শারদা রাজন আয়ঙ্গর
শারদা রাজন আয়ঙ্গর | |
---|---|
জন্ম নাম | শারদা আয়ঙ্গর |
আরও যে নামে পরিচিত | শারদা |
জন্ম | তামিলনাড়ু, ভারত | ২৫ অক্টোবর ১৯৩৭
ধরন | চলচ্চিত্রের সঙ্গীত, গজল |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক |
বাদ্যযন্ত্র | কণ্ঠ |
কার্যকাল | ১৯৬৫-১৯৮৬, ২০০৭-বর্তমান |
শারদা রাজন আয়ঙ্গর (বা শারদা নামে পরিচিত; জন্ম ২৫ অক্টোবর ১৯৩৭) হলেন একজন ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক। তিনি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি জাহাঁ প্যায়ার মিলে (১৯৭০) চলচ্চিত্রে ক্যাবারে-ধারার "বাত জারা হ্যায় আপস কী" গানে কণ্ঠ দিয়ে শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় গান হল সুরজ (১৯৬৬) চলচ্চিত্রের "তিতলি উড়ি"।[১] ১৯৭১ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় গায়িকা হিসেবে পপ গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ২০০৭ সালে মির্জা গালিবের গজল নিয়ে তাঁর নিজের গানের সংকলিত অ্যালবাম আন্দাজ-ই-বয়ান অউর প্রকাশিত হয়।
প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
শারদা আয়ঙ্গর ১৯৩৭ সালের ২৫শে অক্টোবর তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর দাদুর কাছ থেকে সংস্কৃত শেখেন। তিনি শৈশব থেকেই গান গাইতে ভাল বাসতেন, কিন্তু শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তাঁর কোন প্রশিক্ষণ ছিল না। যখন থেকে তিনি গান পরিবেশনা শুরু করেন, মঞ্চনাম হিসেবে তিনি কেবল তাঁর নামের প্রথমাংশ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন।[১]
সঙ্গীত জীবন[সম্পাদনা]
কর্মজীবনের শুরুতে রাজ কাপুর তেহরানে শ্রীচন্দ আহুজার বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে তাঁর গান শোনার পর তাঁকে একটি কণ্ঠ পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি আরকে স্টুডিওতে গানের পরীক্ষা দেন এবং কাপুর তাঁকে সঙ্গীত পরিচালক যুগল শঙ্কর-জয়কিষণের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। শঙ্কর তাঁকে গান গাওয়ার জন্য তৈরি করেন, যদিও জয়কিষণ তাঁর প্রশিক্ষণ-বিহীন কণ্ঠের ব্যাপারে উদগ্রীব ছিলেন না। তাদের দুজনের সুরে শারদার প্রথম রেকর্ডকৃত গান ছিল গুমনাম (১৯৬৫) চলচ্চিত্রের জন্য "আয়েগা কন ইয়াহাঁ", গানটি এই চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়নি।[১] বলিউডে শারদার অভিষেক ঘটে সুরজ (১৯৬৬) চলচ্চিত্রের প্রধান অভিনেত্রী বৈজয়ন্তীমালার উপর চিত্রায়িত "দেখো মেরা দিল মচল গয়া" এবং বৈজয়ন্তীমালা ও মুমতাজের উপর চিত্রায়িত "তিতলি উড়ি" গান দিয়ে। দ্বিতীয় গানটি তাঁকে খ্যাতি এনে দেয় এবং এটি ১৯৬৬ সালে সর্বাধিক বিক্রীত গান বলে স্বীকৃত হয়। এই গানের জনপ্রিয়তার ফলে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগটিকে নারী ও পুরুষ দুটি ভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয়। তাঁর গানটি একই চলচ্চিত্রে মোহাম্মদ রফির গাওয়া "বাহারোঁ ফুল বরসাও" গানের সমান জনপ্রিয়তা ও ভোট পায়, কিন্তু রফিকে শ্রেষ্ঠ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পীর পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং শারদাকে শ্রেষ্ঠ নবাগত বিভাগে একটি বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।[১]
শারদা পরবর্তী কালে এই সুরকারদের সুরে অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস (১৯৬৭), অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৬৭), সপ্নো কা সওদাগর (১৯৬৮), কাল আজ অউর কাল (১৯৭১) চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন, কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্রের গানের মত সফলতা পাননি।[১]
