কোবাল্ট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Titon Saha Shuvo (আলোচনা | অবদান)
Titon Saha Shuvo (আলোচনা | অবদান)
২৭ নং লাইন: ২৭ নং লাইন:


== ইতিহাস ==
== ইতিহাস ==
কোবাল্ট যৌগগুলো শতাব্দী ধরে গ্লাস, সিরামিক ও পালিশে উজ্জ্বল নীল রং ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের ভাস্কর্য, পারস্যের অলংকারে এবং চীনে কোবাল্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।
কোবাল্ট যৌগগুলো শতাব্দী ধরে গ্লাস, সিরামিক ও পালিশে উজ্জ্বল নীল রং ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের ভাস্কর্য, পারস্যের অলংকারে এবং চীনে কোবাল্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.britannica.com/science/cobalt-chemical-element|শিরোনাম=cobalt {{!}} Definition & Facts|ওয়েবসাইট=Encyclopedia Britannica|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2019-08-26}}</ref>


ব্রোঞ্জ যুগ থেকেই কোবাল্ট কাঁচ রঙিন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের নীল কাঁচ রঙিন করা হতো তামা, লোহা বা কোবাল্ট দিয়ে। সবচেয়ে পুরাতন কোবাল্ট দিয়ে রাঙানো কাঁচ মিশরের ১৮ তম রাজবংশ থেকে পাওয়া যায়। মিশরীয়দের ব্যবহৃত কোবাল্টের উৎস জায়া যায়নি।
ব্রোঞ্জ যুগ থেকেই কোবাল্ট কাঁচ রঙিন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের নীল কাঁচ রঙিন করা হতো তামা, লোহা বা কোবাল্ট দিয়ে। সবচেয়ে পুরাতন কোবাল্ট দিয়ে রাঙানো কাঁচ মিশরের ১৮ তম রাজবংশ থেকে পাওয়া যায়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://onlinelibrary.wiley.com/doi/abs/10.1111/j.1095-9270.1998.tb00803.x|শিরোনাম=The Uluburun shipwreck: an overview|শেষাংশ=Pulak|প্রথমাংশ=Cemal|তারিখ=1998|সাময়িকী=International Journal of Nautical Archaeology|খণ্ড=27|সংখ্যা নং=3|পাতাসমূহ=188–224|ভাষা=en|doi=10.1111/j.1095-9270.1998.tb00803.x|issn=1095-9270}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Special:BookSources/978-0-415-19933-9|শিরোনাম=Book sources|সাময়িকী=Wikipedia|ভাষা=en}}</ref> মিশরীয়দের ব্যবহৃত কোবাল্টের উৎস জায়া যায়নি।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://onlinelibrary.wiley.com/doi/abs/10.1111/1475-4754.00031|শিরোনাম=Aspects of the Production of Cobalt-blue Glass in Egypt|শেষাংশ=Rehren|প্রথমাংশ=Th|তারিখ=2001|সাময়িকী=Archaeometry|খণ্ড=43|সংখ্যা নং=4|পাতাসমূহ=483–489|ভাষা=en|doi=10.1111/1475-4754.00031|issn=1475-4754}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Special:BookSources/978-0-7661-5141-3|শিরোনাম=Book sources|সাময়িকী=Wikipedia|ভাষা=en}}</ref>


কোবাল্ট শব্দটি জার্মান 'Kobalt' থেকে এসেছে। যা 'Kobold' থেকে নেয়া হয়ছে যার অর্থ 'অপদেবতা', একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন শব্দ যে নামে কোবাল্টের আকরিককে খননকারীরা ডাকত। প্রথমবার নিকেল ও তামার আকরিক বিগলনের মাধ্যমে কোবাল্ট আহরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিলো। এতে শুধু কোবাল্ট(II) অক্সাইডের গুঁড়া পাওয়া গেছিলো। কেননা কোবাল্টের প্রাথমিক আকরিকে সবসময় আর্সেনিক থাকতো। বিগলনে আর্সেনিক জারিত হয়ে খুবই বিষাক্ত ও উদ্বায়ী আর্সেনিক অক্সাইড তৈরি করতো, যা আকরিকের দুর্নাম বয়ে আনে।
কোবাল্ট শব্দটি জার্মান 'Kobalt' থেকে এসেছে। যা 'Kobold' থেকে নেয়া হয়ছে যার অর্থ 'অপদেবতা', একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন শব্দ যে নামে কোবাল্টের আকরিককে খননকারীরা ডাকত। প্রথমবার নিকেল ও তামার আকরিক বিগলনের মাধ্যমে কোবাল্ট আহরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিলো। এতে শুধু কোবাল্ট(II) অক্সাইডের গুঁড়া পাওয়া গেছিলো। কেননা কোবাল্টের প্রাথমিক আকরিকে সবসময় আর্সেনিক থাকতো। বিগলনে আর্সেনিক জারিত হয়ে খুবই বিষাক্ত ও উদ্বায়ী আর্সেনিক অক্সাইড তৈরি করতো, যা আকরিকের দুর্নাম বয়ে আনে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Special:BookSources/978-0-202-36361-5|শিরোনাম=Book sources|সাময়িকী=Wikipedia|ভাষা=en}}</ref>


সুইডিশ রসায়নবিদ জর্জ বার্ন্ডটকে (১৬৯৪-১৭৬৮) কোবাল্ট আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া হয়। ১৭৩৫ সালে তিনি দেখান এটি একটি অজানা (তখনকার) উপাদান, যা বিসমাথ ও অন্যান্য প্রচলিত ধাতু থেকে আলাদা ছিলো। তিনি একে অর্ধ-ধাতু (Semi-metal) নতুন নাম দেন। তিনি দেখান যেকবাল্টের যৌগগুলোই কাঁচের নীল রংয়ের উৎস; যাকে পূর্বে কোবাল্টের সাথে প্রাপ্ত বিসমাথের জন্য বলে মনা করা হতো। প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রথম আবিষ্কৃত ধাতু কোবাল্ট।
সুইডিশ রসায়নবিদ জর্জ বার্ন্ডটকে (১৬৯৪-১৭৬৮) কোবাল্ট আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া হয়। ১৭৩৫ সালে তিনি দেখান এটি একটি অজানা (তখনকার) উপাদান, যা বিসমাথ ও অন্যান্য প্রচলিত ধাতু থেকে আলাদা ছিলো। তিনি একে অর্ধ-ধাতু (Semi-metal) নতুন নাম দেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100703175508/http://www.chem.unt.edu/Rediscovery/Riddarhyttan.pdf|শিরোনাম=Wayback Machine|তারিখ=2010-07-03|ওয়েবসাইট=web.archive.org|সংগ্রহের-তারিখ=2019-08-26}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://doi.org/10.1007/s11837-006-0201-y|শিরোনাম=Cobalt—Its recovery, recycling, and application|শেষাংশ=Wang|প্রথমাংশ=Shijie|তারিখ=2006-10-01|সাময়িকী=JOM|খণ্ড=58|সংখ্যা নং=10|পাতাসমূহ=47–50|ভাষা=en|doi=10.1007/s11837-006-0201-y|issn=1543-1851}}</ref> তিনি দেখান যেকবাল্টের যৌগগুলোই কাঁচের নীল রংয়ের উৎস; যাকে পূর্বে কোবাল্টের সাথে প্রাপ্ত বিসমাথের জন্য বলে মনা করা হতো। প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রথম আবিষ্কৃত ধাতু কোবাল্ট।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://doi.org/10.1021/ed009p22|শিরোনাম=The discovery of the elements. III. Some eighteenth-century metals|শেষাংশ=Weeks|প্রথমাংশ=Mary Elvira|তারিখ=1932-01-01|সাময়িকী=Journal of Chemical Education|খণ্ড=9|সংখ্যা নং=1|পাতাসমূহ=22|doi=10.1021/ed009p22|issn=0021-9584}}</ref>


