ডেভিড হারবার্ট লরেন্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডেভিড হারবার্ট লরেন্স
লরেন্স, বয়স ২১ (১৯০৬)
লরেন্স, বয়স ২১ (১৯০৬)
জন্ম(১৮৮৫-০৯-১১)১১ সেপ্টেম্বর ১৮৮৫
ইস্টউড, নটিংহ্যামশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২ মার্চ ১৯৩০(1930-03-02) (বয়স ৪৪)
ভেন্স, ফ্রান্স
পেশাঔপন্যাসিক
সময়কাল১৯০৭-১৯৩০
ধরনআধুনিকতা
বিষয়সামাজিক বিষয়বস্তু, মানুষের যৌনাচরণ, ভ্রমণ, সাহিত্য সমালোচনা
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিউপন্যাস: দ্য হোয়াইট পিকক

ছোটো গল্প: অডর অব ক্রিস্যানথেমামস

নাটক: উইডোইং অব মিসেস হোলরয়েড

ডেভিড হারবার্ট রিচার্ডস লরেন্স (১১ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৫ – ২ মার্চ, ১৯৩০), যিনি ডি. এইচ. লরেন্স নামে সমধিক খ্যাত, ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন ইংরেজ প্রসিদ্ধ লেখক, কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক। তার রচনাবলি আধুনিকায়ন ও শিল্পায়ন প্রসূত মানবিক অবক্ষয়ের দিকটি বিশদভাবে প্রতিফলিত করে। তার রচনায় লরেন্স মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও তার গুরুত্ব, স্বাভাবিকতা, ও মানব জীবনে যৌনপ্রবণতার ভূমিকা প্রভৃতি বিষয়কে উপজীব্য করেছেন। তার অন্যতম বহুল পঠিত উপন্যাস হলো লেডি চ্যাটার্লীয লাভার যা তৎকালে অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত ছিল।

লরেন্সের মতামত তার বহু শত্রুর জন্ম দেয়। তাকে পড়তে হয় সরকারি হয়রানি ও সেন্সরশিপের মুখে। জীবনের দ্বিতীয়ার্ধে তার রচনার ভুল ব্যাখ্যাও হতে থাকে। এই সময় তিনি চলে যান স্বেচ্ছা-নির্বাসনে; যা ছিল তার নিজের ভাষায় "বর্বর তীর্থযাত্রা" ("savage pilgrimage")-এ ।[১] মৃত্যুকালে তার সম্মান নিজের বিপুল প্রতিভার অপব্যবহারকারী কোনও পর্নোগ্রাফারের চেয়ে বেশি কিছু ছিল না। একটি শ্রদ্ধাঞ্জলিতে ই এম ফরস্টার এই বহুপ্রচলিত ধারণাটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লরেন্সকে "আমাদের প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিশীল ঔপন্যাসিক" ("The greatest imaginative novelist of our generation") বলে উল্লেখ করেন।[২] পরবর্তীকালে প্রভাবশালী কেমব্রিজ-ভিত্তিক সমালোচক এফ আর লিভিস তার রচনার শৈল্পিক বিশুদ্ধতা ও তার নৈতিক ঐকান্তিকতাকে সমর্থন করেন। তিনি লরেন্সের রচনাকে ইংরেজি উপন্যাসের অনুশাসনিক "মহাঐতিহ্য" ("great tradition")-এর অন্তর্ভুক্ত করেন। আজ লরেন্স সাধারণভাবে এক সত্যদ্রষ্টা দার্শনিক তথা ইংরেজি সাহিত্যে আধুনিকতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরূপে নন্দিত। যদিও কোনো কোনো নারীবাদী লেখক-লেখিকা তার রচনায় নারীজাতির উপস্থাপনা ও যৌনতার ব্যবহারের প্রতি আপত্তি জানিয়ে থাকেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

লরেন্স ছিলেন আর্থার জন লরেন্স নামে এক প্রায়-অশিক্ষিত খনি মজুর ও লিডিয়া (নি বিয়ার্ডস্যাল) নামে এক প্রাক্তন স্কুলশিক্ষিকার চতুর্থ সন্তান।[৩] তার ছেলেবেলা কেটেছিল ইস্টউড, নটিংহ্যামশায়ারের কয়লাখনি অঞ্চলে। ইস্টউডের ৮এ, ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটস্থ তার জন্মস্থানটি এখন এক সংগ্রহশালা।[৪] লরেন্সের প্রাথমিক রচনাগুলির উপাদান তিনি সংগ্রহ করেছিলেন তার ছেলেবেলার এই শ্রমজীবী পরিমণ্ডল ও পিতামাতার সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকে। এই অঞ্চলটিকে বলতেন তার "হৃদয়ভূমি" ("the country of my heart,")। বারবার তার গল্প-উপন্যাসের পটভূমি রচনার মাধ্যমে এখানে ফিরে আসতেন তিনি।

১৮৯১ থেকে ১৮৯৯ পর্যন্ত লরেন্স বিউভেল বোর্ড স্কুলে (বর্তমানে তার সম্মানে গ্রিসলি বিউভেল ডি এইচ লরেন্স প্রাইমারি স্কুল নামাঙ্কিত) পড়াশোনা করে। স্থানীয় ছাত্রদের মধ্যে তিনিই প্রথম নিকটবর্তী নটিংহ্যামের নটিংহ্যাম হাইস্কুলে কাউন্টি কাউন্সিল বৃত্তি লাভ করেন। বর্তমানে এই স্কুলের জুনিয়র বিভাগে একটি হাউস তার নামাঙ্কিত। ১৯০১ সালে স্কুল ছেড়ে তিন মাস হেইউডের সার্জিক্যাল অ্যাপ্লিয়েন্সেজ ফ্যাক্টরিতে জুনিয়র ক্লার্কের চাকরি করেন। কিন্তু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তার কর্মজীবনের অবসান ঘটে। সেরে ওঠার পর তিনি চেম্বার্স পরিবারের বাসভবন হ্যাগস ফার্মে যাতায়াত শুরু করেন। এই সময় জেসি চেম্বার্সের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। জেসির সঙ্গে তার সম্পর্ক ও অন্যান্য কিশোরবয়স্কদের সঙ্গে তার সংসর্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বইপড়ার প্রতি সাধারণ আগ্রহ। এই আগ্রহ তার সারাজীবনই থেকে যায়। ১৯০২ থেকে ১৯০৬ পর্যন্ত ইস্টউডের ব্রিটিশ স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেন। ১৯০৮ সালে পূর্ণ সময়ের ছাত্র হিসেবে ইউনিভার্সিটি কলেজ নটিংহ্যাম থেকে কোয়ালিফায়েড টিচার স্ট্যাটাস অর্জন করেন। এই সময়কালে তিনি রচনা করেন তার প্রথম যুগের কবিতাগুলি, কিছু ছোটোগল্পলায়েটিটিয়া নামে একটি উপন্যাসের খসড়া, যেটি পরে দ্য হোয়াইট পিকক নামে প্রকাশিত হয়। ১৯০৭ সালের শেষদিকে নটিংহ্যাম গার্ডিয়ান পত্রিকায় তিনি একটি ছোটোগল্প প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। এটিই ছিল তার সাহিত্যিক প্রতিভার প্রথম বৃহত্তর আত্মপ্রকাশ।

বৃহত্তর দিগন্ত[সম্পাদনা]

১৯০৮ সালে সদ্য যোগ্যতাপ্রাপ্ত লরেন্স তার প্রথম জীবনের বাসভূমি ত্যাগ করে লন্ডনে চলে আসেন। ক্রয়ডনের ডেভিডসন রোড স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। পাশাপাশি চলতে থাকে তার লেখালিখিও। জেসি চেম্বার্সের পাঠানো তার প্রথম দিকের কয়েকটি কবিতা দ্য ইংলিশ রিভিউ পত্রিকার প্রভাবশালী সম্পাদক ফোর্ড ম্যাডক্স ফোর্ডের (তখন তিনি পরিচিত ফোর্ড হারমান হেফার নামে) নজরে পড়ে। তার সম্মতিতে অডর অব ক্রিস্যানথেমামস গল্পটি উক্ত পত্রিকায় ছাপা হয়। তাতে লন্ডনের বিশিষ্ট প্রকাশন সংস্থা হেইনম্যান আগ্রহী হয়ে তাকে আরও লিখতে অনুরোধ করে। পেশাদার লেখক হিসেবে তার জীবনের সেই সূত্রপাত; যদিও তার পরেও পুরো এক বছর তিনি শিক্ষকতা করে গিয়েছিলেন। ১৯১০ সালে তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস দ্য হোয়াইট পিকক প্রকাশের অব্যবহিত পরেই লরেন্সের মা মারা যান। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এতে যুবক লরেন্স অত্যন্ত ভেঙে পরেন। মায়ের মৃত্যুর পরবর্তী মাসগুলিকে তিনি পরে ব্যাখ্যা করেছিলেন তার "অসুখের বছর" ("sick year") হিসেবে। স্পষ্টতই বোঝা যায়, মায়ের সঙ্গে লরেন্সের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাই মায়ের মৃত্যু তার জীবনে এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মোড় প্রতিপন্ন হয়। ঠিক যেমন মিসেস মোরেলের মৃত্যু তার বিখ্যাত আত্মজৈবনিক উপন্যাস সনস অ্যান্ড লাভার্স রচনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে দাঁড়ায়। এই রচনাটিতে তার মফস্বলে বেড়ে ওঠার ইতিকথা অনেকটাই তুলে ধরেছিলেন।

