বিষয়বস্তুতে চলুন

এলজিবিটিকিউ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(এলজিবিটি থেকে পুনর্নির্দেশিত)
এলজিবিটি প্রকাশনা, গৌরব পদযাত্রা ও সম্পর্কিত অনুষ্ঠানগুলিতে (এমন ইতালির বোলোনা প্রাইড ২০০৮-এর এই মঞ্চে) এলজিবিটি আদ্যক্ষরটিকে বর্জন করে নতুন নতুন শব্দ নিয়মিতভাবে যোগ করা হচ্ছে।

এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) হচ্ছে একটি শব্দ যা বিভিন্ন যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। [] এর মধ্যে থাকে লেসবিয়ান (মেয়েরা যারা মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট), [] গে (পুরুষরা যারা পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট), [] বাইসেক্সুয়াল (যারা পুরুষ এবং মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে), [] ট্রান্সজেন্ডার (যারা জন্মগত লিঙ্গ পরিচয়ের বাইরে নিজেদের অনুভব করে), [] এবং কিউইয়ার (যারা ঐতিহ্যগত লিঙ্গ বা যৌন পরিচয়ের বাইরের পরিচয় পছন্দ করে)। []

এলজিবিটিকিউ আন্দোলন মূলত এই সমস্ত মানুষদের সমান অধিকার এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছে। [] বিশ্বজুড়ে এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের নিজস্ব পরিচয় নিয়ে বাঁচার স্বাধীনতা চাইছেন। [] বিভিন্ন দেশে এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন, কিছু দেশে এলজিবিটিকিউ+ মানুষদের অধিকার সুরক্ষিত, আবার কিছু দেশে এখনো এটি বৈধতা পায়নি। [] তবে, সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ এবং সমাজে এই আন্দোলন বেশি দৃশ্যমান হয়েছে, এবং পরিবর্তন আসছে। [১০]

রংধনু পতাকা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্য ও গর্বের প্রতীক।

শব্দটির ইতিহাস

[সম্পাদনা]

LGBT শব্দটি ১৯৮০-এর দশকে ব্যবহার শুরু হয়। [১১] আগে গে শব্দটি সাধারণভাবে ব্যবহার হলেও, পরে মানুষ বুঝতে পারে যে সবাইকে ওই একটি শব্দে বোঝানো ঠিক না। তাই লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল আর ট্রান্সজেন্ডার — এই চারটি পরিচয়ের জন্য মিলিয়ে LGBT শব্দটি তৈরি হয়। [১২]

শব্দের ভিন্ন রূপ

[সম্পাদনা]

"LGBT" শব্দের অনেক রকম রূপ আছে:

  • **LGBTQ** – যেখানে "Q" মানে কুইয়ার বা প্রশ্নকারী (যারা এখনও তাদের পরিচয় নিয়ে ভাবছে)।
  • **LGBTQ+** – এখানে "+" চিহ্ন দিয়ে আরও পরিচয় যেমন ইন্টারসেক্স, অ্যাসেক্সুয়াল, নন-বাইনারি ইত্যাদি বোঝানো হয়।
  • **LGBTQIA** – এখানে "I" মানে ইন্টারসেক্স আর "A" মানে অ্যাসেক্সুয়াল বা মিত্র (যারা এই সম্প্রদায়কে সমর্থন করে)।
  • **2SLGBTQIA+** – এই রূপে "2S" মানে টু-স্পিরিট, যা কিছু আদিবাসী সংস্কৃতিতে ব্যবহৃত হয়। [১৩]

সমালোচনা

[সম্পাদনা]

অনেকে বলেন এই শব্দগুলো অনেক লম্বা আর জটিল হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারে না। [১৪] কেউ কেউ মনে করেন কিছু পরিচয় বেশি গুরুত্ব পায়, আর কিছু পরিচয় থেকে যায় পিছনে। আবার, "কুইয়ার" শব্দটি কিছু দেশে বা সমাজে এখনো খারাপ শব্দ হিসেবে দেখা হয়।

বিকল্প শব্দ

[সম্পাদনা]

এই সমস্যাগুলোর জন্য কিছু মানুষ অন্য শব্দ ব্যবহার করেন, যেমন:

  • **কুইয়ার সম্প্রদায়** – যেটা সব ধরনের পরিচয় একসাথে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
  • **রংধনু সম্প্রদায়** – রংধনুর মতো অনেক পরিচয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ।
  • **লিঙ্গ ও যৌন সংখ্যালঘু** – আরও একাডেমিক বা সরকারি কাজে ব্যবহৃত শব্দ।

তবে "LGBTQ" বা "LGBTQ+" এখনো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দ, বিশেষ করে আন্তর্জাতিকভাবে।

সূত্র

[সম্পাদনা]
  1. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  2. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  3. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  4. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  5. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  6. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  7. United Nations LGBTQ Rights, https://www.un.org/en/our-work/lgbti
  8. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  9. GLAAD: LGBTQ Advocacy, https://www.glaad.org
  10. Human Rights Campaign: LGBTQ Equality, https://www.hrc.org
  11. https://www.britannica.com/topic/LGBT
  12. https://www.theatlantic.com/sexes/archive/2013/01/the-incredible-expanding-acronym/267094/
  13. https://www.healthline.com/health/2slgbtqia
  14. https://www.vox.com/identities/2018/6/21/17488050/lgbtq-meaning-queer-gay-lesbian-transgender-bisexual

ভারত ও বাংলাদেশে

[সম্পাদনা]

ভারতে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ও আন্দোলন চলে আসছে। [] ২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ৩৭৭ ধারার একটি অংশ বাতিল করে সমকামিতা অপরাধ নয় বলে ঘোষণা করে, যা ছিল এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য একটি বড় বিজয়। [] এরপর থেকে ভারতজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা, মিডিয়া এবং কর্মীরা এই সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে। []

বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ বিষয়টি এখনো বেশ সংবেদনশীল ও সীমিত পরিসরে আলোচনা হয়। [] দেশটির আইনে এখনো সমকামিতা অবৈধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। [] ২০১৬ সালে দুজন এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মীকে হত্যার পর পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠে এবং অনেক এলজিবিটিকিউ ব্যক্তি নিরাপত্তার কারণে আত্মগোপন করে। [] তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং কিছু স্বাধীন সংগঠন এই সম্প্রদায়ের জন্য সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। [][]

এলজিবিটিকিউর বিভিন্ন ভাগ

পাদটীকা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]