রোল্যান্ড পোপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রোল্যান্ড পোপ
আনুমানিক ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৪০-এর দশকের মধ্যে অঙ্কিত প্রতিকৃতিতে রোল্যান্ড পোপ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরোল্যান্ড জেমস পোপ
জন্ম(১৮৬৪-০২-১৮)১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৪
অ্যাশফিল্ড, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২৭ জুলাই ১৯৫২(1952-07-27) (বয়স ৮৮)
ম্যানলি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি স্লো (আন্ডার-আর্ম)
ভূমিকাব্যাটসম্যান, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৩৭)
১ জানুয়ারি ১৮৮৫ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮৪ - ১৮৮৫নিউ সাউথ ওয়েলস
১৮৮৯ - ১৮৯১মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২০
রানের সংখ্যা ৩১৮
ব্যাটিং গড় ১.৫০ ১২.২৩
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৪৭
বল করেছে - ১০
উইকেট -
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং - ০/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/- ১৩/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

রোল্যান্ড জেমস রোলি পোপ (ইংরেজি: Roland Pope; জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৬৪ - মৃত্যু: ২৭ জুলাই, ১৯৫২) নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যাশফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮৫ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ইংরেজ ক্রিকেটে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবগ্লুচেস্টারশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে স্লো আন্ডার-আর্ম বোলিং করতেন রোলি পোপ নামে পরিচিত রোল্যান্ড পোপ। দলের প্রয়োজনে উইকেট-রক্ষণের কাজেও নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮৮৪-৮৫ মৌসুম থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত রোল্যান্ড পোপের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যাশফিল্ডে জন্মগ্রহণকারী রোল্যান্ড পোপ তাসমানিয়ার হোবার্টের হাচিন্স স্কুলে অধ্যয়ন করেন।[১] ১৮৭৯ ও ১৮৮১ সালে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ক্রিকেট খেলায় তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।[২] মেলবোর্নে আই জিঙ্গারি দলের সদস্যরূপে রিচমন্ড ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে মনোরম অপরাজিত ১৭০ রান করেছিলেন।

ফলশ্রুতিতে ডিসেম্বর, ১৮৮৪ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে দলের প্রথম ইনিংসে ৪৭ রান তুলেন। এ সংগ্রহটিই পরবর্তীকালে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ হিসেবে রয়ে যায়।[৩]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন রোল্যান্ড পোপ। ১ জানুয়ারি, ১৮৮৫ তারিখে মেলবোর্নে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

১৮৮৪-৮৫ মৌসুমে ইংরেজ দল অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছিল। ইংল্যান্ড দলের অস্ট্রেলিয়া সফরকালে সংঘটিত খেলোয়াড়দের সাথে দল নির্বাচকমণ্ডলীর আর্থিক মতানৈক্যের কারণে টেস্ট খেলার জন্যে মনোনীত হন। প্রবেশদ্বারে অর্জিত অর্থের পঞ্চাশ শতাংশ দাবী করা হয়েছিল। ঐ সময়ে নিউ সাউথ ওয়েলস বনাম ভিক্টোরিয়ার মধ্যকার খেলা শেষে ১ জানুয়ারি, ১৮৮৫ তারিখে মেলবোর্নে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবার কথা ছিল। তবে, জ্যাক ব্ল্যাকহাম, হ্যারি বয়েল, জর্জ বোনরপার্সি ম্যাকডোনেলের ন্যায় শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নিউ সাউথ ওয়েলসীয় খেলোয়াড় এ সফরে আর্থিক বিষয়ে আপত্তি করেন। তারা এর প্রতিবাদস্বরূপ প্রথম ও দ্বিতীয় টেস্টে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।

ভিক্টোরিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ পোপসহ ঐ টেস্টে নয়জন খেলায়াড়কে নিয়ে দল গঠন করে। টম হোরানকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।[৪] ঐ খেলার উভয় ইনিংসে ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন রোল্যান্ড পোপ। দুই ইনিংসে অংশ নিয়ে মাত্র তিন রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে শূন্য রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে তিন রান তুলেন। এটিই তার একমাত্র টেস্টে উপস্থিতি ছিল।[৫]

স্কটল্যান্ড গমন[সম্পাদনা]

১৮৮৬ সালে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়াশুনো করেন। এ পর্যায়ে স্কটল্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সদস্যরূপে ইংরেজ কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে বেশ কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও, ১৮৯১ সালে গ্রেট ব্রিটেনে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন। ১৮৮৬১৮৯০ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড গমন করে। এ পর্যায়ে রোল্যান্ড পোপ কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছেন।[২]

