রয়াল (প্রজাপতি)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রয়াল
Yellow pansy
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Junonia
প্রজাতি: J. hierta
দ্বিপদী নাম
Junonia hierta
(Fabricius, ১৭৯৮)[১]
প্রতিশব্দ
  • Precis hierta
  • Papilio hierta Fabricius, ১৭৯৮
  • Papilio lintingensis Osbeck, ১৭৬৫
  • Junonia cebrene Trimen, ১৮৭০
  • Precis oenone var. cebrene ab. demaculata Neustetter, ১৯১৬
  • Precis oenone var. sudanica Schultze, ১৯২০
  • Junonia oenone f. aeolus Stoneham, ১৯৬৫
  • Junonia oenone f. conjuncta Stoneham, ১৯৬৫
  • Junonia paris Trimen & Bowker, ১৮৮৭

রয়াল (বৈজ্ঞানিক নাম: Junonia hierta (Fabricius)) এক প্রজাতির হলুদ-কালো প্রজাপতি। এরা ‘নিমফ্যালিডি’ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত এবং সমগ্র এশিয়া মহাদেশ জুড়েই এর বিস্তার।[২] উন্মুক্ত তৃণক্ষেত্র এবং লতাগুল্মের জঙ্গলে বিশেষভাবে এদের দেখা পাওয়া যায়। এদের ওড়ার ছন্দ চঞ্চল এবং এদের সাধারণত মাটির কাছাকাছি উড়তে দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে বিশেষভাবে এদের দেখা পাওয়া যায়। এই হলুদ-কালো রঙের প্রজাপতিদের ডানার বাইরের দিকের অংশ চওড়া নীল এবং প্রায় গোলাকার হয়। নিচের হলুদ অংশে দুটি কালো ফুটকি থাকে। [৩]উপরের ডানার প্রান্তভাগ কালো ও হলুদের মাঝেও প্রান্ত থেকে কালো কিছুটা অংশ ঢুকে এসেছে। নিচের দিকের কালো অংশের গা ঘেঁষে কালো বলয় দেখা যায় এবং এখানে মাঝখানে নীল ফুটকি থাকে। চোখের রঙ এবং অ্যান্টেনা কালচে বর্নের।

আকার[সম্পাদনা]

রয়াল প্রজাপতিদের প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৪৫-৫৫ মিলিমিটার হয়[৪]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

রয়াল এর প্রজাতিগুলো হলো:[৫]

  • Junonia hierta hierta (Fabricius, 1798)
  • Junonia hierta cebrene Trimen, 1870
  • Junonia hierta paris Trimen, 1887
  • Junonia hierta magna (Evans, 1926)

ভারতে প্রাপ্ত রয়াল এর উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে সাধারণত রয়াল এর যে উপপ্রজাতি দেখা যায় তা হল:- [৬]

  • Junonia hierta hierta Fabricius, 1798 – Oriental Yellow Pansy

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

পুরুষ[সম্পাদনা]

ডানার উপরিতল উজ্জ্বল হলুদ বর্নের। সামনের ডানার অ্যাপেক্স অথবা শীর্ষভাগ কালো এবং হলুদ ছোপযুক্ত। কোস্টা এবং টার্মেন সরুভাবে কালো এবং ডরসাম চওড়া কালো ও টর্নাস অংশে পৌঁছে কালো অংশ অধিকতর চওড়া। ডিসকাল অংশে ২ ও ৫ নং শিরামধ্যে অবস্থিত চক্ষুবিন্দুগুলি প্রায়শই খুব অস্পষ্ট অথবা অনুপস্থিত। পিছনের ডানায় বেসাল অংশ (গোড়ার অংশ), কোস্টাল অংশ ও টার্মিনাল অংশ মধ্যভাগ পর্যন্ত চওড়া কালো। টার্মেনের নিম্নভাগ টর্নাস অবধি সরুভাবে কালো বর্নের। কোস্টার খানিক নীচে একটি বড় ও সুস্পষ্ট ডিম্বাকৃতি চকচকে নীল পটি দৃশ্যমান। ডিসকাল অংশ ও ডরসাম হলুদ বর্নের হয়।[৭]

ডানার নিম্নতল উপরিতলের উজ্জ্বল হলুদের পরিবর্তে ফ্যাকাশে হলুদ এবং কালোর পরিবর্তে ধূসর ও ইষদ বাদামী বন্ধনী ও দাগ দ্বারা চিত্রিত।[৭][৮]

স্ত্রী[সম্পাদনা]

ডানার উপরিতল পুরুষেরই প্রায় অনুরূপ, তবে অনুজ্জ্বল হলুদ ও অ্যাপেক্স এর ছোপগুলি ফ্যাকাশে হলুদ অথবা সাদাটে বর্নের হয়। উভয় ডানায় ডিসকাল অংশের বাইরের দিকে ২ ও ৫ নং শিরামধ্যস্থ চক্ষুবিন্দু দুটি সুস্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান ও চক্ষুবিন্দুগুলির কেন্দ্রভাগে চক্ষুতারা নীল। পিছনের ডানায় চক্ষুবিন্দুগুলি ক্ষুদ্রতর। সাবটার্মিনাল ও টার্মিনাল সরু কালো রেখা বিদ্যমান।[৭]

ডানার নিম্নতল পুরুষ নমুনার অনুরূপ। পুরুষ অপেক্ষা স্ত্রী প্রজাতি আকারে বড় হয়।[৭][৮]

বিস্তার[সম্পাদনা]

এই প্রজাতি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমার এর বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।[৯]

আচরণ[সম্পাদনা]

এদের ওড়ার ছন্দ বেশ চঞ্চল এবং এরা মাটির কাছাকাছি উড়তে পছন্দ করে।[১০] পুরুষ রয়াল প্রজাপতিদের ভিজে মাটিতে জলপান করতে এবং ফুলের মধু খেতে সাধারণত দেখা যায়।[১১] এরা অতিমাত্রায় সক্রিয় এবং একটি বিশেষ বিচরন ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবব্ধ থাকতে ভালোবাসে।[১২]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Junonia (ইংরেজি), Site of Markku Savela
  2. R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 219। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  3. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা 111। 
  4. বসু রায়, অর্জন; বৈদ্য, সারিকা; রায়, লিপিকা। সুন্দরবনের কিছু পরিচিত প্রজাপতি (মার্চ ২০১৪ সংস্করণ)। সুন্দরবন জীবপরিমণ্ডল। পৃষ্ঠা ৯৯। 
  5. Biolib
  6. "Junonia hierta Fabricius, 1798 – Yellow Pansy"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৬ 
  7. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 206। আইএসবিএন 978-8170192329 
  8. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 407। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  9. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 459। আইএসবিএন 9789384678012 
  10. Peter, Smetacek (২০১৮)। A Naturalist's Guide to the Butterflies of India Pakistan, Nepal, Bhutan, Bangladesh and Sri Lanka (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। New Delhi: Prakash Books India Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 116। আইএসবিএন 978 81 7599 406 5 
  11. Mitra, Bulganin; Panja, Balaram; Jana, Samik (২০২২)। Butterflies of Sundarbans (1 সংস্করণ)। Kolkata: Ramakrishna Mission Vivekananda Centenary College, Rahara। পৃষ্ঠা 45। আইএসবিএন 978-81-957412-1-2 
  12. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ২৬০। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]