO to plan Sports City in Howrah's Dumurjala"www.millenniumpost.in। জানুয়ারি ১০, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১০, ২০২৩ 
  10. https://aitcofficial.org/aitc/khel-city-to-come-up-at-dumurjola-in-howrah/ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২৩-০১-১০ তারিখে টেমপ্লেট:Bare URL inline
  11. "Dumurjala Sports City সবুজায়ন ধ্বংস করে কেন ডুমুরজলা স্পোর্টস সিটি রাজ্যের কাছে ব্যাখ্যা চাইল হাইকোর্ট"ETV Bharat News। ২০২৩-০১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]