মাগুরছড়া পুঞ্জি

স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′৫৮″ উত্তর ৯১°৪৮′০২″ পূর্ব / ২৪.৩৩২৭০৪° উত্তর ৯১.৮০০৫৪৫° পূর্ব / 24.332704; 91.800545
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাগুরছড়া পুঞ্জি
মাগুরসরা পুঞ্জি
গ্রাম
বাংলাদেশের মানচিত্রে অবস্থান
বাংলাদেশের মানচিত্রে অবস্থান
মাগুরছড়া পুঞ্জি
বাংলাদেশের মানচিত্রে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′৫৮″ উত্তর ৯১°৪৮′০২″ পূর্ব / ২৪.৩৩২৭০৪° উত্তর ৯১.৮০০৫৪৫° পূর্ব / 24.332704; 91.800545
দেশবাংলাদেশ
বিভাগসিলেট
জেলামৌলভীবাজার
উপজেলাকমলগঞ্জ
ইউনিয়ন৫ নং কমলগঞ্জ
ওয়ার্ড নং[১]
জনসংখ্যা
 • মোট১৫৫
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+০৬:০০)

মাগুরছড়া পুঞ্জি (খাসি: মাগুরসরা পুঞ্জি, পুঞ্জি খাসি ভাষায় গ্রাম) বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। এখানে মূলত খাসি জনগোষ্ঠীর বাস।[২] গ্রামটি সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কমলগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডভুক্ত। শ্রীমঙ্গল–কমলগঞ্জ সড়কের পাশে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত।[৩] ২০০৬ সালের হিসাব অনুসারে মাগুরছড়া পুঞ্জিতে প্রায় ৪০টি গৃহ ছিল। লাউয়াছড়া উদ্যানের অন্তর্ভুক্ত দুইটি পুঞ্জির (অন্যটি লাউয়াছড়া পুঞ্জি) মধ্যে মাগুরছড়া বৃহত্তম।[৪] গ্রামে প্রায় ১৫৫ জন লোক বাস করে।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

গ্রামের নাম দুইটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। পুঞ্জি একটি খাসিয়া শব্দ, যার অর্থ একটি জনগোষ্ঠীর গৃহের গুচ্ছ।[৬] মাগুর বাংলা ভাষায় একটি মাছের নাম। নামের সাথে যুক্ত ছড়া শব্দের অর্থ ক্ষুদ্র পানি প্রবাহ বা জলস্রোত। অর্থাৎ মাগুরছড়া শব্দের সম্পূর্ণ অর্থ মাগুর মাছের ছড়া বা প্রবাহ।

১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মধ্যরাতে মাগুরছড়া গ্যাস কূপে বিস্ফোরণ ঘটে, যা মাগুরছড়া ট্র‍্যাজেডি নামে পরিচিত। এতে প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকার (১.৪ বিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) ক্ষতি হয়। সম্পূর্ণ কমলগঞ্জ ও এর আশেপাশের এলাকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণে আখাউড়া-কুলাউড়া-ছাতক রেলপথ, ফুলবাড়ি চা এস্টেট, শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ মহাসড়ক, স্থানীয় ঘরবাড়ি এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র‍্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চচাপের দরুন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ৩৩,০০০ কিলোভোল্টের ১৫ কিলোমিটার (৯.৩ মা) পুড়ে যায়। আশেপাশের প্রায় ২৮টি চাবাগান সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ এছাড়া কুলাউড়া, বড়লেখা ও কমলগঞ্জের প্রায় ৫০টি চাবাগান দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আখাউড়া-কুলাউড়া-ছাতক রেলপথ ও শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কপথ প্রায় ছয় মাস বন্ধ রাখতে হয়। জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৬৯৫ হেক্টর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পুড়ে যায়। গ্যাস থেকে সৃষ্ট আগুনে দুই বছরে মধ্যে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ৮৭.৫ একর বনভূমি পুড়ে যায় এবং ২০.৫ একর বনভূমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পাওয়ার পরেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতি বছর ১৪ জুন স্থানীয় সংগঠনগুলো মাগুরছড়া দিবস হিসেবে পালন করে।[৭][৮]

জীববৈচিত্র‍্য[সম্পাদনা]

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দ্বারা পরিবেষ্টিত মাগুরছড়ার ঘরগুলো উঁচু টিলায় অবস্থিত। লাউয়াছড়ার জীববৈচিত্র‍্যে সমৃদ্ধ গ্রামে ভাড়াউড়া নামের একটি চাবাগান অবস্থিত।[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কমলগঞ্জ ইউনিয়ন: গ্রামসমূহের তালিকা"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। বাংলাদেশ সরকার। ২৩ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২০ 
  2. Mollah, Abdur Rob; Nath, Shital Kumar; Rahman, Md. Anisur; Mannan, Md. Abdul (নভেম্বর ২০০৩)। "Secondary Data Collection for Pilot Protected Areas: Lawachara National Park" (পিডিএফ)Nishorgo। USAID। ৫ মে ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. Lewis, J.C.। "List of Bangladeshi Villages"Travel Tips - USA Today। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৪, ২০১৫ 
  4. International Resources Group (অক্টোবর ২০০৬)। "Management Plans for Lawachara National Park" (পিডিএফ)USAID। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৬ 
  5. "গ্রামভিত্তিক লোকসংখ্যা"kamalgonjup.moulvibazar.gov.bd। ২৭ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২০ 
  6. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "খাসিয়া"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  7. মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২২ বছর আজ : ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষতের দাগদৈনিক কালের কণ্ঠ। ১৪ জুন ২০১৯। 
  8. "Compensation still lacking 22 years on from Magurchara tragedy"ঢাকা ট্রিবিউন। ১৪ জুন ২০১৯।