বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড
![]() | |
সংক্ষেপে | পিডিবি |
---|---|
গঠিত | ১৯৭২ |
ধরন | সরকারি |
সদরদপ্তর | ঢাকা, বাংলাদেশ |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
চেয়ারম্যান | প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান |
প্রধান প্রতিষ্ঠান | বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় |
ওয়েবসাইট | www |
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্থা। ১৯৭২ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র রূপে বাংলাদেশের উত্থানের পর দেশটির বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে একটি পাবলিক সেক্টর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি দেশের বিদ্যুৎ অবকাঠামো নির্মাণ এবং দেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। প্রধানত দেশের নগরাঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এবং বণ্টনের জন্য বি.পি.ডি.বি. দায়বদ্ধ। বোর্ডটি এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে রয়েছে।[১] বর্তমানে বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ব্যবহারের আদি কথা
আজ থেকে প্রায় সোয়া’শ বছর আগের কথা। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বর্তমান বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার ভাওয়াল পরগনার রাজা পূর্ববঙ্গের প্রথম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী হিসেবে পরিচতি। ঊনবিংশ শতাব্দীতেই তিনি সর্বপ্রথম বিলাত থেকে আমদানী করা জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রাজবাড়ী আলোকিত করেন। আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে যোজন যোজন দূরত্বে থাকা ভাওয়ালবাসীর কাছে রাজকীয় ও সৌখিন এ প্রয়াস শুধুমাত্র বিস্ময়বোধের উদ্রেকই করেনি, এর সার্বজনীন ব্যবহারের গুরুত্ব বোধকেও জাগ্রত করে তোলে।
এরপর ১৯০১ সালে ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর বাসভবনে একটি জেনারেটর স্থাপন করা হয়। ১৯০১ সালের ৭ ডিসেম্বর মি. বোল্টন নামে জনৈক ব্রিটিশ নাগরিক আহসান মঞ্জিলে সুইচ টিপে প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহের সূচনা করেন। নবাব আহসানউল্লাহর অর্থানুকূল্যে অক্টাভিয়াস স্টিল নামক কোম্পানি তৎকালীন ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক ও আহসান মঞ্জিলসহ পর্যায়ক্রমে ঢাকার কয়েকটি অভিজাত ভবনকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার আওতায় এনেছিল। এই কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম থাকায় তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুধু অভিজাত এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।
১৯১৯ সালে ‘ডেভকো’ নামক ব্রিটিশ কোম্পানির মাধ্যমে ঢাকায় সীমিত আকারে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার প্রথম বাণিজ্যিক বিকাশ শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৩৩ সালে ওই কোম্পানি ঢাকার পরীবাগে প্রায় ৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ‘ধানমণ্ডি পাওয়ার হাউজ’ নির্মাণ করে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার অভিজাত বাসিন্দারা ছিল এই বিদ্যুতের গ্রাহক, যা তাদের আভিজাত্যের মুকুটে সংযুক্ত করেছিল আরেকটি নতুন পালক।
পিডিবির পূর্বসূরি ছিল পাকিস্তানের পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ওয়াপদা)।[২] ১৯৭২ সালে পিডিবি গঠিত হয়।[৩] পরবর্তীতে, পিডিবির কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অথরিটি (ডেসা)। পরে আবার ডেসা থেকে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) তৈরি করা হয়।[২]
বর্তমানে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেড, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি-নেসকো এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড পিডিবি-র অধীন।[৪]
কার্যক্রম[সম্পাদনা]
২০১০ সালের জুন এর হিসাবে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে বি.পি.ডি.বি. মোট ৮৮২ টি ইউনিটে ৫,৮২৩ মেগাওয়াট (৫০ টি ইউনিটের পিডিবি এবং ৩৮ টি ইউনিটের আইপিপি, এসআইপিপি এবং ভাড়া দেওয়া) বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। ২০১১ সালের বি.পি.ডি.বি. দ্বারা পরিচালিত পাবলিক সেক্টর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে মোট ১৭০৭৯ জিওএইচ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।[৫] এছাড়া, বেসরকারি খাতে স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা (আইপিপি, এসআইপিপি এবং ভাড়া) থেকে মোট ১১৩২৭ জিওএইচও বিদ্যুৎ কিনেছে।
২০১০-১১ অর্থবছরে, বিপিডিবি এর প্রায় ১২৫১৬ জন কর্মচারী ছিল। নভেম্বর ২০১৩ সালের হিসাবে, ইনস্টল করা জেনারেশনের ক্ষমতা বেড়েছে ১০২১৩ মেগাওয়াট।
২০২৩ সাম্প্রতিক বিপিডিবি গ্রাহক সার্পোট ১৬২০০ নাম্বার চালূ করেছে।
অধীনস্থ কোম্পানি সমূহ[সম্পাদনা]
- পাওয়ার গ্রিড
- ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড
- আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেড
- ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ
- নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড
আরো দেখুন[সম্পাদনা]
- রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্র
- বাংলাদেশে পারমাণবিক শক্তি
- বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Bangladesh Powercell Organization"। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১২।
- ↑ ক খ History of BPDB, ৪ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৬
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "PDB to become holding company, employees against the move"। www.dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-০৪।
- ↑ "Offshore Wind Farm"। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১২।