আখেরি চাহার সোম্বা
আখেরি চাহার শোম্বা | |
---|---|
পালনকারী | বাঙালি মুসলমান[১] |
তাৎপর্য | মুহাম্মাদের সাময়িক সুস্থতা |
পালন | নফল নামায, দান, দোয়া |
তারিখ | সফর মাসের শেষ বুধবার |
সংঘটন | বার্ষিক |
মুহাম্মাদ |
---|
বিষয়ের ধারাবাহিকের একটি অংশ |
আখেরি চাহার শোম্বা হলো বাংলার ইসলাম[১] ধর্মাবলম্বীদের পালিত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি স্মারক দিবস।[২] আখেরি চাহার সোম্বা একটি আরবি ও ফারসি শব্দ-যুগল; এর আরবি অংশ আখেরি, যার অর্থ “শেষ” এবং ফারসি অংশ চাহার সোম্বা, যার অর্থ “বুধবার”।[৩][৪]
প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]
১১ হিজরির শুরুতে মুহাম্মদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজের ইমামতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার।
এই দিন কিছুটা সুস্থবোধ করায় তিনি গোসল করেন এবং শেষবারের মতো নামাজে ইমামতি করেন। মদিনাবাসী এই খবরে খুশি হয়ে যায়[৫] এবং দলে দলে এসে উনাকে একনজর দেখতে আসেন।[৬] সকলে তাদের সাধ্যমতো দান-সাদকা, ধন্যবাদান্তে নামাজ আদায় ও দোয়া করেন।[৫] নবির রোগমুক্তিতে তার অনুসারীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন;[৫] যেমন: আবু বকর সিদ্দিক ৫ হাজার দিরহাম, উমর ৭ হাজার দিরহাম, ওসমান ১০ হাজার দিরহাম, আলি ৩ হাজার দিরহাম, আবদুর রহমান ইবনে আউফ ১০০ উট দান করেন।[৬]
উল্লেখ্য যে, ২৯ সফর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার মাত্র কয়েক দিন পর তিনি ১২ই রবিউল আউয়াল ইহকাল ত্যাগ করেন।
পালনবিধি[সম্পাদনা]
কিছু নির্দিষ্ট বিধি-বিধানের আলোকে 'আখেরি চাহার শোম্বা' পালন করা হয়; যদিও ধর্ম-তত্ত্ববিদগণের মধ্যে এই দিবসটি পালন করা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।[৬][৭] দিবসটি মূলত ‘শুকরিয়া দিবস’ হিসাবে পালিত হয়; যাতে সাধারণত গোসল করে দু’রাকাত শোকরানা-নফল নামাজ আদায় শেষে রোগ থেকে মুক্তির দোয়া ও দান-খয়রাত করা হয়।[২] বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, দরবার, খানকায় ওয়াজ-নসিহত, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এই দিনটি পালন উপলক্ষে। এদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে বন্ধ রাখার পাশাপাশি অফিস-আদালতে ঐচ্ছিকভাবে ছুটির দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৬]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ সৈয়দ আশরাফ আলী (২০১২)। "আখেরী চাহার শম্বা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ "আজ পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা"। দৈনিক প্রথমআলো। ১ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ মো. আবুসালেহ সেকেন্দার (২৩ অক্টোবর ২০১৯)। "আখেরি চাহার শোম্বার ইতিহাস ও তাৎপর্য"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২৩।
- ↑ "আখেরী চাহার সোম্বা পালিত"। দৈনিক সিলেটের ডাক। ১০ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ ক খ গ "অবিস্মরণীয় আখেরী চাহার সোম্বা"। দৈনিক ইত্তেফাক। ৪ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ ক খ গ ঘ "আজ পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা"। দৈনিক ইনকিলাব। ৯ ডিসেম্বর ২০১৫। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ "আখেরী চাহার সোম্বা' কাকে বলে। শরী'আতে এরূপ কোন দিবসের অনুমোদন আছে কি?"। Al tahreek। Archived from the original on ১৪ ডিসেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৪।