আরব বিশ্বে নারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আরব বিশ্বে নারী স্বাধীনতা বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে ভিন্ন ধরনের। ইতিহাস প্রমাণ করে নারীদেরকে বিনয়-নম্রতার সাথে চলাফেরার উদ্দেশ্য হলো আরবে নারীর অধিকার। এর বিপরীত হলে নারীরা বৈষম্যের শিকার হতো। এ সীমাবদ্ধতা হচ্ছে নারী নেতৃত্বে তাদের অধিকার ও স্বাধীনতাসমূহের অবহেলাধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং উপজাতীয় রীতিনীতির উপর ভিত্তি করে এ নিয়ম। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি নারীর অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং ফৌজদারি বিচার, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পেশাগত সম্পর্কিত আইনে প্রতিফলিত হয়।

ইসলামের আগে আরব নারীরা[সম্পাদনা]

তায়েফে আল-লাতের একটি পাথরের খোদাই পাওয়া গেছে
চতুর্থ এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে আরব নারীদের পোশাক

কিছু লেখক ইসলামের আগে আরবে নারীদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং তারা মিশ্র কথা বলেছেন। গোত্রপতির শাসন বিদ্যমান ছিল। নারী ছিল ভোগের সামগ্রী, ব্যবসার পণ্য, পুরুষের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল এবং মহিলাদের সম্পত্তি বা উত্তরাধিকার অধিকার ছিল না।

কিছু লেখক বলেছেন যে ইসলামের আগে নারীরা বেশি স্বাধীনতা পাইত। যেমন ইসলামের নবী মুহাম্মদের প্রথম বিবাহের ঘটনা। যা ছিল খাদিজা বিনতে খুওয়ালিদের অনুরোধের মাধ্যমে বিবাহ। তিনি তার এক বন্ধুকে নবী মুহাম্মদের কাছে, খাদিজার সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। খাদিজা একজন ধনী বণিক নারী ছিলেন। পাশাপাশি এই লেখকরা বলেন আরবদের লাত, মানাত এবং উজ্জা নামক মূর্তি যা কিনা নারী ছিল।

সৌদি আরবের হ্যাটন ফ্যাসির চিঠি প্রমাণ করে ইসলামে আগে “নারীর অধিকার আরব ইতিহাসের গভীরে প্রোথিত, এবং আরব উপদ্বীপে নবতিয়াহ সভ্যতার দেখা গেছে যে এই সভ্যতার আলোকে আরব নারীরা একটি স্বাধীন আইনি ব্যক্তিত্ব উপভোগ করছিল। যা গ্রিক ও রোমানদের মাঝে ছিল না।

ইসলামের আগে আরব উপদ্বীপে নারীদের অবস্থান ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হযওয়ার কারণ হলো উপজাতিদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক রীতি ও রীতিনীতি। খ্রিস্টান এবং ইহুদীদের আইন এ ক্ষেত্রে কোন কাজ করেনি। বেদুইন বা মরুভূমির বাসিন্দাদের মধ্যেও এটি ছিল তবে এক গোত্র থেকে অন্য গোত্রের রীতি অনুযায়ী পরিস্থিতিও ভিন্ন ছিল, এবং তাই নারীরা যে ভূমিকা পালন করেছিল তার কোন একক সংজ্ঞা ছিল না, অথবা ইসলামের আবির্ভাবের আগে তারা যে অধিকারগুলি পেয়েছিল তার কোন সংজ্ঞা ছিল না।

ইসলামের পর আরব নারীরা[সম্পাদনা]

সপ্তম শতাব্দীতে ইসলাম আরব উপদ্বীপের প্রবেশ করে। তারপর থেকে নারীর অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। ইসলাম নারী-পুরুষের সমান অধিকার দেয়। এরশাদ হচ্ছে, “তিনি তাদের ডাকে সারা দিয়েছেন। এবং বলেছেন, আল্লাহ পাক নর-নারীর কারো কর্ম নষ্ট করেন না। সুতরাং যারা হিজরত করেছে, যারা নিজেদের গৃহ থেকে বিতারিত হয়েছে, যারা আল্লাহর রাস্তায় কষ্ট পেয়েছে, যারা জিহাদ করেছে, যারা শহীদ হয়েছে অবশ্যই আমি তাদেরজীবনের সবপাপ ক্ষমা করে দেব। তাদেরকে দেব জান্নাত যার পাশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত “সুরা আল ইমরানের, আয়াত-১৯৫।