অন্য সব জানা ধাতুর (লোহা, তামা, রূপা, সোনা, দস্তা, টিন, লেড ও বিসমাথ) আবিষ্কারের সংরক্ষিত ইতিহাস নেই।[৩৩]
অন্য সব জানা ধাতুর (লোহা, তামা, রূপা, সোনা, দস্তা, টিন, লেড ও বিসমাথ) আবিষ্কারের সংরক্ষিত ইতিহাস নেই।[৩৩]


১৯ শতাব্দীতে বৈশ্বিক উৎপাদনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কোবাল্ট ব্লু এবং স্মাল্ট (কোবাল্ট গ্লাসের গুঁড়া, যা সিরামিক ও চিত্রশিল্পে রঞ্জক পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়) নরওয়ের ব্লাফারভেভায়ার্কেটে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://doi.org/10.1021/ed009p22|শিরোনাম=The discovery of the elements. III. Some eighteenth-century metals|শেষাংশ=Weeks|প্রথমাংশ=Mary Elvira|তারিখ=1932-01-01|সাময়িকী=Journal of Chemical Education|খণ্ড=9|সংখ্যা নং=1|পাতাসমূহ=22|doi=10.1021/ed009p22|issn=0021-9584}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com.bd/books?id=w_cGAAAAQAAJ&pg=PA400&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false|শিরোনাম=Cyclopædia of useful arts & manufactures, ed. by C. Tomlinson. 9 divs|শেষাংশ=Cyclopaedia|তারিখ=1852|ভাষা=en}}</ref> স্মাল্ট উৎপাদনের প্রথম খনিগুলো নরওয়ে, সুইডেন, সাক্সোনি এবং হাংগেরি তে ছিলো। ১৮৬৪ সালে নিউ ক্যালিডোনিয়াতে কোবাল্ট আকরিক আবিষ্কারের পর ইউরোপে কোবাল্ট উত্তোলন হ্রাস পায়। ১৯০৪ সালে কানাডার অন্টারিওতে কোবাল্ট আকরিকের আবিষ্কার এবং ১৯১৪ সালে কঙ্গোর কাতাঙ্গা প্রদেশের এর চেয়েও বড় সঞ্চয়ের সন্ধানের ফলে কোবাল্ট উত্তোলন বানিজ্য আবার স্থানান্তরিত হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Special:BookSources/978-0-202-36361-5|শিরোনাম=Book sources|সাময়িকী=Wikipedia|ভাষা=en}}</ref> ১৯৭৮ সালে সাবা দ্বন্দ্ব শুরু হবার পর কাতাঙ্গা প্রদেশের কাছাকাছি অঞ্চলের তামা খনিগুলো বন্ধ হয়ে যায়।<ref name=":0">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://en.wikipedia.org/wiki/Special:BookSources/978-0-19-829104-6|শিরোনাম=Book sources|সাময়িকী=Wikipedia|ভাষা=en}}</ref> বৈশ্বিক কোবাল্ট অর্থনীতিতে এই দ্বন্দ্বের প্রভাব ধারনার চেয়ে কমই ছিলো। কোবাল্ট একটি দুর্লভ ধাতু, এর রঞ্জক অনেক বিষাক্ত এবং এর মধ্যেই কোবাল্ট সামগ্রী পুনঃব্যবহার উপযোগী করার জন্যে শিল্পকারখানা সফলভাবে স্থাপিত হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কারখানা কোবাল্ট মুক্ত বিকল্পের পরিবর্তনে সফল হয়েছিল।<ref name=":0" />
১৯ শতাব্দীতে বৈশ্বিক উৎপাদনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কোবাল্ট ব্লু এবং স্মাল্ট (কোবাল্ট গ্লাসের গুঁড়া, যা সিরামিক ও চিত্রশিল্পে রঞ্জক পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়) নরওয়ের ব্লাফারভেভায়ার্কেটে।


১৯৩৮ সালে, জন লিভিংগুড এবং গ্লেন টি. সিবার্গ কোবাল্ট-৬০ তেজক্সিয় আইসোটোপ আবিষ্কারে সফল হয়। এ আইসোটোপ ১৯৫০ এর দশকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তেজস্ক্রিয় বিটা ক্ষয়ের সমতা লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠায় চমৎকারভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://link.aps.org/doi/10.1103/PhysRev.105.1413|শিরোনাম=Experimental Test of Parity Conservation in Beta Decay|শেষাংশ=Wu|প্রথমাংশ=C. S.|শেষাংশ২=Ambler|প্রথমাংশ২=E.|শেষাংশ৩=Hayward|প্রথমাংশ৩=R. W.|শেষাংশ৪=Hoppes|প্রথমাংশ৪=D. D.|শেষাংশ৫=Hudson|প্রথমাংশ৫=R. P.|তারিখ=1957-02-15|সাময়িকী=Physical Review|খণ্ড=105|সংখ্যা নং=4|পাতাসমূহ=1413–1415|doi=10.1103/PhysRev.105.1413}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://adsabs.harvard.edu/abs/2008AcPPB..39..251W|শিরোনাম=The Downfall of Parity --- the Revolution That Happened Fifty Years Ago|শেষাংশ=WrXf3blewski|প্রথমাংশ=A. K.|তারিখ=2008-02-01|সাময়িকী=Acta Physica Polonica B|খণ্ড=39|পাতাসমূহ=251|issn=0587-4254}}</ref>
স্মাল্ট উৎপাদনের প্রথম খনিগুলো নরওয়ে, সুইডেন, সাক্সোনি এবং হাংগেরি তে ছিলো। ১৮৬৪ সালে নিউ ক্যালিডোনিয়াতে কোবাল্ট আকরিক আবিষ্কারের পর ইউরোপে কোবাল্ট উত্তোলন হ্রাস পায়। ১৯০৪ সালে কানাডার অন্টারিওতে কোবাল্ট আকরিকের আবিষ্কার এবং ১৯১৪ সালে কঙ্গোর কাতাঙ্গা প্রদেশের এর চেয়েও বড় সঞ্চয়ের সন্ধানের ফলে কোবাল্ট উত্তোলন বানিজ্য আবার স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭৮ সালে সাবা দ্বন্দ্ব শুরু হবার পর কাতাঙ্গা প্রদেশের কাছাকাছি অঞ্চলের তামা খনিগুলো বন্ধ হয়ে যায়। বৈশ্বিক কোবাল্ট অর্থনীতিতে এই দ্বন্দ্বের প্রভাব ধারনার চেয়ে কমই ছিলো। কোবাল্ট একটি দুর্লভ ধাতু, এর রঞ্জক অনেক বিষাক্ত এবং এর মধ্যেই কোবাল্ট সামগ্রী পুনঃব্যবহার উপযোগী করার জন্যে শিল্পকারখানা সফলভাবে স্থাপিত হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কারখানা কোবাল্ট মুক্ত বিকল্পের পরিবর্তনে সফল হয়েছিল।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ব্যবহারের জন্য কোবাল্ট সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার ভিতরেই অনুসন্ধান চালায়। ইদাহতে, একটি পাহাড়ের পাশে ব্ল্যাকবার্ড গিরিখাতে কাছের আকরিকের পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায়। কেলেরা মাইনিং কোম্পানি এখানে উৎপাদন করা শুরু করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=kNwDAAAAMBAJ&pg=PA65&dq=true#v=onepage&q=true&f=true|শিরোনাম=Popular Mechanics|শেষাংশ=Magazines|প্রথমাংশ=Hearst|তারিখ=1952-05|প্রকাশক=Hearst Magazines|ভাষা=en}}</ref>
১৯৩৮ সালে, জন লিভিংগুড এবং গ্লেন টি. সিবার্গ কোবাল্ট-৬০ তেজক্সিয় আইসোটোপ আবিষ্কারে সফল হয়। এ আইসোটোপ ১৯৫০ এর দশকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তেজস্ক্রিয় বিটা ক্ষয়ের সমতা লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠায় চমৎকারভাবে ব্যবহৃত হয়। [৩৯][৪০]