১৯১১ সালে এডওয়ার্ড গারনেটের সঙ্গে লরেন্সের আলাপ হয়। গারনেট ছিলেন পাবলিশার্স রিডার এবং একজন উপদেষ্টা। তিনি লরেন্সকে আরো উৎসাহিত করেন। দু’জনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। গারনেটের পুত্র ডেভিড গারনেটের সঙ্গেও তাঁর বন্ধুত্ব হয়। তরুণ লেখক লরেন্সের এই মাসটি কাটে পল মোরেল উপন্যাসের প্রথম খসড়া সংশোধন করে। পরবর্তীকালে এই বইটিই সনস অ্যান্ড লাভার্স নামে প্রকাশিত হয়। সেই সঙ্গে তাঁর সহকর্মী শিক্ষিকা হেলেন কর্ক তাঁকে নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরি পড়তে দেন। এই ডায়েরিতে লিখিত কর্কের দুঃখজনক প্রেমকাহিনি তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস দ্য ট্রেসপাসার-এর কাঠামো নির্মাণে সহায়তা করে। ১৯১১ সালের নভেম্বরে লরেন্স আবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। সেরে উঠে তিনি স্থির করেন যে শিক্ষকতার পেশা পরিত্যাগ করে পূর্ণ সময়ের লেখালিখির কাজে আত্মনিয়োগ করবেন। নটিংহ্যাম ও ইস্টউডের তাঁর পুরনো বান্ধবী লুই বারোজের সঙ্গে তিনি তাঁর সম্পর্কও ভেঙে দেন।

১৯১২ সালের মার্চ মাসে ফ্রেডা উইকলি (নি ভন রিচথোফেন)-র সঙ্গে আলাপ হয় লরেন্সের। এঁর সঙ্গেই তিনি তাঁর অবশিষ্ট জীবন কাটিয়েছিলেন। ফ্রেডা ছিলেন নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ভাষা অধ্যাপক তথা লরেন্সের প্রাক্তন শিক্ষক আর্নেস্ট উইকলির স্ত্রী। তিন সন্তানের জননী ফ্রেডা তাঁর নতুন প্রণয়ীর চেয়ে বয়সে ছয় বছরের বড় ছিলেন। লরেন্সের সঙ্গে তিনি পালিয়ে আসেন জার্মানির গ্যারিসন শহর মেটজ-স্থিত ফ্রেডার পৈতৃক বাড়িতে। এই শহরটি ছিল জার্মানিফ্রান্সের অশান্ত সীমান্ত অঞ্চলের কাছাকাছি। এখানে থাকার সময় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লরেন্সের সংঘাত বাধে; তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনের হয়ে চরবৃত্তি করার অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়; যদিও ফ্রেডা উইকলির বাবার মধ্যস্থতায় তিনি মুক্তি পান। এই ঘটনার পর লরেন্স চলে আসেন মিউনিখের দক্ষিণে একটি ছোটো গ্রামে। এইখানেই ফ্রেডা উইকলির সঙ্গে তিনি যাপন করেন তাঁদের "মধুচন্দ্রিমা"; পরবর্তীকালে যার স্মৃতি বিধৃত হয় লুক! উই হ্যাভ কাম থ্রু (১৯১৭) নামক প্রেমের কবিতামালায়।

জার্মানি থেকে আল্পসের পথ ধরে দক্ষিণে ইতালির দিকে পদব্রজে রওয়ানা হন তারা। এই যাত্রার স্মৃতি ধরা আছে তার প্রথম ভ্রমণ কাহিনি টুইলাইট ইন ইতালি নামক পরস্পর-সংযুক্ত প্রবন্ধসংগ্রহ এবং মিস্টার নুন নামক এক অসমাপ্ত উপন্যাসে। ইতালিতে থাকাকালীন লরেন্স সনস অ্যান্ড লাভার্স উপন্যাসের চূড়ান্ত খসড়াটি প্রস্তুত করেন। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাস তার প্রথম জীবনে দেখা শ্রমিক শ্রেণির বাস্তব জীবনচিত্রের একটি স্পষ্ট চিত্রণ রূপে আখ্যাত হয়। যদিও লরেন্স এই কাজে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে এডওয়ার্ড গারনেটকে মূলপাঠ থেকে প্রায় একশো পাতা বাদ দেওয়ার অনুমতি দিয়ে দেন।

১৯১৩ সালে এক স্বল্পকালীন সফরে ফ্রেডা ও লরেন্স ইংল্যান্ডে ফেরেন। এই সময় সমালোচক জন মিডলটন মারেনিউজিল্যান্ড-জাত ছোটোগল্পকার ক্যাথারিন ম্যানসফিল্ডের সঙ্গে তার আলাপ ও বন্ধুত্ব হয়। অল্পকাল পরেই লরেন্স ও ফ্রেডা ইতালিতে ফিরে যান এবং গালফ অব স্পেজিয়া তটস্থ ফিয়াসেরিনোর একটি কটেজে বসবাস শুরু করেন। এখানেই তিনি তার দুই বহুপরিচিত উপন্যাস দ্য রেইনবোউইমেন ইন লাভ-এর প্রাথমিক খসড়া রচনার কাজ শুরু করেন। অবশেষে উইকলিও তার পূর্বতন স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছিন্না হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হলে তারা ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং ১৯১৪ সালের ১৩ জুলাই পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।

উইকলির জার্মান বংশপরিচয় ও লরেন্সের শান্তিবাদের কারণে যুদ্ধকালীন ইংল্যান্ডে তাদের সন্দেহের চোখে দেখা হতে থাকে। যেকারণে তাদের থাকতে হয় প্রায় একঘরে হয়। ১৯১৫ সালে প্রকাশিত দ্য রেইনবো উপন্যাসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় এবং অশালীনতার অভিযোগে সেই বছরই বইটি নিষিদ্ধ হয়। জেনরের কর্নওয়াল উপকূল অঞ্চলে তারা বাস করছিলেন বলে তাদের বিরুদ্ধে পরে চরবৃত্তি ও জার্মান ডুবোজাহাজগুলিকে সংকেত জানানোর অভিযোগও আনা হয়। এই সময়েই তিনি উইমেন ইন লাভ উপন্যাসের চূড়ান্ত খসড়াটি রচনা করেন। এই উপন্যাসে সমসাময়িক সভ্যতার ধ্বংসপ্রবণ দিকগুলি লরেন্স দেখিয়েছেন চারটি প্রধান চরিত্রের মধ্যে ঘনায়মান সম্পর্কের গঠন তথা ললিতকলা, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, যৌন অভিজ্ঞতা, বন্ধুত্ব ও বিবাহ সম্পর্কে তাদের মূল্যবোধের প্রতিফলনের মাধ্যমে। এই গ্রন্থে একটি হতাশাব্যঞ্জক তিক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়েছে মানবসমাজকে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এই গ্রন্থের প্রকাশ অসম্ভব ছিল। তাই ১৯২০ সালের আগে এই বই প্রকাশ করা যায়নি। বর্তমানে এই গ্রন্থটি বিবেচিত হয় উচ্চ নাটকীয় শক্তি ও বৌদ্ধিক সূক্ষ্মতা সংবলিত এক ইংরেজি উপন্যাস হিসেবে।

১৯১৭ সালের শেষদিকে বারবার সামরিক কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হয়ে লরেন্স ডিফেন্স অব রেম অ্যাক্ট (ডিওআরএ)-এর অধীনে তিন দিনের নোটিসে কর্নওয়াল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই বিচারপ্রক্রিয়াটি ১৯২৩ সালে প্রকাশিত তার অস্ট্রেলীয় উপন্যাস ক্যাঙারু-র এক আত্মজৈবনিক অধ্যায়ে ধরা আছে। নিউবেরি, বার্কশায়ার-এর কাছে হার্মিটেজ নামে এক ছোট্টো গ্রামে ১৯১৮ সালের প্রথম দিকে কয়েকমাস কাটান লরেন্স। ১৯১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯১৯ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত প্রায় এক বছর কাল তিনি অতিবাহিত করেন মিডলটন-বাই-রিকসওয়ার্থ, ডার্বিশায়ার-এর মাউন্টেন কটেজে। এখানে থাকার সময় তিনি রচনা করেন তার সর্বাধিক কাব্যময় ছোটোগল্পমালা দ্য উইন্ট্রি পিকক। ১৯১৯ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্যের তাড়নায় বারংবার তাকে ঠিকানা বদল করতে হতে থাকে। ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণে একবার তার জীবনসংশয় পর্যন্ত দেখা দেয়।

