বিষয়বস্তুতে চলুন

ভার্নন রয়েল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভার্নন রয়েল
আনুমানিক ১৮৭৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ভার্নন রয়েল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রেভারেন্ড ভার্নন পিটার ফ্যানশ আর্চার রয়েল
জন্ম(১৮৫৪-০১-২৯)২৯ জানুয়ারি ১৮৫৪
ব্রুকল্যান্ড, চেশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২১ মে ১৯২৯(1929-05-21) (বয়স ৭৫)
স্ট্যানমোর, মিডলসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি রাউন্ড-আর্ম স্লো
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৮)
২ জানুয়ারি ১৮৭৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১০২
রানের সংখ্যা ২১ ২,৩২২
ব্যাটিং গড় ১০.৫০ ১৫.৪৮
১০০/৫০ ০/০ ০/৯
সর্বোচ্চ রান ১৮ ৮১
বল করেছে ১৬ ৭৮৩
উইকেট ১৫
বোলিং গড় - ২৫.০৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং - ৪/৫১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/০ ৬৯/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ মার্চ ২০১৮

রেভারেন্ড ভার্নন পিটার ফ্যানশ আর্চার রয়েল (ইংরেজি: Vernon Royle; জন্ম: ২৯ জানুয়ারি, ১৮৫৪ - মৃত্যু: ২১ মে, ১৯২৯) সেলের ব্রুকল্যাণ্ডস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও শিক্ষক ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৭৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে রাউন্ড-আর্ম স্লো বোলিং করতেন ভার্নন রয়েল

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

সার্জন পিটার রয়েল ও মারিয়ান ফ্যানশ দম্পতির তৃতীয় সন্তান ছিলেন ভার্নন রয়েল। রসসল স্কুলে অধ্যয়ন শেষে ব্রাসেনোজ কলেজ ও অক্সফোর্ডে অধ্যয়ন করেছেন তিনি।

১৮৭৩ সাল থেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ক্রিকেট খেলতে থাকেন। ১৮৭৫ ও ১৮৭৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেন ও উভয় বছরেই ব্লু লাভ করেন। অক্সফোর্ডে থাকাকালে তিনি মাঝারিমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। কেবলমাত্র একবারই পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ১৮৭৬ সালে চেলসির প্রিন্স ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মিডলসেক্সের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৭ রান তুলেন। নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে তিনি এ রান তুলেন। এরফলে দলের সংগ্রহ ৬১২ রান হয় যা ঐ মাঠের সর্বোচ্চ রানরূপে স্বীকৃত।[]

অক্সফোর্ডের পর ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে নিয়মিতভাবে দুই মৌসুম খেলেন। ১৮৭৮ সালে টাউন মলিংয়ে কেন্টের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮১ রান তুলেন।[]

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

মাঝারিমানের ব্যাটসম্যান হলেও দলের অন্যান্য শৌখিন খেলোয়াড়ের তুলনায় তিনি কিছুটা উন্নততর পর্যায়ে ছিলেন। ফলশ্রুতিতে লর্ড হ্যারিসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন ও ১৮৭৮-৭৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ঐ সফরে একটি খেলায় অংশ নেন যা পরবর্তীকালে ইতিহাসের তৃতীয় টেস্ট খেলারূপে স্বীকৃতি পায়।

১৮৭৯ সালে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ২ জানুয়ারি, ১৮৭৯ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ভার্নন রয়েলের। তবে এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।[] খেলায় তিনি ৩ ও ১৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। তবে, অস্ট্রেলিয়া দল অনায়াসেই ১০ উইকেটের জয় তুলে নেয়।[]

সব মিলিয়ে রয়েলের ফিল্ডিং ঐ সফরে বেশ দর্শনীয় ছিল। ৫০ বছর পর ১৯৩০ সালে উইজডেন এক স্মরণীকায় তুলে ধরে যে, তিনি নিজেকে তুলে ধরতে ব্যস্ত ছিলেন, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে দৌঁড়ুতেন ও নান্দনিকতার সাথে বল উইকেটে ফেরাতেন।[]

খেলার ধরন

[সম্পাদনা]

সর্বদাই কভার পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান করতেন ও পিচে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যানেরা তার পদচারণায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়তেন যা অনেক গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। অতি দুঃসাহসী ব্যাটসম্যানই দ্রুতগতিতে রান নেয়ার চেষ্টা করতো। ইয়র্কশায়ারের জনপ্রিয় ক্রিকেটার টম এমেট তার প্রসঙ্গে দ্য টাইমসের স্মরণীকায় মন্তব্য করেন যে, তিনি যেন এক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। তার সঙ্গী বল কাছে ফেলে রান নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন যখন রয়েল কভার পয়েন্ট অঞ্চলে অবস্থান করছিল।

১৯১৯ সালে দ্য টাইমস কভার অঞ্চলে ফিল্ডিংয়ের জ্যাক হবসের ক্ষিপ্রতায় দুইজন দীর্ঘদিনের দণ্ডায়মান ও জনপ্রিয় ক্রিকেটার গিলবার্ট জেসপ এবং সিড গ্রিগরি’র সাথে তুলনামূলকভাবে স্বল্প পরিচিত ভার্নন রয়েলকে সমমান হিসেবে চিত্রিত করে।[]

সফর থেকে চলে এসে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ও এলসট্রি স্কুলে পূর্ণাঙ্গকালীন শিক্ষকতা পেশায় মনোনিবেশ ঘটান। এরপরও তিনি ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ও ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন শৌখিন দলের বিপক্ষে খেলেন। ১৮৯১ সালের শেষদিকে ল্যাঙ্কাশায়ারের সদস্যরূপে লর্ডসে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) বিপক্ষে খেলেছিলেন। এরপর তিনি ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৮৯২ সালে প্রধানশিক্ষক হিসেবে স্ট্যানমোর পার্ক স্কুলে পদোন্নতি ঘটে। ১৯০১ সাল থেকে আমৃত্যু এ দায়িত্বে ছিলেন। ২১ মে, ১৯২৯ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে মিডলসেক্সের স্ট্যানমোর এলাকায় তার দেহাবসান ঘটে।[]

প্রকাশনা জগৎ

[সম্পাদনা]

ভার্নন রয়েল তার সফরের বিষয়ে দিনলিপিতে লিখে রাখতেন। ২০০১ সালে ‘লর্ড হ্যারিসেস টিম ইন অস্ট্রেলিয়া ১৮৭৮: দ্য ডাইরি অব ভার্নন রয়েল’ শীর্ষক গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[] এতে তিনি সফরকারী দলকে উদারচিত্তে বরণ করে নেয়ার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ১৮৭৯ সালের সিডনি দাঙ্গার বিষয়েও সংক্ষেপে তুলে ধরেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Scorecard: Middlesex v Oxford University"। www.cricketarchive.com। ১৯ জুন ১৮৭৬। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৩ 
  2. "Scorecard: Kent v Lancashire"। www.cricketarchive.com। ২২ আগস্ট ১৮৭৮। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৩ 
  3. "Vernon Royle"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৩ 
  4. "Scorecard: Australia v England"। www.cricketarchive.com। ২ জানুয়ারি ১৮৭৯। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৩ 
  5. "Deaths in 1929"। Wisden Cricketers' Almanack। Part I (1930 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 262। 
  6. "Cricket Reminiscences: An England XI"। The Times (42152)। London। ১৫ জুলাই ১৯১৯। পৃষ্ঠা 6। 
  7. "Obituaries: The Rev Vernon Royle"। The Times (45209)। London। ২২ মে ১৯২৯। পৃষ্ঠা 10। 
  8. Wisden 2002, p. 1535.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]