সমসাময়িক আরব বিশ্ব[সম্পাদনা]

সৌদি আরবের অবস্থা[সম্পাদনা]

বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল -সৌদ সিদ্ধান্ত নেন যে ১১ জানুয়ারি/২০১৩ সালের দ্বিতীয় তারিখে শুরা কাউন্সিলে ত্রিশজন নারীর নিয়োগ দেবে। সোরায়া ওবেদ, যিনি জাতিসংঘে সহকারী মহাসচিবের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং জাতিসংঘের একটি সংস্থার প্রধান হিসেবে প্রথম আরব নারী ছিলেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সৌদি প্রবিধানগুলিতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এবং সংশোধন হয়েছে যা নারীর অধিকার এবং ক্ষমতায়ন প্রকাশ করে। যেমন মহিলাদের চাকরি করা তাকে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া, তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া তাকে তার পাসপোর্ট এবং ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া, এবং পৌর কাউন্সিলগুলিতে ভোট করা এবং নির্বাচিত হওয়া এবং বিচার বিভাগ এবং সেনাবাহিনীতে কাজ করা ইত্যাদি।

তিউনিসিয়ার অবস্থা[সম্পাদনা]

তিউনিসিয়ায় নারী দিবসে মহিলাদের মিছিল রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়

তিউনিসিয়ার নতুন সংবিধানে নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে আইন পাশ করা হয় যা আরব বিশ্বে নজির।

মিশরের অবস্থা[সম্পাদনা]

মিশরে বিক্ষোভকারীরা, ২৫ জানুয়ারি বিপ্লব।

মিশরের রাজনীতি এবং সমাজে সর্বদা নারীরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসতেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলিও মিশরকে নারীদের প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ দেশ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। আজ মিশরীয় নারীদের মুখোমুখি হচ্ছে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং নিপীড়ন বিশেষ করে সামাজিক ঘটনায়। যেমন , পারিবারিক সহিংসতা , যৌন হয়রানি, মহিলাদের যৌনাঙ্গ বিকৃতি

আলজেরিয়ার অবস্থা[সম্পাদনা]

আলজেরিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় পতাকা বহনকারী আলজেরীয় নারীরা

উনবিংশ শতাব্দীতে আলজেরিয়ার নারীরা সাহস, ত্যাগ ও বীরত্বের উদাহরণ ছিল। ইতিহাসে ফরাসি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে নেতৃত্বদানকারী হিসাবে নারীদের কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে "লল্লা ফাতিমা এন'সুমার" অন্যতম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন অঞ্চলে বিজয় অর্জন হয়। [১][২]

সিরিয়ার পরিস্থিতি[সম্পাদনা]

সিরিয়ার মহিলাদের পোশাক 1873
২০১০ সালে একজন সিরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে অটোমান শাসনের যুগের শেষের দিকে রাজনৈতিক জীবনে নারীদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। তারা নারীর অধিকার দিত না। দেখা যায় ১৯১৯ সালে সিরিয়ায় বিক্ষভ হয় যায় মিশর এবং আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিপ্লবের পর মহিলাদের সংসদীয় আসন প্রদান করে। ১৯৫৪ সালে সিরিয়ায় নারীদের সংসদীয় জীবন ফিরে আসে।

জর্ডানের অবস্থা[সম্পাদনা]

রানী রনিয়া আল আবদুল্লাহ স্বাধীন জর্ডানের নারীদের জন্য একজন মডেল

ইতিহাসে দেখা যায়, জর্ডানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক জীবনে জর্ডানের নারীদের অংশগ্রহণ অতুলনীয়। তারা ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, এবং আইনগতভাবে স্বাধীনতা পাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য আরব নারী[সম্পাদনা]

রাজনীতিতে[সম্পাদনা]

কবিতা ও সাহিত্যে[সম্পাদনা]

সংগীতে[সম্পাদনা]

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

বেতার ও সাংবাদিকতায়[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ب, بكر حفظ الله: تط, ر جيش التحرير ال, طني 1954-1962، مذكرة ماجستير، باتنة، 2002، ص 15-20.
  2. أنيسة بركات: محاضرات, دراسات تاريخية, أدبية ح, ل الجزائر، المتحف ال, طني للمجاهد، الجزائر، ص