বর্বর তীর্থযাত্রার সূচনা[সম্পাদনা]

যুদ্ধের বছরগুলিতে লরেন্স মানসিকভাবে আহত হয়ে পড়েন। তারপরেই শুরু হয় তার স্বেচ্ছা-নির্বাসন পর্ব; তার নিজের যা ছিল 'বর্বর তীর্থযাত্রা' ('savage pilgrimage')। প্রথম সুযোগেই তিনি ইংল্যান্ড থেকে পালিয়ে যান। পরে মাত্র দু-বার তিনি স্বল্পসময়ের সফরে ফিরে এসেছিলেন ইংল্যান্ডে। অবশিষ্ট জীবন নিজের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বভ্রমণ করেই কাটিয়ে দেন লরেন্স। ভ্রমণের নেশা তাকে নিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া, ইতালি সিলোন (অধুনা শ্রীলঙ্কা), যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকোদক্ষিণ ফ্রান্সে

১৯১৯ সালের নভেম্বর মাসে ইংল্যান্ড ছেড়ে লরেন্স দক্ষিণ দিকে যাত্রা করেন; প্রথমে যান মধ্য ইতালির অ্যাব্রুজি অঞ্চলে, পরে রওনা হন ক্যাপ্রিতাওরমিনা, সিসিলি-র ফন্টানা ভেচাইয়ার দিকে। সিসিলি থেকে স্বল্পসময়ের শিক্ষামূলক ভ্রমণ সারেন সার্ডিনিয়া, মন্টে ক্যাসিনো, মালটা, উত্তর ইতালি, অস্ট্রিয়াদক্ষিণ জার্মানি অঞ্চলে। তার রচনায় এইসব অঞ্চলের অনেকগুলিরই উল্লেখ পাওয়া যায়। এই সময় লিখিত তার নতুন উপন্যাসগুলি হল দ্য লস্ট গার্ল (যে বইটির জন্য তিনি জেমস টেইট ব্ল্যাক স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন), অ্যারন’স রডমিস্টার নুন নামক একটি খণ্ডাংশ (যার প্রথম ভাগ লেখকের ফিনিক্স সংকলনে ও ১৯৮৪ সালে সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়)। এই সময় কয়েকটি অনু-উপন্যাস নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করেন লরেন্স: দ্য ক্যাপ্টেন’স ডল, দ্য ফক্স,দ্য লেডিবার্ড। তার সঙ্গে এই সময় লিখিত তার ছোটোগল্পগুলি প্রকাশিত হয় ইংল্যান্ড, মাই ইংল্যান্ড অ্যান্ড আদার স্টোরিজ সংকলনে। দ্য বার্ড, বিস্ট অ্যান্ড ফ্লাওয়ার কাব্যগ্রন্থে প্রাকৃতিক জগৎ সম্বন্ধে এই ক’বছরে তার লেখা একাধিক কবিতা সংকলিত হয়। ইংরেজি ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভ্রমণসাহিত্য রচনাকার হিসেবে লরেন্সের প্রসিদ্ধি বহুজনমান্য। ১৯২১ সালের জানুয়ারি মাসে টাওরমিনায় তার সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের বিবরণ মেলে সি অ্যান্ড সার্ডিনিয়া গ্রন্থে। এই বইটি ভূমধ্যসাগরের এই অংশের জনজীবনের এক প্রতিচ্ছবি। অপেক্ষাকৃত অল্পখ্যাত রচনা হল মরিস ম্যাগনাসের অসামান্য স্মৃতিচারণা (মেমোয়ার্স অব ফরেন লিজিয়ন), যে গ্রন্থে লরেন্স তার মন্টে ক্যাসিনোর মঠভ্রমণের কথা লিখেছেন। অন্যান্য গদ্যরচনার মধ্যে রয়েছে ফ্রেডিয়ান ও সাইকো-অ্যানালিলিস সংক্রান্ত দুটি গবেষণাপত্র, মুভমেন্ট ইন ইউরোপিয়ান হিস্ট্রি নামে একটি স্কুলপাঠ্য পুস্তক, যা তিনি ইংল্যান্ডে তার কুখ্যাতির কারণে ছদ্মনামে প্রকাশ করেন।

পরবর্তী জীবন ও সৃষ্টিকর্ম[সম্পাদনা]

১৯২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের ইচ্ছা নিয়ে লরেন্স সেই দিকে যাত্রা করেন। তারা ভেসে চলেন পূর্বদিকে; প্রথমে সিলোন ও পরে অস্ট্রেলিয়ায়। ডারলিংটন, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় স্বল্পকালীন অধিষ্ঠানের সময় স্থানীয় লেখক মলি স্কিনারের সঙ্গে তার আলাপ হয়। তারপর উপকূলীয় শহর থিরোউল, নিউ সাউথ ওয়েলস-এ অল্পকাল বাস করেন। এই সময় তিনি ক্যাঙারু নামক উপন্যাসটি সমাপ্ত করেন। এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য ছিল স্থানীয় প্রান্তিক রাজনীতি; তার সঙ্গে যুদ্ধকালীন তার কর্নওয়ালের অভিজ্ঞতার এক ঝলক দেখা মেলে এই উপন্যাসে।

১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছান লরেন্স। এখানে বিশিষ্ট সমাজপতি ম্যাবেল ডজ লুহানের সঙ্গে তাদের আলাপ হয়। টাওস, নিউ ম্যাক্সিকো-র কাছে কিউয়া রাঞ্চে ১৬০ একর জমিতে একটি ইউটোপিয়ান কলোনি স্থাপনে সম্মত হন তারা। সনস অ্যান্ড লাভার্স উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির পরিবর্তে তারা ১৯২৪ সালে সেই ভূসম্পত্তি ক্রয় করেন। এই রাঞ্চটি বর্তমানে ডি এইচ লরেন্স রাঞ্চ নামে পরিচিত। দুই বছর তিনি নিউ মেক্সিকোতে থাকেন। মাঝে মেক্সিকোর লেক চ্যাপালাওয়াক্সাকা পরিভ্রমণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন লরেন্স তার স্টাডিজ ইন ক্ল্যাসিক আমেরিকান লিটারেচার গ্রন্থটির পুনর্লিখন ও প্রকাশনায় মন দেন। ১৯১৭ সালে এই সমালোচনা প্রবন্ধমালার রচনার কাজ শুরু হয়েছিল। পরে এডমন্ড উইলসন এই গ্রন্থটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন, "(এটি) এই বিষয়ের উপর লিখিত চিরন্তন ও প্রথম শ্রেণির বইগুলির একটি।" প্রতীকবাদ, নিউ ইংল্যান্ড তুরীয়বাদপিউরিটান চেতনার অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন এই প্রবন্ধগুলি ১৯২০-এর দশকে হারমান মেলভিলের হৃতসম্মান পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এই সময় লরেন্স রচনা করেন একগুচ্ছ কথাসাহিত্য। যার মধ্যে উল্লেখনীয় দ্য বয় ইন দ্য বুশ, দ্য প্লামড সারপেন্ট, সেন্ট মাওয়ার, দ্য ওম্যান হু রোড অ্যাওয়ে, দ্য প্রিন্সেস ও বিক্ষিপ্ত ছোটোগল্পগুচ্ছ। এই সময় তিনি আরও কিছু ভ্রমণ সাহিত্য রচনারও সময় পেয়ে যান; যেমন কয়েকটি পরস্পর সংযুক্ত শিক্ষাভ্রমণের কাহিনি মর্নিংস ইন মেক্সিকো

১৯২৩ সালের শেষদিকে ইংল্যান্ডের দিকে তার স্বল্পকালীন সমুদ্রযাত্রা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তিনি টাওসে ফিরে আসেন এবং বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে লেখক হিসেবে তার জীবন এখন আমেরিকাতেই প্রতিষ্ঠিত। যদিও ১৯২৫ সালের মার্চ মাসে মেক্সিকোয় তার তৃতীয় ভ্রমণের সময় তিনি মারণ ম্যালেরিয়াযক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। সেরে উঠলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তার আর একবার ইউরোপ প্রত্যাবর্তনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তবে তিনি সাংঘাতিক রকমের অসুস্থ ছিলেন এবং তার স্বাস্থ্যও অনুকূল ছিল না; ভ্রাম্যমাণ জীবন অতিবাহিত করা তাই তখন তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

