বিষয়বস্তুতে চলুন

বাপু নাদকর্নী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা BanglaBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১১:৫৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (ত্রুটি সংশোধন, আইডি: ৮৮)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

বাপু নাদকর্নী
২০০৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বাপু নাদকর্নী
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রমেশচন্দ্র গঙ্গারাম নাদকর্নী
জন্ম(১৯৩৩-০৪-০৪)৪ এপ্রিল ১৯৩৩
নাশিক, বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৭ জানুয়ারি ২০২০(2020-01-17) (বয়স ৮৬)
মুম্বই, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮০)
১৬ ডিসেম্বর ১৯৫৫ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট১২ মার্চ ১৯৬৮ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪১ ১৯১
রানের সংখ্যা ১,৪১৪ ৮,৮৮০
ব্যাটিং গড় ২৫.৭০ ৪০.৩৬
১০০/৫০ ১/৭ ১৪/৪৬
সর্বোচ্চ রান ১২২* ২৮৩*
বল করেছে ৯,১৬৫
উইকেট ৮৮ ৫০০
বোলিং গড় ২৯.০৭ ২১.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৯
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৪৩ ৬/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২২ ১৪০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ জানুয়ারি ২০২০

রমেশচন্দ্র গঙ্গারাম বাপু নাদকর্নী (উচ্চারণ; হিন্দি: बापू नाडकर्णी; জন্ম: ৪ এপ্রিল, ১৯৩৩ - মৃত্যু: ১৭ জানুয়ারি, ২০২০) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে প্রেসিডেন্সির নাশিক এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মহারাষ্ট্র ও মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন বাপু নাদকর্নী

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম পর্যন্ত বাপু নাদকর্নী’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তার বল মোকাবেলায় ব্যাটসম্যানকে কোন রান প্রদান না করা ও বলকে এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতো।[] সমগ্র টেস্ট খেলোয়াড়ী ওভারপ্রতি মাত্র ১.৬৭ রান দিয়েছিলেন। মূলতঃ মিতব্যয়ী বোলিং করে ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে রোহিতন বাড়িয়া ট্রফি প্রতিযোগিতায় পুনে বিশ্ববিদ্যালয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন ও নিজেকে সকলের পাদপ্রদীপে নিয়ে আসেন। পরের বছর মহারাষ্ট্র দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। দুই বছর পর ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে বোম্বের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। তিন ঘণ্টার অল্প সময়ে বেশি নিয়ে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সদাশিব পাতিলের সাথে শেষ উইকেট জুটিতে ১০৩ রান যুক্ত করেছিলেন।

১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৫৯-৬০ মৌসুম পর্যন্ত মহারাষ্ট্র এবং ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম পর্যন্ত বোম্বে দলের পক্ষে খেলেন। ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে সৌরাষ্ট্রের বিপক্ষে অপরাজিত ২০১ এবং ৬/১৭ ও ৩/৩৮ পেয়েছিলেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে গুজরাতের বিপক্ষে ১৬৭ ও খেলায় সাত উইকেট লাভ করেছিলেন তিনি। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে সেমি-ফাইনালে দিল্লির বিপক্ষে ছয় ঘণ্টা সময় নিয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৮৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একচল্লিশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন বাপু নাদকর্নী। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ তারিখে দিল্লিতে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৭ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখে অকল্যান্ডে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দল ভারত গমন করে। ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে অনুষ্ঠিত টেস্ট থেকে বিনু মানকড় স্বীয় নাম প্রত্যাহার করে নিলে সৌভাগ্যবশতঃ খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে নিয়ে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। বল হাতে ৬৭ ওভার বোলিং করলেও উইকেট শূন্য অবস্থায় প্যাভিলিয়নমুখী হতে হয়েছিল। বিনু মানকড়ের দলে প্রত্যাবর্তনের ফলে তাকে দলের বাইরে অবস্থানে করতে হয়। ঐ একই বছরে মহারাষ্ট্র দলের অধিনায়কের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন বাপু নাদকর্নী। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে ৩২-২৪-২৩-০ করেন। এরপর দিল্লিতে করেন ৩৪-২৪-২৩-১।