এটা নিয়ে বিতর্ক আছে যে কোবাল্ট ভৌগলিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় বিশ্বে অন্যতম একটি প্রধান উপাদান হবে যা নবায়নযোগ্য শক্তির উপর চলছে এবং নির্ভর করছে ব্যাটারির উপর। কিন্তু, এই ধারনা বর্ধিত উৎপাদনের অর্থনৈতিক উদ্দীপক শক্তিকে ছোট করে দেখায় সমালোচিতও হয়েছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S2214629618308636|শিরোনাম=The geopolitics of renewable energy: Debunking four emerging myths|শেষাংশ=Overland|প্রথমাংশ=Indra|তারিখ=2019-03-01|সাময়িকী=Energy Research & Social Science|খণ্ড=49|পাতাসমূহ=36–40|doi=10.1016/j.erss.2018.10.018|issn=2214-6296}}</ref>
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ব্যবহারের জন্য কোবাল্ট সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার ভিতরেই অনুসন্ধান চালায়। ইদাহতে, একটি পাহাড়ের পাশে ব্ল্যাকবার্ড গিরিখাতে কাছের আকরিকের পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায়। কেলেরা মাইনিং কোম্পানি এখানে উৎপাদন করা শুরু করে।

এটা নিয়ে বিতর্ক আছে যে কোবাল্ট ভৌগলিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় বিশ্বে অন্যতম একটি প্রধান উপাদান হবে যা নবায়নযোগ্য শক্তির উপর চলছে এবং নির্ভর করছে ব্যাটারির উপর। কিন্তু, এই ধারনা বর্ধিত উৎপাদনের অর্থনৈতিক উদ্দীপক শক্তিকে ছোট করে দেখায় সমালোচিতও হয়েছে। [42]


== প্রাপ্তিস্থান ==
== প্রাপ্তিস্থান ==

১৪:৫৭, ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কোবাল্ট   ২৭Co
কোবাল্ট
উচ্চারণ/ˈkbɒlt/ (শুনুন)[১]
নাম, প্রতীককোবাল্ট, Co
আদর্শ পারমাণবিক ভরAr°(Co)
উপস্থিতিhard lustrous gray metal
পর্যায় সারণিতে কোবাল্ট
হাইড্রোজেন হিলিয়াম
লিথিয়াম বেরিলিয়াম বোরন কার্বন নাইট্রোজেন অক্সিজেন ফ্লোরিন নিয়ন
সোডিয়াম ম্যাগনেসিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকন ফসফরাস সালফার ক্লোরিন আর্গন
পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম স্ক্যান্ডিয়াম টাইটেনিয়াম ভ্যানাডিয়াম ক্রোমিয়াম ম্যাঙ্গানিজ আয়রন Cobalt Nickel Copper Zinc Gallium Germanium Arsenic Selenium Bromine Krypton
Rubidium Strontium Yttrium Zirconium Niobium Molybdenum Technetium Ruthenium Rhodium Palladium Silver Cadmium Indium Tin Antimony Tellurium Iodine Xenon
Caesium Barium Lanthanum Cerium Praseodymium Neodymium Promethium Samarium Europium Gadolinium Terbium Dysprosium Holmium Erbium Thulium Ytterbium Lutetium Hafnium Tantalum Tungsten Rhenium Osmium Iridium Platinum Gold Mercury (element) Thallium Lead Bismuth Polonium Astatine Radon
Francium Radium Actinium Thorium Protactinium Uranium Neptunium Plutonium Americium Curium Berkelium Californium Einsteinium Fermium Mendelevium Nobelium Lawrencium Rutherfordium Dubnium Seaborgium Bohrium Hassium Meitnerium Darmstadtium Roentgenium Copernicium Nihonium Flerovium Moscovium Livermorium Tennessine Oganesson
-

Co

Rh
লোহাকোবাল্টনিকেল
পারমাণবিক সংখ্যা২৭
মৌলের শ্রেণীtransition metal
গ্রুপগ্রুপ ৯
পর্যায়পর্যায় ৪
ব্লক  ডি-ব্লক
ইলেকট্রন বিন্যাস[Ar] ৩d ৪s
প্রতিটি কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা2, 8, 15, 2
ভৌত বৈশিষ্ট্য
বর্ণধাতব ধুসর
গলনাঙ্ক1768 কে ​(1495 °সে, ​2723 °ফা)
স্ফুটনাঙ্ক3200 K ​(2927 °সে, ​5301 °ফা)
ঘনত্ব (ক.তা.-র কাছে)8.90 g·cm−৩ (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa)
তরলের ঘনত্বm.p.: 7.75 g·cm−৩
ফিউশনের এনথালপি16.06 kJ·mol−১
বাষ্পীভবনের এনথালপি377 kJ·mol−১
তাপ ধারকত্ব24.81 J·mol−১·K−১
বাষ্প চাপ
P (Pa) ১০ ১০০ ১ k ১০ k ১০ k
at T (K) 1790 1960 2165 2423 2755 3198
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
জারণ অবস্থা5, 4 , 3, 2, 1, -1[৪]amphoteric oxide
তড়িৎ-চুম্বকত্ব1.88 (পলিং স্কেল)
আয়নীকরণ বিভব
(আরও)
পারমাণবিক ব্যাসার্ধempirical: 125 pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ126±3 (low spin), 150±7 (high spin) pm
বিবিধ
কেলাসের গঠনhexagonal
Hexagonal জন্য কেলাসের গঠন{{{name}}}
শব্দের দ্রুতিপাতলা রডে: 4720 m·s−১ (at 20 °সে)
তাপীয় প্রসারাঙ্ক13.0 µm·m−১·K−১ (২৫ °সে-এ)
তাপীয় পরিবাহিতা100 W·m−১·K−১
তড়িৎ রোধকত্ব ও পরিবাহিতা২০ °সে-এ: 62.4 n Ω·m
চুম্বকত্বferromagnetic
ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক209 GPa
কৃন্তন গুণাঙ্ক75 GPa
আয়তন গুণাঙ্ক180 GPa
পোয়াসোঁর অনুপাত0.31
(মোজ) কাঠিন্য5.0
ভিকার্স কাঠিন্য1043 MPa
ব্রিনেল কাঠিন্য700 MPa
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা7440-48-4
কোবাল্টের আইসোটোপ
টেমপ্লেট:তথ্যছক কোবাল্ট আইসোটোপ এর অস্তিত্ব নেই
iso NA অর্ধায়ু DM DE (MeV) DP
56Co syn 77.27 d ε 4.566 56Fe
57Co syn 271.79 d ε 0.836 57Fe
58Co syn 70.86 d ε 2.307 58Fe
59Co 100% Co 32টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
60Co syn 5.2714 years β, γ, γ 2.824 60Ni
বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী: কোবাল্ট
| তথ্যসূত্র