ফ্লোরেন্সের কাছে উত্তর ইতালিতে একটি ভিলায় লরেন্স ঘর বাঁধেন। এখানেই তিনি রচনা করেন দ্য ভার্জিন অ্যান্ড দ্য জিপসিলেডি চ্যাটার্লিজ লাভার (১৯২৮) উপন্যাসের কয়েকটি পাঠ। দ্বিতীয় গ্রন্থটি ছিল তার সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। ফ্লোরেন্স ও প্যারিসে ব্যক্তিগত সংস্করণে প্রকাশিত এই উপন্যাসখানি তার কুখ্যাতির পালে হাওয়া জোগায়। যাঁরা এর তথাকথিত অশ্লীলতায় আহত হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লরেন্স অনেকগুলি ব্যঙ্গকবিতা রচনা করেন। এগুলি " প্যান্সিস "" নেটলস " শিরোনামে প্রকাশিত হয়; এবং প্রকাশিত হয় পর্নোগ্রাফি অ্যান্ড অবসিনিটি নামক একটি রচনা।

ইতালিতে প্রত্যাবর্তন তাকে কিছু পুরনো বন্ধুত্বের সম্পর্কে জাগিয়ে তোলার সুযোগ দেয়। এই বছরগুলিতে বিশেষত অ্যালডাস হাক্সলের সঙ্গে তার বিশেষ ঘনিষ্ঠতা হয়। হাক্সলে লরেন্সের মৃত্যুর পর একটি স্মৃতিকথা ও তার প্রথম পত্রাবলির সংকলন প্রকাশ করেন। ১৯২৭ সালের এপ্রিলে শিল্পী আর্ল ব্রিউস্টারের সঙ্গে লরেন্স একাধিক স্থানীয় প্রত্নস্থল পরিভ্রমণ করেন। এই প্রাচীন সমাধিক্ষেত্রগুলির বর্ণনা তিনি দেন একাধিক প্রবন্ধে যেগুলি স্কেচেস অব এট্রুস্কান প্লেসেস অ্যান্ড আদার ইতালীয় এসেজ গ্রন্থে। এই সুন্দর গ্রন্থে বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদের উজ্জ্বল অতীতের বিপরীত দিকটি সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

লরেন্সের সর্বশেষ সমাধিস্থল, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর টাওসের কাছে

লরেন্স কথাসাহিত্য রচনাও চালিয়ে যান। রচিত হয় কিছু ছোটোগল্প ও দ্য এসকেপড কক , যা দ্য ম্যান হু ডায়েড নামেও প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে যিশু খ্রিস্টের পুনরুজ্জীবনের এক সংস্কারমুক্ত পুনর্লিখন লক্ষিত হয়। এই শেষ বছরগুলিতে তৈলচিত্রের প্রতি লরেন্সের গভীর অনুরাগ আবার নতুন করে জেগে ওঠে। সরকারি হয়রানিও চলতে থাকে। লন্ডনের ওয়ারেন গ্যালারিতে ১৯২৯ সালে আয়োজিত তার এক চিত্রপ্রদর্শনীতে পুলিশ হানা দেয় ও বেশ কিছু চিত্রকর্ম বাজেয়াপ্ত করে। তার মৃত্যুর অব্যবহিত পর থেকে টাওসের লা ফন্ডা হোটেলে তার নয়টি চিত্র স্থায়ীভাবে প্রদর্শিত হতে থাকে। হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্কের পিছনে একটি ছোটো অফিসে সেগুলি রক্ষিত আছে এবং জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলেও লরেন্স লেখালিখি চালিয়ে যান। শেষ মাসগুলিতে তিনি রচনা করেন অসংখ্য কবিতা, সমালোচনা, প্রবন্ধ ও যাঁরা তার শেষ উপন্যাস বাজেয়াপ্ত করার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন তাদের বিরুদ্ধে তীব্র আত্মপক্ষ-সমর্থনমূলক রচনা। তার সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ রচনা হল বুক অব রিভিলেশন, অ্যাপোক্যালিপস -এর উপর রচিত তার স্বকীয় চিন্তাধারা। স্যানাটোরিয়াম থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তার যক্ষ্মা জটিল আকার ধারণ করে এবং ফ্রান্সের ভেন্স-স্থিত ভিলা রবারমন্ডে তিনি প্রয়াত হন। ফ্রেডা উইকলি টাওসের রাঞ্চে ফিরে আসেন। পরে তার তৃতীয় স্বামী লরেন্সের চিতাভষ্ম নিয়ে আসেন নিউ মেক্সিকো পার্বত্য অঞ্চলের একটি ছোটো চ্যাপেলে সংরক্ষণের জন্য।

যৌনতা[সম্পাদনা]

১৯১৬-১৭ সালে কর্নওয়ালে উইমেন ইন লাভ রচনার সময় লরেন্সের সঙ্গে উইলিয়াম হেনরি হকিং নামে এক কৃষকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও সম্ভবত প্রণয়সম্পর্ক গড়ে ওঠে।[৫] এই সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্ক ছিল কিনা সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায় না; যদিও ফ্রেডা উইকলির বিশ্বাস তাই ছিল। লরেন্সের নিজস্ব যৌন প্রবৃত্তির সঙ্গে সমকামী বিষয়বস্তুর প্রতি তার আগ্রহ বেশ লক্ষ্যনীয়। উইমেন ইন লাভ উপন্যাসে এই থিম নিয়ে প্রকাশ্যেই আলোচনা করেন তিনি। বাস্তবিকই, ১৯১৩ সালে লিখিত একটি চিঠিতে তিনি জানান, " আমার জানতে ইচ্ছে করে, কেন মহত্বের প্রতি অগ্রসর প্রতিটি মানুষের মধ্যেই নিজের জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে সমকামী মনোভাব লক্ষিত হয়..." [৬] তার রচনা থেকে আরও উদ্ধৃত হয়, "ষোলো বছর বয়সে এক তরুণ কয়লাখনি শ্রমিকের সংস্পর্শে এসেছিলাম; আমার মনে হয় আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রণয়ী সে-ই।"[৭]

মরণোত্তর সম্মাননা[সম্পাদনা]

লরেন্সের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে সংবাদপত্রে তার যে মৃত্যুসংবাদ সংবলিত জীবনীগুলি প্রকাশিত হয় সেগুলি ছিল অসহানুভূতিশীল ও প্রতিকূল মনোভাবাপন্ন। ই এম ফরস্টার ছিলেন এর ব্যতিক্রম। তবে আরও অনেকেই ছিলেন যাঁরা লেখকের জীবন ও সৃষ্টিকর্মের যথাযথ মূল্যায়ন সমাজের চোখের সামনে তুলে ধরেন। উদাহরণস্বরূপ, লরেন্সের দীর্ঘ সময়ের বন্ধু ক্যাথারিন কার্সওয়েল ১৯৩০ সালের ১৬ মার্চ টাইম অ্যান্ড টাইড পত্রিকায় পত্রাকারে লরেন্সের জীবনকথা প্রকাশ করেন। এই চিঠির সমালোচনার জবাবে তিনি যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তা ছিল:

In the face of formidable initial disadvantages and life-long delicacy, poverty that lasted for three quarters of his life and hostility that survives his death, he did nothing that he did not really want to do, and all that he most wanted to do he did. He went all over the world, he owned a ranch, he lived in the most beautiful corners of Europe, and met whom he wanted to meet and told them that they were wrong and he was right. He painted and made things, and sang, and rode. He wrote something like three dozen books, of which even the worst page dances with life that could be mistaken for no other man's, while the best are admitted, even by those who hate him, to be unsurpassed. Without vices, with most human virtues, the husband of one wife, scrupulously honest, this estimable citizen yet managed to keep free from the shackles of civilization and the cant of literary cliques. He would have laughed lightly and cursed venomously in passing at the solemn owls–each one secretly chained by the leg–who now conduct his inquest. To do his work and lead his life in spite of them took some doing, but he did it, and long after they are forgotten, sensitive and innocent people–if any are left–will turn Lawrence's pages and will know from them what sort of a rare man Lawrence was.

