রঙ্গিলা রসুল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বইয়ের প্রচ্ছদ

রঙ্গিলা রসুল ১৯২০ এর দশকে পাঞ্জাবের মুসলিম এবং হিন্দু আর্য সমাজের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের সময় প্রকাশিত একটি বিতর্কিত বই।[১] এই বইটি ইসলামিক নবী মুহাম্মদের বিবাহ এবং যৌন জীবন সম্পর্কিত।[২]

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

১৯২৩ সালে কৃষ্ণ প্রসাদ প্রতাব নামে একজন আর্যসমাজী, পণ্ডিত এম এ চমূপতি ছদ্মনামে বইটি লিখেছিলেন। লাহোর প্রকাশক মহাশে রাজপাল[৩] বইটি প্রকাশ করেন। তিনি লেখকের পরিচয় প্রকাশ করেননি। হিন্দু দেবী সীতাকে পতিতা হিসেবে দেখিয়ে এক মুসলিম অবমাননাকর একটি পুস্তিকা বা প্যামফ্লেট প্রকাশিত করেছিল যার বিরুদ্ধে এটি ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ।[২][৪] মুসলমানদের অভিযোগের ভিত্তিতে, রাজপালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কিন্তু ধর্মের অবমাননার বিরুদ্ধে কোনো আইন না থাকায় পাঁচ বছরের বিচারের পর ১৯২৯ সালের এপ্রিল মাসে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তবে কিছু চরমপন্থী মুসলিম ব্যক্তি তাকে হত্যার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। তার উপর বেশ কয়েকটি অসফল হত্যার চেষ্টার পর,[৫] এপ্রিল ১৯২৯ সালে ইলম-উদ-দিন নামের একজন ১৯ বছর বয়স্ক তরুণ ছুতোর তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। হত্যার দায়ে ইলম-উদ-দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং ১৯২৯ সালের ৩১ অক্টোবর সাজা কার্যকর করা হয়।[৬][৭] মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ একজন আসামী আইনজীবী হিসেবে ইলম-উদ-দিনের পক্ষাবলম্বন করে নির্দোশ প্রমাণের চেষ্টা করেন।[৮] হত্যাকারীর জানাজায় বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ ইকবাল[৯]

রঙ্গিলা রাসুল রচনার উপরিভাগে মুহম্মদ এবং তাঁর শিক্ষার উপর একটি গীতিমূলক এবং প্রশংসনীয় বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। যেমন, একটি কবিতা দিয়ে শুরু হয়েছিল, যা ছিল:

"বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে"

মুহাম্মদকে "একজন অভিজ্ঞ পয়গম্বর" ব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন যাকে তার অনেক স্ত্রী দ্বারা সবচেয়ে ভালো প্রতীকী করা হয়েছিল। অপরদিকে, হিন্দু সাধুদের আজীবন ব্রহ্মচর্যের(সংযমপূর্ণ জীবনযাপন) সাথে তুলনা তার করা হয়েছিল।

এই বইটি মূলত উর্দুতে লেখা হয়েছিল এবং পরে হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছে। ভারত, পাকিস্তানবাংলাদেশে এখনও এটি একটি নিষিদ্ধ বই।

প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

রঙ্গিলা রসুলের জবাব মুসলিম লেখক মাওলানা সানাউল্লাহ অমৃতসারী তার মুকাদ্দাস রাসুল (পবিত্র রাসুল ) গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।[১০]

১৯২৭ সালে, ব্রিটিশ রাজ প্রশাসন হেট স্পিচ আইন ধারা 295(A),[১১] ফৌজদারি আইন সংশোধনী আইন XXV এর একটি অংশ প্রণয়ন করে। এটি কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা বা নেতাদের অপমান করা একটি ফৌজদারি অপরাধে পরিণত হয়েছে।[৩]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. The Book on Trial: Fundamentalism and Censorship in India By Girja Kumar
  2. "Not just Imran; Iqbal and Jinnah also supported Islamic terror"www.outlookindia.com/। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২৭ 
  3. Nair, Neeti (মে ২০০৯)। "Bhagat Singh as 'Satyagrahi': The Limits to Non-violence in Late Colonial India"। Cambridge University Press: 649–681। জেস্টোর 20488099 
  4. Ambedkar, Babasaheb, "Thoughts on Pakistan", pg. 165
  5. Self and Sovereignty: Individual and Community in South Asian Islam Since 1850 By Ayesha Jalal
  6. Ramzi, Shanaz (৩০ মার্চ ২০১৪)। "Where history meets modern comforts"dawn.com 
  7. "Until we start denouncing Ilm-ud-din's legacy Mumtaz Qadris will keep sprouting up in Pakistan"nation.com.pk 
  8. Malik Asad (ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫)। "Killer's defence lawyers eye 'heavenly reward'" 
  9. "From 'Rangila Rasul' to 'Padmavati'" 
  10. "Muqaddas Rasool SanaUllah Amritsari Urdu Book"dokumen.tips (উজবেক ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৩ 
  11. "Insult to religion - Indian Express"archive.indianexpress.com 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]