১৮৯২ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিসন্দর্ভের জন্যে মেডিসিন ডক্টরেট উপাধিপ্রাপ্ত হন।[৬] রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবরা থেকে ফেলোশীপ লাভ করে ও পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন।[১] ১৮৯৪ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত ১৭ বছর রোল্যান্ড পোপ সিডনি হাসপাতালে অফথামলোজি বিভাগে কাজ করেন। শুরুতে সম্মানসূচক অফথালমিক সহকারী ও পরবর্তীতে সম্মানসূচক অফথালমিক সার্জন হন। এরপর মে, ১৯১১ সালে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেবার পর সম্মানসূচক পরামর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। [৭]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

নিউক্যাসল সিটির গ্রন্থাগার ও কলা গ্যালারি প্রতিষ্ঠায় যুক্ত ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও মানবতাবাদীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। চিকিৎসা কর্মের পাশাপাশি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পূর্ব-পর্যন্ত সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের চিকিৎসা পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

১৯৩৪ সালে দ্য ডেইলি নিউজ সংবাদপত্রে ১২বার অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের সাথে কাজ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।[৮] একই সময়ে ১৯০২ সালে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের ইংল্যান্ড গমনকালে দলে ছিলেন এবং দলের চিকিৎসা পরামর্শক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে মালামাল তদারকীর দায়িত্ব পালন করেন।[৯] এ সফরের বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় সর্দিতে আক্রান্ত হলে জুন, ১৯০২ সালে এফ. পি. ফেনার্স গ্রাউন্ডে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে খেলায় অংশ নিতে হয়েছিল। নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন রোল্যান্ড পোপ। একমাত্র ইনিংসে তিনি দুই রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৮৯১ সালের পর এটিই তার প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।[১০]

১৯৩২ সালে আর্থার মেইলি’র ব্যবস্থাপনায় উত্তর আমেরিকায় অনানুষ্ঠানিক সফরে উপস্থিত ছিলেন।[১১] ম্যানলি গল্ফ ক্লাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও জড়িত ছিলেন। ১৯০৮ সালে তিনি ও তার ভ্রাতা নরম্যান পোপ ফারেলসের প্যাডকে জমির বন্দোবস্ত করেন।[১২] জুলাই, ১৯৪৫ সালে নিউক্যাসল সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে নিউক্লিয়াস অব অ্যান আর্ট গ্যালারি এন্ড লাইব্রেরির জন্যে তৈল, জল, মুদ্রণ ও দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ হস্তান্তর করেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ সোসাইটির সভাপতি সিডনি আর স্মিথের কাছ থেকে সোসাইটি অব আর্টিস্টস পদক লাভ করেন।[১৩]

২৭ জুলাই, ১৯৫২ তারিখে ৮৮ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যানলি এলাকায় রোল্যান্ড পোপের দেহাবসান ঘটে।[১৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Roland Pope – ESPN Cricinfo. Retrieved 2 July 2012.
  2. Other matches played by Roland Pope[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] – Cricket Archive. Retrieved 2 July 2012.
  3. Victoria v New South Wales – Cricket Archive. Retrieved 2 July 2012.
  4. 200 Years of Australian Cricket: 1804–2004বিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজনSydney, Australia: Pan Macmillan Australia Pty Ltd। ২০০৪। পৃষ্ঠা 68আইএসবিএন 1-4050-3641-9 
  5. Australia v England – Cricket Archive. Retrieved 2 July 2012.
  6. Pope, Roland James (১৮৯২)। "Modern therapeutics of certain ocular affections" (ইংরেজি ভাষায়)। 
  7. SYDNEY HOSPITAL.The Sydney Morning Herald. Published Saturday, 6 May 1911. Retrieved from Trove, 2 July 2012.
  8. LOOKS AFTER THE STETHOSCOPEThe Daily News. Published Monday, 26 March 1934. Retrieved from Trove, 2 July 2012.
  9. 200 Years of Australian Cricket: 1804–2004বিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজনSydney, Australia: Pan Macmillan Australia Pty Ltd। ২০০৪। পৃষ্ঠা 126আইএসবিএন 1-4050-3641-9 
  10. Cambridge University v Australians – Cricket Archive. Retrieved 2 July 2012.
  11. Varghese, Mathew. When Don met the Babe – ESPN Cricinfo. Retrieved 2 July 2012.
  12. History ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ মার্চ ২০১২ তারিখে – Manly Golf Club. Retrieved 2 July 2012.
  13. SOCIETY OF ARTISTS MEDALThe Sydney Morning Herald. Published Monday, 20 August 1945. Retrieved from Trove, 2 July 2012.
  14. TWO DOCTORS DIEThe Sydney Morning Herald. Published Tuesday, 29 July 1952. Retrieved from Trove, 2 July 2012.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]