খন্দকার মোশতাক আহমেদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা NahidSultan (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:৫২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (202.126.127.94-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে M.NABIL-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

খন্দকার মোশতাক আহমেদ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ – ৬ নভেম্বর, ১৯৭৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯১৮-০৩-০৫)৫ মার্চ ১৯১৮
জাতীয়তাবাংলাদেশী
ধর্মইসলাম

খন্দকার মোশতাক আহমেদ (১৯১৮ - মার্চ ৫, ১৯৯৬) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১]

জন্ম

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষা

খন্দকার মোশাতাক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। ব্রিটিশ বিরোধি আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব।

রাজনীতি

খন্দকার মোশতাক ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি আহমেদ যুক্তফ্রন্টের মনোনিত প্রার্থি হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৩৫ সালের আর্টিকেল ৯২-এ ব্যবহার করে যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দিলে ১৯৫৪ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫৫ সালে তিনি মুক্ত হয়ে আবার সংসদে যুক্তফ্রন্টের চিফ হুইপ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করার পর তিনি আবার বন্দি হন। ১৯৬৬ সালে ছয়-দফার সমর্থন করায় তাকে আবার কারাবরণ করতে হয়। দেশের আটটি রাজনৈতিক দল ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলে তাতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ পশ্চিম পাকিস্তান অংশের সমন্নয়ক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে রাওয়ালাপিন্ডিতে আইয়ুব খানের ডাকা গোল টেবিল বৈঠকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারে তিনি পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারে তিনি বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তাকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বাকশালের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।[২]

৭৫' এ অবস্থান

কিছু সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হবার পর মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। এই পদে তিনি মাত্র ৮৩ দিন ছিলেন। রাষ্ট্রপতির দ্বায়িত্ব নেবার পর তিনি ইনডেমিনিটি বিল পাশ করেন। তিনি "জয় বাংলা" স্লোগান পরিবর্তন করে এর স্থলে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন। এই সময় তিনি "বাংলাদেশ বেতার" এই নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের আদলে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন। তার শাসনামলে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মোঃ মনসুর আলীএ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়। মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন।এসব কারণে তিনি জাতীয় বেইমান হিসেবে সর্বজন নিন্দিত। ধারণা করা হয় যে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার পিছনে তিনিও জড়িত ছিলেন।

৭৫' পরবর্তি অবস্থান

১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্র্যাটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২ টি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় এবং আদালত তাকে ৫ বছরের শাস্তি প্রদান করে। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন।[৩]

মৃত্যু

৫ মার্চ ১৯৯৬ সালে এই নেতা মৃত্যু বরণ করেন।

সূত্র

  1. "১৫ অগাস্ট: কী ছিল সেদিনের পত্রিকায়"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৭-০৮-১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮ 
  2. "অনেক আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র মোশতাকের"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২০১৭-০৮-০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮ 
  3. "শোকাবহ আগস্ট ও সংগ্রামের দিনগুলি"pbd.news। ০৩ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
পূর্বসূরী:
শেখ মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
আগস্ট ১৫ ১৯৭৫ - নভেম্বর ৬ ১৯৭৫
উত্তরসূরী:
আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম