বিষয়বস্তুতে চলুন

পরশ পাথর (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পরশ পাথর
পরিচালকসত্যজিৎ রায়
প্রযোজকপ্রমোদ লাহিড়ী
রচয়িতাসত্যজিৎ রায়
উৎসপরশুরাম কর্তৃক 
পরশ পাথর
শ্রেষ্ঠাংশেতুলসী চক্রবর্তী
রানীবালা দেবী
কালী বন্দ্যোপাধ্যায়
জহর রায়
গঙ্গাপদ বসু
হরিধন মুখোপাধ্যায়
বীরেশ্বর সেন
মনি শ্রীমণি
ছবি বিশ্বাস
পাহাড়ী সান্যাল
সুরকাররবিশঙ্কর
চিত্রগ্রাহকসুব্রত মিত্র
সম্পাদকদুলাল দত্ত
পরিবেশকএডোয়ার্ড হ্যারিশন
মুক্তি
  • ১৭ জানুয়ারি ১৯৫৮ (1958-01-17)
স্থিতিকাল১১১ মিনিট
দেশভারত
ভাষাবাংলা

পরশ পাথর ১৯৫৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার একটি কাল্পনিক হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র। এটি অপু ত্রয়ীর পর সত্যজিৎ রায়ের প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র। এ চলচ্চিত্রটি তার প্রথম হাসির, যাদু ও পরাবাস্তব ছবি। চলচ্চিত্রটি রাজশেখর বসুর (পরশুরাম) ছোট গল্প "পরশ পাথর" অবলম্বনে তৈরি। চলচ্চিত্রটি একজন মধ্যবিত্ত কেরানিকে কেন্দ্র করে নির্মিত যিনি ভাগ্যক্রমে একটি পাথর কুড়িয়ে পান, যেটির স্পর্শে অন্যান্য বস্তু সোনায় পরিণত হয়।

কাহিনী সংক্ষেপ

[সম্পাদনা]

পরেশ দত্ত (তুলসী চক্রবর্তী) একজন সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত কেরানী। তিনি বৃষ্টির দিনে অফিস থেকে ফেরার পথে কার্জন পার্কে কুড়িয়ে পান একটি গোলাকৃতি পাথর। সেটি তাঁর পাড়াতুতো ভাইপো পল্টুকে খেলার জন্যে দিলে হঠাৎ জানা যায় লোহা ওই পাথরে স্পর্শ করলেই তা সোনা হয়ে যাচ্ছে। পরেশবাবু 'পরশ পাথর' পাওয়ার আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েন।

বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কলকাতায় তখন পরিত্যক্ত যুদ্ধাস্ত্রের ভাগাড়, সেখান থেকে লোহা তুলে নিয়ে পরেশবাবু সোনা করতে থাকেন। ক্রমে রাজনীতি এবং ব্যবসা জগতের একজন কেউকেটা হয়ে যান। সেক্রেটারি রাখেন প্রিয়তোষ হেনরী বিশ্বাস (কালী বন্দ্যোপাধ্যায়) নামে একটি খৃষ্টান তরুণকে। বিভিন্ন সভা-সমিতি, পার্টি এবং অনুষ্ঠানে তাঁর ডাক পড়তে থাকে।

একদিন ফাঁস হয়ে যায় পরেশবাবু এত সম্পত্তি কীভাবে করেছেন। দেশে তোলপাড় শুরু হয়, সোনার দাম পড়ে যাওয়ার আশংকায় লোকে জমানো সোনা বেচতে থাকে।

প্রিয়তোষকে পাথরটি ও অন্যান্য সম্পত্তি দান করে পরেশবাবু স্ত্রীর সাথে তীর্থ দর্শনে বেরিয়ে পড়েন কিন্তু পুলিশ তাঁদের আটকায় ও থানায় ধরে নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে প্রিয়তোষ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে পাথরটি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। হাসপাতালে এক্স-রে করে দেখা যায় প্রিয়তোষ পাথরটা ক্রমশ হজম করে ফেলছে। ডাক্তার (মনি শ্রীমানি) জানান এই অবস্থায় অপারেশন সম্ভব নয়। পুলিশ কোনোভাবেই সেটা উদ্ধার করতে পারেনা। পাথরটি সম্পূর্ণ হজম হয়ে গেলে এযাবৎ যত লোহা সোনায় রূপান্তরিত হয়েছিল সব পূর্বাবস্থায় চলে আসে। মুক্তি পেয়ে পরেশবাবু স্ত্রী, সেক্রেটারি ও চাকর (জহর রায়) কে নিয়ে গড়ের মাঠে জুড়িগাড়ি চড়ে বেরিয়ে পড়েন। তাঁর পরিশ্রমী ও বাস্তব জীবন আবার নতুন করে শুরু হয়।

অভিনয়ে

[সম্পাদনা]

এছাড়া ছবি বিশ্বাস, জহর গাঙ্গুলি, পাহাড়ী সান্যাল, কমল মিত্র , নীতিশ মুখোপাধ্যায়, সুবোধ গাঙ্গুলি, তুলসী লাহিড়ী, অমর মল্লিক, চন্দ্রাবতী দেবী, রেণুকা রায় এবং ভারতী দেবী ককটেল পার্টিতে আগত অতিথির ভূমিকায় অভিনয় করেন।

অভ্যর্থনা

[সম্পাদনা]

সত্যজিৎ রায় নিজেই এই চলচ্চিত্রটিকে "কৌতুক, কল্পনা, ব্যঙ্গ, প্রহসন এবং উদ্দীপনার সংমিশ্রণ" হিসেবে আখ্যা দেন। চলচ্চিত্রটি ১৯৫৮ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রবেশ করে,[] সেখানে এটি পাম ডি'অর (শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র) বিভাগে প্রতিযোগিতা করে।[]

সংরক্ষণ

[সম্পাদনা]

২০০৭ সালে একাডেমি ফিল্ম আর্কাইভ পরশ পাথর চলচ্চিত্রের একটি কপি নিজেদের সংরক্ষণে রাখে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Festival de Cannes: Parash Pathar"festival-cannes.com। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  2. "Awards for Satyajit Ray"ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  3. "Preserved Projects"একাডেমি ফিল্ম আর্কাইভ

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]