মানাত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মানাত হল ইসলাম পূর্ব যুগে মক্কায় পৌত্তলিকদের তিন প্রধান দেবীর অন্যতমা।[১]

উৎপত্তি[সম্পাদনা]

ধারণা করা হয়, নামটি আরবি মূল শব্দ 'মানা'[২] থেকে এসেছে যার অর্থ 'নির্ধারণ করা'।[২][৩] আরেক মতানুসারে, এটি আরবি শব্দ 'মানিয়া' থেকে এসেছে যার অর্থ 'ভাগ্য'।[৪] অর্থাৎ, নামের দুটি অর্থই এই দেবীর কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।[২][৩] মানাত সহ প্রাক-ইসলামিক থিওফোরিক নামগুলি আরব উত্সগুলিতে ভালভাবে প্রমাণিত।[৫]

উপাসনা[সম্পাদনা]

প্রাক ইসলামি যুগের আরবগণ তাঁকে ভাগ্যের দেবী হিসেবে পূজা করত । তিনি মানাওয়াত নামে পেত্রাবাসীদের কাছে পূজিতা হতেন এবং তাঁকে গ্রিকো-রোমান দেবী নেমেসিস এর সমতুল মনে করা হয় । তাঁকে দেবতা হুবাল এর স্ত্রী মনে করা হয়।[৬] প্রাক ইসলামি আরবগণ তিন দেবী আল লাত, উজ্জা ও মানাতকে আল্লাহর তিন কন্যা মনে করত। কিতাব আল আশনাম-এ রয়েছে -

এই তিন দেবীর মধ্যে মানাত সবচেয়ে প্রাচীন। আরবগণ তাদের সন্তানদের নামকরণ আবদ মানাত এবং যায়িদ মানাত করত। মানাতের মূর্তি কুদায়িদ এর নিকটবর্তী সমুদ্র উপকূলে ছিল যা মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী স্থান। আরবগণ তাঁকে অর্চনা ও তাঁর কাছে উৎসর্গ করত। আউস, খাজরায, মক্কা-মদিনা ও তাঁর আশেপাশের নাগরিকরা তাঁর পূজা করত, তাঁর কাছে বলি দিত এবং তাঁকে নৈবেদ্য প্রদান করত। আউস, খাজ্রায এবং ইয়াশ্রিবরা তীর্থযাত্রায় নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে নিশিপালন করত কিন্তু মস্তক মুণ্ডন করত না। তীর্থযাত্রার পরে তারা বাড়ি ফিরত না বরং যেখানে মানাত পূজা হয়েছিল সেখানে মস্তক মুণ্ডন করত এবং কিছু সময় অতিবাহিত করত। মানাত দর্শন না করা পর্যন্ত তারা তীর্থযাত্রা অসম্পূর্ণ মনে করত।

— কিতাব আল আশনাম[৭]

মন্দির ধ্বংস[সম্পাদনা]

মুহাম্মদের আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত আরবগণ মানাতের পূজা করত । মানাতের মন্দির মুহাম্মদ এর নির্দেশে সাদ ইবনে যায়িদ আল আশহালি জানুয়ারি ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে ধ্বংস করেন ।[৮][৯][১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Book of Idols
  2. Phipps 1999, পৃ. 22
  3. Tate 2005, পৃ. 170
  4. Griffo 2011, পৃ. 104
  5. van der Toorn 1999, পৃ. 568
  6. "Hommel, First Encyclopaedia of Islam, Vol. 1. p. 380"। ২ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  7. B. al-Kalbī writes (N.A. Faris 1952, pp.12–14)
  8. "List of Battles of Muhammad"। ১১ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  9. "The sealed nectar, By S. R. Al-Mubarakpuri, Pg256"। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  10. "Sa‘d bin Zaid Al-Ashhali was also sent", Witness-Pioneer.com