কোবাল্ট একটি রাসায়নিক উপাদান যার প্রতীক ‘Co’ এবং পারমাণবিক সংখ্যা ২৭। নিকেলের মতো কোবাল্টও কেবল রাসায়নিকভাবে যুগ্ম অবস্থায় ভূত্বকে পাওয়া যায়। প্রাকৃতিকভাবে  সংকরিত ক্ষণপ্রভ লোহাতে সঞ্চিত অবস্থাতেও পাওয়া যায়। হ্রাসকারী বিগলন দ্বারা উৎপাদিত মুক্ত কোবাল্ট একটি শক্ত, উজ্জ্বল ও রূপালি-ধূসর ধাতু।কোবাল্ট ভিত্তিক নীল রঞ্জক (কোবাল্ট ব্লু) প্রাচীনকাল থেকেই গহনা, রং এবং গ্লাসে একটি স্বতন্ত্র নীলচে আভা ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে রংটি ধাতব বিসমাথের কারণে বলে মনে করা হত। খনি শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে নীল-রঞ্জক উৎপাদনকারী খনিজগুলিকে ‘কোবোল্ড (Kobold) আকরিক’ বলে আসছিলেন। পরিচিত ধাতুগুলোর মধ্যে নগণ্য হওয়ায় এবং বিগলনে বিষাক্ত আর্সেনিকযুক্ত ধোঁয়া দেয় বলে এদের এমন নামকরণ করা হয়েছিল। ১৭৩৫ সালে, এই আকরিকগুলি থেকে হ্রাসযোগ্য পদ্ধতিতে একটি নতুন ধাতু আবিষ্কৃত হয়। যা শেষ পর্যন্ত কোবোল্ডের জন্য নামকরণ করা হয়েছিল।

এখন কিছু কোবাল্ট কোবাল্টাইট (CoAsS) এর মতো ধাতব-উজ্জ্বল আকরিকগুলি থেকে উৎপাদিত হয়। যদিও সাধারণত উপাদানটি তামা এবং নিকেল খনির উপজাত হিসেবেই বেশি উৎপাদিত হয়। গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (ডিআরসি) এবং জাম্বিয়ার কপারবেল্ট অঞ্চল বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ কোবাল্ট সরবরাহ করে। কানাডিয়ান প্রাকৃতিক সংস্থা অনুসারে, ২০১৬ সালে  ডিআরসি এককভাবে বিশ্ব উৎপাদনের ৫০% (১২৩,০০০ টন) এরও বেশি কোবাল্ট উৎপাদন করে।[৫]

কোবাল্ট মূলত চৌম্বকীয়, পরিধান-প্রতিরোধী এবং উচ্চ-শক্তিসম্পন্ন সংকর তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। যৌগিক কোবাল্ট সিলিকেট এবং কোবাল্ট(II) এলুমিনেট (CoAl2O4, কোবাল্ট ব্লু) কাঁচ, সিরামিক, কালি, রং এবং বার্নিশে একটি স্বতন্ত্র নীলচে আভা ফুটিয়ে তোলে। কোবাল্টের একটিমাত্র স্থিতিশীল আইসোটোপ, কোবাল্ট-৫৯ বিদ্যমান। কোবাল্ট-৬০ হল বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যা তেজস্ক্রিয় ট্রেসার হিসাবে এবং উচ্চ শক্তির গামা রশ্মি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

কোবাল্ট হল কোবালামিন গ্রুপের কোএনজাইম গুলোর সক্রিয় কেন্দ্র। ভিটামিন বি12, যার সর্বাধিক পরিচিত উদাহরণ। এটি সমস্ত প্রাণীর জন্য একটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন। অজৈব কোবাল্ট ব্যাকটেরিয়া, শ্যাওলা এবং ছত্রাকের জন্যও একটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট

বৈশিষ্ট্য

কোবাল্ট একটি ফেরোচৌম্বক পদার্থ, যার আপেক্ষিক গুরুত্ব ৮.৯। কুড়ি তাপমাত্রা ১,১১৫° সেলসিয়াস (২,০৩৯° ফারেনহাইট)[৬] এবং চৌম্বক ভ্রামক প্রতি পরমাণুতে ১.৬-১১.৭ বোর ম্যাগনেটন।[৭] কোবাল্টের আপেক্ষিক ভেদনক্ষমতা লোহার দুই-তৃতীয়াংশ।[৮] ধাতব কোবাল্টের দুটি স্ফটিকের কাঠামো আছে: এইচ.সি.পি এবং এফ.সি.সি। এইচ.সি.পি এবং এফ.সি.সি কাঠামোর মধ্যে আদর্শ রূপান্তর তাপমাত্রা ৪৫০° সেলসিয়াস (৮৪২° ফারেনহাইট)। তবে বাস্তবে এগুলির মধ্যে শক্তির পার্থক্য এত কম যে দুটির এলোমেলো আন্তঃরূপান্তর ঘটে।[৯][১০][১১]

কোবাল্ট একটি দুর্বল জারক পদার্থ যা একটি নিষ্ক্রিয় অক্সাইড আবরণ দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এটি হ্যালোজেনসমূহ ও সালফার দিয়ে আক্রান্ত হয়। কোবাল্ট দহন বিক্রিয়ায় কোবাল্ট(II ,III) অক্সাইড (Co3O4)  তৈরি করে যা ৯০০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অক্সিজেন হারিয়ে কোবাল্ট মনোক্সাইড (CoO) তৈরি করে।[১২] এটি ২৪৭° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফ্লোরিনের (F2) সাথে বিক্রিয়া করে কোবাল্ট(III) ফ্লোরাইড (CoF3) তৈরি করে। ক্লোরিন, ব্রোমিনআয়োডিনের সাথে বিক্রিয়া করে কোবাল্ট(III) হ্যালাইড তৈরি করে। এটি হাইড্রোজেন বা নাইট্রোজেনের সাথে উত্তপ্ত অবস্থাতেও বিক্রিয়া করেনা। কিন্তু এটি বোরন, কার্বন, ফসফরাস, আর্সেনিক এবং সালফারের সাথে বিক্রিয়া করে।[১৩] সাধারণ তাপমাত্রায় এটি অজৈব এসিডের সাথে ধীরে ধীরে বিক্রিয়া করে এবং খুব ধীর গতিতে আর্দ্র বায়ুর সাথে বিক্রিয়া করলেও শুষ্ক বায়ুর সাথে বিক্রিয়া করেনা।

