বাংলা ভাষায় রচিত আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার তালিকা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আত্মজীবনী হচ্ছে স্বরচিত জীবনচরিত। বিশ্বের অন্যান্য সাহিত্যের মতো বাংলা সাহিত্যেও আত্মজীবনী একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ভাষায় অনেক আত্মজীবনী রচিত হয়েছে, যদিও সবগুলি এখন আর পাওয়া যায় না। উনিশ শতকের আগে বাংলা ভাষায় লিখিত কোন আত্মজীবনী পাওয়া যায় না। প্রাচীন ও মধ্যযুগের গীতিকবিতায় ভণিতার মাধ্যমে আত্মপরিচয় তুলে ধরার একটা প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে, কাহিনীকাব্যে আত্মপরিচয় অনেকটা বিস্তৃত আকারে লেখা হয়েছে। কাব্যে ও কাব্যে এরূপ আত্মপরিচয় দিয়েছেন। তবে আধুনিক ধারার বলতে যা বোঝায়, এগুলি তার মধ্যে পড়ে না।

সাহিত্য হিসেবে আত্মজীবনীর যথার্থ প্রকাশ ঘটে উনিশ শতকের গোড়ার দিকে। এরূপ প্রথম আত্মজীবনী রচনা করেন দেওয়ান কার্তিকেয়চন্দ্র রায়।<

সাহিত্যিক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আমার বাল্যকথা ও বোম্বাই প্রবাস সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৫
আমার অতীতজীবন মানকুমারী বসু
আমাদের গৃহে অন্তঃপুর শিক্ষা ও তাহার সংস্কার স্বর্ণকুমারী দেবী
ছেলেবেলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪০
জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১২
জীবনস্মৃতি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
আত্ম-জীবন অর্থাৎ ভাই গিরিশচন্দ্র সেন কর্ত্তৃক বিবৃত আত্ম-জীবনবৃত্তান্ত ভাই গিরিশচন্দ্র সেন ১৯০৬
জীবনকথা জসীমউদ্দীন ১৯৬৪
যাদের দেখেছি জসীমউদ্দীন ১৯৫১
ঠাকুর বাড়ির আঙ্গিনায় জসীমউদ্দীন ১৯৬১
স্মৃতিপট জসীমউদ্দীন ১৯৬৪
বাল্যস্মৃতি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
স্মৃতিকথা কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
আমার জীবন নবীনচন্দ্র সেন ১৯০৮-১৩
আমার জীবনের আরম্ভ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
আত্মকথা প্রমথ চৌধুরী
ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা শিবরাম চক্রবর্তী
ভালবাসা পৃথিবী ঈশ্বর শিবরাম চক্রবর্তী
হিমালয়পারে কৈলাস ও মানস সরোবর প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়
তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়
প্রাণকুমার প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়
কল্লোল যুগ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
পাকদণ্ডী লীলা মজুমদার
ফিরে ফিরে চাই প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়
বাবার কথা উমা দেবী
রবীন্দ্রস্মৃতি ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী
দক্ষিণের বারান্দা মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়
রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন প্রমথনাথ বিশী
যাত্রী সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ছেলেবেলার দিনগুলি পুণ্যলতা চক্রবর্তী
স্মৃতিকথা কাজী মোতাহার হোসেন
জীবন খাতার কয়েক পাতা সুনির্মল বসু
নীরবিন্দু নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
উড়ো খই বিমল কর
মহাস্থবির জাতক প্রেমাঙ্কুর আতর্থী
অর্ধেক জীবন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
আমার মেয়েবেলা তসলিমা নাসরিন ১৯৯৯
উতল হাওয়া তসলিমা নাসরিন ২০০২
ক / দ্বিখণ্ডিত তসলিমা নাসরিন ২০০৩ বইটি বাংলাদেশে 'ক' এবং পশ্চিমবঙ্গে 'দ্বিখণ্ডিত' নামে প্রকাশিত হয়।
সেই সব অন্ধকার তসলিমা নাসরিন ২০০৪
আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ তসলিমা নাসরিন ২০০৬
নেই, কিছু নেই তসলিমা নাসরিন ২০১০
নির্বাসন তসলিমা নাসরিন ২০১২
স্মৃতির শহর শামসুর রাহমান ১৯৭৯
কালের ধুলোয় লেখা শামসুর রাহমান ২০০৪
আমার ছেলেবেলা বুদ্ধদেব বসু ১৯৭৩

সাংবাদিক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
অতীত দিনের স্মৃতি আবুল কালাম শামসুদ্দীন

সমাজ সংস্কারক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
বাল্যজীবন গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ন
জীবনের ঝরাপাতা সরলাদেবী চৌধুরানী
আত্মচরিত রাজনারায়ণ বসু
স্মৃতিকথা জ্ঞানদানন্দিনী দেবী

