আঁকন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

Red Lacewing
আঁকন
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: সন্ধিপদী
শ্রেণী: পতঙ্গ
বর্গ: লেপিডোপ্টেরা
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Cethosia
প্রজাতি: C. biblis
দ্বিপদী নাম
Cethosia biblis
(Drury, 1773)

আঁকন[১](বৈজ্ঞানিক নাম: Cethosia biblis (Drury)) যার ডানা দুটি খাঁজকাটা এবং কমলাটে লাল বর্ণের। ডানায় সার বাঁধা V আকৃতির পটি দেখা যায়।[২] এরা নিমফ্যালিডি পরিবার এবং হেলিকোনায়িনি উপগোত্রের সদস্য।

আকার[সম্পাদনা]

আঁকন এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৬৫-৯০মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত আঁকন এর উপপ্রজাতিসমূহ হল-[৩]

  • Cethosia biblis tisamena Fruhstorfer, 1912 – Himalayan Red Lacewing
  • Cethosia biblis andamanica Stichel, 1902 – Andaman Red Lacewing
  • Cethosia biblis nicobarica Felder, 1862 – Nicobar Red Lacewing

বিস্তার[সম্পাদনা]

ভারতে সিকিম থেকে অরুণাচল প্রদেশ[৪] পর্যন্ত এদের দেখা যায়। এছাড়া নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারেও আঁকনদের বিস্তার রয়েছে। [২] সাধারণত নিচু পাহাড়ি অঞ্চলে এদের দেখা যায়। তবে ৭০০০ফুট উচ্চতায় সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ সারা বছরই এদের দেখা মেলে।[৫]

পশ্চিমবঙ্গে উপস্থিতি[সম্পাদনা]

কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল উত্তরবঙ্গ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল
দুর্লভ সাধারণত দেখা মেলে

বর্ণনা[সম্পাদনা]

আঁকন একটি মাঝারি আকারের প্রজাপতি, যার ডানা খোলা অবস্থায় প্রায় ৮-৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছায়। এই প্রজাতির মধ্যে যৌন দ্বিরূপতা বিদ্যমান অর্থাৎ পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজাপতি দেখতে আলাদা। পুরুষদের ক্ষেত্রে ডানার উপরের দিক উজ্জ্বল কমলা লাল, সাদা দাগ সহ কালো রেখা দ্বারা ফ্রেমযুক্ত। ডানার নীচের দিকগুলি উজ্জ্বল লাল থেকে ফ্যাকাশে বাদামী, কালো এবং সাদা দ্বারা আবদ্ধ। স্ত্রীদের ডানার পৃষ্ঠীয় দিক ধূসর-বাদামী বর্ণের এবং কালো দাগ এবং সাদা ব্যান্ড এবং কালো ফ্রেমযুক্ত।

এই প্রজাতির শুঁয়োপোকার দেহে বেশ কয়েকটি লালচে, কালো এবং সাদা ডোরা বিদ্যামন। এর মাথা কালো রঙের এবং লম্বা কালো স্পাইক রয়েছে যাতে বিষ থাকে। শুঁয়োপোকা অবস্থায় তারা প্রধানত বিষাক্ত গাছপালা খায়, প্রধানত জংলি ঝুমকো প্রজাতির।

আচরণ[সম্পাদনা]

আঁকনরা রৌদ্র পছন্দ করে। প্রায়শই এদের মাটির কাছাকাছি গাছের পাতায় ডানা মেলে বসে থাকে। ফুলের প্রতি এদের আসক্তি আছে।[১] এছাড়া মাটিতে পড়ে থাকা পচা ফলের রস পান করতে দেখা যায়।[২]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

ডিম[সম্পাদনা]

এরা একসাথে অনেকগুলি করে ডিম পাড়ে।[৫]

শূককীট[সম্পাদনা]

শূককীট সরু এবং লম্বা হয়। সারা দেহে কাঁটা দেখা যায়। প্রতিটি দেহখন্ড কালো রেখা দিয়ে আলাদা করা থাকে। পরপর দুটি কালো দেহখন্ডের মাঝে সাদা-গোলাপি রঙের পটি দেখা যায়। বেশির ভাগ কাঁটা এই সাদা-গোলাপি পটি থেকে বেরোয় এবং পিঠের পাঁশ ঘেঁষে যে কাঁটা গুলি রয়েছে তারা দৈর্ঘ্যে বড়। এদের শ্বাস ছিদ্রগুলো কালো বর্ণের এবং এগুলোকে ঘিরে সাদা বৃত্ত দেখা যায়। মাথা কালো বর্ণের এবং মাথার সামনেও দুটি শিং দেখা যায়।[২]

আহার্য উদ্ভিদ[সম্পাদনা]

এই শূককীট Passiflora গোত্রের কিছু উদ্ভিদ যেমন-Passiflora cochinchinensis, Passiflora moluccana,(ঝুমকোলতা)Passiflora foetida[১] গাছের পাতার রসালো অংশ আহার করে।

মূককীট[সম্পাদনা]

মূককীট গাঢ় সোনালি-বাদামী বর্ণের এবং তার উপর জলপাই-খয়েরি রঙ এর ছোপ দেখা যায়। এর শরীরে একাধিক কাঁটা দেখা যায়।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ২০৬। 
  2. Dāśagupta, Yudhājit̲̲̲̲̲̲a (২০০৬)। Paścimabaṅgera prajāpati (1. saṃskaraṇa. সংস্করণ)। Kalakātā: Ānanda। পৃষ্ঠা 107–108। আইএসবিএন 81-7756-558-3 
  3. "Cethosia biblis Drury, 1770 – Red Lacewing "। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৬  line feed character in |শিরোনাম= at position 45 (সাহায্য)
  4. Bhuyan et al,, M.। "BUTTERFLIES OF THE REGIONAL RESEARCH LABORATORY CAMPUS,JORHAT, ASSAM" (পিডিএফ)ZOOS' PRINT JOURNAL। পৃষ্ঠা 1910-1911। আইএসএসএন 0971-6378। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭  line feed character in |শিরোনাম= at position 30 (সাহায্য)
  5. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 356। আইএসবিএন 978 019569620 2 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]