উইল্ফ বারবার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উইল্ফ বারবার
আনুমানিক ১৯৩৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে উইল্ফ বারবার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামউইলফ্রেড বারবার
জন্ম(১৯০১-০৪-১৮)১৮ এপ্রিল ১৯০১
ক্লেকহিটন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮(1968-09-10) (বয়স ৬৭)
ব্রাডফোর্ড, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৮৪)
১৩ জুলাই ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৭ জুলাই ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৬ - ১৯৪৭ইয়র্কশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭৩
রানের সংখ্যা ৮৩ ১৬৪০২
ব্যাটিং গড় ২০.৭৫ ৩৪.৩৮
১০০/৫০ ২৯/৭৮
সর্বোচ্চ রান ৪৪ ২৫৫
বল করেছে ৭৫৯
উইকেট ১৬
বোলিং গড় ০.০০ ২৬.১৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/০ ২/১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১৮২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩১ আগস্ট, ২০১৯

উইলফ্রেড বারবার (ইংরেজি: Wilf Barber; জন্ম: ১৮ এপ্রিল, ১৯০১ - মৃত্যু: ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮) ক্লেকহিটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন উইল্ফ বারবার

১৯২৬ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত উইল্ফ বারবারের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পদচারণ ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন উইল্ফ বারবার। ১৩ জুলাই, ১৯৩৫ তারিখে লিডসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। এরপর, ২৭ জুলাই, ১৯৩৫ তারিখে ম্যানচেস্টারের একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও মাঝে-মধ্যে মাঝারিসারিতে ব্যাটিং করতে তাকে দেখা যেতো। ৩৪.৮২ গড়ে ২৮ সেঞ্চুরি সহযোগে ১৬৪০২ রান তুলেছিলেন তিনি। ১৯২৬ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় উইল্ফ বারবারের। পরবর্তী কয়েকবছর বেশকিছুসংখ্যক খেলায় অংশ নেন। রক্ষণাত্মক ঢংয়ে বেশ দক্ষতার পরিচয় দেন। কিন্তু, ১৯৩২ সালের পূর্ব-পর্যন্ত প্রথম একাদশের সদস্য হতে পারেননি। ১৯৩২ সালে প্রথমবারের মতো সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করার কৃতিত্ব দেখান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে এ কৃতিত্ব তিনি সর্বমোট আটবার প্রদর্শন করেছিলেন। এ পর্যায়ে ১৯৩৫ সালে দুই সহস্রাধিক রান তুলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্ব-পর্যন্ত ইয়র্কশায়ার দলের নিয়মিত সদস্যরূপে খেলতে থাকেন।

যুদ্ধের পর আরও একটি পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলেন। এরপর ১৯৪৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর নেয়ার পরও ক্লাব ক্রিকেটে সক্রিয় ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে স্থানীয় দলের কোচের দায়িত্বে অবতীর্ণ হন। ১৯৬৮ সালে মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিলেন।

কাউন্টি ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ইয়র্কশায়ারের ক্লেকহিটন এলাকায় উইল্ফ বারবারের জন্ম। ১৯২৬ সালে ২৫ বছরে পদার্পণ ঘটার পূর্ব-পর্যন্ত ইয়র্কশায়ার দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে খেলার সুযোগ পাননি। ঐ বছর ৬০০ রান তুলেন তিনি। ৪০ গড়ে সংগৃহীত ঐ রান সংগ্রহকালীন একটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন।[১] একই মৌসুমে ইয়র্কশায়ারের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় অবশ্য কোন ইনিংসেই ব্যাট হাতে মাঠে নামার সৌভাগ্য হয়নি তার। কিন্তু শক্তিধর ইয়র্কশায়ারের সমৃদ্ধ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে খুব সহজেই জয়ের সন্ধান পেয়েছিল।[২] পরের মৌসুমে তিন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সর্বোচ্চ রান তুলেন ১৮।[৩]

