নয়ান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

নয়ান
(Peacock pansy)
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Junonia
প্রজাতি: J. almana
দ্বিপদী নাম
Junonia almana
(Linnaeus, 1758)
প্রতিশব্দ[১]
  • Papilio almana Linnaeus, 1758
  • Papilio asterie Linnaeus, 1758
  • Junonia asterie var. nikobariensis Felder, 1862

নয়ান[২] (বৈজ্ঞানিক নাম:Junonia almana (Linnaeus)) এক প্রজাতির মাঝারি আকৃতির প্রজাপতি, যাদের মুল শরীরটা এবং ডানা তামাটে হলুদ বর্ণের এবং ডানার উভয় প্রান্তে একটি করে চোখযুক্ত। নয়ানের ওপর দিকের পিঠের, সামনের এবং পিছনের ডানায় একটা করে চোখ দেখা যায়। পিছনের দিকের ডানার চোখ অপেক্ষাকৃত আকারে বড় এবং ময়ূরকণ্ঠী এবং বাদামী বর্ণের। এই চোখের মাঝে একটা বা দুটো ছোট সাদা বিন্দু দেখা যায়। সামনের দিকের ডানাতে কয়েকটি গাঢ় কালচে বাদামী রঙের রেখার ঢেউ লক্ষ্য করা যায়। এরা ‘নিমফ্যালিডি’ পরিবারের সদস্য।

আকার[সম্পাদনা]

প্রসারিত অবস্থায় নয়ানের ডানার আকার ৬০-৬৫মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৩]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত নয়ানের উপপ্রজাতিসমূহ হল-

  • Junonia almana almana Linnaeus, 1758 – Oriental Peacock Pansy
  • Junonia almana nicobarienis Felder & Felder, 1862 – Nicobar Peacock Pansy

বিস্তার[সম্পাদনা]

এই প্রজাতি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং শ্রীলঙ্কা এর বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।[৩]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল হলদে কমলা (tawny orange) এবং সামনের ডানায় ২ ও ৫ নং শিরামধ্যে ডিসকাল অংশে দুটি চক্ষুবিন্দু (ocille) বর্তমান। চক্ষুবিন্দুগুলি সুস্পষ্ট এবং পর্যায়ক্রমে কালো ও হলুদ বলয় দ্বারা আবৃত। চক্ষুবিন্দুগুলির কেন্দ্রভাগ আকাশী নীল। ২নং শিরামধ্যস্থ চক্ষুবিন্দুটি ৫ নং অপেক্ষা সামান্য বড়। কোস্টাল শিরার থেকে পরপর চারটি চওড়া ছোট বন্ধনী ডানার নিচের দিকে খানিক দূর অবধি বিস্তৃত। ডানার বেস অথবা গোড়ার দিক থেকে প্রথম বন্ধনী (band)টি উভয় প্রান্তে কালো রেখা দ্বারা সীমায়ীত ও কমলা বর্নের। পরবর্তী বন্ধনী ৩টি কালো ও আঁকাবাঁকা। চতুর্থ বন্ধনীটি ৫নং শিরামধ্যস্থ চক্ষুবিন্দুর সাথে যুক্ত হয়েছে। অ্যাপেক্স অথবা শীর্ষভাগ সূঁচালো অথবা তীক্ষ্ণ (pointed) নয়, বরং খানিক চৌকো। টার্মিনাল ও সাবটার্মিনাল অংশ ৩টি প্রায় সমান্তরাল কালো রেখায় চিত্রিত যাদের মধ্যে সবচেয়ে অভ্যন্তরের রেখাটি ইষদ অস্পষ্ট। শুষ্ক ঋতুরূপে উক্ত রেখা ৩টি অস্পষ্ট। [৪]

পিছনের ডানার ২ নং শিরামধ্যস্থ চক্ষুবিন্দুটি সামনের ডানার অনুরূপ তবে বেশ অস্পষ্ট ও কোনো কোনো নমুনাতে এমনকি অনুপস্থিত। ৫নং শিরামধ্যস্থ চক্ষুবিন্দুটি সামনের ডানার চক্ষুবিন্দুর প্রায় অনুরূপ গঠন বিশিষ্ট, তবে কেন্দ্রভাগে কালো ও সাদা ছোপ যুক্ত এবং বৃহদাকার (৪নং থেকে ৭নং শিরা অবধি বিস্তৃত)। টার্মিনাল ও সাবটার্মিনাল কালো রেখা ৩টি ও কোস্টাল শিরা হইতে উৎপন্ন নিম্নগামী ছোট বন্ধনীগুলি সামনের ডানার অনুরূপ।

শুষ্ক ঋতুরূপে, সামনের ডানার টার্মেন বহিবর্তীত (produced) ও অবতল (falcate) এবং ৪ নং শিরাতে বহিঃপ্রসারিত (protuded) ও টর্নাস ছোট লেজযুক্ত। আর্দ্র ঋতুরূপে উক্ত বৈশিষ্ঠগুলি অনুপস্থিত।

ডানার নিম্নতল, শুষ্ক ঋতুরূপে শুকনো পাতার অনুরূপ দর্শন যাতে দাগ-ছোপ ও চক্ষুবিন্দু সম্পূর্নরূপে অনুপস্থিত। আর্দ্র ঋতুরূপে, ডানার নিম্নতল, উপরিতলে প্রায়ানুরূপ রেখা, বন্ধনী ও চক্ষুবিন্দুযুক্ত এবং উভয় ডানাতে কোস্টা থেকে টর্নাস অবধি বিস্তৃত একটি সরু বন্ধনী বিশিষ্ট। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় প্রকার অনুরূপ।[৫]

আচরণ[সম্পাদনা]

এদের দ্রুত ওড়ার ভঙ্গি দেখা যায়।[৬] এদের ফুলের মধু পান করতে দেখা গেলেও ভিজে মাটিতে বসে রস পান করতে তেমন দেখা যায় না। [৭]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bingham, Charles Thomas (১৯০৫)। Fauna of British India. Butterflies Vol. 1। পৃষ্ঠা 361–362। 
  2. Dāśagupta, Yudhājit̲̲̲̲̲̲a (২০০৬)। Paścimabaṅgera prajāpati (1. saṃskaraṇa. সংস্করণ)। Kalakātā: Ānanda। পৃষ্ঠা 92। আইএসবিএন 81-7756-558-3 
  3. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 460। আইএসবিএন 9789384678012 
  4. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 207। আইএসবিএন 978-8170192329 
  5. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 408। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  6. Mitra, Bulganin; Panja, Balaram; Jana, Samik (২০২২)। Butterflies of Sundarbans (1 সংস্করণ)। Kolkata: Ramakrishna Mission Vivekananda Centenary College, Rahara। পৃষ্ঠা 44। আইএসবিএন 978-81-957412-1-2 
  7. বসু রায়, অর্জন; বৈদ্য, সারিকা; রায়, লিপিকা। সুন্দরবনের কিছু পরিচিত প্রজাপতি (মার্চ ২০১৪ সংস্করণ)। সুন্দরবন জীবপরিমণ্ডল,Department of Forest Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ৯৫। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

http://www.ifoundbutterflies.org/#!/sp/527/Junonia-almana