স্ট্রাইক রেট
স্ট্রাইক রেট বা অভিঘাত হার (ইংরেজি: Strike rate) ক্রিকেট খেলায় ব্যবহৃত পরিভাষা। ক্রিকেটে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যানে স্ট্রাইক রেট ব্যবহার করা হয়। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটে একজন ব্যাটসম্যান কতটুকু স্বাবলীল ভঙ্গীমায় ব্যাটিং করে রান সংগ্রহ করতে পারেন তা ধরা হয়। অন্যদিকে, বোলিং স্ট্রাইক রেটে একজন বোলার কতটুকু স্বাবলীল ভঙ্গীমায় বোলিং করে উইকেট সংগ্রহ করতে পারেন অর্থাৎ ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারেন তা পরিসংখ্যান আকারে তুলে ধরা হয়।
টেস্ট ক্রিকেটের পর উভয় স্ট্রাইক রেটই তুলনামূলকভাবে নতুন পরিসংখ্যান। ১৯৭০-এর দশকে একদিনের আন্তর্জাতিকের প্রবর্তনের পরই স্ট্রাইক রেটের ধারণা সৃষ্টি হয় ও এর তাৎপর্যতা বহন করে।
ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট
[সম্পাদনা]ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটের সাথে ব্যাটসম্যানের সম্পর্ক গভীরভাবে বিরাজমান। একজন ব্যাটসম্যান প্রতি ১০০ বল খেলে গড়ে কত রান সংগ্রহ করেছেন তা বুঝায়। উচ্চ পর্যায়ের স্ট্রাইক রেট মানেই একজন ব্যাটসম্যানের দ্রুত রান সংগ্রহ করা।
কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেটের ভূমিকা গৌণ। এখানে আউট না হয়ে তার রান তোলার সক্ষমতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ, টেস্ট ব্যাটসম্যানের কাছে স্ট্রাইক রেটের তুলনায় তার ব্যাটিং গড়ই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেটকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনা হয়। এ স্তরের ক্রিকেটে প্রত্যেক দল কেবলমাত্র একবার পরস্পরের মুখোমুখি হয় ও ইনিংসে বল সংখ্যা নির্দিষ্ট করা থাকে। ফলে, ব্যাটসম্যান খুব দ্রুত রান করতে থাকলে দলের রান সংখ্যাও দ্রুতলয়ে বৃদ্ধি পায় ও জয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে ১৫০ ঊর্ধ্ব স্ট্রাইক রেট অতি সাধারণ ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত।[১] একদিনের ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেটকে প্রধান নিয়ামক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উচ্চ স্ট্রাইক রেটধারী ব্যাটসম্যানকে নিম্নতর স্ট্রাইক রেটধারী ব্যাটসম্যানের তুলনায় অধিক প্রাধান্য দেয়া হয়ে থাকে।
বোলিং স্ট্রাইক রেট
[সম্পাদনা]বোলিং স্ট্রাইক রেটের মাধ্যমে একজন বোলারের সক্ষমতা বুঝানো হয়। প্রতি উইকেট লাভে একজন বোলার কতসংখ্যক বল ডেলিভারি করেছেন তার মানদণ্ড স্থির হয়। নিম্নমুখী স্ট্রাইক রেটের মাধ্যমে বোলার কার্যকারিতা ও কত উইকেট তিনি দ্রুততার সাথে পেয়েছেন তা তুলে ধরা হয়।
১৯৭০-এর দশকে ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটের আবির্ভাবের পর পারিসাংখ্যিকভাবে তুলে ধরা হলে বোলিং স্ট্রাইক রেটও সৃষ্টি হয়। তবে, একদিনের আন্তর্জাতিকের চেয়ে টেস্ট ক্রিকেটেই এর প্রভাব বেশি। কেননা, টেস্ট ক্রিকেটে বোলারের প্রধান লক্ষ্য থাকে উইকেট লাভ করা। কিন্তু, একদিনের খেলায় মিতব্যয়ী বোলিংকে প্রাধান্য দেয়া হয়। স্বল্প উইকেট লাভ করা স্বত্ত্বেও বোলারের যতটুকু সম্ভব অল্প রান দেয়ার উদ্দেশ্য থাকে।
খেলোয়াড়ী জীবনে সেরা স্ট্রাইক রেট (টেস্ট)
স্ট্রাইক রেট | খেলোয়াড় | বল | উইকেট | |
৩৪.১ | জর্জ লোহম্যান | ৩,৮৩০ | ১১২ | |
---|---|---|---|---|
৩৭.৭ | / জে. জে. ফেরিস | ২,৩০২ | ৬১ | |
৩৮.৮ | শেন বন্ড | ৩,৩৭২ | ৮৭ | |
৪১.৬ | সিডনি বার্নস | ৭,৮৭৩ | ১৮৯ | |
৪৩.১ | বার্ট ভগলার | ২,৭৬৪ | ৬৪ | |
যোগ্যতা: ২,০০০ বল |
স্ট্রাইক রেট | খেলোয়াড় | বল | উইকেট | |
৪১.৬ | ডেল স্টেইন | ১৬,৭১৬ | ৪০২ | |
---|---|---|---|---|
৪৭.২ | স্টিভেন ফিন | ৪,৬৭৮ | ৯৯ | |
৪৭.৯ | ভার্নন ফিল্যান্ডার | ৫,৯০৩ | ১২৩ | |
৪৮.১ | ইয়াসির শাহ | ২,৯৩৮ | ৬১ | |
৫০.০ | জেমস প্যাটিনসন | ২,৫৫০ | ৫১ | |
যোগ্যতা: ২,০০০ বল |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Cricinfo Twenty20 Internationals Highest career batting strike rates
- ↑ ক খ "Test matches – Bowling records – Best career strike rate"। Cricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৫।