নাট্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
সমাজচিত্র মনোমোহন বসু
সেকালের কথা অমৃতলাল বসু

চিত্র ও ভাষ্কর্য শিল্পী[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আপন কথা অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নিন্দিত নন্দন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী ২০১৪

সঙ্গীতশিল্পী[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
দেওয়ান কার্তিকেয়চন্দ্র রায়ের আত্ম-জীবন চরিত দেওয়ান কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ১৯০৪
আমার যুগ আমার গান পঙ্কজকুমার মল্লিক

নৃত্যশিল্পী[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
সন্ধ্যারাতের শেফালি আরতি দাস ২০১৪ আরতি দাস ছিলেন কলকাতার একজন ক্যাবারে নর্তকী এবং থিয়েটার অভিনেত্রী। তিনি ষাট থেকে আশির দশক অবধি সক্রিয় ছিলেন। তার স্মৃতিকথাটি শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক অনুলিখিত।

ক্রীড়াবিদ[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
যত দিন বাঁচি অমল দত্ত

দার্শনিক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯৮

ঐতিহাসিক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
বাঙাল নামা তপন রায়চৌধুরী

প্রকাশক ও সম্পাদক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আত্মস্মৃতি সজনীকান্ত দাস
পিওন থেকে প্রকাশক বাদল বসু
কলেজ স্ট্রীটে সত্তর বছর সবিতেন্দ্রনাথ রায়

অর্থনীতিবিদ[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
স্মৃতিকণ্ডূয়ন প্রণব বর্ধন

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
অসমাপ্ত আত্মজীবনী শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬-৬৯ জেলে বসে লেখা আত্মজৈবনিক দিনলিপি
আত্মকথা আবুল মনসুর আহমদ

ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
স্মৃতিকথা স্বামী বিবেকানন্দ
জীবনবেদ কেশবচন্দ্র সেন
শ্রীশ্রীসদ্‌গুরুসঙ্গ কুলদানন্দ ব্রহ্মচারী

আইনরক্ষক ও সরকারী ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
সেকালের দারোগার কাহিনী গিরিশচন্দ্র বসু ১৮৮৬
সাদা আমি কালো আমি রুনু গুহ নিয়োগী

পরিব্রাজক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
দু চাকায় দুনিয়া বিমল মুখোপাধ্যায়

অভিনেতা[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আমার কথা বিনোদিনী দাসী
আমার আমি উত্তম কুমার উত্তমকুমারের মৃত্যূর দিনেই তার আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপিটি উধাও হয়ে যায়। পরবর্তীকালে সেটি পাওয়া যায় এবং তার মৃত্যুর বহু পরে এটি বই আকারে প্রকাশিত হয়।[১]
যখন পুলিশ ছিলাম ধীরাজ ভট্টাচার্য
যখন নায়ক ছিলাম ধীরাজ ভট্টাচার্য
সবারে আমি নমি কানন দেবী

বিজ্ঞানী[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আত্মচরিত প্রফুল্লচন্দ্র রায়

ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
চরিতকথা বিপিনচন্দ্র পাল
জেলে ত্রিশ বছর - ব্রিটিশ :পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী ১৯৫৩

মুক্তিযোদ্ধা[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ

সৈনিক[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আমার সৈনিক জীবন: পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ মনজুর রশীদ খান ২০১২ মনজুর রশীদ খান ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন পশ্চিম পাকিস্তানের শিয়ালকোট রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯৭১ সাল থেকে প্রায় আড়াই পাকিস্তানে অন্তরীণ থাকেন। দেশে ফিরে আসেন ১৯৭৩ সালে। মেজর পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন । ১৯৮৬ সালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদ এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের সামরিক সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৫ সালে অবসর গ্রহণ করেন।[২]

অন্যান্য[সম্পাদনা]

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা লেখক রচনাকাল বিবরণ
আমার জীবন রাসসুন্দরী দাসী
জনৈকা গৃহবধূর ডায়েরী মনোদা দেবী
পার্বত্য চট্টলের দীন সেবকের জীবনকাহিনী কামিনীমোহন দেওয়ান
আমাদের কথা বিজয়া রায়
আদর্শ ছাত্রজীবন মন্মথনাথ মজুমদার
মনীষা মন্দিরে কৃষ্ণকুমারী গুপ্ত
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত মানদা দেবী ১৯২৯
স্মৃতিচিত্র প্রতিমা দেবী

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. হারিয়ে যায় উত্তমকুমারের আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপি
  2. "ইতিহাসের অনেক কথা"। ২০১৯-০৬-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-১৩