১৯৩২ সালে প্রকাশিত লরেন্সের পত্রাবলি সংকলনের এক ভূমিকাতে অ্যালডাস হাক্সলেও তার পক্ষাবলম্বন করেন। যদিও সাহিত্যে লরেন্সের অবদানের সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী মুখপাত্র ছিলেন কেমব্রিজ সাহিত্য সমালোচক এফ আর লিভিস। তার মতে ইংরেজি কথাসাহিত্যের ধারায় লরেন্সের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিভিস দ্য রেইনবো, উইমেন ইন লাভ ও তার ছোটোগল্পগুলিকে প্রথম শ্রেণির শিল্পকলা বলে অভিহিত করেছেন। পরবর্তীকালে ১৯৬০ সালের লেডি চ্যাটার্লি বিচারের পর এই বইয়ের প্রকাশ জনমানসে লরেন্সের প্রসিদ্ধি (বা কুখ্যাতি) আরও প্রকট হয়ে ওঠে।

কেট মিলেট প্রমুখ একাধিক নারীবাদী সমালোচক লরেন্সের যৌন রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এর ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার সম্মানহানি ঘটে। অন্যদিকে লরেন্সের রচনা ধীরে ধীরে পাঠক পেতে থাকে। দ্য কেমব্রিজ এডিশন অব দ্য লেটার্স অ্যান্ড ওয়ার্কস অব ডি এইচ লরেন্স নামে একটি নতুন গবেষণাধর্মী সংকলনে তার শ্রেষ্ঠত্বের নতুন একটি দিক উন্মোচিত হয়।

তার বিরুদ্ধে পুরুষতান্ত্রিকতার অভিযোগটিও ঠিক সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। তিনি (আপাতভাবে বিরোধী) নারীবাদী দৃষ্টিকোণের সমর্থন করেন। তার লিখিত উপাদান থেকেই প্রমাণিত হয় নারীজাতিকে শক্তিশালী, স্বাধীন ও জটিলরূপে উপস্থাপনার প্রতি তার কতটা মনোযোগ ছিল। তার প্রধান প্রধান রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্রেই দেখা যায় তরুণী ও স্বনিয়ন্ত্রিত নারী চরিত্রদের। হ্যারিসন[৮] লরেন্সের রচনার হৃদয়স্থলে প্রবাহিত এক ধর্ষকামিতার স্বতন্ত্র ধারার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

উপন্যাস[সম্পাদনা]

সম্ভবত লরেন্সের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ উপন্যাসগুলি হল: সনস অ্যান্ড লাভার্স, দ্য রেইনবো, উইমেন ইন লাভলেডি চ্যাটার্লি’জ লাভার। এই উপন্যাসগুলির মধ্যেই লরেন্স শিল্পযুগের প্রেক্ষাপটে জীবন ও জীবনধারণের সম্ভাবনার দিকটি খতিয়ে দেখেছেন। নির্দিষ্টভাবে বললে এই পরিমণ্ডলে মানবীয় সম্পর্কের স্বরূপ কী হতে পারে তা লরেন্সের নখদর্পনে ছিল। মাঝে মাঝে বাস্তবতাবোধের সঙ্গে সংঘাত ঘটলেও তার চরিত্রগুলিকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যাতে তার দর্শনচিন্তার প্রেক্ষিতে তাদের বোঝা সহজ হয়। তার উপন্যাসে যৌনক্রিয়ার যে ব্যবহার সমকালীন দৃষ্টিভঙ্গিকে ভয়ংকর রকম নাড়া দিয়েছিল; তার শিকড় ছিল অত্যন্ত ব্যক্তিগত তার চিন্তাধারা ও সত্ত্বার গভীরে। উল্লেখনীয়, লরেন্স মানবীয় স্পর্শ আচরণে অত্যন্ত বিশ্বাসী ছিলেন (হ্যাপটিকস দেখুন)। শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় তার আগ্রহের মূলে ছিল আমাদের দৈহিক গুরুত্বের পুনর্বাসন ও সেই প্রক্রিয়ার সঙ্গে তার পুনঃসামঞ্জস্যবিধান যা, লরেন্সের চোখে ছিল মনের উপর পশ্চিমি সভ্যতার অতিরিক্ত গুরুত্বদানের শ্লথ প্রক্রিয়া। পরবর্তী বছরগুলিতে ছোটো উপন্যাস রচনায় লরেন্স তার হাত পাকান। এই উপন্যাসগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেন্ট মাওয়ার, দ্য ভার্জিন অ্যান্ড দ্য জিপসিদ্য এসকেপড কক

ছোটগল্প[সম্পাদনা]

লরেন্স অনেক ছোটগল্প রচনা করেন। তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ গল্পগুলি হল দ্য ক্যাপ্টেন’স ডল, দ্য ফক্স, দ্য লেডিবার্ড, অডর অব ক্রিসানথেমামস, দ্য প্রিন্সে, দ্য রকিং হর্স উইনার, সেন্ট মাওয়ার, দ্য ভার্জিন অ্যান্ড দ্য জিপসিদি ওম্যান হু রোড অ্যাওয়ে (দ্য ভার্জিন অ্যান্ড দ্য জিপসি লরেন্সের মৃত্যুর পরে অনুউপন্যাসের আকারে প্রকাশিত হয়)।

তার সর্বাধিক প্রশংসিত গল্পসংকলনের মধ্যে ১৯১৬ সালে প্রকাশিত দ্য প্রুশিয়ান অফিসার অ্যান্ড আদার স্টোরিজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই গ্রন্থে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে লরেন্সের মনোভাবে একটি অন্তর্কথন মেলে। ১৯২৮ সালে প্রকাশিত দ্য ওম্যান হু রোড অ্যাওয়ে অ্যান্ড আদার স্টোরিজ গ্রন্থে তিনি সেই নেতৃত্বের থিমগুলি গড়ে তুলেছেন যা ক্যাঙারু, দ্য প্লামড সারপেন্ট ফ্যানি অ্যান্ড অ্যানি -র মতো উপন্যাসেও তিনি ফুটিয়ে তোলেন।

কবিতা[সম্পাদনা]

লরেন্স মূলত তার উপন্যাসগুলির জন্য বিখ্যাত হলেও, তিনি রচনা করেছিলেন প্রায় আটশো কবিতা, যার অধিকাংশই ছিল তুলনামূলকভাবে ছোটো আকারের। তিনি প্রথম কবিতা লেখেন ১৯০৪ সালে। ড্রিমস ওল্ড ড্রিমস ন্যাসেন্ট নামে তার প্রথম যুগের দুটি কবিতা প্রকাশিত হয় দ্য ইংলিশ রিভিউ পত্রিকায়। তার আদি কবিতাগুলি তাকে গ্রেগরিয়ান কবিদের ঘরানার অন্তর্ভুক্ত করে। এই ঘরানার নাম শুধু তৎকালে রাজত্বকারী সম্রাটের নামেই ছিল না, তারা পূর্ববর্তী গ্রেগরিয়ান যুগের রোম্যান্টিক কবিদের অনুসরণে কাব্যরচনার চেষ্টায় রত ছিলেন। এই সমগ্র কাব্যান্দোলন ও লরেন্সের কাব্যকৃতির বৈশিষ্ট্য ছিল বহুপ্রচলিত কাব্যিক ট্রোপ ও অপ্রচলিত ভাষার ইচ্ছাকৃত ব্যবহার। জন্তু ও জড়পদার্থের মধ্যে মানবীয় আবেগের যে আধানকে জন রাস্কিন "প্যাথেটিক ফ্যালাসি" আখ্যা দেন, তাও লরেন্সের অনেক কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায়।

It was the flank of my wife
I touched with my hand, I clutched with my hand,
rising, new-awakened from the tomb!
It was the flank of my wife
whom I married years ago
at whose side I have lain for over a thousand nights
and all that previous while, she was I, she was I;
I touched her, it was I who touched and I who was touched.
-- excerpt, New Heaven and Earth

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদানকারী অনেক কবির লেখার ধরন রাতারাতি বদলে যায়। কর্নওয়ালে থাকাকালীন লরেন্সের নিজের রচনাতেও এক নাটকীয় পরিবর্তন আসে। এই সময় ওয়াল্ট হুইটম্যানের প্রভাবে তিনি মুক্তছন্দে কবিতা লিখতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে রচিত কাব্যগ্রন্থ নিউ পোয়েমস -এর ভূমিকায় তিনি তার কাব্যসনদ ঘোষণা করেন: "We can get rid of the stereotyped movements and the old hackneyed associations of sound or sense. We can break down those artificial conduits and canals through which we do so love to force our utterance. We can break the stiff neck of habit...But we cannot positively prescribe any motion, any rhythm."

