বিষয়বস্তুতে চলুন

জিমি মাহের

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিমি মাহের
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জেমস প্যাট্রিক মাহের
জন্ম (1974-02-27) ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ (বয়স ৫০)
ইনিসফেইল, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামমাহবো, রক, মার্জো
উচ্চতা৮২ সেন্টিমিটার (২ ফুট ৮ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, উইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৩৭)
১৪ জানুয়ারি ১৯৯৮ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই৯ নভেম্বর ২০০৩ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই শার্ট নং৪৬
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৩ - ২০০৮কুইন্সল্যান্ড
২০০১গ্ল্যামারগন
২০০৩গ্ল্যামারগন
২০০৫ - ২০০৬ডারহাম
২০০৭গ্ল্যামারগন
২০০৮হায়দ্রাবাদ হিরোজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ২৬ ২০৬ ২১৪ ১৮
রানের সংখ্যা ৪৩৮ ১৩,১৪৯ ৭,৪৩৯ ৩৬৬
ব্যাটিং গড় ২৫.৭৬ ৩৮.৭৮ ৩৯.১৫ ২৬.১৪
১০০/৫০ ০/১ ২৭/৬১ ১৬/৩৬ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ৯৫ ২২৩ ১৮৭ ৫৯
বল করেছে ৮৫২ ১৬৫
উইকেট ১০
বোলিং গড় ৫০.৪০ ২৮.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/১১ ৩/২৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৮/– ২১০/৩ ১০৪/১ ৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ জুন ২০১৯

জেমস প্যাট্রিক মাহের (ইংরেজি: Jimmy Maher; জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪) কুইন্সল্যান্ডের ইনিসফেইল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনডারহাম দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আইসিএলে হায়দ্রাবাদ হিরোজের পক্ষাবলম্বন করেছেন ‘মাহবো’ ডাকনামে পরিচিত জিমি মাহের। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। আকর্ষণীয় বামহাতি ব্যাটসম্যান জিমি মাহের কভার ড্রাইভে সিদ্ধহস্তের পরিচয় দিয়েছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

গর্ডনভেলের সেন্ট মাইকেল ও সেন্ট ফ্রান্সিল জাভিয়ের প্রাইমারি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। এরপর কেয়ার্নসের সেন্ট অগাস্টিন কলেজ ও নাজি কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। কাকা কেভিন মাহের, কাকাতো ভাই জন মাহের ও টমাস মাহের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জিমি মাহেরের। দুই মৌসুম নিয়মিতভাবে শূন্য রান নিয়ে কুইন্সল্যান্ডের প্যাভিলিয়নে ফিরে আসতেন জিমি মাহের। এ সময়েই তিনি গ্ল্যামারগনের সাথে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০১-০২ মৌসুমে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে পুরা কাপে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এ পর্যায়ে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ১৭৪ ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০৯ রান তুলেন।

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ তারিখে ফোর্ড র‍্যাঞ্জার্স কাপের চূড়ান্ত খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ভিক্টোরিয়া বুশর‍্যাঞ্জার্সের বিপক্ষে খেলায় তিনি ১৩৩ বলে ১০৮ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন। ঐ খেলায় কুইন্সল্যান্ড বুলস ২১ রানে জয় পেয়েছিল।[] ঘরোয়া একদিনের চূড়ান্ত খেলায় কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে এ নিয়ে তিনি তৃতীয়বারের মতো সেঞ্চুরি করেন।

ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহামের পক্ষে দুই মৌসুম খেলেন। এরপর সমর্থকদের অর্থানুকূল্যে ২০০৭ সালে গ্ল্যামারগনের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।[]

আন্তঃরাজ্যীয় একদিনের প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন জিমি মাহের। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২৯ বলে ১৮৭ রান তুলে জাতীয় পর্যায়ে রেকর্ড গড়েন। এ পর্যায়ে ৫০ ওভারে ৪০৫ রান তুলেছিল বুলস দল। এছাড়াও, ২০০৬-০৭ মৌসুমে ১০৮ রানের উচ্চামার্গীয় ইনিংস খেলেন। ফলে, এমসিজিতে এফআর কাপের শিরোপা জয় করে কুইন্সল্যান্ড দল। এক বছর পর দূর্বলমানের ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। তাসত্ত্বেও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৯৯৩৩ রান তুলে মার্টিন লাভের পর দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে অবসর গ্রহণ করেন।

অধিনায়কত্ব লাভ

[সম্পাদনা]