যৌগসমূহ

কোবাল্টের সাধারণ জারণ মান +২ ও +৩। যদিও -২ থেকে +৫ জারণ মানের যৌগও পাওয়া যায়। সরল যৌগে কোবাল্টের সাধারণ জারণ মান +২ ( কোবাল্ট(II))। এই লবণগুলো পানিতে ধাতব-জলীয় জটিল যৌগ [Co(H2O)6]2+ তৈরি করে। ক্লোরাইডের সংযুক্তি যৌগকে গাঢ় নীল রং [CoCl4]2− দেয়।[১৪] বোরাক্স বিড শিখা পরীক্ষায় কোবাল্ট জারণ ও বিজারণ শিখায় গাঢ় নীল রং দেখায়।[১৫]

কোবাল্টের বিভিন্ন যৌগের মধ্যে অক্সিজেন ও চালকোজেন যৌগ, হ্যালাইড, জৈব-ধাতব যৌগ এবং সন্নিবেশ যৌগসমূহ উল্লেখযোগ্য।

আইসোটোপসমূহ

৫৯Co হল কোবাল্টের একমাত্র স্থিতিশীল আইসোটোপ, যা পৃথিবীতে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান। এছাড়াও বাইশটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ চিহ্নিত করা হয়েছে; সর্বাধিক স্থিতিশীল ৬০Co এর অর্ধজীবন ৫.২৭১৪ বছর, ৫৭Co এর ২৭১.৮ দিন, ৫৬Co এর ৭৭.২৭ দিন এবং ৫৮Co এর ৭০.৮৬ দিন। কোবাল্টের অন্যসব আইসোটোপগুলোর অর্ধজীবন ১৮ ঘন্টার চেয়ে কম এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ১ সেকেন্ডেরও কম হয়। কোবাল্টের ৪ টি মাধ্যমিক অবস্থা রয়েছে, যাদের অর্ধজীবন ১৫ মিনিটের চেয়ে কম।[১৬]

কোবাল্টের আইসোটোপগুলোর পারমাণবিক ভর ৫০ থেকে ৭৩ পর্যন্ত হয়। ৫৯ এর চেয়ে কম ভরের আইসোটোপগুলোর ক্ষয় সাধারণত ইলেক্ট্রন ক্যাপচারের মাধ্যমে হয়। আর বাকিগুলোতে বিটা রশ্মির বিকিরণ ঘটে। ৫৯Co এর নিচে প্রাথমিক ক্ষয়ের পণ্যগুলি হল লোহার বিভিন্ন আইসোটোপ। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত নিকেলের বিভিন্ন আইসোটোপ তৈরি হয়।[১৭]

ইতিহাস

কোবাল্ট যৌগগুলো শতাব্দী ধরে গ্লাস, সিরামিক ও পালিশে উজ্জ্বল নীল রং ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের ভাস্কর্য, পারস্যের অলংকারে এবং চীনে কোবাল্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।[১৮]

ব্রোঞ্জ যুগ থেকেই কোবাল্ট কাঁচ রঙিন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিশরের নীল কাঁচ রঙিন করা হতো তামা, লোহা বা কোবাল্ট দিয়ে। সবচেয়ে পুরাতন কোবাল্ট দিয়ে রাঙানো কাঁচ মিশরের ১৮ তম রাজবংশ থেকে পাওয়া যায়।[১৯][২০] মিশরীয়দের ব্যবহৃত কোবাল্টের উৎস জায়া যায়নি।[২১][২২]

কোবাল্ট শব্দটি জার্মান 'Kobalt' থেকে এসেছে। যা 'Kobold' থেকে নেয়া হয়ছে যার অর্থ 'অপদেবতা', একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন শব্দ যে নামে কোবাল্টের আকরিককে খননকারীরা ডাকত। প্রথমবার নিকেল ও তামার আকরিক বিগলনের মাধ্যমে কোবাল্ট আহরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিলো। এতে শুধু কোবাল্ট(II) অক্সাইডের গুঁড়া পাওয়া গেছিলো। কেননা কোবাল্টের প্রাথমিক আকরিকে সবসময় আর্সেনিক থাকতো। বিগলনে আর্সেনিক জারিত হয়ে খুবই বিষাক্ত ও উদ্বায়ী আর্সেনিক অক্সাইড তৈরি করতো, যা আকরিকের দুর্নাম বয়ে আনে।[২৩]

সুইডিশ রসায়নবিদ জর্জ বার্ন্ডটকে (১৬৯৪-১৭৬৮) কোবাল্ট আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া হয়। ১৭৩৫ সালে তিনি দেখান এটি একটি অজানা (তখনকার) উপাদান, যা বিসমাথ ও অন্যান্য প্রচলিত ধাতু থেকে আলাদা ছিলো। তিনি একে অর্ধ-ধাতু (Semi-metal) নতুন নাম দেন।[২৪][২৫] তিনি দেখান যেকবাল্টের যৌগগুলোই কাঁচের নীল রংয়ের উৎস; যাকে পূর্বে কোবাল্টের সাথে প্রাপ্ত বিসমাথের জন্য বলে মনা করা হতো। প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রথম আবিষ্কৃত ধাতু কোবাল্ট।[২৬]

অন্য সব জানা ধাতুর (লোহা, তামা, রূপা, সোনা, দস্তা, টিন, লেড ও বিসমাথ) আবিষ্কারের সংরক্ষিত ইতিহাস নেই।[৩৩]

১৯ শতাব্দীতে বৈশ্বিক উৎপাদনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কোবাল্ট ব্লু এবং স্মাল্ট (কোবাল্ট গ্লাসের গুঁড়া, যা সিরামিক ও চিত্রশিল্পে রঞ্জক পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়) নরওয়ের ব্লাফারভেভায়ার্কেটে।[২৭][২৮] স্মাল্ট উৎপাদনের প্রথম খনিগুলো নরওয়ে, সুইডেন, সাক্সোনি এবং হাংগেরি তে ছিলো। ১৮৬৪ সালে নিউ ক্যালিডোনিয়াতে কোবাল্ট আকরিক আবিষ্কারের পর ইউরোপে কোবাল্ট উত্তোলন হ্রাস পায়। ১৯০৪ সালে কানাডার অন্টারিওতে কোবাল্ট আকরিকের আবিষ্কার এবং ১৯১৪ সালে কঙ্গোর কাতাঙ্গা প্রদেশের এর চেয়েও বড় সঞ্চয়ের সন্ধানের ফলে কোবাল্ট উত্তোলন বানিজ্য আবার স্থানান্তরিত হয়।[২৯] ১৯৭৮ সালে সাবা দ্বন্দ্ব শুরু হবার পর কাতাঙ্গা প্রদেশের কাছাকাছি অঞ্চলের তামা খনিগুলো বন্ধ হয়ে যায়।[৩০] বৈশ্বিক কোবাল্ট অর্থনীতিতে এই দ্বন্দ্বের প্রভাব ধারনার চেয়ে কমই ছিলো। কোবাল্ট একটি দুর্লভ ধাতু, এর রঞ্জক অনেক বিষাক্ত এবং এর মধ্যেই কোবাল্ট সামগ্রী পুনঃব্যবহার উপযোগী করার জন্যে শিল্পকারখানা সফলভাবে স্থাপিত হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কারখানা কোবাল্ট মুক্ত বিকল্পের পরিবর্তনে সফল হয়েছিল।[৩০]