নিঁখুত করার উদ্দেশ্যে লরেন্স তার উপন্যাসগুলির পুনর্লিখন করতেন। ১৯২৮ সালে একইরকমভাবে তার আদি কবিতাগুলি সংকলনের সময় তিনি সেগুলি পুনর্লিখন করেন। এ ছিল সেই কবিতাগুলির কাহিনিরূপায়ণ। তবে এর ফলে প্রথম যুগের রচনার কিছু চারিত্র্যবৈশিষ্ট্য অবলুপ্ত হয়। তার নিজের ভাষায়: "A young man is afraid of his demon and puts his hand over the demon's mouth sometimes and speaks for him." তার শ্রেষ্ঠ কবিতা সম্ভবত তার প্রকৃতি বিষয়ক কবিতাগুলি; যেগুলি সংকলিত হয় বার্ডস বিস্টস অ্যান্ড ফ্লাওয়ারস টরটইসেজ গ্রন্থে। তার একটি বহু সংকলিত কবিতা হল স্নেক । আধুনিক মানুষের প্রকৃতি থেকে দূরত্ব ও সূক্ষ্ম ধর্মীয় উপমার তার সবচেয়ে বহুব্যবহৃত থিম এই কবিতায় প্রকট।

In the deep, strange-scented shade of the great dark carob tree
I came down the steps with my pitcher
And must wait, must stand and wait, for there he was at the trough before me.
-- excerpt, Snake

লুক! উই হ্যাভ কাম থ্রু! যুদ্ধসমাপ্তিকালীন যুগে রচিত তার একটি কাব্যগ্রন্থ। এই গ্রন্থে তার রচনার অন্য এক সাধারণ বিষয় প্রকাশিত হয়: রচনার মধ্যে নিজেকে নগ্ন করে দেওয়ার প্রবণতা। লরেন্সকে প্রেমের কবিতাকার আখ্যা দেওয়া যেতেই পারে, তবে লরেন্স মূলত যৌন নৈরাশ্য ও যৌনপ্রক্রিয়ার মতো অল্প রোম্যান্টিক বিষয় নিয়েই কাব্যরচনা করেছেন। এজরা পাউন্ড তার লিটারারি এসেজ গ্রন্থে নিজের "নোংরা অনুভূতিসমূহ" ("disagreeable sensations")-এর প্রতি লরেন্সের আগ্রহের অভিযোগ আনেন; কিন্তু সেই সঙ্গে তার "অপরাধমূলক আখ্যান" ("low-life narrative." )-এর প্রশংসাও করেন। এ ছিল রবার্ট বার্ন রচিত স্কটস কবিতা আদলে লেখা লরেন্সের উপভাষা কবিতাগুলির প্রসঙ্গ; এখানে তিনি তার অল্পবয়সে দেখা নটিংহ্যামশায়ারের মানুষের ভাষা ও বিষয়বস্তুর কথা লিখেছেন।

Tha thought tha wanted ter be rid o' me.
'Appen tha did, an' a'.
Tha thought tha wanted ter marry an' se
If ter couldna be master an' th' woman's boss,
Tha'd need a woman different from me,
An' tha knowed it; ay, yet tha comes across
Ter say goodbye! an' a'.
-- excerpt, The Drained Cup

পাউন্ড ছিলেন আধুনিক কবিতার এক প্রধান মুখপাত্র। যদিও গ্রেগরিয়ান যুগের পর লরেন্সের কবিতায় অনেক আধুনিক লক্ষণ ফুটে ওঠে, তবুও আধুনিক কবিদের কবিতার তুলনায় সেগুলি ছিল অনেকাংশে পৃথক। আধুনিক সাহিত্যকর্ম প্রায়শই হত নৈর্ব্যক্তিক সাহিত্যকর্ম, যেখানে প্রতিটি শব্দ ওজন করে প্রয়োগ করা হত। লরেন্স মনে করতেন প্রতিটি কবিতা হবে ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং চলৎশক্তি প্রতিটি সাহিত্যকর্মের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তার একটি কাব্যসংকলনের নাম রাখেন প্যান্সিজ । শব্দটিতে ক্ষতস্থান ব্যান্ডেজের ফরাসি শব্দ panser-এর খোঁচা ছিল। তবে তার ক্ষতস্থানে আরও আরামদায়ক কিছুর প্রয়োজন ছিল। কারণ ইংল্যান্ডে এই কাব্যগ্রন্থের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্করণ থেকে দ্য নোবেল ইংলিশম্যান ডোন্ট লুক অ্যাট মি কবিতাদুটি বাদ দেওয়া হয় অশ্লীলতার অভিযোগে। জীবনের শেষ দশ বছর তার মূলত কাটে ইংল্যান্ডের বাইরে। কিন্তু তার চিন্তাভাবনার কেন্দ্র বেশিরভাগ সময়েই ছিল ইংল্যান্ড। তার শেষ কাব্যগ্রন্থ নেটলস প্রকাশিত হয় মৃত্যুর ঠিক এগারোদিন পর। এ ছিল ইংল্যান্ডে নৈতিকতার আবহাওয়াকে এক তিক্ত, হুল-ফোটানো , কিন্তু বেশ মজার আক্রমণ।

O the stale old dogs who pretend to guard
the morals of the masses,
how smelly they make the great back-yard
wetting after everyone that passes.
-- excerpt, The Young and Their Moral Guardians

লরেন্সের অপ্রকাশিত কবিতার দুটি নোটবই তার মৃত্যুর পর লাস্ট পোয়েমসমোর প্যান্সিজ নামে প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থদ্বয়েই রয়েছে মৃত্যু সম্পর্কে তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ কবিতাদ্বয়, ব্যাভারিয়ান জেনটিয়ানস দ্য শিপ অব ডেথ

সাহিত্য সমালোচনা[সম্পাদনা]

অন্যান্য সাহিত্যিকদের রচনাপ্রসঙ্গে লরেন্সের সমালোচনা তার নিজস্ব চিন্তাধারা ও রচনার গভীর অন্তর্দৃষ্টির সাক্ষর রেখে যায়। এই ক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল স্টাডিজ অব টমাস হার্ডি অ্যান্ড আদার এসেজস্টাডিজ ইন ক্ল্যাসিক আমেরিকান লিটারেচার। দ্বিতীয় গ্রন্থটিতে হুইটম্যান, মেলভিল ও এডগার অ্যালান পো সম্পর্কে লরেন্সের প্রতিক্রিয়া তার শৈলীর বিশেষ একটি দিককে আলোকিত করেছে।

দর্শনচিন্তা[সম্পাদনা]

সারাজীবন ধরে লরেন্স একটি বিশেষভাবে ব্যক্তিগত দর্শন গড়ে তোলেন। এই দর্শনের অনেক বৈশিষ্ট্য ১৯৬০-এর দশকের প্রতিসংস্কৃতির প্রাকচরিত্র হয়ে ওঠে। বাস্তবিক, ১৯৬০-এর দশকের প্রতিসংস্কৃতির সর্বাপেক্ষা আইকনিক চলচ্চিত্র ইজি রাইডার-এ তার উল্লেখও করা হয়। তার অধিকাংশ কথাসাহিত্যের কেন্দ্রীয় দ্বৈতভাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সনস অ্যান্ড লাভার্স-এর অপ্রকাশিত ভূমিকায় এবং এই কাজ করা হয়েছে হোলি ট্রিনিটির সূত্র ধরে। যত তার দর্শন চিন্তাধার গড়ে উঠেছে, ততই লরেন্স সরে গেছেন অধিকতর প্রত্যক্ষ খ্রিস্টান উপমার থেকে এবং তার পরিবর্তে ছুঁয়ে গেছেন অতীন্দ্রিয়বাদ, বৌদ্ধধর্মপ্যাগান ধর্মতত্ত্ব। কোনো কোনো মতে বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত অতিলৌকিক অনুশীলনের অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিলেন লরেন্স, যদিও নিজেকে তিনি খ্রিস্টান রূপেই অভিহিত করেছেন।

চিত্রকলা[সম্পাদনা]