পরবর্তীতে কয়েকবছর অনেক ব্যাটসম্যানের প্রাচুর্যতার কারণে ইয়র্কশায়ার দলে নিয়মিত স্থানে লাভের জন্যে তাকে অনেক চড়াই উৎরাই পার করতে হয়।[৪] ১৯২৮ সালে উইল্ফ বারবার ১৬ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। অধিকাংশক্ষেত্রেই অন্যান্য ব্যাটসম্যানের প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে শূন্যতা পূরণে তাকে খেলানো হয়েছিল।[৩][৫] তন্মধ্যে, ১৯২৮ সালে ইংল্যান্ডে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে ৯৮ রানের মূল্যবান ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। এটিই তার প্রথম অর্ধ-শতরানের ইনিংস ছিল।[৬] এরপর তিনি আরও দুইটি অর্ধ-শতরান সংগ্রহ করেছিলেন।[৩] পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে ইংল্যান্ডে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো শতরানের ইনিংস খেলেন। ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলীয় সংগ্রহ ৩৩৫ হলেও অন্য কোন ব্যাটসম্যানই অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে পারেননি।[৭] এ পর্যায়ে সর্বমোট ২২ খেলায় অংশ নিয়ে ৩০.৬০ গড়ে ৮৫৭ রান তুলেছিলেন তিনি।[৩] তন্মধ্যে, গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।[৮] তাসত্ত্বেও, পরবর্তী দুই মৌসুমে দলে আসা-যাওয়ার পালায় থাকতে হয়েছিল তাকে। এ দুই মৌসুমের কোনটিতেই ২০ খেলায় অংশগ্রহণ করেননি কিংবা ৫০০ রান তুলতে পারেননি। কেবলমাত্র চারবার অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে সক্ষম হয়েছিলেন উইল্ফ বারবার।[৩]

১৯৩২ সালে ইয়র্কশায়ারের দীর্ঘদিনের নিয়মিত খেলোয়াড় ও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পার্সি হোমস অসুস্থতার কবলে পড়লে খেলার সুযোগ পান তিনি। ব্যাটিংয়ের শূন্যতা পূরণে বারবারকে নিয়মিতভাবে খেলতে দেখা যায়। দলের স্থান নিশ্চিত করতে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। ২৫.৬৪ গড়ে ঠিক ১,০০০ রান তুলেন। এক মৌসুমে এটিই তার প্রথম চার অঙ্কের রান ছিল।[৩][৪] ইয়র্কশায়ারের ব্যাটিং গড়ে পঞ্চম স্থান দখল করেন। প্রথমবারের মতো এটিই তার শীর্ষস্থান অধিকার ছিল।[৯][১০][১১][১২][১৩] এছাড়াও প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলে ইয়র্কশায়ারের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকায় রাখেন।[১৪]

এ সফলতা লাভের পর উইল্ফ বারবারের খেলায় ক্রমাগত উত্তরণ ঘটতে থাকে। রান সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যাটিং গড় বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৩ ও ১৯৩৫ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দুইবার ইয়র্কশায়ারের শিরোপা লাভে ভূমিকা রাখেন।[১৪] ১৯৩৩ সালে ৩৩.৯৩ গড়ে ১৫৯৫ ও ১৯৩৪ সালে ৪০.১৪ গড়ে ১৯২৭ রান তুলেন।[৩] উভয় মৌসুমেই তিনি ইয়র্কশায়ারের গড়ে চতুর্থ স্থানে ছিলেন।[১৫][১৬] পরিসংখ্যানগতভাবে পরের বছর নিজস্ব সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন তিনি। ১৯৩৫ সালে রান সংগ্রহ ও গড়ের দিক দিয়ে ব্যক্তিগত সেরা নৈপুণ্য দেখান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একবারই দুই হাজার রানের কোটা স্পর্শ করেন। ৪২.০৯ গড়ে ২১.৪৭ রান তুলেছিলেন তিনি। এরফলে, ইয়র্কশায়ারের রান গড়ের দিকে দিয়ে চতুর্থ স্থানে অধিকার করেন।[৩][১৭] ফলশ্রুতিতে, লর্ডসে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে খেলার জন্যে মনোনীত হন তিনি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একবারই এ সুযোগ পান। জেন্টলম্যানের বিপক্ষে তিনি ৬১ ও অপরাজিত ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন।[১৮][১৯]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৩৫ সালে উইল্ফ বারবারেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার জন্যে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনীত করা হয়। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পরাজিত হয়ে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পর তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে খেলেন। এ মৌসুমে ইয়র্কশায়ারের ছয়জন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে তাকে ইংরেজ দলে নেয়া হয়েছিল।

