বাঁশকুনি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাঁশকুনি
Banded treebrown
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Lethe
প্রজাতি: L. confusa
দ্বিপদী নাম
Lethe confusa
Aurivillius, 1897

বাঁশকুনি[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Lethe confusa (Aurivillius)) প্রজাতি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রাপ্ত নিমফ্যালিডি (Nymphalidae) গোত্র ও 'স্যাটিরিনি' (Satyrinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রজাপতি।

আকার[সম্পাদনা]

বাঁশকুনি এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৫০-৬০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত বাঁশকুনি এর উপপ্রজাতি হল-[২]

  • Lethe confusa confusa Aurivillius, 1898 – Himalayan Banded Treebrown

বিস্তার[সম্পাদনা]

ভারতে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, মায়ানমার থেকে জাভার বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[৩]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল : ডানার উপরিতলের রঙ মূলত বাদামি ও কালচে বাদামি। সামনের ডানার সাদা তির্যক ডিসকাল বন্ধনীটি কোস্টা থেকে উৎপন্ন হয়ে আড়াআড়িভাবে টর্নাস-এর সামান্য উপর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং প্রায় সরলরৈখিক উক্ত বন্ধনীটি কাছাকাছি এসে সামান্য বেঁকে গেছে ভিতরের দিকে। সামনের ডানার শীর্ষভাগে (apex) ২-৩ টি অস্পষ্ট ও ফ্যাকাশে সাদা প্রি-এপিক্যাল ছোপ তির্যকভাবে সজ্জিত। সাব-টার্মিনাল রেখাটি অস্পষ্ট ও টার্মিনাল প্রান্তরেখা সাদা। নিচের ডানার টার্মেন আঁকাবাঁকা ও খাঁজকাটা এবং ৪ নং শিরায় দাঁতের ন্যায় বড় খাঁজযুক্ত। এই চক্ষু বিন্দুর সারিটি আসলে ডানার নিম্নতলের চক্ষু বিন্দুর সারির ছাপ। কেন্দ্রে সাদা বিন্দুযুক্ত অস্পষ্ট চক্ষু বিন্দুর (ocillie) একটি পোস্ট-ডিসকাল সারি বর্তমান যেগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন চক্ষুবিন্দুটি বৃহত্তর। এই সাব-টার্মিনাল রেখাটি টার্মিনাল প্রান্তরেখার সাথে প্রায় সমান্তরাল। পুরুষ নমুনায় ৬ নং শিরার গোড়ায় (base) কালো ব্র্যান্ড চোখে পরে।

ডানার নিম্নতল : ডানার নিম্নতলের রঙ বাদামি ও কালচে বাদামীতে মেশানো। সামনের ডানার ডিসকাল বন্ধনীটি উপরিতলেরই অনুরূপ। এপিকাল অর্দ্ধে একটু নিচে পাশাপাশি দুটি কালো চক্ষুবিন্দু (ocilii) ঈষদ কমলা-হলুদ রেখা দ্বারা সীমায়িত (bordered)। প্রি-এপিকাল অংশে খুব ছোট, তেরছা একটি সাদা বন্ধনী (band) বিদ্যমান যাহা কোস্টার সাথে যুক্ত। উভয় ডানার সাব-বেসাল, সাব-টার্মিনাল ও টার্মিনাল অংশে আঁকাবাঁকা সাদা রেখা লক্ষ্য করা যায়।

পিছনের ডানায় আঁকাবাঁকা, অনিয়মিত ও কৌণিক সাদা ডিসকাল রেখা এবং সুস্পষ্ট, বক্র ও কালো চক্ষুবিন্দুর (ocilii) একটি সারি বর্তমান। চক্ষুবিন্দুগুলি কেন্দ্রে সাদা বিন্দুযুক্ত ও ঈষদ কমলা-হলুদ রেখা দ্বারা সীমায়িত (bordered )। এপিকাল চক্ষুবিন্দুটি ও সারির শেষ চক্ষুবিন্দুটি আলাদাভাবে সাদা অস্পষ্ট রিং দিয়ে ঘেরা এবং মাঝের চক্ষুবিন্দুগুলি একসাথে সাদা অস্পষ্ট ঢেউখেলানো রেখা দ্বারা আবৃত। এপিকাল চক্ষুবিন্দুটি সর্ববৃহৎ। টার্মেন আঁকাবাঁকা ও খাঁজকাটা এবং ৪ নং শিরায় দাঁতের মতো আকৃতি যুক্ত (dentated)।

ট্রি-ব্রাউন পরিবারের মধ্যে বাঁশকুনি একমাত্র প্রজাতি যার স্ত্রী ও পুরুষ নমুনা পার্থক্যহীন। শুঙ্গ, মাথা, বক্ষ (thorux) ও উদর ফ্যাকাশে বাদামি। শুঙ্গ শীর্ষভাগে কমলা-হলুদ।[৪]

আচরণ[সম্পাদনা]

নিচু উচ্চতাযুক্ত অঞ্চলে বাঁশকুনি প্রজাতিকে বেশি দেখা যায়। এদের উড়ান দ্রুত ও অনিয়মিত। এরা কখনো বেশি সময় ধরে ওড়েনা। ফুল ও পচা ফলে বসে এদের মধু ও রস পান করতে দেখা যায়। নিচু ঝোপঝাড় , গাছের ডাল এবং গুঁড়িতে এবং পাহাড়ের দেওয়ালে এরা বসে প্রধানত ডানা বন্ধ অবস্থায়। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ২০০০ মি. উচ্চতা পর্যন্ত পথের ধারে ও জঙ্গলের কিনারে এদের দর্শন মেলে। ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এদের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। পুরুষরা আঞ্চলিক বা স্থানিক (territorial) ও কলহপ্রবন। এই প্রজাতি ঘাসে ডিম পারে। সমতলভূমিতে ঝোপঝাড় ও বাঁশবাগানে এদের দেখা মেলে।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ২০৪। 
  2. "Lethe confusa Aurivillius, 1898 – Banded Treebrown"। ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  3. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৩২৫। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  4. Bingham, C.T. (১৯০৫)। The Fauna of British India, Including Ceylon and Burma Butterflies1 (1st সংস্করণ)। London: Taylor and Francis, Ltd.। পৃষ্ঠা 82–83। 
  5. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ১২৬।