তপন রায়চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তপন রায়চৌধুরী
Tapan Raychaudhuri
অধ্যাপক তপন রায়চৌধুরী, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২০০৯
জন্ম(১৯২৬-০৫-০৮)৮ মে ১৯২৬
কীর্তিপাশা, বরিশাল জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান ঝালকাঠি জেলা, বাংলাদেশ)
মৃত্যু২৬ নভেম্বর ২০১৪(2014-11-26) (বয়স ৮৮)
মাতৃশিক্ষায়তন
পুরস্কারওয়াটমুল পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রইতিহাস
ডক্টরাল উপদেষ্টাC.C. Davies
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীশাহিদ আমীন, জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে, গওহর রিজভী, সুরঞ্জন দাস

অধ্যাপক তপন রায়চৌধুরী (জন্ম ৮ মে, ১৯২৬ - মৃত্যু ২৬ নভেম্বর, ২০১৪) একজন ভারতীয় ইতিহাসবেত্তা যিনি ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনার জন্য প্রসিদ্ধ। তিনি দীর্ঘকাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ইতিহাস ও সভ্যতা বিষয়ে শিক্ষকতা করেন।

তার জন্ম ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে, বাংলাদেশের বরিশালে, কীর্তিপাশায়, এবং সেখানেই তার স্কুল জীবন অতিবাহিত হয়। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ ছেড়ে তারা ভারতে চলে আসেন। অতঃপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন এবং উভয বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি, ফিল, ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি, লিট, ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকেঁ সম্মানসূচক ডি, লিট, উপাধি প্রদান করে। জীবনের শুরু থেকেই তপন রায় চৌধুরী শিক্ষকতাকে জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করেন। বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যাপনা করেছেন। বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় তার বহু গ্রন্থ এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও গবেষণামূলক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৯ সালে কলকাতার পাক্ষিক দেশ পত্রিকায় তার আত্মজীবনী ধারাবাহিকভাবে মূদ্রিত হয়।[১] তার লেখা গ্রন্থ ইউরোপ রিকনসিডার্ড ১৯৮৭ সালে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়। রোমন্থন ও ভীমরতিপ্রাপ্তর পরচরিতচর্চা তার লেখা প্রথম বাংলা বই।[২] ইতিহাস বিষয়ে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৭ সালে তাকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।[৩]

রচনা সমূহ[সম্পাদনা]

তার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকাশনার মধ্যে কতিপয়[৪] নিম্নে তালিকাভূক্ত করা হল:

  • জন কোম্পানি ইন করোমন্ডল কোস্ট (১৯৬২)
  • কেমব্রিজ ইকোনমিক হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া (সহ-সম্পাদক ইরফান হাবিব (১৯৬২)
  • বেঙ্গল আন্ডার আকবর অ্যান্ড জাহাঙ্গীর (১৯৬৯)
  • ইউরোপ রিকন্সিডার্ড: পারসেপশন্স অব দ্য ওয়েস্ট ইন নাইনটিন সেঞ্চুরি বেঙ্গল (১৯৮৮)
  • পারসেপশন্স, ইমোশন্স, সেন্সিবিলিটিজ: এসেজ অন ইন্ডিয়াজ কলোনিয়াল অ্যান্ড পোস্ট কলোনিয়াল এক্সপেরিয়েন্স (২০০৬)

আত্মজীবনী[সম্পাদনা]

গবেষণার পাশাপাশি তপন রায়চৌধুরী আত্মজীবনীর নানাদিক নিয়ে লিখেছেন তিনবার[৪] তিনটি আলাদা গ্রন্থে:

  • রোমন্থন অথবা ভীমরতি প্রাপ্তর পরচরিতের চর্চা (১৯৯৩)
  • বাঙ্গালনামা (২০০৭)
  • দ্য ওয়ার্ল্ড ইন আওয়ার টাইম : এ মেমোয়ার (২০১২)

স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

পেশাগত দক্ষতার আলোকে তিনি অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।[৪] এর কতিপয় হল:

  • অ্যামেরিকান হিস্টোরিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গোল্ড মেডেল, ১৯৯০
  • ডক্টর অব লেটার্স, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ১৯৯৩
  • ডক্টর অব লেটার্স, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালকাটা, ২০০৫
  • পদ্মভূষণ (ভারত), ২০০৭
  • ন্যাশনাল রিসার্চ প্রফেসর (ভারত), ২০১০
  • রবীন্দ্র পুরস্কার

অনুপ্রেরণা[সম্পাদনা]

নয় খণ্ডে প্রকাশিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক উইলিয়াম রাদিচ উদ্বুদ্ধ হওয়ার পেছনে তপন রায় চৌধুরীর ভূমিকা স্মরণীয়।[৪] তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের স্বতন্ত্র বিদ্যাচর্চার বিষয়াদিকে বিশ্ববিদ্যার পাশাপাশি ভারত বিদ্যারূপে বিশ্বময় সর্বত্র প্রসার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় অক্সফোর্ডের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Profile of Professor Tapan Raychaudhuri"। ২০ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০০৯ 
  2. অনুপ সাদি সম্পাদিত, বাঙালির ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ; কথাপ্রকাশ, ঢাকা; ফেব্রুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা-২৩৯।
  3. "Padma Vibhushan for Bhagwati, V. Krishnamurthy"। The Hindu। জানুয়ারি ২৭, ২০০৭। পৃষ্ঠা 1। ফেব্রুয়ারি ১১, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৮, ২০১৪ 
  4. "ইতিহাসবিদ তপন রায়চৌধুরী আর নেই"। প্রথম আলো ডেস্ক। নভেম্বর ২৮, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  5. "প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ তপন রায় চৌধুরী প্রয়াত"। 24Ghanta। Thursday, November 27, 2014।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]