চার ইনিংসে তিনি মাত্র ৮৩ রান তুলতে সক্ষম হন। চতুর্থ টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৪ রান তুলেন। তবে, ঐ টেস্টগুলোয় ইংল্যান্ড কেবলমাত্র ড্র করতে সক্ষম হয়। চূড়ান্ত খেলায় তাকে দলের বাইরে রাখা হয়েছিল। এছাড়াও নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে গড়া টেস্টে নিজস্ব দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত বলে একটি উইকেট পেয়েছিলেন।[৪][২০][২১] এ খেলাগুলোর পর এমসিসি’র ব্যবস্থাপনায় এরল হোমসের অধিনায়কত্বে শীতকালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে টেস্টবিহীন সফরে অংশ নেন। জ্যেষ্ঠ ও পেশাদার খেলোয়াড় হলেও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি। তবে, নিউজিল্যান্ডে প্রতিনিধিত্বমূলক দলের বিপক্ষে ৬০.৮৩ গড়ে ৩৬৫ রান তুলেছিলেন। এ সফরে সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৪১.৯৪ গড়ে ৭৯৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে, দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।[৪]

আর কোন টেস্টে খেলায় অংশ না নিলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব-পর্যন্ত চার মৌসুমে নিয়মিতভাবে রান তুলেছিলেন। ১৯৩৬ সালে ৯৯৩ রান তুললেও প্রতি মৌসুমেই প্রায় দেড় হাজার রান তুলেন। ১৯৩৮ সালে ৩৪-এর নিচের রান পেয়েছিলেন। এ সময়ে তার ব্যাটিং গড় ৩৬ থেকেও ৩৮-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।[৩] ১৯৩৬ সালে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটিংয়ে গড়ে দ্বিতীয়, ১৯৩৭ ও ১৯৩৯ সালে চতুর্থ হলেও ১৯৩৮ সালে ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করেছিলেন।[২২][২৩][২৪][২৫] যুদ্ধের পর আর একটিমাত্র পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে খেলেন। ১৯৪৬ সালে ৩০ গড়ে ১১৭০ রান তুলে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটিং গড়ে চতুর্থ স্থান লাভ করেন। এ সংগ্রহটি অষ্টম ও শেষবারের মতো এক মৌসুমে সহস্র রান সংগ্রহের ঘটনা ছিল।[৩][২৬] এ মৌসুমগুলোয় উইল্ফ বারবারের রান ইয়র্কশায়ারের ১৯৩৭ থেকে ১৯৩৯ ও যুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে চারবার ধারাবাহিক শিরোপায় অসাধারণ ভূমিকা রাখে।[১৪] খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে ১৯৪৭ সালে আরও তিনটি খেলায় অংশ নেন।[৩] ১৯৩২ সালে দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভের পর ১৯৪৬ সালে সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলাকালীন মোট সাতবার চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি।[১৪]

অর্জনসমূহ[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৯ শতক সহযোগে ১৬৪০২ রান তুলেন। এছাড়াও ১৮২টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন উইল্ফ বারবার।[২৭] ১৯৩০-এর দশকে হার্বার্ট সাটক্লিফ, মরিস লেল্যান্ডআর্থার মিচেলের পর ইয়র্কশায়ারের ‘চতুর্থ ব্যাটিং মেরুদণ্ড’ হিসেবে জেরাল্ড হাওয়াট তাকে মূল্যায়িত করেন।[২৮] সচরাচর রক্ষণাত্মক ঢংয়ের অধিকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন।[৪] জিম কিলবার্ন মন্তব্য করেছিলেন যে, বারবার ছোট খাঁটো গড়নের অধিকারী হলও খেলার ধরন দৃষ্টিনন্দন ছিল।[২৮] অফ সাইডের দিকে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন ও রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বনে বেশ ভালো জ্ঞান রাখতেন।[৪] তবে, টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে লেগ সাইডে বেশ শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন।[২০]

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হলেও মাঝে-মধ্যে নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে নামতেন তিনি।[১] চাপমুক্ত অবস্থায় খেলতে ভালোবাসতেন। দলের বিপর্যয়কালীন কিংবা বোলিং উপযোগী পিচে তাকে রুখে দাঁড়াতে দেখা যায়নি।[২৮] বিল বোসের অভিমত, তিনি সঠিকমানের ও অর্থোডক্স ব্যাটসম্যান হিসেবে তার দেখা সেরা খেলোয়াড় ছিলেন।[২৯] এমনকি লেন হাটনের চেয়েও তিনি এগিয়েছিলেন।[৪] উইল্ফ বারবার দয়ালু ও লাজুক প্রকৃতির ছিলেন।[১] তিনি খেলায় তার অবদানের বিষয়কে পর্যাপ্ত হিসেবে গণ্য করতেন না; এমনকি সেঞ্চুরি করার পরও আক্ষেপ প্রকাশ করতেন।[২৯] তার মৃত্যুতে উইজডেন মন্তব্য করে যে, খেলায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন।[৪]