১৯৩৮ সালে, জন লিভিংগুড এবং গ্লেন টি. সিবার্গ কোবাল্ট-৬০ তেজক্সিয় আইসোটোপ আবিষ্কারে সফল হয়। এ আইসোটোপ ১৯৫০ এর দশকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তেজস্ক্রিয় বিটা ক্ষয়ের সমতা লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠায় চমৎকারভাবে ব্যবহৃত হয়।[৩১][৩২]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ব্যবহারের জন্য কোবাল্ট সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার ভিতরেই অনুসন্ধান চালায়। ইদাহতে, একটি পাহাড়ের পাশে ব্ল্যাকবার্ড গিরিখাতে কাছের আকরিকের পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায়। কেলেরা মাইনিং কোম্পানি এখানে উৎপাদন করা শুরু করে।[৩৩]

এটা নিয়ে বিতর্ক আছে যে কোবাল্ট ভৌগলিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় বিশ্বে অন্যতম একটি প্রধান উপাদান হবে যা নবায়নযোগ্য শক্তির উপর চলছে এবং নির্ভর করছে ব্যাটারির উপর। কিন্তু, এই ধারনা বর্ধিত উৎপাদনের অর্থনৈতিক উদ্দীপক শক্তিকে ছোট করে দেখায় সমালোচিতও হয়েছে।[৩৪]

প্রাপ্তিস্থান

স্থিতিশীল অবস্থার কোবাল্ট সুপারনোভা থেকে আর(r)-পদ্ধতিতে তৈরি হয়। ভূত্বকে ০.০০২৯% কোবাল্ট বিদ্যমান। বাতাসের অক্সিজেন এবং সাগরের ক্লোরিনের কারণে মুক্ত কোবাল্ট সাধারণত পাওয়া যায়না। অক্সিজেন ও ক্লোরিন ভূত্বকে প্রচুর পরিমাণে থাকে যা মুক্ত কোবাল্ট তৈরিতে বাঁধা দেয়। সম্প্রতি আবিষ্কৃত ক্ষণপ্রভ লোহা ব্যতীত, প্রচলিত ধাতুগুলোর মতো কোবাল্টকে বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়না। উপাদানটির প্রাচুর্যতা মধ্যম পর্যায়ের। কিন্তু কোবাল্টের প্রাকৃতিক যৌগ অনেক এবং অল্প পরিমাণে কোবাল্ট যৌগ শিলা, মাটি, উদ্ভিদ এবং প্রাণীতেই বেশিরভাগ পাওয়া যায়।

প্রকৃতিতে কোবাল্টকে সচরাচর নিকেলের সাথে যুগ্ম অবস্থায় দেখা যায়। উভয়েই ক্ষণপ্রভ লোহার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উপাদান, যদিও কোবাল্ট সেখানে অল্প পরিমাণে পাআও্যা যায়। নিকেলের মতোই, ক্ষণপ্রভ লোহার সংকরে এটি অক্সিজেন ও আর্দ্র বায়ু থেকে সংকরিত অবস্থায় ভালভাবে সুরক্ষিত থাকে। প্রাচীন আকরিক গুলোতে নিকেল বা কোবাল্ট কোনোটিই দেখা যেতো না।

যৌগিক কোবাল্ট তামা ও নিকেলের খনিতে পাওয়া যায়। এটি প্রধান ধাতব উপাদান যা সালফার ও আর্সেনিকের সাথে যুক্ত হয়ে সালফারযুক্ত কোবাল্টাইট (CoAsS), স্যাফ্রোলাইট (CoAs2), গ্ল্যাকোডট ((Co,Fe)AsS) এবং স্কুটেরিওডাইট (CoAs3) খনিগুলোতে পাওয়া যায়। ক্যাটিয়েরাইট খনি পাইরাইটের মতোই এবং ভেসাইটের সাথে একসাথে কাতাঙ্গা প্রদেশের তামা খনিতে পাওয়া যায়। বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে আসলে বিক্রিয়া ঘটে সালফাইড মিনারেল গুলো জারিত হয়ে গোলাপী বর্ণের ইরিথ্রাইট বা কোবাল্ট গ্লেন্স (Co3(AsO4)2·8H2O) ও স্ফেরোকোবাল্টাইট (CoCO3) তৈরি করে।

তামাকের ধোঁয়াতে কোবাল্ট থাকে।[48] তামাক গাছ সহজেই কোবাল্টের মতো ভারী ধাতু শোষন করে পাতায় জমিয়ে রাখতে পারে।[49]

উৎপাদন

কোবাল্টের প্রধান আকরিকগুলো হলো কোবাল্টাইট, ইরিথ্রাইট, গ্লাওকোডট এবং স্কুটেরিওডাইট। কিন্তু, অধিকাংশ কোবাল্ট প্রস্তুত করা হয় নিকেল ও তামার খনি থেকে উত্তলনের সময় উপজাত হিসেবে এবং বিগলনের মাধ্যমে।[51][52]

সাধারণত উপজাত হিসেবেই কোবাল্ট প্রস্তুত করা হয় বলে কোবাল্ট সরবরাহ একটি বাজারে তামা ও নিকেলের অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। কোবাল্টের চাহিদা ২০১৭ সালে ৬% বৃদ্ধি পায়।[53]

তামা ও নিকেল থেকে কোবাল্টকে আলাদা করার জন্য কোবাল্টের ঘনমাত্রা ও আকরিকে গঠনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। একটি হলো ফোর্থ ফ্লটেশন, যাতে সারফেকট্যান্ট আকরিকের বিভিন্ন উপাদানের সাথে যুক্ত হয় ফলে কোবাল্ট আকরিকে সমৃদ্ধ হয়। পরবর্তী প্রচন্ড তাপে আকরিককে কোবাল্ট সালফেটে রূপান্তর করে। তামা ও লোহা জারিত হয়ে অক্সাইডে পরিণত হয়। দ্রুত পানি প্রবাহের ফলে সালফেট এবং আর্সেনেটগুলো বের হয়ে আসে। অবশেষগুলোতে সালফিউরিক এসিড যোগ করলে কপার সালফেটের একটি দ্রবণ পাওইয়া যায়। কোবাল্ট তামার বিগলনে উৎপন্ন ধাতুমল থেকেও সংগ্রহ করা যায়।[54]

উল্লেখিত প্রক্রিয়া গুলো থেকে উৎপন্ন উপজাতগুলোকে কোবাল্ট অক্সাইডে (Co3O4) রূপান্তর করা হয়। এই অক্সাইডগুলোকে ব্লাস্ট ফার্নেসে অ্যালুমিনোথার্মিক বিক্রিয়া কিংবা কার্বন বিজারণের মাধ্যমে কোবাল্ট ধাতুতে রূপান্তর করা হয়।[11]