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি

১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ভারত গমন করে। মাদ্রাজের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে সফরকারী দলের বিপক্ষে দূর্দান্ত বোলিং করেন। খেলার তৃতীয় দিন শেষে তার বোলিং পরিসংখ্যান দাড়ায় ২৯ ওভার, ২৬ মেইডেন ও ৩ রান দিয়ে কোন উইকেটের সন্ধান পাননি তিনি। অধিকাংশ ওভারই ব্রায়ান বোলাসকেন ব্যারিংটন মোকাবেলা করেছিলেন। ঐ ইনিংসে তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৩২-২৭-৫-০। একাধারে ১১৪ মিনিটের বোলিং স্পেলে রেকর্ডসংখ্যক একুশ ওভার মেইডেন দেন তিনি। তন্মধ্যে একনাগাড়ে ১৩১ বলে কোন রান দেননি।[] সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে নাদকর্নী অপরাজিত ৫২ ও অপরাজিত ১২২ রানের ইনিংস খেলেন। এটিই তার টেস্টে একমাত্র সেঞ্চুরি ছিল।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলেন। ৫/৩১ ও ৬/৯১ পান তিনি। তবে, বিষেন সিং বেদী’র ন্যায় উদীয়মান বামহাতি স্পিনারের উত্থানে তার অংশগ্রহণ অনেকাংশেই স্তিমিত হয়ে আসে। ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ড গমন করা থেকে বঞ্চিত হন। তবে ঐ বছরের শীতকালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে ভারতের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৬/৪৩ গড়েন। নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার পথে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন বাপু নাদকর্নী।

ব্যাটসম্যানের নিশানা বরাবর বোলিংয়ের ফলে রান সংগ্রহের পথে ব্যাপক বাধার প্রাচীর গড়ে তুলেন। জনরব রয়েছে যে, পিচে মুদ্রা রেখে জালঘেরা আবদ্ধ স্থানে অনুশীলন কর্ম সম্পাদন করতেন তিনি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ওভার প্রতি দুই রানের কম খরচ করেছিলেন তিনি।

অন্যান্য

বাপু নাদকর্নী উপর্যুপরি ২১ ওভার মেইডেন[] বা ১৩১ বলে কোন রান খরচ করেননি। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ডারবানের কিংসমিড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট তারকা হিউ টেফিল্ড সর্বাধিকসংখ্যক বল করে কোন রান খরচ না করার রেকর্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত করেছেন। দুই ইনিংসে মিলিয়ে ৮ বলে গড়া ১৬ ওভার বা ১৩৭ বলে কোন রান দেননি তিনি।[] রানবিহীন অবস্থায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে হিউ টেফিল্ড ও মনীষ মাজিথিয়া’র পর তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে মধ্যপ্রদেশ দলের সদস্যরূপে মাজিথিয়া রেলওয়েজের বিপক্ষে একাধারে ১৩৬টি বলে কোন রান দেননি।[১]

উপর্যুপরি মেইডেন ওভারের ক্ষেত্রে বলের হিসেবে ভিন্নতর রেকর্ড লক্ষ্য করা যায়:[২]

৪ বলের গড়া ওভার : ২৩ - আলফ্রেড শ, নর্থ বনাম সাউথ, নটিংহাম, ১৮৭৬ [৩]
৫ বলের গড়া ওভার : ১০ - আর্নি রবসন, সমারসেট বনাম সাসেক্স, হোভ, ১৮৯৭ [৪]
৬ বলের গড়া ওভার : ২১ - বাপু নাদকর্নী, ভারত বনাম ইংল্যান্ড, মাদ্রাজ, ১৯৬৩-৬৪
৮ বলের গড়া ওভার : ১৪ - হিউ টেফিল্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড, ডারবান, ১৯৫৬-৫৭

দেহাবসান

১৭ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে ৮৬ বছর বয়সে মুম্বইয়ে বাপু নাদকর্নী’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. "Former India allrounder Bapu Nadkarni dies aged 86"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 124–125। আইএসবিএন 978-1-84607-880-4 
  3. "Captain calypso"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ 
  4. Cricketarchive.com

বহিঃসংযোগ