জে. জে. ফেরিস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জন ফেরিস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন জেমস ফেরিস
জন্ম(১৮৬৭-০৬-২১)২১ জুন ১৮৬৭
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু১৭ নভেম্বর ১৯০০(1900-11-17) (বয়স ৩৩)
ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম ফাস্ট
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক২৮ জানুয়ারি ১৮৮৭ 
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২২ মার্চ ১৮৯২ 
ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১০ ১৯৮
রানের সংখ্যা ১১৪ ৪,২৬৪
ব্যাটিং গড় ৮.৭৬ ১৫.৬৭
১০০/৫০ ০/০ ১/১৫
সর্বোচ্চ রান ২০* ১০৬
বল করেছে ২,৩০২ ৩৮,৩৯৬
উইকেট ৬১ ৮১২
বোলিং গড় ১২.৭০ ১৭.৫৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ৬৩
ম্যাচে ১০ উইকেট ১১
সেরা বোলিং ৭/৩৭ ৮/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪/০ ৯১/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ৯ জানুয়ারি ২০১৬

জন জেমস ফেরিস (ইংরেজি: J. J. Ferris; জন্ম: ২১ মে, ১৮৬৭ - মৃত্যু: ১৭ নভেম্বর, ১৯০০) সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি সুইং বোলার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এছাড়াও বামহাতে ব্যাটিং করতেন জে. জে. ফেরিস। স্বল্প কয়েকজন ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে একাধিক দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ক্রিকেট ইতিহাসে অসামান্য নজির স্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার বিলি মিডউইন্টার, বিলি মারডক, জন ফেরিস, স্যামি উডসআলবার্ট ট্রট। তারা প্রত্যেকেই ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে খেলতেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

১৮৮৬-৮৭ মৌসুমে আলফ্রেড শয়ের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্য হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। খেলায় তিনি সাত উইকেট পান। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসেই তিনি পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন।[১] এরপর আরও কয়েকটি খেলায় সুন্দর ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনার ফলে সিডনিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে খেলার সুযোগ পান।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

২৮ জানুয়ারি, ১৮৮৭ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয় যা তাদের ৪৫ রান অদ্যাবধি সর্বনিম্ন রান হিসেবে স্বীকৃত। চার্লি টার্নারকে নিয়ে তিনি এ ধ্বংসযজ্ঞ চালান। খেলায় তিনি নয় উইকেট পান ও দ্বিতীয় ইনিংসে বিলি বার্নসের ৬/২৮ লাভের প্রেক্ষিতে মাত্র ১৩ রানের জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড দল। দ্বিতীয় টেস্টে আবারো নয় উইকেট পান। কিন্তু ইংল্যান্ড পুনরায় জয় পায়। ১৮৮৭-৮৮ সালে সফরের একমাত্র টেস্টে তিনি কেবলমাত্র শীর্ষ ছয় ইংরেজ ব্যাটসম্যানের উইকেট নিয়েছিলেন। ১৮৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে ইংল্যান্ড যান। লর্ডসে প্রথমবারের মতো তার খেলোয়াড়ী জীবনে টেস্ট জয়ী দলের সদস্য হন। টার্নারের সাথে জুটি গড়ে দু’জনে আঠারো উইকেট দখল করলে অস্ট্রেলিয়া ৬১ রানে জয় পায়। স্বাগতিক দল পরবর্তী দুই টেস্টে জয় পেলে অ্যাশেজ ট্রফি ইংল্যান্ডের কাছেই রয়ে যায়।

১৮৯০ সালে তিনি পুনরায় ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৩ উইকেট নিলেও তার দল আরেকটি সিরিজে পরাজিত হয়। ঐ মৌসুমে তিনি ১৮৬ উইকেট তুলেছিলেন। এবার তিনি স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। ১৮৯১-৯২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের পক্ষে একমাত্র টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলেন। স্মর্তব্য যে, তার সাবেক অস্ট্রেলীয় সঙ্গী বিলি মারডকও ইংল্যান্ডের পক্ষে ঐ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ সময়ে এটি টেস্টের মর্যাদা না পেলেও পরবর্তীকালে দেয়া হয়। ফেরিস স্বাগতিক দলকে ইনিংস ও ১৮৯ রানের ব্যবধানে জয়ী হতে সহায়তা করেন। এ টেস্টটিই তার সর্বশেষ টেস্ট ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১২.৭০ গড়ে ৬১ টেস্ট উইকেট পান। কেবলমাত্র জর্জ লোহম্যান তার তুলনায় ভালো বোলিং গড়ের অধিকারী ছিলেন।

পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনের বোলিং গড়
চার্লস ম্যারিয়ট (ইংল্যান্ড)
৮.৭২
ফ্রেডরিক মার্টিন (ইংল্যান্ড)
১০.০৭
জর্জ লোহম্যান (ইংল্যান্ড)
১০.৭৫
লরি ন্যাশ (অস্ট্রেলিয়া)
১২.৬০
জন ফেরিস (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১২.৭০
টম হোরান (অস্ট্রেলিয়া)
১৩.০০
হ্যারি ডিন (ইংল্যান্ড)
১৩.৯০
আলবার্ট ট্রট (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১৫.০০
মাইক প্রোক্টর (দক্ষিণ আফ্রিকা)
১৫.০২
জ্যাক আইভারসন (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.২৩
টম কেন্ডল (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৩৫
অ্যালেক হারউড (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৪৫
বিলি বার্নস (ইংল্যান্ড)
১৫.৫৪
জন ট্রিম (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
১৬.১৬
বিলি বেটস (ইংল্যান্ড)
১৬.৪২

তথ্য: ক্রিকইনফো
যোগ্যতা: পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনে কমপক্ষে ১০ উইকেট।

অবসর[সম্পাদনা]

১৮৯২ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েক মৌসুম কাউন্টি ক্রিকেটে অতিবাহিত করেন। গ্লুচেস্টারশায়ারের সদস্য হিসেবে ১৮৯৩ সালে একমাত্র সেঞ্চুরি হাঁকান। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে ১৮৯৫-৯৬ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ঐ খেলায় ব্যাটিং উদ্বোধনে নামলেও শূন্য রানে আউট হন। এরপর ১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে আরও দুই খেলায় অংশ নেন। শেষ খেলায় অর্ধ-শতক করলেও তিনি কোন বল করেননি।

ফেরিসের পতন ঘটে মর্মান্তিকভাবে। দ্বিতীয় বোরের যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হন। কিন্তু জ্বরে ভোগেন ও মাত্র ৩৩ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে তার দেহাবসান ঘটে।[২]

১৮৮৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের একজনরূপে মনোনীত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "1st Test: Australia v England at Sydney, 28–31 January 1887"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১ 
  2. Allen, W. H. (1906), National Review (London) – Volume 46

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]