তিনি দিওয়ানা (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে "তুমহারি ভি জয় জয়" এবং চান্দা অউর বিজলী (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে "তেরা অঙ্গ কা রঙ হ্যায় আঙ্গুরি" গানে কণ্ঠ দিয়ে টানা দুই বছর শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২][৩] তিনি জাহাঁ প্যায়ার মিলে (১৯৭০) চলচ্চিত্রে ক্যাবারে-ধারার "বাত জারা হ্যায় আপাস কী" গানে কণ্ঠ দিয়ে টানা তৃতীয় বারের মত শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন পান এবং এই পুরস্কার অর্জন করেন।[৪] এর ফলে ১৯৫০-এর দশকের শেষভাগে এই পুরস্কারের প্রারম্ভ থেকে ১৯৬০-এর দশক জুড়ে লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলের পুরস্কার পাওয়ার দ্বৈরথে ভাগ বসান।[১] পরের বছর তিনি এক নারী এক ব্রহ্মচারী (১৯৭১) চলচ্চিত্রে "আপকে পিছে" গানে কণ্ঠ দিয়ে শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তাঁর চতুর্থ ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৫]
১৯৭১ সালে তাঁর পপ গানের অ্যালবাম সিজলার্স প্রকাশিত হয়, তিনি প্রথম ভারতীয় গায়িকা হিসেবে পপ গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তিনি গরিবী হটাও (১৯৭৩), মন্দির মসজিদ (১৯৭৭), ও ময়লা আঁচল (১৯৮১) চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। মোহাম্মদ রফি তাঁর সুরে মা বেহন অউর বিবি (১৯৭৪) চলচ্চিত্রের "আচ্ছা হি হুয়া দিল টুট গয়া" গানে কণ্ঠ দিয়ে শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৬] কাঁচ কী দিওয়ার (১৯৮৬) চলচ্চিত্রে সর্বশেষ তাঁর গান শোনা গিয়েছিল।[১]
অ্যালবাম[সম্পাদনা]
শারদা ২০০৭ সালে কবি মির্জা গালিবের গজলের অ্যালবাম আন্দাজ-ই-বয়ান অউর প্রকাশ করেন। অ্যালবামটি প্রকাশিত হয় জুহু জাগৃতি মুম্বইয়ে। অভিনেত্রী শাবানা আজমি এর মোড়ক উন্মোচন করেন। অ্যালবামটি আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি এবং তিনি আবার অন্তরালে চলে যান।[১]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ গায়েকওয়াদ, মনীষ (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Redemption song: 'Titli Udi' by Sharda was a beginning and an end"। স্ক্রল.ইন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The Filmfare Awards Nominations – 1968"। দ্য টাইমস গ্রুপ। ১৪ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The Filmfare Awards Nominations – 1969"। দ্য টাইমস গ্রুপ। ২৮ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The Filmfare Awards Winners – 1970"। দ্য টাইমস গ্রুপ। ১৪ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The Filmfare Awards Nominations – 1971"। দ্য টাইমস গ্রুপ। ২৯ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The Filmfare Awards Nominations – 1974"। দ্য টাইমস গ্রুপ। ২৯ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- ১৯৩৭-এ জন্ম
- জীবিত ব্যক্তি
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় গায়িকা
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় গায়িকা
- ভারতীয় চলচ্চিত্রের গায়িকা
- ভারতীয় চলচ্চিত্র সঙ্গীত সুরকার
- ভারতীয় মহিলা সুরকার
- বলিউডের নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী
- তামিলনাড়ুর সঙ্গীতশিল্পী
- শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার বিজয়ী
- তামিলনাড়ুর নারী সঙ্গীতজ্ঞ