কোবাল্ট উৎপাদন (২০১৭) ও সঞ্চয় (টন) USGS অনুসারে[50]
দেশ উৎপাদন সঞ্চয়
অস্ট্রেলিয়া ৫,০০০ ১,২০০,০০০
কানাডা ৪,৩০০ ২৫্‌০,০০০
কিউবা ৪,২০০ ৫০০,০০০
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ৬্‌৪,০০০ ৩,৫০০,০০০
মাদাগাস্কার ৩,৮০০ ১৫০,০০০
নিউ ক্যালেডোনিয়া ২,৮০০ -
জাম্বিয়া ২,৯০০ ২৭০,০০০
পাপুয়া নিউ গিনি ৩,২০০ ৫১,০০০
ফিলিপাইন ৪,০০০ ২৮০,০০০
রাশিয়া ৫,৬০০ ২৫০,০০০
দক্ষিণ আফ্রিকা ২,৫০০ ২৯,০০০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬৫০ ২৩,০০০
অন্যান্য দেশ ৫,৯০০ ৫৬০,০০০
বিশ্ব মোট         ১১০,০০০ ৭,১০০,০০০


কোবাল্ট নিষ্কাশন

যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপের হিসাব মতে পৃথিবীতে ৭,১০০,০০০ মেট্রিক টন কোবাল্ট সংরক্ষিত আছে।[55] গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বর্তমানে বিশ্বের ৬৩% কোবাল্ট সরবরাহ করে। ২০২৫ সাল নাগাদ এ বাজারের শেয়ার ৭৩% এ পৌঁছাবে যদি গ্ল্যাঙ্কোর প্ল্যাকের মতো খননকারী প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পিত সম্প্রসারণ আশানুরূপ ঘটে থাকে। কিন্তু, Bloomberg New Energy Finance এর হিসাব মতে ২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক চাহিদা ২০১৭ এর তুলনায় ১৭ গুণের মত বেড়ে যাবে।[56]

২০০২ সালে কঙ্গোর খনন আইন পরিবর্তনের পরে কঙ্গোর তামা ও কোবাল্ট প্রক্কল্পে নতুন বিনিইয়োগ বাড়তে থাকে। গ্লেংকোর মুটান্ডা খনি গত বছর ২৪,৫০০ টন কোবাল্ট সরবরাহ করে। যা কঙ্গো ডি.আর.সির উৎপাদনের ৪০% এবং বৈশ্বিক উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ। গ্লেংকোর কাতাংগা খনন প্রকল্প ভালোভাবেই চলছে এবং ২০১৯ সালে ৩০০,০০০ টন কপার এবং ২০,০০০ টন কোবাল্ট উৎপাদন করবে, গ্লেংকোর হিসাব মতে।[53]

প্রয়োগ

উচ্চ কর্মক্ষমতাসম্পন্ন সংকর তৈরিতে কোবাল্ট অনেক দিন ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে।[51][52] রিচার্জেবল ব্যাটারী তৈরিতেও কোবাল্ট ব্যবহার করা যায়। বৈদ্যুতিক যানবাহনের আবিষ্কার এবং ডি.আর.সির ভোক্তার সাথে সফলতার সম্ভবত বড় লেনদেন রয়েছে তাদের উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ২০০২’র খনন আইন, যা বিদেশি এবং বহুজাগতিক প্রতিষ্ঠান যেমন গ্ল্যাংকরকে ১ম ও ২য় কঙ্গো যুদ্ধ শেষে বিনিয়োগে উৎসাহিত করে।

জৈবিক ক্রিয়া

কোবাল্ট সকল প্রাণীর বিপাকীয় কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোবালামিনের প্রধান উপাদান, যা ভিটামিন বি১২ নামেও পরিচিত। এটি কোবাল্টের জৈবনিক উৎস যা অতি সামান্য পরিমাণে সংরক্ষণ করে। [১০৫], [১০৬]  তৃণভোজী প্রাণীদের পাকস্থলীতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া কোবাল্ট লবণকে ভিটামিন বি১২ এ রূপান্তর করে; যা একমাত্র ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়ার সাহায্যেই উৎপাদিত হয়। মাটিতে যৎসামান্য কোবাল্টের উপস্থিতিও তৃণভোজী প্রাণীর স্বাস্থ্যে লক্ষণীয় উন্নতি সাধন করে। কোবাল্টের গ্রহণীয় মাত্রা ০.২০ mg/kg। কেননা তাদের ভিটামিন বি১২ এর অন্য কোনো উৎস নেই। [১০৭]

প্রোটিন ভিত্তিক কোবালামিন কোরিন ব্যবহার করে কোবাল্টকে ধরে রাখে। কোএনজাইম বি১২ এর একটি বিশেষভাবে সক্রিয় C-Co বন্ধন রয়েছে, যা বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। [১০৮] মানবদেহে ২ ধরনের অ্যালকাইল লিগান্ডঃ মিথাইল ও এডিনোসাইল রয়েছে। মিথাইলবি১২ মিথাইল গ্রুপ(-CH3) স্থানান্তরকে উৎসাহিত করে। এডিনোসাইলবি১২ পুনর্বিন্যাসকে প্রভাবিত করে হাইড্রোজেনকেসরাসরি নিকটবর্তী দুটি পরমাণুর মাঝে স্থানান্তরিত করে দ্বিতীয় প্রতিস্থাপক, X দিয়ে; যা প্রতিস্থাপকসহ কার্বন, অ্যালকোহলের অক্সিজেন কিংবা অ্যামিন হতে পারে। মিথাইলমেলোনাইল কোএনজাইম-এ মিউটেজ (MUT) MMl-CoA কে Su-CoA তে রূপান্তর করে। যা প্রোটিনচর্বি থেকে শক্তি উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

অন্যান্য ধাতবপ্রোটিনগুলোর চেয়েও বাকি কোবাল্টোপ্রোটিনগুলো বি১২ এর মতোই পরিচিত। এদের মধ্যে মিথিওনিন অ্যামাইনো পেপ্টাইইডেজ২ মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীতে পাওয়া যায়। যা বি১২ এর মতো কোরিন রিং ব্যবহার না করে সরাসরি কোবাল্টের সাথে যুক্ত হয়। অন্য একটি কোরিন রিংবিহীন এনজাইম হলো নাইট্রাইল হাইড্রাটেজ, যা ব্যাকটেরিয়াতে থেকে নাইট্রাইলের বিপাকে সহায়তা করে।

প্রাণীদেহে কোবাল্টের অভাবজনিত সমস্যা

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ ভলকানিক প্লাটু দ্বীপে যখন খামারকরণ উন্নতির সময়ে গবাদি পশুরা "গুল্ম অসুস্থতা" রোগে ভুগছিলো। পরীক্ষা করে দেখা যায় ভলকানিক মাটিতে কোবাল্ট লবণের ঘাটতি ছিলো যা গবাদি পশুর খাদ্যচক্রে গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৩০ এর দিকে দেখা যায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত নাইন্টি মাইল ডেসার্ট এলাকায় ভেড়ার "কৌস্ট রোগ" পুষ্টি উপাদানে কোবাল্ট ও তামার অভাবজনিত কারনে হচ্ছে। কোবাল্টের ঘাটতি "কোবাল্ট বুলেট" নামক কোবাল্ট অক্সাইড ও কাদামাটির মিশ্রণে তৈরি ক্ষুদ্র বড়ি দিয়ে পূরণ করা হয়েছিলো।