ডি. এইচ. লরেন্সের পাসপোর্ট ছবি
ডি. এইচ. লরেন্সের পাসপোর্ট ছবি

চিত্রকলার প্রতি লরেন্সের আগ্রহ আজীবনের; শেষজীবনে এই চিত্রকলাই তার ভাবপ্রকাশের প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। ১৯২৯ সালে লন্ডনের মেফেয়ার স্থিত ওয়ারেন গ্যালারিতে এই ছবিগুলি প্রদর্শিত হয়। ১৩,০০০ জন এই প্রদর্শনী দেখতে আসেন। প্রদর্শনীটি বিতর্কের ঝড় তোলে। ডেইলি এক্সপ্রেস দাবি করে, " ফ্লাইট উইথ অ্যান আমাজন ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি অতি কুৎসিত দাড়িওয়ালা লোক এক সুন্দরী রমণীকে তার কামুক মুঠির মধ্যে ধরে আছে আর চারিদিকে নেকড়েরা হাঁ করে কিছু পাবার আশায় তাদের দেখছে। নিঃসন্দেহে [এই ছবি] অশালীন।" তবে অনেক শিল্পী ও শিল্পরসিক এই ছবির প্রশংসা করেন। গোয়েন জন এভরিম্যান পত্রিকায় এই প্রদর্শনীর সমালোচনা করতে গিয়ে লরেন্সের "আত্ম-অভিপ্রকাশের বিস্ময়কর ক্ষমতা"-র কথা বলেন এবং কন্টাডিনি-কে বেছে নেন বিশেষ প্রশংসার জন্য। জনসাধারণের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ প্রদর্শনী থেকে বোকাচ্চিও স্টোরিকন্টাডিনি সহ পঁচিশটি ছবির তেরোটিকে বাজেয়াপ্ত করে। একাধিক লেখক, শিল্পী ও পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন সত্ত্বেও কেবলমাত্র এই শর্তে লরেন্স তার ছবিগুলি পুনরুদ্ধার করেন যে কোনোদিন তিনি ইংল্যান্ডে এগুলির প্রদর্শনী আয়োজন করবেন না। তার ছবির সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালাটি আছে নিউ মেক্সিকোর টাওসের লা ফন্ডা হোটেলে। বোকাচ্চিও স্টোরিরেজারেকশন সহ একাধিক ছবি রক্ষিত আছে অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটিজ রিসার্চ সেন্টারে।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • "ভাল জন্তু হও, তোমার প্রবৃত্তির কাছে সত্যবদ্ধ থাকো।" -- দ্য হোয়াইট পিকক
  • "মিসেস মোরেল সবসময়েই বলে থাকেন জীবনোত্তরকালে তাঁর স্বামী কিছুই পাবেন না: শয়তানের নিবাস থেকে বাড়ি আসার সময় তিনি নিচুতলার জগৎ থেকে সাময়িক যন্ত্রণাভোগে স্থলে উত্তীর্ণ হয়েছেন, পালমারস্টোন আর্মসে তিনি অতিক্রম করেছেন স্বর্গলোক।" -- সনস অ্যান্ড লাভার্স (১৯১৩ সালের সংস্করণ থেকে বাদ যাওয়া অংশ, ১৯৯২ সালের সংস্করণে পুনরায় সংযোজিত)
  • "আমার মনে হয় নিজেকে বিনামূল্যে মজা লোটার জন্য জার্মান বুলেটের সামনে নিজেকে পেতে দেওয়ার পক্ষে আমি অতি মূল্যবান এক জীব।"—হ্যারিয়েট মোনরোকে লেখা চিঠি, ১ অক্টোবর, ১৯১৪
  • "পৃথিবী জনশূন্য, শুধু অবিচ্ছিন্ন তৃণক্ষেত্র চারিদিকে, আর সেই ঘাসের উপর বসে আছে একটা খরগোশ; তোমার মনে হয় না এটা একটা সুন্দর স্বচ্ছ চিন্তা।" -- উইমেন ইন লাভ
  • "শিল্পীকে বিশ্বাস কোরো না, কাহিনিকে বিশ্বাস করো।" -- স্টাডিজ ইন ক্ল্যাসিক আমেরিকান লিটারেচার (পাঠান্তর "কাহিনিকারকে বিশ্বাস কোরো না, কাহিনিকে বিশ্বাস করো।")
  • "আমাদের যুগ মূলগতভাবে এক বিয়োগান্তক যুগ, তাই বিয়োগান্তক পন্থায় একে গ্রহণ করতে আমরা অস্বীকার করছি।"—সূচনাবাক্য, লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার
  • "তার বাবা স্বাভাবিক মানুষ নন, তিনি যেন ঘরভরা পুরনো প্রবচন। " -- উইমেন ইন লাভ
  • "ওরা বলে সমুদ্র ঠাণ্ডা, কিন্তু সমুদ্রের শিরাতেই বইছে সবচেয়ে গরম রক্ত।" -- হোয়েলস উইপ নট
  • "আমি যদি চাঁদ হতুম, তবে কোথায় ঢলে পড়তে হয় তার খবর রাখতুম।" -- দ্য রেইনবো
  • "আমি এমন কোনো বন্য জীবের কথা জানি না, যে নিজের জন্য দুঃখ অনুভব করে। নিজের জন্য একটুও দুঃখ অনুভব না করে একটা ছোট্ট পাখি পর্যন্ত ঠাণ্ডায় জমে মরে নিচে পড়ে যায়।" -- "সেলফ-পিটি"
  • "যদি ক্ষমতা থাকত আমি স্ফটিক প্রাসাদের মতো বড় একটা মৃত্যুশালা নির্মাণ করতাম; যেখানে একটি সামরিক ব্যান্ড হালকা সঙ্গীত বাজাতো, আর উজ্জ্বলভাবে কাজ করত একটা সিনেম্যাটোগ্রাফ; তারপর সদর রাস্তা ও পিছনের রাস্তা ঘুরে যত অসুস্থ, যত স্থবির আর যত আহত সবাইকে নিয়ে এসে সেখানে জড়ো করতাম।"[৯]

লরেন্সের সাহিত্যকর্মের তালিকা[সম্পাদনা]

নিচে সংস্করণ প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা বলা হল

দ্য কেমব্রিজ এডিশন অব দ্য লেটারস অ্যান্ড ওয়ার্কস অব ডি এইচ লরেন্স একটি প্রধান গবেষণামূলক প্রকল্প। এই প্রকল্পের লক্ষ্য গ্রন্থগুলির এক নতুন পাঠ উপস্থাপনা করা যাতে লেখক এই পাঠগুলি যেরূপে মুদ্রণের ইচ্ছা করেছিলেন তার একটি রূপ পাঠকের সম্মুখে তুলে ধরা যায়। বর্তমান প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। বর্তমানে লরেন্সের সকল সাহিত্যকর্ম ৪০টি পৃথক খণ্ডে সংকলিত হয়েছে। প্রতিটি খণ্ডই উচ্চমানের সমালোচনা সমৃদ্ধ। নিম্নোল্লিখিত গ্রন্থপঞ্জিটি এই প্রাতিষ্ঠানিক প্রামাণ্য সংস্করণের ভিত্তিতে প্রদত্ত হয়েছে।

সাধারণভাবে যেখানে কেমব্রিজ সিরিজে গ্রন্থটি পাওয়া যায়নি, সেখানে অন্য নির্ভরযোগ্য সূত্র অবলম্বন করা হয়েছে।

উপন্যাস[সম্পাদনা]

ছোটোগল্প[সম্পাদনা]

কবিতা[সম্পাদনা]

  • Love Poems and others (1913)
  • Amores (1916)
  • Look! We have come through! (1917)
  • New Poems (1918)
  • Bay: a book of poems (1919)
  • Tortoises (1921)
  • Birds, Beasts and Flowers (1923)
  • The Collected Poems of D H Lawrence (1928)
  • Pansies (1929)
  • Nettles (1930)
  • Last Poems (1932)
  • Fire and other poems (1940)
  • The Complete Poems of D H Lawrence (1964), ed. Vivian de Sola Pinto and F. Warren Roberts
  • D. H. Lawrence: Selected Poems (1972), ed. Keith Sagar.

নাটক[সম্পাদনা]

  • The Widowing of Mrs Holroyd (1914)
  • last lesson of the afternoon
  • Touch and Go (1920)
  • David (1926)
  • The Fight for Barbara (1933)
  • A Collier's Friday Night (1934)
  • The Married Man (1940)
  • The Merry-go-round (1941)
  • The Complete Plays of D H Lawrence (1965)
  • The Plays, edited by Hans-Wilhelm Schwarze and John Worthen, Cambridge University Press, 1999, আইএসবিএন ০-৫২১-২৪২৭৭-০

গদ্যরচনা[সম্পাদনা]

ভ্রমণকাহিনি[সম্পাদনা]

লরেন্স অনূদিত সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

পাণ্ডুলিপি এবং প্রকাশিত উপন্যাস ও অন্যান্য রচনার আদি খসড়াসমূহ[সম্পাদনা]

লরেন্সের পাণ্ডুলিপির গবেষণামূলক পাঠ থেকে জানা যায় যে তিনি একজন সচেতন শিল্পী ছিলেন। মাঝে মাঝেই পুনর্লিখনের মাধ্যমে তিনি তার সৃষ্টিকর্মে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করতেন। এই কাজ কখনও পুরো এক বছর ধরেও চলত। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে এই সকল রচনার আদি খসড়ার সঙ্গে প্রকাশিত পাঠের পার্থক্য প্রতিপাদন বেশ আগ্রহব্যঞ্জক:

পত্রাবলি[সম্পাদনা]

চিত্রকলা[সম্পাদনা]

  • The Paintings of D. H. Lawrence,London: Mandrake Press, 1929.
  • D. H. Lawrence's Paintings, ed. Keith Sagar, London: Chaucer Press, 2003.
  • The Collected Art Works of D. H. Lawrence, ed. Tetsuji Kohno, Tokyo: Sogensha,2004.

