নোয়াখালীয় উপভাষা
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
নোয়াখালীয় | |
---|---|
| |
দেশোদ্ভব | বাংলাদেশ এবং ভারত |
অঞ্চল | বৃহত্তর নোয়াখালী, দক্ষিণ ত্রিপুরা |
মাতৃভাষী | ৭০ লক্ষ (২০১১)
|
উপভাষা | চাটখিল[১][২] |
বাংলা, | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | – |
নোয়াখালীয় উপভাষা বা নোয়াখালীয় বাংলা হচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত বাংলা ভাষার একটি উপভাষা। এটি বাংলাদেশের নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষের প্রধান উপভাষা। বর্তমান চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী,ফেনী ও লক্ষীপুরের স্থানীয় মানুষের প্রধান উপভাষা এটি। নোয়াখালী,ফেনী ও লক্ষীপুর ছাড়াও পার্শবর্তী কুমিল্লা, চাঁদপুর জেলার দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষও এ উপভাষাতে কথা বলে, এমনকি বর্তমান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিন ত্রিপুরায় বিলোনিয়া,হৃষ্যমুখ প্রধান উপভাষা হিসেবে প্রচলিত। তবে দক্ষিণ কুমিল্লা ও দক্ষিণ চাঁদপুরের ভাষায় আশেপাশের অঞ্চলের উপভাষার অনেক উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। সেকারণে এদুটো উপভাষাকে পাঁচমিশালি উপভাষা বলা চলে। দক্ষিণ কুমিল্লার মানুষজন নিজেদের কথ্য ভাষাকে ‘লাকসাইম্মা’ ও ‘চৌদ্দগেরাইম্মা’ ডেকে থাকে। নোয়াখালীয় উপভাষার সঙ্গে এগুলোর যথেষ্ট মিল থাকলেও বৈসাদৃশ্যও কম নয়।
প্রমিত বাংলার সঙ্গে ব্যকরণগত মিল এবং কাছাকাছি অঞ্চলের বরিশালি উপভাষার সঙ্গে এর যথেষ্ট মিল বিদ্যমান থাকায় এটিকে একটি বাংলা উপভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
নোয়াখালীয় ভাষা কৌতুক ও ইন্টারনেট মিম পোস্টিং এর জন্য সর্বদাই বিখ্যাত। হাস্যরসাত্মক নাটক ও চলচ্চিত্রতেও এর প্রভাব লক্ষ্যণীয়। নোয়াখালীয় উপভাষায় বেশ কিছু লোকগানও রচিত হয়েছে।
ভৌগোলিক বিস্তার
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী জেলার মানুষের মুখের কথ্য ভাষা হচ্ছে এই উপভাষা। তাছাড়া বৃহত্তর নোয়াখালীর পাশ্ববর্তী জেলার মধ্যে দক্ষিণ কুমিল্লা, দক্ষিণ চাঁদপুর মানুষের উপভাষাও নোয়াখাইল্লা। এছাড়া চট্টগ্রামের মিরসরাইয় উপজেলায় মানুষের উপভাষার ব্যাকরণেও নোয়াখালীর উপভাষার সঙ্গে অনেকাংশে মিল খুঁজে পাওয়া যায় যেটি মূলত চাটগাঁইয়া এবং নোয়াখাইল্লা মিশ্রিত একটি উপভাষা।এর বাইরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া,হৃষ্যমুখ জেলায় প্রধান কথ্য ভাষা হিসেবে নোয়াখাইল্লা উপভাষা প্রচলিত।
প্রমিত বাংলার সঙ্গে পার্থক্য
[সম্পাদনা]প্রমিত বাংলা | নোয়াখাইল্লা | টীকা |
---|---|---|
ছেলে | হোলা/হুত | |
পানি | হানি | |
শোনো~শুনো | হুন/হুনো | |
কি | কিয়া/কিতা | |
আমি | অ্যাঁই | |
হাই | আই | |
সকল | বেকে/বেগগুন | "বেবাক-গুলিন" থেকে আগত |
পেঁপে | হাবিয়া/কবিয়া | |
কলকাতা | কইলকাত্তা | |
বড়, বড্ড | বড্ডা | |
ডিম, আণ্ডা, বয়দা | বয়জা/ডিমা | আরবি: بيضة, প্রতিবর্ণীকৃত: bayḍah থেকে আগত |
শয়তানি | খন্নাশি[৩] | আরবি: خناس, প্রতিবর্ণীকৃত: khannās থেকে আগত |
শুয়ে পড়া | হুতা/হুতি যা | |
বন্ধু, দোস্ত, ইয়ার | বন্দু, দোস্ত, এয়ার | |
সে আমাকে ফোন করেছিল | হেতে আঁরে হোন কইর্ছিলো | |
করতে দেব না | কইত্তাম দিতান্ন | |
আমার মনে হয় পাঁচটা বাজে | আঁত্তুন লাগে যেন হাঁসটা বাইজ্জে | |
পায়খানা | হাইকানা | |
চিরুনি | কাঁই | |
শশুর | হোর | |
শাশুড়ি | হড়ি | |
শ্যালক/শালা | হালা | |
শালিকা/শালি | হালি | |
আপনার নাম কি? | আন্নের নাম কিয়া? | |
তোমার নাম কি? | তোঁয়ার নাম কিয়া? | |
আপনি কোথায় যাবেন? | আন্নে কোঁনাই যাইবেন? | |
আপনি কি খাওয়া-দাওয়া করেছেন? | আন্নে কি খানা-দানা খাইচেন্নি? | |
আমি রাতে ভাত খাই না | আঁই রাইত্তা বাত খাই না | |
আপনি কেন এখানে এসেছেন? | আন্নে কিল্লাই ইয়ানে আইচেন? | |
আমাদের ভাষা নোয়াখাইল্লা | আংগো বাষা নোয়াখাইল্লা |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- মোরশেদ, আবুল কালাম মনজুর (১৯৮৫)। A study of standard Bengali and the Noakhali dialect (গবেষণাপত্র)। ঢাকা: বাংলা একাডেমি।
- চক্রবর্তী, উত্তম (২০১৪)। দাস, শ্যামল, সম্পাদক। A prosodic study of the Noakhali dialect of Bangla and its implication for teaching and learning of English as a second language by the native speakers of the dialect। শোধগঙ্গা (গবেষণাপত্র)। ত্রিপুরা: ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ রাসেল, মুহাম্মদ মোস্তফা (১৮ অক্টোবর ২০১০)। Analysis of the Chatkhil Dialect in Noakhali District, Bangladesh। ভিডিএম ফার্লেগ ম্যুলার।
- ↑ রাসেল, মুহাম্মদ মোস্তফা (সেপ্টেম্বর ২০১৮)। Phonological Analysis of Chatkhil Dialect in Noakhali District, Bangladesh (গবেষণাপত্র)। মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া: La Trobe University।
- ↑ রাসেল, মুহাম্মদ (৭ এপ্রিল ২০১৪), আমরা যারা নোয়াখাইল্লা