কুইন্সল্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবে তিনি স্টুয়ার্ট লয়ের স্থলাভিষিক্ত হন। ২০০৫-০৬ মৌসুমের পুরা কাপের শিরোপা জয়ে দলকে নেতৃত্বদানের পূর্বে পাঁচবার ঘরোয়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় ধারাবাহিকভাবে পরাজিত হয়েছিল কুইন্সল্যান্ড দল। এ পর্যায়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২২৩ রান করেন। অন্যান্য ব্যাটসম্যানের দায়িত্বশীলতার কারণে ৯০০/৬ তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন তিনি। তিনি দলের এ জয়কে পূর্ববর্তী সপ্তাহে কুইন্সল্যান্ডের উত্তরে বিধ্বংসী ঘূর্ণীঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি উৎসর্গ করেন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এ প্রতিযোগিতায় ৫৩.২৯ গড়ে ৯০৬ রান তুলেন। এ সময়ে তার বয়স ছিল ৩২ ও শারীরিক সামর্থ্যে ঘাটতি না থাকার বিষয়টি পরিষ্কার করেন।

বিতর্কিত ভূমিকা

[সম্পাদনা]

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ড্যারেন লেহম্যান গাব্বায় অনুষ্ঠিত পুরা কাপের খেলায় ইনিংস ঘোষণা না করায় জিমি মাহরের সমালোচনা করেন। লেহম্যান বলেন যে, তিনি ভেবেছিলেন মাহের তাসমানিয়ার পক্ষে খেলছিলেন ও চূড়ান্ত দিনে রানের লক্ষ্যমাত্রার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন।[]

১৯৯৫ সালে কুইন্সল্যান্ড দল শেফিল্ড শিল্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়লাভের পর জিমি মাহের সাম্প্রদায়িকতার কারণে অভিযুক্ত হন। তিনি টেলিভিশনে স্বাক্ষাৎকারকালে এ বিতর্কের সৃষ্টি করেন। আদিবাসী অস্ট্রেলীয়রা এর তীব্র প্রতিবাদ জানালে পরবর্তীতে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছাব্বিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন জিমি মাহের। ১৪ জানুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে সিডনিতে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। এরপর একই দলের বিপক্ষে ৯ নভেম্বর, ২০০৩ তারিখে গুয়াহাটিতে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন। তবে, টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য ঘটেনি তার। কভার অঞ্চল দিয়ে বল পাঠানোর ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত আকর্ষণীয় বামহাতি ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।[]

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুইটি একদিনের খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে জিমি মাহেরকে মনোনীত করা হয়। তখন মার্ক ওয়াহ অসুস্থ ও স্টিভ ওয়াহ আঘাতের কবলে পড়েছিলেন। তবে, খেলায় তার অংশগ্রহণ তেমন আকর্ষণীয় ছিল না।

২০০২ সালে পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ফিরে আসেন। ত্রি-দেশীয় ওডিআই সিরিজের চূড়ান্ত খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল পৌঁছতে না পারায় ওয়াহ ভ্রাতৃদ্বয়কে দল থেকে বাদ দেয়ার কারণেই তার এ অংশগ্রহণ। তিনিও নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা চালান। ২০০৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। এরপর পচেফস্ট্রুমে অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংসের কল্যাণে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ঐ খেলাটি টাইয়ে পরিণত হয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ার ওডিআই দলে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার পাশাপাশি কয়েক মৌসুম উইকেট-রক্ষকের শূন্যতা পূরণে অগ্রসর হন। তন্মধ্যে, ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু, কখনো দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পাননি।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। তবে, ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি মাত্র দুইটি খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত গমন করেন। তবে, ব্রাড হাড্ডিনের গ্লাভস হাতে দলে অন্তর্ভুক্তির ফলে ২৬টি ওডিআই খেলার অধিকারী জিমি মাহেরের খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

২০০৭-০৮ মৌসুম শেষে সকল স্তরের ক্রিকেট খেলা থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন তিনি। এর পরপরই জি টেলিফিল্মসের প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে হায়দ্রাবাদ হিরোজের পক্ষে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Victoria Vs Queensland"Cricinfo। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ 
  2. Supporters pay for Maher's return to Glamorgan, Cricinfo, Retrieved on 17 October 2007
  3. Morton, Jim (ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। "Lehmann vows to make Bulls Fry"The Advertiser। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Koori Mail, "Maher apologises at Shield celebration", 19 April 1995, p. 16.
  5. "Jimmy Maher"Cricinfo। জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৭ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পূর্বসূরী
স্টুয়ার্ট ল
কুইন্সল্যান্ড আইএনজি কাপ অধিনায়ক
২০০২/০৩ - ২০০৭/০৮
উত্তরসূরী
ক্রিস সিম্পসন
পূর্বসূরী
স্টুয়ার্ট ল
কুইন্সল্যান্ড পুরা কাপ অধিনায়ক
২০০২/০৩ - ২০০৭/০৮
উত্তরসূরী
ক্রিস সিম্পসন