লরেন্স বিষয়ক রচনাসমূহ[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি সংক্রান্ত উপাদানসমূহ[সম্পাদনা]

  • Paul Poplawski (1995) The Works of D H Lawrence: a Chronological Checklist (Nottingham, D H Lawrence Society)
  • Paul Poplawski (1996) D. H. Lawrence: A Reference Companion (Westport, Conn., and London: Greenwood Press)
  • P. Preston (1994) A D H Lawrence Chronology (London, Macmillan)
  • W. Roberts and P. Poplawski (2001)A Bibliography of D H Lawrence. 3rd ed. (Cambridge, Cambridge University Press)
  • Charles L Ross and Dennis Jackson, eds. (1995) Editing D H Lawrence: New Versions of a Modern Author (Ann Arbor, Michigan: University of Michigan Press)
  • Keith Sagar (1979) D H Lawrence: a Calendar of his Works (Manchester, Manchester University Press)
  • Keith Sagar (1982) D H Lawrence Handbook (Manchester, Manchester University Press)

গ্রন্থপঞ্জি সংক্রান্ত গবেষণাকর্ম[সম্পাদনা]

  • Catherine Carswell (1932) The Savage Pilgrimage (Cambridge: Cambridge University Press, reissued 1981)
  • Frieda Lawrence (1934) Not I, But The Wind (Santa Fe: Rydal Press)
  • E. T. (Jessie Chambers Wood) (1935) D. H. Lawrence: A Personal Record (Jonathan Cape)
  • Edward Nehls (1957-59) D. H. Lawrence: A Composite Biography, Volumes I-III (Madison: University of Wisconsin Press)
  • Emile Delavenay (1972) D. H. Lawrence: The Man and his Work: The Formative Years, 1885-1919, trans. Katherine M. Delavenay (London: Heinemann)
  • Harry T. Moore (1974) The Priest of Love: A Life of D. H. Lawrence (Heinemann)
  • Paul Delany (1979) D. H. Lawrence's Nightmare: The Writer and his Circle in the Years of the Great War (Hassocks: Harvester Press)
  • G H Neville (1981) A Memoir of D. H. Lawrence: The Betrayal (Cambridge: Cambridge University Press)
  • John Worthen (1991) D. H. Lawrence: The Early Years, 1885 - 1912 (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Mark Kincaid-Weekes (1996) D. H. Lawrence: Triumph to Exile, 1912 - 1922 (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Brenda Maddox (1994) D. H. Lawrence: The Story of a Marriage (W. W. Norton & Co)
  • David Ellis (1998) D. H. Lawrence: Dying Game, 1922 - 1930 (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Keith Sagar (2003) The Life of D. H. Lawrence: An Illustrated Biography (London: Chaucer Press)
  • John Worthen (2005) D. H. Lawrence: The Life of an Outsider (London: Penguin/Allen Lane)
  • Scandalous! the musical based on the life of D. H. Lawrence. Created by Glyn Bailey, Keith Thomas and Theasa Tuohy. Website / Scandalousthemusical.com

নাট্যকলা[সম্পাদনা]

  • লুক ইউ হ্যাভ কাম থ্রু – ডি এইচ লরেন্স ও তার স্ত্রী ফ্রেডার চিঠিপত্র ও রচনাভিত্তিক নাটক। নাট্যকার: জেমস পেটোসা ও ক্যারোল গ্রাহাম লেহান। ১৯৯৮ সালে হেলেন হায়েস অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত।[১০]

সংগীতালেখ্য[সম্পাদনা]

  • স্ক্যান্ডালাস! ডি এইচ লরেন্সের জীবনভিত্তিক এক সংগীতালেখ্য। স্রষ্টা: গ্লিন বেইলি, কেইথ টমাস ও থিসা টৌহি। ওয়েবসাইট: / Scandalousthemusical.com

সাহিত্য সমালোচনা[সম্পাদনা]

  • Michael Bell (1992) D. H. Lawrence: Language and Being (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Richard Beynon, (ed.) (1997) D. H. Lawrence: The Rainbow and Women in Love (Cambridge: Icon Books)
  • Michael Black (1986) D H Lawrence: The Early Fiction (Palgrave MacMillan)
  • Michael Black (1991) D. H. Lawrence: The Early Philosophical Works: A Commentary (London and Basingstoke: Macmillan)
  • Michael Black (1992) Sons and Lovers (Cambridge University Press)
  • Michael Black (2001) Lawrence's England: The Major Fiction, 1913 - 1920 (Palgrave-MacMillan)
  • Keith Brown, ed. (1990) Rethinking Lawrence, Milton Keynes: Open University Press
  • Anthony Burgess (1985) Flame Into Being: The Life And Work Of D. H. Lawrence (William Heinemann)
  • Aidan Burns (1980) Nature and Culture in D. H. Lawrence (London and Basingstoke: Macmillan)
  • L D Clark (1980) The Minoan Distance: The Symbolism of Travel in D H Lawrence, University of Arizona Press
  • Colin Clarke (1969) River of Dissolution: D. H. Lawrence and English Romanticism (London: Routledge and Kegan Paul)
  • Joseph Davis (1989) "D.H. Lawrence at Thirroul (Collins, Sydney, Australia)
  • Carol Dix (1980) D H Lawrence and Women, Macmillan
  • R P Draper (1970) D H Lawrence: The Critical Heritage, London: Routledge and Kegan Paul
  • Anne Fernihough (1993) D. H. Lawrence: Aesthetics and Ideology (Oxford:Clarendon Press)
  • Anne Fernihough, ed. (2001) The Cambridge Companion to D H Lawrence (Cambridge, Cambridge University Press)
  • Graham Holderness (1982) D. H. Lawrence: History, Ideology and Fiction (Dublin: Gill and Macmillan)
  • John R. Harrison (1966) The Reactionaries: Yeats, Lewis, Pound, Eliot, Lawrence: A Study of the Anti-Democratic Intelligentsia (Victor Gollancz, London)
  • Graham Hough (1956) The Dark Sun: A Study of D H Lawrence, Duckworth
  • John Humma (1990) Metaphor and Meaning in D. H. Lawrence's Later Novels, University of Missouri Press
  • Frank Kermode (1973) Lawrence (London: Fontana)
  • Mark Kinkead - Weekes (1968) The Marble and the Statue: The Exploratory Imagination of D. H. Lawrence, pp. 371–418. in Gregor, lan and Maynard Mack (eds.), Imagined Worlds: Essays in Honour of John Butt (London: Methuen,)
  • F. R. Leavis (1955) D H Lawrence: Novelist (London, Chatto and Windus)
  • F. R. Leavis (1976) Thought, Words and Creativity: Art and Thought in D H Lawrence (London, Chatto and Windus)
  • Sheila Macleod (1985) Lawrence's Men and Women (London: Heinemann)
  • Barbara Mensch (1991) D. H. Lawrence and the Authoritarian Personality (London and Basingstoke: Macmillan)
  • Kate Millett (1970) Sexual Politics (Garden City, NY: Doubleday)
  • Colin Milton (1987) Lawrence and Nietzsche: A Study in Influence (Aberdeen: Aberdeen University Press)
  • Robert E Montgomery (1994) The Visionary D. H. Lawrence: Beyond Philosophy and Art (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Alastair Niven (1978) D. H. Lawrence: The Novels (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Cornelia Nixon (1986) Lawrence's Leadership Politics and the Turn Against Women (Berkeley: University of California Press)
  • Tony Pinkney (1990) D. H. Lawrence (London and New York: Harvester Wheatsheaf)
  • Charles L. Ross (1991) Women in Love: A Novel of Mythic Realism (Boston, Mass.: Twayne)
  • Keith Sagar (1966) The Art of D H Lawrence (Cambridge: Cambridge University Press)
  • Keith Sagar (1985) D H Lawrence: Life into Art (University of Georgia Press)
  • Keith Sagar (2008) D. H. Lawrence: Poet (Penrith: Humanities-Ebooks)
  • Daniel J. Schneider (1986) The Consciousness of D. H. Lawrence: An Intellectual Biography (Lawrence, Kan.: University Press of Kansas)
  • Michael Squires and Keith Cushman (1990) The Challenge of D. H. Lawrence (Madison, Wisconsin: University of Wisconsin Press)
  • Peter Widdowson , ed. (1992) D. H. Lawrence (London and New York: Longman)
  • John Worthen (1979) D. H. Lawrence and the Idea of the Novel (London and Basingstoke, Macmillan).
  • T R Wright (2000) D H Lawrence and the Bible (Cambridge, Cambridge University Press)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "It has been a savage enough pilgrimage these last four years" Letter to J. M. Murry, 2 February 1923.
  2. Letter to The Nation and Atheneum, 29 March, 1930.
  3. http://www.lawrenceseastwood.co.uk ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ জুন ২০০২ তারিখে David Herbert Richards Lawrence
  4. Broxtowe Borough Council : D.H. Lawrence Heritage at www.broxtowe.gov.uk
  5. Maddox, Brenda. D.H. Lawrence: The Story of a Marriage. New York: Simon & Schuster, 1994. আইএসবিএন ০-৬৭১-৬৮৭১২-৩
  6. Letter to Henry Savage, 2 December 1913
  7. Quoted in My Life and Times, Octave Five, 1918–1923 by Compton MacKenzie pp. 167–168
  8. John R. Harrison (1966) The Reactionaries: Yeats, Lewis, Pound, Eliot, Lawrence: A Study of the Anti-Democratic Intelligentsia (Victor Gollancz, London)
  9. "The Letters of D. H. Lawrence" 
  10. Nominees and Recipients ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জুন ২০০৮ তারিখে at www.helenhayes.org

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

জীবনী[সম্পাদনা]

রচনাবলি[সম্পাদনা]

সমালোচনা[সম্পাদনা]

অন্যান্য[সম্পাদনা]