সতর্কতা

কোবাল্ট জীবনের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা অতি অল্প পরিমাণে দরকার হয়। দ্রবীভূত কোবাল্ট লবণেরজন্য LD50 এর মান ১৫০-৫০০ mg/kg থাকা প্রয়োজন। যুক্তরাজ্যের Occupational Safety and Health Administration (OSHA) প্রতিষ্ঠান কর্মস্থলে অনুমোদনযোগ্য নিঃসরণ মাত্রা (PEL) ০.১ mg/m3, TWA নির্ধারণ করেছে। National Institute for Occupational Safety and Health (NIOSH) সুপারিশকৃত নিঃসরণ মাত্রা (REL) ঠিক করেছে ০.০৫ mg/m3, TWA। Immediately Dangerous to Life and Health (IDLH) মান হলো ২০ mg/m3[116]

যহোক, লিথাল ডোজের নিচে দীর্ঘস্থায়ী কোবাল্ট গ্রহণ মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে। ১৯৯৬ সালে, বিয়ারের ফেনা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য কোবাল্টযুক্ত যৌগের ব্যবহারের ফলে অদ্ভুত ধরনের টক্সিন প্রভাবিত কার্ডিওমায়োপ্যাথি দেখা যায় যা বিয়ার ড্রিংকার্স কার্ডিওমায়োপ্যাথি নামে পরিচিত। [117][118] নিঃশ্বাসের সাথে এটি গ্রহনের ফলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা তৈরি হয়।[119] এটি স্পর্শ করার ফলে ত্বকের সমস্যাও তৈরি হয়। নিকেল ও ক্রোমিয়ামের পর কোবাল্ট সবচেয়ে বেশি স্পর্শজনিত ত্বকের সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী।[120] খনি শ্রমিকেরা এই ঝুঁকিতে থাকে।

আরও দেখুন

আরও পড়ুন

তথ্যসূত্র

  1. টেমপ্লেট:Cite OED2
  2. "Standard Atomic Weights: কোবাল্ট"CIAAWটেমপ্লেট:Infobox element/symbol-to-saw/year-changed  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. Prohaska, Thomas; Irrgeher, Johanna; Benefield, Jacqueline; Böhlke, John K.; Chesson, Lesley A.; Coplen, Tyler B.; Ding, Tiping; Dunn, Philip J. H.; Gröning, Manfred; Holden, Norman E.; Meijer, Harro A. J. (২০২২-০৫-০৪)। "Standard atomic weights of the elements 2021 (IUPAC Technical Report)"Pure and Applied Chemistry (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1365-3075ডিওআই:10.1515/pac-2019-0603 
  4. Greenwood, N. N.; Earnshaw, A. (১৯৯৭)। Chemistry of the Elements (2nd সংস্করণ)। Butterworth-Heinemann। পৃষ্ঠা 1117–1119। আইএসবিএন 0080379419 
  5. "Cobalt"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-২০। 
  6. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  7. Murthy, V. S. R. (২০০৩-০৫-০১)। Structure And Properties Of Engineering Materials (ইংরেজি ভাষায়)। Tata McGraw-Hill Education। আইএসবিএন 9780070482876 
  8. Celozzi, Salvatore; Araneo, Rodolfo; Lovat, Giampiero (২০০৮-০৪-১৮)। Electromagnetic Shielding (ইংরেজি ভাষায়)। Wiley। আইএসবিএন 9780470055366 
  9. Lee, B. W.; Alsenz, R.; Ignatiev, A.; Van Hove, M. A. (১৯৭৮-০২-১৫)। "Surface structures of the two allotropic phases of cobalt"Physical Review B17 (4): 1510–1520। ডিওআই:10.1103/PhysRevB.17.1510 
  10. "Cobalt (Co) | AMERICAN ELEMENTS ®"American Elements: The Materials Science Company (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৬ 
  11. Cobalt (ইংরেজি ভাষায়)। Centre d'information du cobalt.। ১৯৬৬। 
  12. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  13. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  14. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  15. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  16. Audi, G.; Bersillon, O.; Blachot, J.; Wapstra, A. H. (২০০৩-১২-২২)। "The Nubase evaluation of nuclear and decay properties"Nuclear Physics A। The 2003 NUBASE and Atomic Mass Evaluations। 729 (1): 3–128। আইএসএসএন 0375-9474ডিওআই:10.1016/j.nuclphysa.2003.11.001 
  17. Audi, G.; Bersillon, O.; Blachot, J.; Wapstra, A. H. (২০০৩-১২-২২)। "The Nubase evaluation of nuclear and decay properties"Nuclear Physics A। The 2003 NUBASE and Atomic Mass Evaluations। 729 (1): 3–128। আইএসএসএন 0375-9474ডিওআই:10.1016/j.nuclphysa.2003.11.001 
  18. "cobalt | Definition & Facts"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৬ 
  19. Pulak, Cemal (১৯৯৮)। "The Uluburun shipwreck: an overview"International Journal of Nautical Archaeology (ইংরেজি ভাষায়)। 27 (3): 188–224। আইএসএসএন 1095-9270ডিওআই:10.1111/j.1095-9270.1998.tb00803.x 
  20. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  21. Rehren, Th (২০০১)। "Aspects of the Production of Cobalt-blue Glass in Egypt"Archaeometry (ইংরেজি ভাষায়)। 43 (4): 483–489। আইএসএসএন 1475-4754ডিওআই:10.1111/1475-4754.00031 
  22. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  23. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  24. "Wayback Machine" (পিডিএফ)web.archive.org। ২০১০-০৭-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৬ 
  25. Wang, Shijie (২০০৬-১০-০১)। "Cobalt—Its recovery, recycling, and application"JOM (ইংরেজি ভাষায়)। 58 (10): 47–50। আইএসএসএন 1543-1851ডিওআই:10.1007/s11837-006-0201-y 
  26. Weeks, Mary Elvira (১৯৩২-০১-০১)। "The discovery of the elements. III. Some eighteenth-century metals"Journal of Chemical Education9 (1): 22। আইএসএসএন 0021-9584ডিওআই:10.1021/ed009p22 
  27. Weeks, Mary Elvira (১৯৩২-০১-০১)। "The discovery of the elements. III. Some eighteenth-century metals"Journal of Chemical Education9 (1): 22। আইএসএসএন 0021-9584ডিওআই:10.1021/ed009p22 
  28. Cyclopaedia (১৮৫২)। Cyclopædia of useful arts & manufactures, ed. by C. Tomlinson. 9 divs (ইংরেজি ভাষায়)। 
  29. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  30. "Book sources"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  31. Wu, C. S.; Ambler, E.; Hayward, R. W.; Hoppes, D. D.; Hudson, R. P. (১৯৫৭-০২-১৫)। "Experimental Test of Parity Conservation in Beta Decay"Physical Review105 (4): 1413–1415। ডিওআই:10.1103/PhysRev.105.1413 
  32. WrXf3blewski, A. K. (২০০৮-০২-০১)। "The Downfall of Parity --- the Revolution That Happened Fifty Years Ago"Acta Physica Polonica B39: 251। আইএসএসএন 0587-4254 
  33. Magazines, Hearst (1952-05)। Popular Mechanics (ইংরেজি ভাষায়)। Hearst Magazines।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  34. Overland, Indra (২০১৯-০৩-০১)। "The geopolitics of renewable energy: Debunking four emerging myths"Energy Research & Social Science49: 36–40। আইএসএসএন 2214-6296ডিওআই:10.1016/j.erss.2018.10.018 

বহিঃ সংযোগ

  1. কোবাল্ট ভিডিও
  2. রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র
  3. কোবাল্ট সংস্থা