১৯৩৫ সালে সারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৫৫ রান তুলেন। এ ইনিংসে তিনি ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন ও উপর্যুপরী তিনটি শতরানের জুটি গড়েন।[৩০] এছাড়াও, ১৯৩৪ সালে কেন্টের বিপক্ষে ২৪৮ রান তুলেন। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রান করলেও কেন্ট ১৪৮ রানে এগিয়েছিল। খেলার দ্বিতীয় দিনে ১৪৮ রানে এগিয়ে থাকে তার দল। লেন হাটনের সাথে প্রথম উইকেটে ২৬৭ রান তুলেন। এ খেলায় ইয়র্কশায়ার ড্র করেছিল।[৩১] ইয়র্কশায়ারের পক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সাতবার শতরানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, আর্থার মিচেলের সাথে চারটি জুটি গড়েন। অন্য ছয়টি ২০০ রানের ছিল। ১৯৩২ সালে মিডলসেক্সের বিপক্ষে মরিস লেল্যান্ডের সাথে সাড়ে চার ঘণ্টায় ৩৪৬ রান তুলেন। এটি ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় উইকেটে রেকর্ডসংখ্যক রান ছিল। ডিপ অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন। উইজডেন কর্তৃপক্ষ তার এই ফিল্ডিংকে প্রথম-শ্রেণীররূপে গণ্য করেছে।[৪] বিল বোস বলেন, প্রায় সাড়ে তিন বছর তার বোলিংয়ে লেগ সাইডে অবস্থান করে বাউন্ডারী সীমানায় কোন ক্যাচ হাতছাড়া করেননি।[৩২]

অবসর[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সেও ক্লাব ক্রিকেটে দূর্দান্ত পদচারণ ছিল উইল্ফ বারবারের। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত লিজেট গ্রীন ও কিং ক্রসের পক্ষে খেলেন।[১] ১৯৫২ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সেন্ট্রাল ইয়র্কশায়ার লীগে মিরফিল্ডের পক্ষে খেলেন। ১৯৫২ সালে পুণর্গঠনের পর ক্লাবের প্রথম পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন। এ সময়ে ক্লাবের পক্ষে এগারোটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন ও একবার ব্যাটিংশৈলীর কারণে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।[৩৩]

মিরফিল্ড থেকে চলে আসার পর নর্থ রাইডিং এডুকেশনাল অথরিটিজের কোচের দায়িত্বে ছিলেন।[১] এরপর হ্যারোগেটের স্কুলে কোচ ও মাঠ কর্মকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ৬৭ বছর বয়সে ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮ তারিখে স্বল্পকালীন রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রাডফোর্ডের হাসপাতালে উইল্ফ বারবারের দেহাবসান ঘটে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Woodhouse, Anthony (১৯৮৯)। The History of Yorkshire County Cricket Club। London: Christopher Helm। পৃষ্ঠা 345আইএসবিএন 0-7470-3408-7 
  2. "Yorkshire v Worcestershire in 1926"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১০ 
  3. "First-class Batting and Fielding in Each Season by Wilf Barber"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  4. "Wilfred Barber"Wisden Cricketers' Almanack। John Wisden & Co.। ১৯৬৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  5. Hodgson, p. 122.
  6. "Yorkshire v West Indians in 1928"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  7. "Yorkshire v South Africa in 1929"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  8. "Yorkshire v Glamorgan in 1928"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১০ 
  9. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1928"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  10. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1929"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  11. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1930"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  12. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1931"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  13. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1932"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  14. "County Champions 1890 to present"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১০ 
  15. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1933"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  16. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1934"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  17. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1935"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  18. "Gentlemen v Players in 1935"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  19. "First-class Batting and Fielding For Each Team by Wilf Barber"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  20. "England v South Africa 1935"Wisden Cricketers' Almanack। John Wisden & Co.। ১৯৩৬। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  21. "HowSTAT! Player Progressive Batting"। HowSTAT। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  22. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1936"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  23. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1937"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  24. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1938"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  25. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1939"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  26. "First-class Batting and Fielding for Yorkshire in 1946"। CricketArchive। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  27. "Player profile Wilf Barber"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  28. Hodgson, p. 123.
  29. Bowes, p. 145.
  30. "Yorkshire v Surrey in 1935"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১০ 
  31. "Yorkshire v Kent in 1934"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১০ 
  32. Bowes, p. 85.
  33. "Wilf Barber" (পিডিএফ)। The Cricket History of Calderdale and Kirklees। Archived from the original on ২৮ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]