উভকামিতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উভকামী গর্বিত পতাকা

উভকামিতা বলতে উভয় লিঙ্গ অর্থাৎ পুরুষ ও নারী উভয়ের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করাকে বোঝায়।[১] উভকামিতা পরিভাষাটি নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রতি যৌন বা রোমান্টিক অনুভূতি নির্দেশক মানব আকর্ষণকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়[২][৩][৪] এবং এই ধারণাটি বিপরীতকামিতাসমকামিতার সঙ্গে উভকামিতা যৌন অভিমুখিতার প্রধান তিনটি বর্গের অন্যতম, যা সমান্তরাল যৌনপ্রবৃত্তির অংশ।[৫][৬] উভকামী যৌন পরিচয়ে উভয় লিঙ্গের প্রতি সমান যৌন আকর্ষণের প্রয়োজন পড়ে না; সাধারণভাবে যাদের এক লিঙ্গের চেয়েও বেশি অপর কোন লিঙ্গের প্রতি অস্পষ্ট কিন্তু অনন্য নয় এমন যৌন পছন্দনীয়তা রয়েছে তারাও নিজেদেরকে উভকামী হিসেবে চিহ্নিত করে।[৭] মানবসভ্যতার বিভিন্ন সমাজব্যবস্থায়[৮] এবং প্রাণীরাজ্যের অন্যত্রও[৯][১০][১১] লিখিত ইতিহাসের সমগ্র সময়কাল জুড়ে উভকামিতার উপস্থিতি লক্ষিত হয়। তবে হেটেরোসেক্সুয়ালিটিহোমোসেক্সুয়ালিটি শব্দ দুটির মত বাইসেক্সুয়ালিটি শব্দটিও মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীতে উৎপন্ন হয়।[১২]

গবেষণা[সম্পাদনা]

মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড বিশ্বাস করতেন যে "পৃথিবীর সব মানুষই আসলে উভকামী... এবং তাদের লিবিডো থাকে দুই লিঙ্গের পরিসীমায় বিন্যস্ত ...।"[১৩] ১৯৪০ সালে স্যান্ডর রাডো এবং তাকে দেখে আরও অনেক মনোবিশ্লেষক ফ্রয়েডের জন্মগত উভকামিতার বিশ্বাসটি প্রত্যাখ্যান করেন। রাডো দাবি করেন যে, মানুষর মধ্যে কোন জৈবিক উভকামিতা নেই।[১৪]

কিন্সে স্কেল[সম্পাদনা]

মধ্য-বিংশ শতাব্দীতে আলফ্রেড কিন্সে মানব যৌনতা সংক্রান্ত যে সমীক্ষাটি চালান, সেই সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে অনেক ব্যক্তিই বিপরীতকামী বা সমকামী শ্রেণিবিভাজনের আওতাভুক্ত নন; বরং তাদের যৌন অবস্থান এই দুই শ্রেণীর মাঝামাঝি কোথাও।[১৫] কিন্সে স্কেল অনুসারে যৌন আকর্ষণ ও আচরণ স্কেলটিতে ০ (একান্ত বিপরীতকামী) থেকে ৬ (একান্ত সমকামী) সাতটি দাগ বিদ্যমান। কিন্সের গবেষণা অনুযায়ী, অধিকাংশ মানুষই এই স্কেলে ১ থেকে ৫ (অর্থাৎ, বিপরীতকামী থেকে সমকামী) দাগের মধ্যে পড়েন। কিন্সের পদ্ধতি সমালোচিত হলেও মানব যৌনতার অনবচ্ছেদ ব্যবস্থায় এটির ব্যাপক প্রয়োগ ঘটানো হয়ে থাকে। তবে, উভকামীরা অনেক সময়ই শুধু প্রথাগত সমাজ নয়, সমকামী এবং বিষমকামী – দু দল থেকেই বঞ্চনার স্বীকার হয়। বিষমকামী তো বটেই এমনকি সমকামী মানুষদেরও এমন ধারণাই বদ্ধমূল যে, বিপরীতকামিতার বাইরে ‘সমান্তরাল যৌনপ্রবৃত্তি’ বা বিপরীতকামী-সমকামী অনবচ্ছেদ বলতে কেবল সমকামিতাকেই বোঝায়। ব্যাঙ্গালোরের ‘পিপলস ইউনিয়ন অব সিভিল লিবার্টি’র ক্ষেত্র-সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে সমকামীরা উভকামীদের শুধু প্রত্যাখ্যানই করে না, ঘৃণাও করে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.apa.org/topics/lgbt/orientation
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AmPsycholAssn-whatis নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; healthyminds.org নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; glaad নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. উল্লেখ্য যে, যে সকল ব্যক্তিরা নারী বা পুরুষ কোনো লিঙ্গের প্রতিই যৌন আকর্ষণ বোধ করেন না, তাদের নিষ্কামী বলে অভিহিত করা হয়।
  6. A study of the married bisexual male: paradox and resolution
  7. Rosario, M.; Schrimshaw, E.; Hunter, J.; Braun, L. (২০০৬)। "Sexual identity development among lesbian, gay, and bisexual youths: Consistency and change over time"Journal of Sex Research43 (1): 46–58। ডিওআই:10.1080/00224490609552298 
  8. Crompton, Louis (২০০৩)। Homosexuality and Civilization। Cambridge, Massachusetts: Belknap Pressআইএসবিএন 067401197X 
  9. Bagemihl, Bruce (১৯৯৯)। Biological Exuberance: Animal Homosexuality and Natural Diversity। London: Profile Books, Ltd.। আইএসবিএন 1861971826 
  10. Roughgarden, Joan (২০০৪)। Evolution's Rainbow: Diversity, Gender, and Sexuality in Nature and People। Berkeley, CA: University of California Pressআইএসবিএন 0520240731  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  11. Driscoll, Emily V. (জুলাই ২০০৮)। "Bisexual Species: Unorthodox Sex in the Animal Kingdom"Scientific American 
  12. Harper, Douglas (২০০১)। "Bisexuality"Online Etymology Dictionary। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-১৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  13. Steven Angelides , A History of Bisexuality, University Of Chicago Press; 1 edition,September 15, 2001
  14. Ruse, Michael (১৯৮৮)। Homosexuality: A Philosophical Inquiry। Oxford: Basil Blackwell। পৃষ্ঠা 22, 25, 45, 46। আইএসবিএন 0 631 15275 X 
  15. "The Kinsey Institute - Kinsey Study Data [Research Program]"। ২৭ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

সাধারণ[সম্পাদনা]

প্রাচীন গ্রীস[সম্পাদনা]

দেশভিত্তিক[সম্পাদনা]

আধুনিক পশ্চিম[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]