তৃতীয় আম্পায়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তৃতীয় আম্পায়ার কর্তৃক পরিচালিত বাতি প্রদর্শন

থার্ড আম্পায়ার বা তৃতীয় আম্পায়ার (ইংরেজি: Third umpire) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা পরিচালনায় নিয়োজিত আম্পায়ারদ্বয়ের অন্যতম সহায়ক শক্তি। তবে, তিনি সরাসরি মাঠে খেলা পরিচালনা না করে স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট কক্ষে অবস্থান করেন। টেলিভিশনের পর্দায় মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে স্থাপিত ক্যামেরার পুণঃপুণঃ দৃশ্যমালার সাহায্য নিয়ে থাকেন। আম্পায়ারদ্বয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতাজনিত কারণে কিংবা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিরসনে প্রধান ভূমিকা রাখেন। তিনি চূড়ান্ত ও সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করে খেলাকে গতিশীল রাখেন। সেজন্যে তিনি টিভি আম্পায়ার নামেও পরিচিত। তিনি মাঠে অবস্থানকারী আম্পায়ারদ্বয়কে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেন। রেডিও লিঙ্কের সাহায্যে তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গী আম্পায়ারের কাছে প্রকাশ করেন, মাঠে স্থাপিত আম্পায়ার লাইটের মাধ্যমে লাল অথবা সবুজ রঙের বাতিতে প্রয়োজনীয় সঙ্কেত প্রদান করে থাকেন। আউট, ক্যাচ, রান আউট, স্ট্যাম্পিং কিংবা বাউন্ডারীর ন্যায় সিদ্ধান্তগুলোর প্রাসঙ্গিকতা ও সত্যাসত্য যাচাই করেন।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শ্রীলঙ্কার সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার মহিন্দ বিজেসিংহে তৃতীয় আম্পায়ারের ধারণার প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। ১৯৯২ সালে ডারবানের কিংসমিডে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ভারতের মধ্যকার খেলার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তৃতীয় আম্পায়ার ব্যবস্থা প্রচলিত হয়।[১] কার্ল লিবেনবার্গ এবং সিরিল মিচলেটেস্টে টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শচীন তেন্ডুলকর টেলিভিশনে পুণঃপ্রদর্শনের মাধ্যমে রান আউট হয়েছিলেন।[২]

প্রয়োগ[সম্পাদনা]

রান আউট কিংবা স্ট্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানকে আউট করার নিয়ম প্রচলিত আছে। কিন্তু ব্যাটসম্যানের পা অথবা ব্যাট যদি পপিং ক্রিজে লেগে থাকে সেক্ষেত্রে সন্দেহ দূর করার স্বার্থে তৃতীয় আম্পায়ারের শরণাপন্ন হতে হয়। অথবা বলের সাহায্য নিয়ে বেল ফেলে দেয়া কিংবা ক্যাচ নেয়ার ক্ষেত্রে বল মাটি স্পর্শ করেছে কি-না সেক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ার সহায়তা করেন। যদি ব্যাটসম্যান আউট হন তাহলে তিনি ট্রাফিক বাতির ন্যায় লাল বাতি জ্বালান। আর অপরাজিত থাকলে তিনি সবুজ বাতি প্রজ্জ্বলন করেন। যদি মাঠে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড থাকে, তাহলে নট আউট, আউট, ডিসিশন পেন্ডিং ইত্যাদি শব্দ দৃশ্যমান হয়। সচরাচর তৃতীয় আম্পায়ারও সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে ব্যাটসম্যানের অনুকূলে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ প্রয়োগ করে খেলা চলমান রাখা হয়।

রান আউটের ক্ষেত্রে একই সময়ে প্রান্ত সীমায় পৌঁছানোর প্রাক্কালে কোন ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে, তা নিয়েও সন্দেহের দোলাবর্তে তৃতীয় আম্পায়ার সহযোগিতা করেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৬ সালে নিউজিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ৩য় টেস্টে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ""Third umpire: some thoughts". The Sportstar."। ২৭ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১২ 
  2. "Wisden: 1st Test South Africa v India 1992-93". cricinfo.com.
  3. Bizarre Runout