যৌন বৈচিত্র্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্য বা সহজভাবে যৌন বৈচিত্র্য হল অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থায় যৌন বৈশিষ্ট্য, যৌন অভিমুখিতা এবং যৌন পরিচয়ের সকল বৈচিত্র্যকে বোঝাতে ব্যবহৃত একটি পরিভাষা, যাতে এই বহুত্ব গঠনকারী প্রতিটি পরিচয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না।[১][২][৩][৪]

পশ্চিমা বিশ্বে, সাধারণত যৌন অভিমুখিতা (বিষমকামী, সমকামীউভকামী), যৌন পরিচয় (রূপান্তরিত লিঙ্গস্বকীয় লিঙ্গ), এবং সম্পর্কিত সংখ্যালঘুদের (আন্তঃলিঙ্গ) বোঝাতে সহজ ও সীমিত শ্রেণিবিভাগ ব্যবহৃত হয়, যা এলজিবিটি বা এলজিবিটিআই (লেসবিয়ান, গে, উভকামী, রূপান্তরিত লিঙ্গ/রূপান্তরকামী ব্যক্তি, এবং মাঝেমধ্যে আন্তঃলিঙ্গ ব্যক্তি) নামক আদ্যক্ষরার অধীনে একীভূত করা হয়। যাই হোক, অন্যান্য সংস্কৃতিতে যৌনতা ও লিঙ্গ ব্যবস্থাকে বোঝার জন্য অন্যান্য উপায় রয়েছে।[৫][৬][৭] পাশাপাশি, শেষের দশকগুলোতে কিছু যৌনবিজ্ঞান তত্ত্ব প্রসার লাভ করেছে, যেমন কিংসলে তত্ত্বক্যুইয়ার তত্ত্ব, যা প্রস্তাব করে যে, এই শ্রেণিবিভাগগুলো মানব জাতিতে এমনকি, অন্যান্য প্রাণী প্রজাতিতেও যৌন জটিলতা ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট নয়।[৮]

উদাহরণস্বরূপ, কিছু লোক হয়তোবা বিষমকামী ও উভকামীর মধ্যবর্তী একটি যৌন অভিমুখিতা (বিষম-নমনীয়) অনুভব করতে পারে অথবা সমকামী ও উভকামীর মধ্যবর্তী (সম-নমনীয়)। এটি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিতও হতে পারে, অথবা এমন অভিমুখিতা হতে পারে যা শুধু পুরুষ কিংবা নারী নয়, বরঞ্চ যৌনতা ও লিঙ্গের সকল বর্ণালীর প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে সর্বকামিতা। অন্যভাবে বললে, উভকামিতার মধ্যেই একটি বিশাল সাঙ্কেতিক ও পছন্দের বৈচিত্র্য বিদ্যমান যা অনন্য বিষমকামিতা থেকে একটি পূর্ণ সমকামিতা পর্যন্ত বিস্তৃত (কিংসলে স্কেল)।[৯]

যৌন বৈচিত্র্যে আন্তঃলিঙ্গ ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত, যারা নারী ও পুরুষের মধ্যবর্তী একটি পার্থক্য নিয়ে জন্ম নেয়।[১০] এতে রূপান্তরিত লিঙ্গ ও রূপান্তরকামী পরিচিতির লোকজনও অন্তর্ভুক্ত, যা লিঙ্গীয় দ্বৈত ব্যবস্থার (জেন্ডার বাইনারি সিস্টেম) সঙ্গে মেলে না এবং, যৌন অভিমুখিতার মত, স্বকীয় লিঙ্গ (সিসজেন্ডার) ও রূপান্তরকামিতার মধ্যবর্তী বিভিন্ন ধাপ লক্ষ করা যায়, যেমন জেন্ডারফ্লুয়িড বা লিঙ্গতরল বা লিঙ্গ-নমনীয় ব্যক্তিগণ।[১১]

সবশেষে, যৌন বৈচিত্র্যে নিষ্কামী ব্যক্তিবর্গও অন্তর্ভুক্ত, যারা যৌনকর্মে অনাগ্রহ অনুভব করেন;[১২] এবং তারাও অন্তর্ভুক্ত যারা মনে করেন তাদের পরিচয় সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয় যেমন ক্যুইয়ার ব্যক্তিগণ।

সামাজিকভাবে, যৌন বৈচিত্র্যকে মানবাধিকারের অধীনে সম-অধিকার, স্বাধীনতা ও সুযোগসহ ভিন্ন হওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ দাবি করা হয়। বহু দেশে, গৌরব পদযাত্রাগুলোতে যৌন বৈচিত্র্যের নজির লক্ষ করা যায়।[১৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sexual and gender diversity. Rutgers. For sexual and reproductive health and rights.
  2. (পর্তুগিজ) Diversidade Sexual e a Cidadania LGBT. Governo do Estado de São Paulo. Secretaria da Justiça e da Defesa da Cidadania. 2014.
  3. Meyer, Elizabeth J. (২০১০)। Gender and Sexual Diversity in Schools। Springer Science & Business Media। আইএসবিএন 978-90-481-8558-0 
  4. FAQ on health and sexual diversity: The basics. World Health Organization. 2016.
  5. Sexual variation in India: A view from the west. Indian Journal of Psychiatry. 2010.
  6. Epprecht, Marc; Nyeck, S. N (২০১৩)। Sexual Diversity in Africa: Politics, Theory, and Citizenship। McGill-Queen's University Press। আইএসবিএন 978-07735-4187-0 
  7. Gender diversity in Indonesia: Sexuality, Islam and queer selves. 2010.
  8. Roughgarden, Joan (Director) (২০০৮)। Sexual Diversity in the Animal Kingdom 
  9. Beyond Heterosexual, Bisexual, and Homosexual: A Diversity in Sexual Identity Expression. Archives of Sexual Behavior. 2016.
  10. Un cuerpo, mil sexos: intersexualidades (Spanish ভাষায়)। Topia। ২০১০। আইএসবিএন 978-987-1185-42-9 
  11. Theorising Gender Diversity: Current trans, future directions. University of Huddersfield. 2013.
  12. Carrigan, Mark; Gupta, Kristina; Morrison, Todd G. (২০১৫)। Asexuality and Sexual Normativity: An Anthology। Routledge। আইএসবিএন 978-0-415-73132-4 
  13. Pride Weekend events celebrate gender and sexual diversity in Oxford. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ মে ২০১৭ তারিখে The Daily Mississippian. 17 may 2017.